ভাওয়াইয়া গানের সম্রাট, জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি



বৃষ্টি শেখ, নিউজরুম এডিটর
আব্বাসউদ্দীন আহমদ

আব্বাসউদ্দীন আহমদ

  • Font increase
  • Font Decrease

তাকে বলা হতো ভাওয়াইয়া গানের সম্রাট। তার দরদভরা সুরেলা কণ্ঠে পল্লী গানের সুর আজও অতুলনীয়। প্রথমে ছিলেন পল্লীগাঁয়ের একজন গায়ক। পরে তিনি হয়ে ওঠেন পল্লীগানের সম্রাট। তিনি আবহমান বাংলার লোকগানের অন্যতম রূপকার আব্বাসউদ্দীন আহমদ।

নজরুল রচিত ইসলামি গান ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে’ প্রথম গেয়েছিলেন আব্বাসউদ্দীন। ‘তোরা দেখে যা আমিনা মায়ের কোলে’ কিংবা ‘ত্রিভুবনের প্রিয় মোহাম্মদ এলোরে দুনিয়ায়’-এর মতো হৃদয়ছোঁয়া গানেরও সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী আব্বাসউদ্দীন।

১৯০১ সালের ২৭ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার তুফানগঞ্জ মহকুমার বলরামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আব্বাসউদ্দীন। বাবা মহম্মদ জাফর আলি কুচবিহার জেলার স্বনামধন্য আইনজীবী ও জমিদার ছিলেন। মায়ের নাম হিরামন নেসা।

কুচবিহার ও রংপুর হলো ভাওয়াইয়া গানের অঞ্চল। তাই ছোটবেলা থেকেই গানের নেশা পেয়ে বসে আব্বাসউদ্দীনকে। যাত্রা, থিয়েটার ও স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান শুনে নিজের চেষ্টায় রপ্ত করতেন। এভাবে আপন প্রতিভাবলে নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরেন।

আব্বাসউদ্দীনের শিক্ষাজীবন শুরু হয় বলরামপুর ছাত্রবৃত্তি স্কুলে। ১৯১৯ সালে তুফানগঞ্জ হাইস্কুলে থেকে ম্যাট্রিক ও ১৯২১ সালে কুচবিহার কলেজ থেকে আইএ পাস করেন।

১৯৩১ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত কলকাতায় বসবাস করেছেন আব্বাসউদ্দীন। কলকাতায় পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা দু’জনে মিলে লোকসংগীতের প্রচারে নেমে পড়েন। তাদের প্রচেষ্টা সফল হয়।

রংপুর ও কুচবিহার অঞ্চলের ভাওয়াইয়া, ক্ষিরোল চটকা গেয়ে প্রথমে সুনাম অর্জন করেন আব্বাসউদ্দীন। এরপর জারি, সারি, ভাটিয়ালি, মুর্শিদী, বিচ্ছেদী, দেহতত্ত্ব ও পালা গান গেয়ে জনপ্রিয় হন।

লোকসংগীতের মধ্যে আব্বাসউদ্দীন প্রথম দিকে কিছু ভাটিয়ালি গান রেকর্ড করেন। এরপর ভাওয়াই গানে অসাধারণ সাফল্য ধরা দেয় তার হাতে।
আব্বাসউদ্দীনের গাওয়া প্রথম দুই গান ‘স্মরণপারের ওগো প্রিয়’ ও ‘কোন বিরহীর নয়ন জলে’ জনপ্রিয় হয়। এই সাফল্যে গানকেই জীবনের লক্ষ্য হিসেবে স্থির করেন তিনি।

আব্বাসউদ্দীন ছিলেন প্রথম মুসলিম গায়ক যিনি নিজের প্রকৃত নাম ব্যবহার করে এইচএমভি থেকে রেকর্ড বাজারে ছাড়তেন। এগুলো বাণিজ্যিকভাবে ভীষণ সফল ছিলো। তাই হিন্দু ধর্মের অন্যান্য গায়ক সাফল্য পেতে মুসলমান ছদ্মনাম ধারণ করেন!

গানে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার আগে বিভিন্ন চাকরি করেছেন আব্বাসউদ্দীন। কলকাতায় রাইটার্স বিল্ডিংয়ে ডিপিআই অফিসে অস্থায়ী পদে ও পরে কৃষি দপ্তরে স্থায়ী পদে কেরানির চাকরি করেন।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পরপরই ঢাকায় এসে চাকরি নেন সরকারের প্রচার দপ্তরের অ্যাডিশনাল সং অর্গানাইজার হিসেবে। ওই বছরের ১৪ আগস্ট রাতে তৎকালীন রেডিও পাকিস্তান (ঢাকা বেতার) থেকে প্রথম সঙ্গীত পরিবেশন করেন তিনি।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম খুব স্নেহ করতেন আব্বাসউদ্দীনকে। নজরুলের ইসলামি গান রচনা ও সেগুলো জনপ্রিয় করে তোলার পেছনে আব্বাসউদ্দীনের ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে আছে। গ্রামোফোন কোম্পানির জন্য রেকর্ড করা ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে’ গানটি বিপুল জনপ্রিয়তা পায়।

পল্লীগীতি ছাড়াও আধুনিক গান, স্বদেশি গান, ইসলামি গান ও উর্দু গানে জনপ্রিয় ছিলেন আব্বাসউদ্দীন। তবে পল্লীগীতিতেই তার মৌলিকতা ও সাফল্য বেশি।

শিকাগো, লন্ডন, নিউইয়র্ক, প্যারিস, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর বহু দেশে পল্লীগীতি ও ভাওয়াইয়া গান গেয়েছেন আব্বাসউদ্দীন। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সম্মেলন ও সভায় লোকসংগীত নিয়ে বক্তব্য রেখেছেন।

আব্বাসউদ্দীনের জনপ্রিয় গানের তালিকায় আছে ‘আমার হার কালা’, ‘আমার এতো রাতে’, ‘আল্লাহ মেঘ দে’, ‘ওই শোন কাদম্বতলে’, ‘ওকি ও বন্ধু কাজল ভ্রমরা’, ‘ওকি গাড়িয়াল ভাই’, ‘মাঝি বাইয়া যাও রে’, ‘নাও ছাড়িয়া দে’, ‘তৌহিদেরই মুরশেদ আমার’, ‘তোরা দেখে যা আমিনা’ ইত্যাদি।

প্লেব্যাকের পাশাপাশি চারটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন আব্বাসউদ্দীন। এগুলো হলো ‘বিষ্ণুমায়া’ (১৯৩২), ‘মহানিশা’ (১৯৩৬), ‘একটি কথা’ ও ‘ঠিকাদার’ (১৯৪০)। নিজের অভিনীত ছবিগুলোতে গানও করেছেন আব্বাসউদ্দীন।

১৯২৯ সালে রংপুরের নীলফামারী মহকুমার ডোমার থানার চিকনমাটি গ্রামের ফজিল উদ্দিন সরকারের জ্যেষ্ঠ কন্যা বেগম লুৎফুন্নেসার সঙ্গে আব্বাসউদ্দীনের বিয়ে হয়। তিনি স্ত্রীর নাম রাখেন ‘আলেয়া’। তাদের চার সন্তান মোস্তফা কামাল, মোস্তফা জামাল, মুস্তাফা জামান আব্বাসী ও ফেরদৌসী বেগম (ফেরদৌসী রহমান)।

দীর্ঘদিন দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভোগার পর ১৯৫৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন বাংলার লোকসংগীত জগতের এই প্রবাদপ্রতিম উজ্জ্বল নক্ষত্র। মৃত্যুর পর ১৯৬০ সালে প্রকাশিত হয় তার একমাত্র গ্রন্থ ‘আমার শিল্পী জীবনের কথা’। প্রখ্যাত এই মরমী সংগীতশিল্পীর জন্মদিনে বার্তা২৪-এর পক্ষ থেকে জানাই শ্রদ্ধাঞ্জলি।

   

ডিএ তায়েবকে তীক্ষ্ণ জবাব নিপুণের, নেবেন আইনি ব্যবস্থাও!



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নিপুণ ও ডিএ তায়েব

নিপুণ ও ডিএ তায়েব

  • Font increase
  • Font Decrease

এবারের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ হয়েছে এমনটাই মনে করছিলেন সবাই। অল্প কিছু ভোটে জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা নিপুণ হেরে যান খল নায়ক ডিপজলের কাছে। তখন তিনি বলেছিলেন, আমার অনেকগুলো ভোট নষ্ট হয়েছে। নয়ত ফলাফল ভিন্ন হতে পারতো। তারপরও নিপুণ পরাজয় মেনে নিয়ে মিশ-ডিপজল প্যানেলকে বিজয়ের মালা দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

তবে সেই নির্বাচনে এক মাস যেতে না যেতেই বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আদালতে রিট করেন নিপুণ আক্তার। নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে এই ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। পাশাপাশি নতুন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এরপরই শুরু হয় পক্ষে বিপক্ষে তর্ক-বিতর্ক।

শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি পদে জয়ী হওয়ায় ডিএ তায়েবকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন এক সহকর্মী

এরমধ্যে গেল বৃহস্পতিবার সমিতির কার্যকরী সভা শেষে বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি চিত্রনায়ক ডিএ তায়েব জানান, নিপুণের সদস্য পদ বাতিল হতে পারে। গণমাধ্যমে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেছেন তিনি। তার সদস্যপদ কেন বাতিল করা হবে না, সেটি জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান কমিটি।

নিপুণ এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তার একমাত্র কন্যার কনভোকেশনে অংশ নিতে দেখা গেছে এই নায়িকাকে। তবে নিজের সদস্য পদ বাতিল হতে পারে এমন খবর ঠিকই তার কানে গেছে। আর তা শুনে মুখও খুললেন নিপুণ। তিনি বলেন, সদস্যপদের সঙ্গে কোর্টের কোনো সম্পর্ক নেই। রিট যেহেতু করেছি, ওনাদের কোর্টে আসতেই হবে। আর তিনি যদি সদস্যপদ খারিজ করতেই চায়, তাহলে সেটার জন্যও কোর্ট রয়েছে। দেশে তো আইন রয়েছে।

একমাত্র কন্যার কনভোকেশনে অংশ নিতে নিপুণ এখন যুক্তরাষ্ট্রে

ডিএ তায়েবের মন্তব্যের জবাবে নিপুণ বলেন, ডিএ তায়েবের মতো একদমই ফ্রি লোক না আমি। তিনি কি অভিনেতা? একজন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা? তার কোনো সিনেমা ব্লকবাস্টার? তিনি কি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অঙ্গনে নিজের নাম নক্ষত্রের সঙ্গে লিখেছেন? তার কাছে আমার প্রশ্ন রইল। আর তিনি আমাকে নিয়ে বলেছেন, আমার নাকি মানসিক সমস্যা রয়েছে। সেটার জন্য আমি দেশে আসার পর তার নামে সাইবার ক্রাইমে মামলা করব।

;

কানের রেড কার্পেটে এবার চার নায়িকাকে নিয়ে হাজির ভাবনা!



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
কান চলচ্চিত্র উৎসবে ভাবনা

কান চলচ্চিত্র উৎসবে ভাবনা

  • Font increase
  • Font Decrease

অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী আশনা হাবিব ভাবনা জানেন কিভাবে তার প্রথম কান যাত্রা অর্থবহ করা যায়। তাই সিনেমা দেখা, বিশ্বের বিভন্ন দেশের চলচ্চিত্রকার ও তারকাদের সঙ্গে কথা বলাসহ নিজের পোশাকেও রেখেছেন বুদ্ধিদীপ্ততা।

কান চলচ্চিত্র উৎসবে ভাবনা / ছবি : ফেসবুক

তার প্রতিদিনের পোশাক আলাদা আলাদা কারণে স্পেশ্যাল হয়ে উঠেছে। প্রথম দিন তিনি হাজির হন আন্তর্জাতিক তারকাদের মতো লম্বা টেলওয়ালা গাউনে। এর পরদিন ঢাকার কাক’কে পোশাকে উপস্থাপন করেন। তৃতীয় ঢাকাই জামদানির সঙ্গে রিকশা পেইন্টের মোটিফে তৈরী ব্লাউজ পরে নজর কাড়েন। এর পরদিন তিনি বেছে নেন দেশিয় বেনারসি শাড়ি কেটে তৈরী ভিন্নধর্মী গাউন।

কান চলচ্চিত্র উৎসবে ভাবনা / ছবি : ফেসবুক

আর আজ প্রকাশ হয়েছে ভাবনার কান উৎসবের পঞ্চম দিনের সাজ। এটিও একটি বিশেষ কারণে নেটিজেনদের আগ্রহ কেড়ে নিয়েছে। ভাবনা এবার কালো অলসোল্ডার গাউনে হাজির হয়েছেন রেড কার্পেটে। পোশাকের কাটিং-প্যাটার্ণে আলাদা স্বকীয়তা না থাকলে নজর কেড়েছে পোশাকের দামান অংশের কাজ।

কান চলচ্চিত্র উৎসবে ভাবনা / ছবি : ফেসবুক

সেখানে ফুলেল নকশার মাঝে মাঝে স্টোন দিয়ে কিছু লেখা চোখে পড়ছে। একটু ভালো করে খেয়াল করলেই দেখা যাবে তাতে লেখা চারটি নাম- ববিতা, সুর্বণা (সুবর্ণা মুস্তাফা), মেরিল স্ট্রিপ ও অড্রে হেপবার্ন।

কান চলচ্চিত্র উৎসবে ভাবনা / ছবি : ফেসবুক

এই নাম চারটি নিয়ে আলাদা করে বুঝিয়ে বলার কিছুই নেই। সিনেমাপ্রেমী প্রত্যেকে এই চারটি নামের সঙ্গে বহুকাল ধরে পরিচিতি। এমনকি চারজনই সবার প্রিয় নারী তারকা। দুজন বাংলাদেশের, দুজন হলিউডের।

কান চলচ্চিত্র উৎসবে ভাবনা / ছবি : ফেসবুক

এই চারজন ভাবনারও খুব প্রিয় অভিনেত্রী। তাই তাদের সম্মান দেখানোর জন্যই কানের মতো প্রসিদ্ধ মঞ্চে ভাবনা তার পোশাকে নামগুলো খোদাই করেছেন। পোশাকটি ডিজাইন করে দিয়েছেন তার ছোট বোন অদিতি।

;

অবৈধ বিলবোর্ডে প্রাণ গেল কার্তিকের মামা-মামির!



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কার্তিক আরিয়ান ও তার সদ্য প্রয়াত মামা-মামি

কার্তিক আরিয়ান ও তার সদ্য প্রয়াত মামা-মামি

  • Font increase
  • Font Decrease

হঠাৎই এক ঝড় কেড়ে নিয়েছে বলিউড তারকা কার্তিক আরিয়ানের মামা-মামিকে! গত ১৩ মে বেলা তিনটা নাগাদ মুম্বাই ও এর সংলগ্ন এলাকায় হঠাৎ ধেয়ে এসেছিল ধূলিঝড়। সেদিন আকস্মিক এ ঘটনা কেড়ে নিয়েছে ১৬ জনের প্রাণ।

এই ঝড়ের তান্ডবে একটি বিলবোর্ড হঠাৎই ভেঙে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছিল মুম্বাইয়ের ঘাটকোপর এলাকার একটি পেট্রলপাম্পের কাছে। কার্তিক আরিয়ানের মামা-মামি মনোজ চ্যান্সোরিয়া (৬০) আর তার স্ত্রী অনিতা (৫৯) গাড়ির জ্বালানি নিতে সেই পেট্রলপাম্পে এসেছিলেন। আর তখনই প্রবল ঝড় শুরু হয়। চ্যান্সোরিয়া দম্পতি তখন গাড়ির মধ্যেই ছিলেন। ঝড়ের দাপটে বিলবোর্ডটি ভেঙে পড়ে চ্যান্সোরিয়া দম্পতির গাড়ির ওপর। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

ভেঙে পড়া বিশাল আকৃতির অবৈধ বিলবোর্ড

জানা গেছে যে চ্যান্সোরিয়া দম্পতি মধ্যপ্রদেশের জবলপুরে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন। তারা ভিসাসংক্রান্ত কাজে মুম্বাইয়ে এসেছিলেন। চ্যান্সোরিয়া দম্পতির ছেলে যশ যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। ছেলের কাছে যাবেন বলে ভিসার কাজে মুম্বাইয়ে এসেছিলেন তারা। মনোজ ও অনিতার আকস্মিক মৃত্যুর খবরে গোটা পরিবার শোকাহত।

চ্যান্সোরিয়া দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল দুর্ঘটনার ৫০ ঘণ্টা পর। তাদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে মুম্বাইয়ের সাহার শ্মশানে। কার্তিক আরিয়ানসহ গোটা পরিবার শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন।

কার্তিক আরিয়ানসহ গোটা পরিবার শ্মশানে উপস্থিত ছিলেন

জানা গেছে, বিশালাকার এই বিলবোর্ড অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। দেশের সবচেয়ে বড় হোর্ডিং হিসাবে লিমকা বুক অব রেকর্ডসে স্থান পাওয়ার জন্য এটি লাগানো হয়েছিল। এই হোর্ডিং লাগিয়েছিল ইগো প্রাইভেট লিমিটেড।

মুম্বাই পুলিশ এই সংস্থার নির্দেশক ভাবেশ ভিন্ডেকে অবৈধ হোর্ডিং মামলায় গ্রেপ্তার করেছে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সূত্রে জানা গেছে, মনোজ চ্যান্সোরিয়া অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল জেনারেল।

‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ ছবিতে কার্তিক আরিয়ান

এদিকে, কার্তিক আরিয়ানের ‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ ছবিটি মুক্তি পেতে চলেছে। কার্তিকের নিজের শহর মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে এক বড়সড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ ছবির ট্রেলার মুক্তি পাচ্ছে আজ। পরিবারের এই চরম বিপর্যয়ের সময়েও কার্তিক কাজের প্রতি অবিচল। অনেকে এই অনুষ্ঠান বাতিল করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু কার্তিক নিজের প্রতিশ্রুতি থেকে সরতে চাননি। তার কথায়, এই ছবির সঙ্গে অসংখ্য মানুষের ঘাম-রক্ত জড়িয়ে আছে। তাই তাদের প্রতি অন্যায় করা হবে বলে মনে করেন অভিনেতা।

;

কানে রুনা লায়লা ও আরিফিন শুভকে নিয়ে যা বললেন নাসিরুদ্দিন শাহ



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নাসিরুদ্দিন শাহ, রুনা লায়লা ও আরিফিন শুভ

নাসিরুদ্দিন শাহ, রুনা লায়লা ও আরিফিন শুভ

  • Font increase
  • Font Decrease

দক্ষিণ ফ্রান্সে সাগরপাড়ের শহর কানে চলছে পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন এবং প্রভাবশালী কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৭তম আসর। লম্বা অভিনয় ক্যারিয়ারে অনবদ্য সব চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও  সেখানে এবারই প্রথমবার হাজির হয়েছেন ভারতীয় কিংবদন্তি অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ।

উৎসবে চতুর্থ দিনে নাসিরুদ্দিন শাহ অভিনীত ‘মন্থন’ সিনেমাটি প্রদর্শিত হয়েছে ‘কান ক্লাসিকে’। চার যুগ আগে অভিনয় করেছিলেন ‘মন্থন’ সিনেমায়। সেটি ছিল নাসিরুদ্দিন শাহ অভিনীত দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। গুজরাটের দুগ্ধখামারীদের ওপর কর্পোরেট আগ্রাসন ঘিরে বর্ষীয়ান নির্মাতা শ্যাম বেনেগালের ধ্রুপদি এই সিনেমাকে সম্মান জানিয়ে এই বিভাগে ঠাঁই দিয়েছে উৎসব কর্তৃপক্ষ।

‘মন্থন’ ছবির দৃশ্যে নাসিরুদ্দিন শাহ

এই শ্যাম বেনেগালই নির্মাণ করেছেন বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব : একটি জাতির রূপকার’। প্রসঙ্গক্রমে সে কথা তুললে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের নাসিরুদ্দিন শাহ্ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু বায়োপিক ছবিটি আমি দেখেছি। খুবই ভালো ছবি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বলতে হয়, শ্যাম বেনেগালের ছবিটি ব্যাপকভাবে প্রদর্শিত হয়নি। কিন্তু আমি মনে করি, মূল চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন (আরিফিন শুভ) তিনি দারুণ করেছেন। আমি ছবিটি উপভোগ করেছি। ছবিটি দারুণ ইনফরমেটিভ, ইন্টারেস্টিং এবং নাটকীয়।’

নাসিরুদ্দিন শাহ্ শুধু শুভ’র প্রশংসাই করেননি। তিনি উপমহাদেশের কিংবদন্তি শিল্পী বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনের গর্ব  রুনা লায়লাকে দারুণভাবে সম্মান দিয়েছেন তার কথায়। বাংলাদেশে দু’বার মঞ্চে পারফর্ম করতে এসেছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ। সেই স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, ‘ঢাকার দর্শকরা চমৎকার। আমার সবচেয়ে আনন্দ লেগেছে রুনা লায়লাজির সঙ্গে দেখা করে।’

সবশেষে বাংলা ভাষা জানেন কিনা বলতেই নাসিরুদ্দিন শাহ বলেন, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি।’

কান চলচ্চিত্র উৎসবে নাসিরুদ্দিন শাহ ও তার স্ত্রী বর্ষিয়ান অভিনেত্রী রত্না পাঠক শাহ

শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত ‘মন্থন’ (১৯৭৬) চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী হয় গত শুক্রবার পালে দে ফেস্টিভ্যাল ভবনের বুনুয়েল থিয়েটারে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে। এর প্রদর্শনীতে নাসিরুদ্দিন শাহ ছাড়াও ছিলেন তার স্ত্রী বর্ষিয়ান অভিনেত্রী রত্না পাঠক শাহ, ‘মন্থন’-এর নায়িকা স্মিতা পাতিলের পরিবার, প্রযোজক এবং ভারতের ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের পরিচালক শিবেন্দ্র সিং দুঙ্গারপুর।

ভারতের বৃহত্তম দুগ্ধ উন্নয়ন আন্দোলন তথা শ্বেত বিপ্লবের পটভূমিতে তৈরি হয় ‘মন্থন’। এটি ছিল ভারতের প্রথম গণঅর্থায়নে নির্মিত চলচ্চিত্র। দেশটির গুজরাট রাজ্যের ৫ লাখ কৃষক ছবিটি নির্মাণে ২ রুপি করে দান করেন। ভার্গিস কুরিয়েনের দুগ্ধ সমবায় আন্দোলনে অনুপ্রাণিত ‘মন্থন’। ছবিটির অন্যতম গল্পকার তিনি।

কান চলচ্চিত্র উৎসবের রেড কার্পেটে ‘মন্থন’ ছবির টিম

ভার্গিস কুরিয়েনের বিলিয়ন লিটার আইডিয়া তথা অপারেশন ফ্লাড ভারত দুধের ঘাটতির দেশ থেকে বিশ্বের বৃহত্তম ও শীর্ষ উৎপাদনকারীতে পরিণত হয়েছে। তার শ্বেত বিপ্লবের কর্মপন্থা বিশ্বের বৃহত্তম কৃষি উন্নয়ন কর্মসূচি হিসেবে পরিচিত। ভারতের ডেইরি অ্যাসোসিয়েশন ২০১৪ সাল থেকে এই কীর্তিমানের জন্মদিনকে জাতীয় দুগ্ধ দিবস হিসেবে পালন করছে। ভারত সরকারের কাছ থেকে পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ, পদ্মশ্রী, কৃষিরত্ন পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এছাড়া বিভিন্ন দেশে অনেক সম্মাননায় ভূষিত করা হয় তাকে। ২০১২ সালে ৯০ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন তিনি।

হিন্দি ভাষায় নির্মিত ২ ঘণ্টা ১৪ মিনিটের ‘মন্থন’ দেখিয়েছে গ্রামীণ ক্ষমতায়নকে কেন্দ্র করে কাল্পনিক আখ্যানের মাধ্যমে শ্বেত বিপ্লবের উৎপত্তি। এতে আরও অভিনয় করেছেন গিরিশ কারনাড, অমরিশ পুরি, কুলভূষণ খারবান্দা, মোহন আগাসে, অনন্ত নাগ, রাজেন্দ্র যশপাল, আভা ঢুলিয়া, সাধু মেহের ও অঞ্জলি পায়গানকার।

‘মন্থন’ ছবির একটি দৃশ্যে সহশিল্পীদের সঙ্গে স্মিতা পাতিলা, নাসিরুদ্দিন শাহ

৪৮ বছরের পুরনো ‘মন্থন’ ছবির প্রিন্ট পুনরুদ্ধার করেছে ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন। এর ৩৫ মিলিমিটার মূল নেগেটিভ সংরক্ষিত ছিলো এনএফডিসিতে (ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র সংগ্রহশালা)। পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে কাজ করেছেন পরিচালক শ্যাম বেনেগাল, চিত্রগ্রাহক গোবিন্দ নিহালানি, চেন্নাইয়ের প্রসাদ করপোরেশনের প্রাইভেট লিমিটেডের পোস্ট–স্টুডিওস এবং ইতালির লি’মাজিন রিত্রোভাতা ল্যাবরেটরি। অর্থায়নে সহযোগিতা করেছে ভার্গিস কুরিয়েনের গড়া প্রতিষ্ঠান গুজরাট কো-অপারেটিভ মিল্ক মার্কেটিং ফেডারেশন লিমিটেড। ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনে সংরক্ষিত প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিপ্রাপ্ত ৩৫ মিলিমিটার প্রিন্ট থেকে শব্দ ডিজিটালে রূপান্তর করা হয়েছে।

১৯৭৭ সালে ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র এবং সেরা চিত্রনাট্যকার (বিজয় টেন্ডুলকার) স্বীকৃতি জিতেছে ‘মন্থন’। ভারত থেকে অস্কারে পাঠানো হয় এই ছবি। এতে ‘মেরো গাম কথা পারে’ গানের জন্য ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডে সেরা গায়িকা বিভাগে পুরস্কার জয় করেন প্রীতি সাগর।

‘মন্থন’ ছবির দৃশ্যে স্মিতা পাতিলা
;