তালতলা কবরস্থানে সমাহিত হলেন ফকির আলমগীর

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফকির আলমগীর

ফকির আলমগীর

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণসংগীত শিল্পী ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ফকির আলমগীর। শনিবার (২৪ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় তার দাফন কার্য সম্পন্ন হয়।

এর আগে সকাল ১১টায় রাজধানীর খিলগাঁওয়ের পল্লীমা সংসদ প্রাঙ্গণে তার প্রথম নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

বিজ্ঞাপন

পরে সেখান থেকে দুপুর পৌনে ১২টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয়েছে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ফকির আলমগীরের মরদেহ।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর। শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির ও মা বেগম হাবিবুন্নেছা। শিল্পী কালামৃধা গোবিন্দ হাইস্কুল থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দেশের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন।


তিনি ১৯৬৬ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে এবং ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে গণসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন শব্দসৈনিক হিসেবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে নিয়মিত সংগীত পরিবেশনার পাশাপাশি প্রচলিত ও প্রথাসিদ্ধ গানের বন্ধ্যা ভূমিতে দেশজ ও পাশ্চাত্য সংগীতের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা গানে নতুন মাত্রা সংযোজন করেন।

১৯৭৬ সালে গঠন করেন ঋষিজ শিল্পগোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর মাধ্যমে গণসংগীতকে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেন।


তিনি গানের পাশাপাশি একজন সফল লেখকও। তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলো চেনা চীন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান, গণসংগীতের অতীত ও বর্তমান, গণসংগীত ও মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি বন্ধুরা, আমার কথা, পপসংগীতের একাল সেকাল।

ফকির আলমগীর সংগীতে অবদানের জন্য একুশে পদক, শেরে বাংলা পদক, ভাসানী পদক, সিকোয়েন্স অ্যাওয়ার্ড অব অনার, তর্কবাগীশ স্বর্ণপদক, জসীমউদ্দীন স্বর্ণপদক, ক্রান্তিপদক, গণনাট্যপদক, গণস্বাস্থ্য মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা, জনসংযোগ সমিতি পুরস্কার, ভারতীয় গণনাট্য সংঘ পুরস্কার, ত্রিপুরা সংস্কৃতি সমন্বয় পুরস্কার, বাংলা একাডেমির সম্মানজনক ফেলোশিপসহ অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন।


এছাড়াও তিনি বাংলা একাডেমি আজীবন সদস্য, গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি, জনসংযোগ সমিতির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পরিষদের সদস্য, অফিসারস ক্লাবের সদস্য।