সেলফি তুলেই বকশিস চায় কাঙালিনী সুফিয়া



এস এম জামাল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সেলফি তুলেই বকশিস চায় কাঙালিনী সুফিয়া। ছবি: বার্তা২৪.কম

সেলফি তুলেই বকশিস চায় কাঙালিনী সুফিয়া। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৬১-তে জন্ম নেওয়া এ মানুষটির মুখে এখনো লেগে আছে মায়ামাখা হাসি। কিন্তু এই সহজ-সরল মানুষটির পথ চলা তেমন মসৃণ ছিল না। একজন টুনি হালদার থেকে কাঙালিনী সুফিয়া হয়ে ওঠার গল্পটা অনেক কষ্টের। এসব নিয়েই কথা হয়েছে তার সঙ্গে।

বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) কুষ্টিয়া স্টেডিয়ামে ছিল উন্নয়ন কনসার্ট। সেই কনসার্টে মমতাজ, বাপ্পা মজুমদার, শফি মণ্ডলসহ নামীদামি তারকার সঙ্গে কাঙালিনী সুফিয়ারও গান করার কথা ছিল। কিন্তু বিধিবাম, বৈরী আবহাওয়ার কারণে স্থগিত করে দেওয়া হয় অনুষ্ঠান। আয়োজক কমিটি ঘোষণা দেয় অনুষ্ঠান স্থগিত। পরবর্তীতে এর তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।

অনুষ্ঠানস্থলে আসা দর্শকদের ফিরিয়ে দিচ্ছিল আয়োজক কমিটি। এ সময় বাউল শিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া মানুষকে ধরে ধরে বলছে ‘তোরা ছবি তোল, আর বকশিস দে আমাকে’।

‘পরানের বান্ধব রে, বুড়ি হইলাম তোর কারণে’ গানটি এক সময় মানুষের মুখে মুখে ঘুরত। দরাজ গলায় সেই গানটি গাওয়ার শিল্পী কাঙালিনী সুফিয়ার ছবিটা ভেসে উঠত মনের অজান্তে। এরপর সময় পেরিয়ে গেছে বহু বছর। কাঙালিনীর বয়স বেড়েছে, গায়ের তেজটাও নেই আগের মতো। এরপরও গাইছেন। কিন্তু সেটা যতটা মন থেকে, তার চেয়ে বেশি জীবনের প্রয়োজনে।

এদিকে অনুষ্ঠানস্থলে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা হয় কাঙালিনী সুফিয়ার। তিনি বলেন, ‘এখানে আইসা দেখি বৃষ্টির কারণে গানের অনুষ্ঠান বাতিল। অনেকেই আমার সঙ্গে ছবি তুলছে। তাই মানুষদের বলছিলাম অনুষ্ঠান না করলে ট্যাকা পামু না। ছবি তোল আর বকশিস দে।’

কাঙালীনি সুফিয়া তার কষ্টের কথা বলতে গেলে মুহূর্তেই মুখটা মলিন হয়ে যায়। নারী পুরুষের এই সমাজে এখনো বৈষম্য রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি যখন ‘পরানের বান্ধব রে, বুড়ি হইলাম তোর কারণে’ গানটি গাই তখন আক্ষেপ করেই কিছু কথা বলে ফেলি। আমরা মেয়েছেলে (নারী) কতোই না কষ্ট করি। এখনো আমাদের সমাজের নারীরা পুরুষদের চোখে অবহেলিত। বেতনসহ আরও কতো বৈষম্যই না রয়েছে।’ এসব বলেই শুরু হয়, তার গান। ‘কত কষ্ট কইরা আমি, কামাই রোজগার করি, তবুও বুড়োর মন পাইলাম না, ‘পরানের বান্ধবরে, বুড়ি হইলাম তোর কারণে।’

আবার সুখের কথাতেও আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে পড়েন এই শিল্পী।

১৯৬১ সালে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দির রামদিয়া গ্রামে জন্ম কাঙালিনীর। তবে তার নাম টুনি হালদার। এই টুনি হালদার থেকে কাঙালিনী সুফিয়া হয়ে ওঠার অনেক গল্প আছে।

তার বাবা খোকন হালদার আর মা টুলু হালদার। তাদের ইচ্ছায় সুধীর হালদার নামের এক বাউলের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। বিয়ের পর কোল জুড়ে এক কন্যা সন্তান আসে। নাম রাখা হয় পুষ্প।

তবে স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে একমাত্র মেয়ে পুষ্পকে কোলে নিয়ে ঘর ছাড়েন কাঙালিনী। প্রথমে ভেবেছিলেন বাবার বাড়িতে যাবেন। কিন্তু অভিমান করে সেখানেও যাননি। বেছে নেন ভবঘুরে জীবন। এ সময় পরিচয় হয় বেলগাছির লালন সাধক দেবেন ক্ষ্যাপার সঙ্গে।

দেবেনের কাছেই গানের প্রথম তালিম নেন সুফিয়া। এটা ছিল অন্য রকম জীবনযুদ্ধ। তারপরই শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।

স্বাধীনতা যুদ্ধে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের রানাঘাটের লালগুলা ক্যাম্পে আশ্রয় নেন সুফিয়া। স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে এলেও কপাল ফেরেনি তার। তাই বাধ্য হয়ে ঢাকায় পাড়ি জমান।

প্রথমে হাইকোর্ট আর শাহ আলীর মাজারই ছিল তার ঘরবাড়ি। এখানে ওখানে গান গাওয়ার ডাক এলে ছুটে যেতেন। একদিন শিল্পকলা একাডেমির একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে যান। সেখানে গিয়েই সুফিয়া হয়ে যান কাঙালিনী সুফিয়া।

কীভাবে এটা সম্ভব হল এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘তখন শিল্পকলা একাডেমির ডিজি (মহাপরিচালক) ছিলেন মুস্তাফা মনোয়ার। তিনি আমার গান শুনে নাম দেন ‘কাঙালিনী’। সেই থেকে আমার নামের আগে কাঙালিনী যোগ হয়। কয়েক দিনের মধ্যেই দেশ-বিদেশ থেকে গান গাওয়ার ডাক আসতে থাকে।’

প্রথমদিকে অল্প কিছু সম্মানীর বিনিময়ে গান করলেও কাঙালিনী সুফিয়ার খ্যাতি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে সব কিছু পাল্টে যায়। কাঙালিনী সুফিয়ার ভাষায়, ‘শুরুর দিকে তিনশ টাকার জন্য সারা রাত গান গাইছি। তারপর অবস্থার একটু উন্নতি ঘটল, তখন কেউ পাঁচশ, কেউ এক হাজার টাকা দিত। আর এখন তো গান গাইতে গেলে অনেক টাকা দেয়। তবে এখন বেশির ভাগ টাকাই পার্টি খেয়ে ফেলে। তাই কাঙালিনীর অভাব যায় না।’

কাঙালিনী সুফিয়া সেই ১৪ বছর বয়স থেকে গান গাওয়া শুরু করেন। বয়স ৫৭ পেরিয়েছে অনেক আগেই। তাই সব সময় দূর-দূরান্তে গিয়ে গান গাওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। কুষ্টিয়ার লালন একাডেমীসহ বিভিন্ন এলাকায় একাগ্রচিত্তে গান গেয়ে যান তিনি। গান পরিবেশনের এক ভিন্নমাত্রার ঢং রয়েছে তার মধ্যে। যা মানুষকে আকর্ষণ করে আসছে বহু বছর ধরে।

এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তো গুরু বিদ্যায় বিশ্বাসী। যার কারণে আমার মধ্যে সাধন-ভজন বিষয়টি এখনো কাজ করে। আর এ বিষয়টিকে পুঁজি করেই বেঁচে রয়েছি। গান তো আমার শরীরের প্রত্যেকটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে রয়েছে। যার কারণে অভিমান হয়নি কখনো। যতদিন বেঁচে আছি এভাবেই থাকব।’

   

অবৈধ বিলবোর্ডে প্রাণ গেল কার্তিকের মামা-মামির!



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কার্তিক আরিয়ান ও তার সদ্য প্রয়াত মামা-মামি

কার্তিক আরিয়ান ও তার সদ্য প্রয়াত মামা-মামি

  • Font increase
  • Font Decrease

হঠাৎই এক ঝড় কেড়ে নিয়েছে বলিউড তারকা কার্তিক আরিয়ানের মামা-মামিকে! গত ১৩ মে বেলা তিনটা নাগাদ মুম্বাই ও এর সংলগ্ন এলাকায় হঠাৎ ধেয়ে এসেছিল ধূলিঝড়। সেদিন আকস্মিক এ ঘটনা কেড়ে নিয়েছে ১৬ জনের প্রাণ।

এই ঝড়ের তান্ডবে একটি বিলবোর্ড হঠাৎই ভেঙে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছিল মুম্বাইয়ের ঘাটকোপর এলাকার একটি পেট্রলপাম্পের কাছে। কার্তিক আরিয়ানের মামা-মামি মনোজ চ্যান্সোরিয়া (৬০) আর তার স্ত্রী অনিতা (৫৯) গাড়ির জ্বালানি নিতে সেই পেট্রলপাম্পে এসেছিলেন। আর তখনই প্রবল ঝড় শুরু হয়। চ্যান্সোরিয়া দম্পতি তখন গাড়ির মধ্যেই ছিলেন। ঝড়ের দাপটে বিলবোর্ডটি ভেঙে পড়ে চ্যান্সোরিয়া দম্পতির গাড়ির ওপর। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

ভেঙে পড়া বিশাল আকৃতির অবৈধ বিলবোর্ড

জানা গেছে যে চ্যান্সোরিয়া দম্পতি মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন। তারা ভিসাসংক্রান্ত কাজে মুম্বাইয়ে এসেছিলেন। চ্যান্সোরিয়া দম্পতির ছেলে যশ যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। ছেলের কাছে যাবেন বলে ভিসার কাজে মুম্বাইয়ে এসেছিলেন তারা। মনোজ ও অনিতার আকস্মিক মৃত্যুর খবরে গোটা পরিবার শোকাহত।

চ্যান্সোরিয়া দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল দুর্ঘটনার ৫০ ঘণ্টা পর। তাদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে মুম্বাইয়ের সাহার শ্মশানে। কার্তিক আরিয়ানসহ গোটা পরিবার শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন।

কার্তিক আরিয়ানসহ গোটা পরিবার শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন

জানা গেছে, বিশালাকার এই বিলবোর্ড অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। দেশের সবচেয়ে বড় হোর্ডিং হিসাবে লিমকা বুক অব রেকর্ডসে স্থান পাওয়ার জন্য এটি লাগানো হয়েছিল। এই হোর্ডিং লাগিয়েছিল ইগো প্রাইভেট লিমিটেড।

মুম্বাই পুলিশ এই সংস্থার নির্দেশক ভাবেশ ভিন্ডেকে অবৈধ হোর্ডিং মামলায় গ্রেপ্তার করেছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সূত্রে জানা গেছে, মনোজ চ্যান্সোরিয়া অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল জেনারেল।

‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ ছবিতে কার্তিক আরিয়ান

এদিকে, কার্তিক আরিয়ানের ‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ ছবিটি মুক্তি পেতে চলেছে। কার্তিকের নিজের শহর মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে এক বড়সড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ ছবির ট্রেলার মুক্তি পাচ্ছে আজ। পরিবারের এই চরম বিপর্যয়ের সময়েও কার্তিক কাজের প্রতি অবিচল। অনেকে এই অনুষ্ঠান বাতিল করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু কার্তিক নিজের প্রতিশ্রুতি থেকে সরতে চাননি। তার কথায়, এই ছবির সঙ্গে অসংখ্য মানুষের ঘাম-রক্ত জড়িয়ে আছে। তাই তাদের প্রতি অন্যায় করা হবে বলে মনে করেন অভিনেতা।

;

কানে রুনা লায়লা ও আরিফিন শুভকে নিয়ে যা বললেন নাসিরুদ্দিন শাহ



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নাসিরুদ্দিন শাহ, রুনা লায়লা ও আরিফিন শুভ

নাসিরুদ্দিন শাহ, রুনা লায়লা ও আরিফিন শুভ

  • Font increase
  • Font Decrease

দক্ষিণ ফ্রান্সে সাগরপাড়ের শহর কানে চলছে পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন এবং প্রভাবশালী কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৭তম আসর। লম্বা অভিনয় ক্যারিয়ারে অনবদ্য সব চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও  সেখানে এবারই প্রথমবার হাজির হয়েছেন ভারতীয় কিংবদন্তি অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ।

উৎসবে চতুর্থ দিনে নাসিরুদ্দিন শাহ অভিনীত ‘মন্থন’ সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়েছে ‘কান ক্লাসিকে’। চার যুগ আগে অভিনয় করেছিলেন ‘মন্থন’ সিনেমায়। সেটি ছিল নাসিরুদ্দিন শাহ অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। গুজরাটের দুগ্ধখামারীদের ওপর কর্পোরেট আগ্রাসন ঘিরে বর্ষীয়ান নির্মাতা শ্যাম বেনেগালের ধ্রুপদি এই সিনেমাকে সম্মান জানিয়ে এই বিভাগে ঠাঁই দিয়েছে উৎসব কর্তৃপক্ষ।

‘মন্থন’ ছবির দৃশ্যে নাসিরুদ্দিন শাহ

এই শ্যাম বেনেগালই নির্মাণ করেছেন বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’। প্রসঙ্গক্রমে সে কথা তুললে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের নাসিরুদ্দিন শাহ্ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু বায়োপিক ছবিটি আমি দেখেছি। খুবই ভালো ছবি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বলতে হয়, শ্যাম বেনেগালের ছবিটি ব্যাপকভাবে প্রদর্শিত হয়নি। কিন্তু আমি মনে করি, মূল চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন (আরিফিন শুভ) তিনি দারুণ করেছেন। আমি ছবিটি উপভোগ করেছি। ছবিটি দারুণ ইনফরমেটিভ, ইন্টারেস্টিং এবং নাটকীয়।’

বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ প্রযোজনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীনির্ভর ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’ সিনেমা গেল বছরের ১৩ অক্টোবর দেশেজুড়ে মুক্তি পেয়েছে।

কান চলচ্চিত্র উৎসবে নাসিরুদ্দিন শাহ ও তার স্ত্রী বর্ষিয়ান অভিনেত্রী রত্না পাঠক শাহ

নাসিরুদ্দিন শাহ্ শুধু শুভ’র প্রশংসাই করেননি। বাংলাদেশে দু’বার মঞ্চে পারফর্ম করতে এসেছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ। সেই স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, ‘ঢাকার দর্শকরা চমৎকার। আমার সবচেয়ে আনন্দ লেগেছে রুনা লায়লাজির সঙ্গে দেখা করে।’

সবশেষে বাংলা ভাষা জানেন কিনা বলতেই নাসিরুদ্দিন শাহ বলেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি।’

শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত ‘মন্থন’ (১৯৭৬) চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী হয় গত শুক্রবার পালে দে ফেস্টিভ্যাল ভবনের বুনুয়েল থিয়েটারে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে। এর প্রদর্শনীতে নাসিরুদ্দিন শাহ ছাড়াও ছিলেন তার স্ত্রী বর্ষিয়ান অভিনেত্রী রত্না পাঠক শাহ, ‘মন্থন’-এর নায়িকা স্মিতা পাতিলের পরিবার, প্রযোজক এবং ভারতের ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের পরিচালক শিবেন্দ্র সিং দুঙ্গারপুর।

কান চলচ্চিত্র উৎসবের রেড কার্পেটে ‘মন্থন’ ছবির টিম

ভারতের বৃহত্তম দুগ্ধ উন্নয়ন আন্দোলন তথা শ্বেত বিপ্লবের পটভূমিতে তৈরি হয় ‘মন্থন’। এটি ছিল ভারতের প্রথম গণঅর্থায়নে নির্মিত চলচ্চিত্র। দেশটির গুজরাট রাজ্যের ৫ লাখ কৃষক ছবিটি নির্মাণে ২ রুপি করে দান করেন। ভার্গিস কুরিয়েনের দুগ্ধ সমবায় আন্দোলনে অনুপ্রাণিত ‘মন্থন’। ছবিটির অন্যতম গল্পকার তিনি।

ভার্গিস কুরিয়েনের বিলিয়ন লিটার আইডিয়া তথা অপারেশন ফ্লাড ভারত দুধের ঘাটতির দেশ থেকে বিশ্বের বৃহত্তম ও শীর্ষ উৎপাদনকারীতে পরিণত হয়েছে। তার শ্বেত বিপ্লবের কর্মপন্থা বিশ্বের বৃহত্তম কৃষি উন্নয়ন কর্মসূচি হিসেবে পরিচিত। ভারতের ডেইরি অ্যাসোসিয়েশন ২০১৪ সাল থেকে এই কীর্তিমানের জন্মদিনকে জাতীয় দুগ্ধ দিবস হিসেবে পালন করছে। ভারত সরকারের কাছ থেকে পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ, পদ্মশ্রী, কৃষিরত্ন পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এছাড়া বিভিন্ন দেশে অনেক সম্মাননায় ভূষিত করা হয় তাকে। ২০১২ সালে ৯০ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন তিনি।

হিন্দি ভাষায় নির্মিত ২ ঘণ্টা ১৪ মিনিটের ‘মন্থন’ দেখিয়েছে গ্রামীণ ক্ষমতায়নকে কেন্দ্র করে কাল্পনিক আখ্যানের মাধ্যমে শ্বেত বিপ্লবের উৎপত্তি। এতে আরও অভিনয় করেছেন গিরিশ কারনাড, অমরিশ পুরি, কুলভূষণ খারবান্দা, মোহন আগাসে, অনন্ত নাগ, রাজেন্দ্র যশপাল, আভা ঢুলিয়া, সাধু মেহের ও অঞ্জলি পায়গানকার।

‘মন্থন’ ছবির একটি দৃশ্যে সহশিল্পীদের সঙ্গে স্মিতা পাতিলা, নাসিরুদ্দিন শাহ

৪৮ বছরের পুরনো ‘মন্থন’ ছবির প্রিন্ট পুনরুদ্ধার করেছে ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন। এর ৩৫ মিলিমিটার মূল নেগেটিভ সংরক্ষিত ছিলো এনএফডিসিতে (ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র সংগ্রহশালা)। পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে কাজ করেছেন পরিচালক শ্যাম বেনেগাল, চিত্রগ্রাহক গোবিন্দ নিহালানি, চেন্নাইয়ের প্রসাদ করপোরেশনের প্রাইভেট লিমিটেডের পোস্ট–স্টুডিওস এবং ইতালির লি’মাজিন রিত্রোভাতা ল্যাবরেটরি। অর্থায়নে সহযোগিতা করেছে ভার্গিস কুরিয়েনের গড়া প্রতিষ্ঠান গুজরাট কো-অপারেটিভ মিল্ক মার্কেটিং ফেডারেশন লিমিটেড। ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনে সংরক্ষিত প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিপ্রাপ্ত ৩৫ মিলিমিটার প্রিন্ট থেকে শব্দ ডিজিটালে রূপান্তর করা হয়েছে।

১৯৭৭ সালে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র এবং সেরা চিত্রনাট্যকার (বিজয় টেন্ডুলকার) স্বীকৃতি জিতেছে ‘মন্থন’। ভারত থেকে অস্কারে পাঠানো হয় এই ছবি। এতে ‘মেরো গাম কথা পারে’ গানের জন্য ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে সেরা গায়িকা বিভাগে পুরস্কার জয় করেন প্রীতি সাগর।

‘মন্থন’ ছবির দৃশ্যে স্মিতা পাতিলা

;

মোনালি ঠাকুরের মা মারা গেছেন



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মা মিনতি ঠাকুর এবং মোনালি ঠাকুর

মা মিনতি ঠাকুর এবং মোনালি ঠাকুর

  • Font increase
  • Font Decrease

বাবার পথে হেঁটেই ভারতীয় বাংলার জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী এবং অভিনেত্রী হয়ে ওঠেন মোনালি ঠাকুর। একাধারে কাজ করেছেন বলিউডেও। সঙ্গীত ও অভিনয় শিল্পী শক্তি ঠাকুরের মেয়ে হিসেবে পরিচিত হলেও, মোনালির জীবনের অনুপ্রেরণার এক বিশেষ অংশ ছিলেন তার মা। অবশেষে নাড়ির বন্ধনে আবদ্ধ সম্পর্ক ছিন্ন করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন গায়িকার মা মিনতি ঠাকুর।   

মিনতি ঠাকুর (বামে), মোনালি ঠাকুর, মেহুলি ঠাকুর (ডানে)

শুক্রবার (১৭ মে) মায়ের মৃত্যু খবর দিলেন মোনালি ঠাকুরের বড় বোন মেহুলি ঠাকুর। কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। দু’টো কিডনিই বিকল হয়ে গিয়েছিল, তাই ডায়ালাইসিস চলছিল। কোলকাতার এক বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ছিলেন প্রায় এক মাস ধরে। এপ্রিলের শেষে দিকে ভর্তি হওয়ার পর তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়েছিল।

মা মিনতি ঠাকুরের সঙ্গে মোনালি ঠাকুর

মায়ের অবস্থা বিশেষ ভালো নয় আগেই জানিয়েছিলেন মোনালি। বৃহস্পতি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, মায়ের অবস্থা দিন দিন শোচনীয় হয়ে উটছে। মায়ের সঙ্গে ছোটবেলার এক ছবি শেয়ার করেন তিনি। সাথে লেখেন, ‘কঠিন পরিস্থিতিতে কীভাবে লড়াই করব মা? এই একাকিত্ব, এই যন্ত্রণা। বড্ড অসহায় লাগছে।

মাকে নিয়ে মোনালির আবেগঘন পোস্ট

কিন্তু এবার সময় এসেছে। তাঁকে লাইফ সাপোর্ট থেকে বের করে নেওয়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাকে। তৈরি হতে হবে!  আমার মাকে শান্তি দাও ঈশ্বর এবং আমাকে সাহায্য করো... এখন মাকে ছাড়া আমার জীবনটাই বা কী ভাবে কল্পনা করব? আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারছি না।’

২২ দিন টানা চিকিৎসাধীন ছিলেন মিনতি। ১৮ দিনই ছিলেন লাইফসাপোর্টে। শেষে লাইফ সাপোর্ট থেকে বের করে নেওয়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্তও নিতে হয়। তখন অক্সিজেন লেভেলও ছিল কম, ৫১ তে। মৃত্যু নিশ্চিত জেনে বাধ্য হয়েই তাই এরকম পদক্ষেপ নেয় ঠাকুর পরিবার। ঠিক একদিন পরই দেহ ত্যাগ করলেন তিনি।

শক্তি ঠাকুর (বামে), প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, মোনালি ঠাকুর, মেহুলি ঠাকুর (ডানে)

কয়েক বছর আগেই করোনার সময় বাবা শক্তি ঠাকুরকে হারিয়েছিলেন মেহুলি-মোনালি। ২০২০ সালের অক্টোবরে পরপারে চলে যান তিনি। এবার মাকেও হারিয়ে অভিভাবকহারা হলেন তারা।

;

জামদানির পর কানে ভাবনার দেশিয় বেনারসির জৌলুস



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
কানে সাফিয়া সাথীর বেনারসির পোশাকে ভাবনা

কানে সাফিয়া সাথীর বেনারসির পোশাকে ভাবনা

  • Font increase
  • Font Decrease

মেধাবী অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনার কান চলচ্চিত্র উৎসবের যাত্রা এখন বেশ আলোচনায়। তার কানের পোশাক-আশাক দেখে বোঝাই যাচ্ছে, বেশ সময় নিয়ে আটঘাট বেঁধেই ভূমধ্যসাগরের পাড়ে হাজির হয়েছেন।

কানে সাফিয়া সাথীর ডিজাইন করা বেনারসির পোশাকে ভাবনা

তাইতো তার প্রতিদিনের ছবি নিয়ে নেটিজেনদের আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। প্রথম দুদিন পাশ্চাত্যের গাউন বেছে নিলেও তৃতীয় দিন থেকে এই তারকা হাজির হচ্ছেন দেশি পোশাকে।

কাক খুব ভালোবাসেন। কাকের অনেক ছবি এঁকেছেন। এবার সেই ‘কাক’ পোশাকে ধারণ করে কানের রেড কার্পেটে ভাবনা

নিয়ন গ্রীণ জামদানির সঙ্গে ঢাকার ঐতিহ্য রিকশা পেইন্টের মোটিফে ডিজাইন করা ব্লাউজ পরে বেশ চর্চিত হয়েছেন তিনি। এবার নতুন আরও কিছু ছবি পোস্ট করলেন ভাবনা। এগুলো তার কানের চতুর্থ দিনের লুক।

রিকশা পেইন্টের মোটিফে ডিজাইন করা ব্লাউজ পরে বেশ চর্চিত হয়েছেন ভাবনা

আর এদিনও তিনি বেছে নিলেন দেশিয় কাপড়। জামদানির পর বেনারসির জৌলুসে তাক লাগালেন ভাবনা। তবে দেশি ফেব্রিক বেছে নিলেও তিনি বেনারসি শাড়িতে নিজেকে জড়াননি। বর্তমান সময়ের অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন ডিজাইনার সাফিয়া সাথীর নকশা করা কাতানের ভিন্নধর্মী গাউনে ধরা দিয়েছেন গ্ল্যামার গার্ল ভাবনা।

কান চলচ্চিত্র উৎসব প্রাঙ্গনে ভাবনা

মেরুণ কাতানে সোনালি জরির কাজ করা। বোঝাই যাচ্ছে বিয়ের বেনারসি কেটে পোশাকটি ডিজাইন করা হয়েছে। লম্বা টেলওয়ালা গাউনটির এক পাশে স্লিট করা। একপাশে অফ সোল্ডার, অণ্যপাশে ফুল হাতা। সঙ্গে কন্ট্রাস্ট সবুজ ঝোলানো দুল। সবমিলিয়ে নায়িকাকে অণ্য দিনের তুলনায় বেশি গর্জিয়াস লাগছে।

কানে সাফিয়া সাথীর ডিজাইন করা বেনারসির লম্বা টেলওয়ালা গাউনে ভাবনা

ছবি দেখে মনে হচ্ছে, কানের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করছেন ভাবনা। প্রতিদিন দারুণসব সিনেমার প্রিমিয়ার শো উপভোগ করছেন। যখন যেমন ইভেন্টে অংশ নিচ্ছেন তখন তেমনি পোশাকে ধরা দিচ্ছেন। এই যেমন খেতে বের হবার সময় পরেছেন অ্যানিমেল প্রিন্টের স্লিভলেস টপ। সঙ্গে নিয়েছেন মেরুণ রঙের ব্র্যান্ডের হাতব্যাগ।

কান চলচ্চিত্র উৎসব প্রাঙ্গনে ভাবনা

;