যমজ কিন্তু দুই দেশের নাগরিক 



টোকন ঠাকুর, অতিথি লেখক
ছবিতে ঋত্বিক ঘটকের জমজ বোন প্রতীতি দেবী, টোকন ঠাকুর ও পেছনে আরমা দত্ত

ছবিতে ঋত্বিক ঘটকের জমজ বোন প্রতীতি দেবী, টোকন ঠাকুর ও পেছনে আরমা দত্ত

  • Font increase
  • Font Decrease

“৪ নভেম্বর ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিন। তিনি ১৯২৫ সালে জন্মেছেন পুরোনো ঢাকার হৃষীকেশ দাস রোডের এক বাড়িতে এবং ঋত্বিকের যমজ প্রতীতি দেবী ঘটক জন্মেছেন পাঁচ মিনিটের অনুজ সহোদরা হিসেবে। তাঁদের বাবা সুরেশ ঘটক ছিলেন তৎকালীন ঢাকার ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট। সুরেশ ঘটকের প্রথম সন্তান ছিলেন সাহিত্যিক মনীশ ঘটক। মনীশ ঘটকের জন্ম ১৯০০ সালে। মধ্যে আরো কয়েক সন্তানের পর বা ২৫ বছর পর এই যমজ সন্তানের জন্ম।  যমজের ডাকনাম ভবা ও ভবি। ভবা হচ্ছেন ঋত্বিক, ভবি হচ্ছেন প্রতীতি দেবী।” - তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপের সুযোগ হয়েছে কবি ও নির্মাতা টোকন ঠাকুর-এর। সেইসব আলাপের প্রসঙ্গ ও সূত্র ঋত্বিক ঘটকই ছিলেন। বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নির্মাতা ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিনে বার্তা ২৪.কমের জন্য টোকন ঠাকুরের বিশেষ রচনা প্রকাশিত হলো।

দেশভাগের পর নদী সীমান্তরেখা হয়ে গেছে। নগর কোলকাতার কয়েকজন থিয়েটারকর্মী এসেছে নদীর পাড়ে, যার ওপারেই বাংলাদেশ বা তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান। থিয়েটার দলের অস্থির ও বিষণ্ণ নির্দেশক, যুবক ভৃগু তাকিয়ে থাকে বাংলাদেশের গ্রামটির দিকে। দলের নতুন সদস্যা যুবতী অনুসূয়াকে ভৃগু বাংলাদেশের গ্রামটিকে দেখিয়ে বলে, 'ওই যে আমাদের গ্রাম, ওখানেই আমাদের বাড়ি ছিল কিন্তু কোনোদিন আমি আর ওখানে যেতে পারব না।' চরম এক হতাশার অতল থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলে তারা দেশভাগের যাতনার আখ্যান বলে দেয় কয়েকটি সংলাপে_আমরা ঋত্বিক কুমার ঘটকের 'কোমলগান্ধার' ছবিতে এরকমই দেখতে পাই। 

পুরো 'কোমলগান্ধার' ছবিতেই দেখি দেশভাগ এপিক হয়ে ওঠে। দেশভাগ হয়েছিল ১৯৪৭ সালে। 'সুবর্ণরেখা'তেও দেখি বাড়ি ছেড়ে যাওয়া ভাইবোনের গল্প, ছোট্ট বোন সীতা ও তার ভাই অভিরামের গল্প। ভাইবোন হাঁটছে নদীপাড়ের বালিয়াড়ি ধরে, বাড়িহীন ভাইবোন হাঁটছে। সীতা হাঁটতে হাঁটতেই প্রশ্ন করে, 'দাদা, আমাদের নতুন বাড়িটা কোথায়?' ভাই উত্তর দেয়, 'ওই তো, সামনেই।' একটি নতুন বাড়ির সন্ধানে তারা নদীপাড়ের বালিয়াড়ি ধরে হাঁটতে থাকে। দেশভাগে তাদের বাড়িটা হারিয়ে যাওয়াই তারা বাড়ি হারিয়েছে। নতুন দেশের সীমানার ভেতর শরণার্থীদের জন্যে গড়ে ওঠা যে নবরতন কলোনি, আপাতত কি সেখানে আশ্রয় মিলবে? সেই শরণার্থী শিবিরের কলোনিই তাদের নতুন বাড়ি? এরকমটি দেখতে পাই ঘটকের 'সুবরণরেখা'য়।

আমরা জানি, সুবর্ণরেখা একটি নদীর নাম।  ঋত্বিকের শেষ ছবি 'যুক্তি তক্কো আর গপ্পো'তে যেমন দেখা যাবে পূর্ব বাংলা থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা এক উদ্বাস্তু তরুণী বঙ্গবালাকে, যাকে দেখে প্রোটাগনিস্ট নীলকণ্ঠ বাগচী, যে কিনা মাতাল, যে কিনা তার নিজের ভাষায় 'আমি হচ্ছি কোলকাতার ব্রোকেন ইন্টেলেচুয়াল বা ভাঙা বুদ্ধিজীবী', সেই নীলকণ্ঠ বাগচী, আর  দিশেহারা তাড়া খাওয়া মেয়েটি তার ঘরে হন্তদন্ত হয়ে ঢুকে পড়লে তিনি মদিরাচ্ছন্ন অবস্থায় জিজ্ঞাসা করেন, 'কে, কে ওখানে?' মেয়েটি ঘরে ঢুকে আশ্রয় প্রার্থনা করলে নীলকণ্ঠ বাগচী বলেন_'আশ্রয়? আশ্রয়ের সন্ধানে নীরহাড়া আরেকটি পাখি, যে পাখির নাম, বাংলাদেশ।' 

ঋত্বিক ঘটক

স্মর্তব্য, মাতাল লেখক নীলকণ্ঠ বাগচী বা ব্রোকেন ইন্টেলেচুয়াল ক্যারেক্টারে অভিনয় করেছেন  স্বয়ং পরিচালক ঋত্বিক কুমার ঘটক। ১৯৭৪ এ নির্মিত এটাই ঘটকের শেষ ছবি, এরপর ১৯৭৬ এ তিনি মাত্র ৫১ বছর বয়সে মারা গেলেন কোলকাতায়। আর দেশভাগের জ্বলন্ত দলিল তাঁর 'মেঘে ঢাকা তারা'। 'মেঘে ঢাকা তারা'তে ঋত্বিক ঘটক দেশভাগের যন্ত্রণাকে আরো বিস্তারিত এঁকেছেন  আরো মহিমা দিয়ে, যেখানে ক্ষতটা আরো বেশি দৃশ্যমান হতে দেখি আমরা। সম্পূর্ণ করা ঘটকের বাকি কাজ বলতে 'নাগরিক', যেটি তার প্রথম কাজ , ১৯৫২ তে নির্মিত কিন্তু কী অপার দুর্ভাগ্য যে, ১৯৭৬ সালে পরিচালকের মৃত্যুর পরের বছর ১৯৭৭  সে ছবি মুক্তিপ্রাপ্ত।

এ ছাড়া 'অযান্ত্রিক' 'বাড়ি থেকে  পালিয়ে' ও কোলকাতা থেকে  বাংলাদেশে এসে নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মালোপাড়ার ছেলে অদ্বৈত মল্ল বর্মণের একমাত্র উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত 'তিতাস একটি নদীর নাম।' আর বাকি কাজ কিছু তথ্যচিত্র বা অসমাপ্ত খণ্ড খণ্ড কিছু প্রয়াস_এই হচ্ছেন ঋত্বিক ঘটক। এককথায় দেশভাগের এপিক নির্মাণে ঋত্বিক ঘটকই এক জ্বলজ্যান্ত আর্কাইভ।


এই ২০১৯ এ এসেও আমরা অনুভব করি, ঋত্বিক কুমার ঘটক কতখানি আলোচ্য, ভাবোচ্য, যথেচ্ছ তর্ক-বিতর্কের অনুঘটক। এবং এটা  এতদিনে প্রকাশ্য হয়ে গেছে যে, শিল্পকলার নানাবিধ মাধ্যমে দেশভাগ কমবেশি ফোকাস হয়ে থাকলেও, সবচেয়ে বেশি ধরা পড়েছে ঋত্বিক ঘটকের চোখে, তাঁর ছবিগুলোর ভেতর দিয়ে। এতটা আর কেউই ধরে রাখতে পারেননি গান্ধি-জিন্নাহ-মাউন্ট ব্যাটেন কারসাজিতে হয়ে যাওয়া দেশভাগকে। ঋত্বিক পেরেছেন বা একথাও বলা চলে,তিনি আত্মগত এক দায়বদ্ধতায় পারতে বাধ্য হয়েছেন নিজের জীবন ব্যেপে, যে জীবন বড্ড স্বল্পায়ুর এবং ক্ষত-বিক্ষত, রক্তাক্ত।

৪ নভেম্বর ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিন। তিনি ১৯২৫ সালে জন্মেছেন পুরোনো ঢাকার হৃষীকেশ দাস রোডের এক বাড়িতে এবং ঋত্বিকের যমজ প্রতীতি দেবী ঘটক জন্মেছেন পাঁচ মিনিটের অনুজ সহোদরা হিসেবে। তাঁদের বাবা সুরেশ ঘটক ছিলেন তৎকালীন ঢাকার ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট। সুরেশ ঘটকের প্রথম সন্তান ছিলেন সাহিত্যিক মনীশ ঘটক। মনীশ ঘটকের জন্ম ১৯০০ সালে। মধ্যে আরো কয়েক সন্তানের পর বা ২৫ বছর পর এই যমজ সন্তানের জন্ম।  যমজের ডাকনাম ভবা ও ভবি। ভবা হচ্ছেন ঋত্বিক, ভবি হচ্ছেন প্রতীতি দেবী।

টোকন ঠাকুর ও প্রতীতি দেবি। ছবি: শাশ্বত মিত্র

প্রতীতি দেবী অর্থাৎ ভবি এখনো আমাদের এই শহরেই বাস করছেন, সিদ্দেশ্বরীতে, যার বয়স আজ ৯৪। ভবা বা ঋত্বিক ঘটক মাত্র ৫১ তে চলে না গেলে তিনিও থাকতেন কোলকাতায়। কী অদ্ভুত কথা, নাহ? যমজ তাঁরা, ঢাকায় জন্মেছেন। কিন্তু দেশভাগের ফলেই একজন কোলকাতার নাগরিক হয়ে বেঁচে ছিলেন এবং একজন ঢাকার নাগরিক। এমনটিও খুব সচরাচর নয়। তাই দেশভাগ মানে ঋত্বিক কুমার ঘটকের কাছে যমজ ভাইবোনের ভাগ হয়ে যাওয়া। উল্লেখ করি, ঋত্বিক ঘটকের কয়েক ভাইয়ের মধ্যে সবচেয়ে যিনি বড় ছিলেন, সেই মনীশ ঘটকের মেয়ে হচ্ছেন মহাশ্বেতা দেবী। মহাশ্বেতা দেবীর ডাকনাম খুকু। খুকু, ভবা ও ভবি বয়সের হিসেবে কাছাকছি তাদের সময়ে জন্ম।

মহাশ্বেতা দেবীর স্বামী ছিলেন নাট্যকার ও অভিনেতা বিজন ভট্টাচার্য, সেই চল্লিশের দশকের গণ্নাট্য আন্দোলনের পুরোধা একজন। ঋত্বিকের ছবিতেও তাঁকে দেখি আমরা। বিজন বাবু ছিলেন রাজবাড়ি-ফরিদপুরের লোক। বিজন ভট্টাচার্য ও মহাশ্বেতা দেবীর পুত্র কবি ও কথাসাহিত্যের এক নতুন আগুন নবারুণ ভট্টাচার্য, আমরা পড়েছি তাঁর কবিতা, 'এই ম্রত্যু উপত্যকা আমার দেশ না, এই জল্লাদের ভূমি আমার দেশ না।' পড়েছি ও দেখেছি তাঁর 'হারবারট' 'ফ্যাতাড়ু।' পড়েছি 'অ্যাকুরিয়াম'। ২০০২  সালে সার্ক রাইটার্স ফাউন্ডেশন কার্যক্রমের আওতায় সাহিত্য আকাদেমির আমন্ত্রণে 'তরুণ কবি' অভিধায় আমি প্রথমবারের মতো কোলকাতায় গিয়েছিলাম আমি আর শাহনাজ মুন্নী।  আকাদেমি থেকে আমাদের একজন গাইডের সঙ্গে ট্যাক্সিতে করে পাঠানো হয় মহাশ্বেতা দেবীর বাসায়, আড্ডার জন্যে। কাঁচা পাকা দাঁড়ি গোঁফের সেই গাইড লোকটি  ট্যাক্সিতে বসে তো টেরই পেতে দেননি যে, তিনিই কবি নবারুণ ভট্টাচার্য। পরে, গলফ গ্রিনে মহাশ্বেতা দেবীর তৎকালীন বাসায় যাওয়ার পর সব পরিষ্কার হলো যে, তিনি বিজন ভট্টাচার্যের ছেলে বা ঋত্বিক ঘটকের ভাগ্নেও বটে।


কয়েকবছর আগে, নবারুণ দা আগে এবং মহাশ্বেতা দি পরে চলে গেছেন। তাঁদের প্রয়াণ নিয়ে ভবি বা ঋত্বিক ঘটকের যমজের সঙ্গে মানে প্রতীতি দি'র সঙ্গে সিদ্দেশ্বরীতে বসে কথাও হয়েছে, সেই কথা বলার সময় প্রতীতি দি বলছিলেন, 'শোন, দীর্ঘ আয়ু অভিশাপের মতো_এ কথা রবীন্দ্রনাথ বলেছেন।' আমি বললাম, 'রবীন্দ্রনাথ ঠিক বলেননি।' দিদি বললেন, 'কেন?' বলেছি, 'তাহলে ভবার মতো তোমার সঙ্গেও আমাদের দেখা হতো না।' প্রতীতি দেবী বললেন, 'এই যে তোমরা আসো, আমার জন্যে আসো? আসো তো ভবার জন্যে, ঋত্বিকের জন্যে, ওর কাজ ওর ছবিগুলোর জন্যে আসো। নইলে আর আমি কে? বড়জোর ধীরেন দত্তের পুত্রবধু। তাই না?'

১৯৫৪ সালে অবিভক্ত পাকিস্তানের যুক্তফ্রন্ট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, তার আগে ১৯৪৮ এ পাকিস্তানের মাটিতে বসে বাংলা ভাষার প্রশ্নে ধীরেন বাবু তার যে অবস্থান ব্যক্ত করেছিলেন, পরে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চ লাইটের পর ২৯ মার্চ কুমিল্লায় তাঁর বাড়িতে সেদিনের পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভাষা সৈনিক ও ভারতবর্ষের সুবিদিত রাজনীতিবিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের উপরে অমানবিক নির্যাতন চালায় এবং পরবর্তী দুই মাসের মধ্যেই তিনি মারা যান। সন্দীপ দত্ত তার পুত্র, সন্দীপ দত্তের বধূই প্রতীতি দেবী ঘটক, আমাদের প্রতীতি দি বা ঋত্বিক ঘটকের যমজ। প্রতীতি দি মহাশ্বেতা দেবীকে নিয়ে একদিন বললেন, 'খুকু অংকে কাঁচা। আমার অংক খাতা দেখে দেখে লিখত।' 

 'কাঁটা' চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য। ছবি: হোসেইন আতাহার

আমি নানা বিষয়েই দিদির সঙ্গে তর্কবিতর্ক করতাম। কিন্তু প্রতীতিও চলে গেলেন দুবছর আগে।  প্রতীতি দেবীর ঘরে নানান দেশ থেকে যমজ ভাইবোনের ছোটছোট পুতুল পুতুল ভাস্কর্য, যেগুলো তাঁর মেয়ে ( ১৯৭১ এ রোকেয়া হলের ছাত্রনেত্রী ও বর্তমানে সরকারের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সাংসদ)_ আরমা দত্ত এনে দিয়েছেন। আরমা দত্ত আর রাহুল দত্ত, ভাইবোন_প্রতীতি দেবীর সন্তান, ঋত্বিক ঘটকের ভাগ্নে-ভাগ্নি। রাহুল দা প্রায়ই আমাকে ফোন করেন, 'টোকন দা, আজ ডেইলি স্টারে ছোট্মামার উপরে একটা আর্টিকেল ছেপেছে, পড়েছো?'

ছোটমামা বলতে ঋত্বিক ঘটক। রাহুল দার মায়ের যমজ ভাই। যাদের জন্ম হয়েছিল ঢাকায়, সেই ১৯২৫ সালে। আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার, ১৯২৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা করতে এসে দুপুরবেলার আহার-নিমন্ত্রণে আতিথ্য নিয়েছিলেন তদানীন্তন ঢাকার ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট সুরেশ ঘটকের হৃষীকেশ দাস রোডের বাড়িতে।  কথায় কথায় একদিন প্রতীতি দি'কে  বললাম, ' তোমার আর ঋত্বিকের বয়স তখন মাত্র ১ বছর।?'

প্রতীতি দি বললেন, 'হ্যা।'

বললাম, 'তাহলে তো রবীন্দ্রনাথ তোমাদের কোলেও নিয়েছেন।'

দিদি বললেন, 'তা তো নিতেই পারেন।'

বললাম, 'সেকারণেই, ধরো কোলে নেওয়ার পর তোমরা রবীন্দ্রনাথের গায়ে হিসুও করে দিতে পারো, তাই না?

এক পশলা হাসাহাসি হয় আমাদের।  আমরা সেকাল-একাল একাকার করে ফেলি এবং প্রতীতি দি'র সঙ্গে আড্ডায় সেটা অনায়াসেই সম্ভব। দিদির লেখা একটি বই আছে, 'ঋত্বিককে শেষ ভালবাসা।' বললাম, দিদি, 'সুরমা ঘটকের বইও পড়েছি।' দিদি বললেন, শ্রীহট্টের মেয়েরা তো ভালো না। ভবাকে ঠিক মতো বুঝতেই পারেনি। ভবাকে জ্বালিয়ে মেরেছে। তবে ওখানকার আলী দা আসতেন আমাদের বাসায়, আলী দা ভালো।'

বললাম, 'আলী দা কে?'

দিদি বললেন,' সৈয়দ মুজতবা আলী,পড়োনি আলী দা'র লেখা?'

'পড়েছি।'

দিদি একদিন বললেন, 'আমার মৃত্যুর পর আর ডেডবডি দেখতে এসো না।'

বললাম, 'কেন?'

প্রতীতি দি বললেন, ' জীবদ্দশার চেহারাটাই মনে থাকবে তাহলে, আমি সেটাই চাই।'

কথায় কথায় কত কথা হয়। আমাদের নির্মাণাধীন ছবি 'কাঁটা'র টিম নিয়ে গেছি দিদির সঙ্গে আড্ডা দিতে। সেদিন  দিদির মেয়ে আরমা দি'ও  এক সন্ধ্যে পুরোটা সময় আমাদের সঙ্গে আড্ডায় যুক্ত থাকলেন। একসময় দিদি বললেন, 'আচ্ছা, এখন ঢাকায় 'বাংলা' কোথায় পাওয়া যায়, জানো? মরার আগে একদিন 'বাংলা' খাব। 'বাংলা' ভাবলেই ভবার কথা মনে পড়বে। একসঙ্গে মাত্র ৫ মিনিটের ব্যবধানে মায়ের পেট থেকে জন্মালাম, ও কত আগেই আমাকে রেখে চলে গেল।'

চুপ করে আছি, ঠিক কি বলব ভাবছিলাম, তখন দিদিই ফের বললেন, 'সাঈদ জানে, কোথায় পাওয়া যায়।'

বললাম, 'কোন সাঈদ?'

'ওই যে, হামিদুরের ভাই সাঈদ। হামিদুর তো আর্টিস্ট। আর সাঈদ নাটক লেখে।' আর্টিস্ট হামিদুর রাহমানের ভাই নাট্যকার সাঈদ আহমেদের কথা বলছেন দিদি। আমি জানাইনি, সাঈদ আহমেদ মারা গেছেন। 'তিতাস একটি নদীর নাম' উপন্যাসটি পড়ে সেরাতে কাগজ ছিল না বলে ঋত্বিক যে তাঁর একটি শাদা শাড়িত্র উপরেই চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করেন, দিদি বলেন সে কথা। কথায় কথা বাড়ে, কথার শুরু আছে, শেষ নেই। নেই?

আছে। কথারও নিশ্চয়ই কোনো স্টেশন আছে, যেখানে কথারা একটু দাঁড়ায়, কথা একটু এদিকওদিক চায়। হয়তো তখন আরো কিছু এসে ফের যুক্ত হয়, দাঁড়িয়ে পড়া কথার পাশে। ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে আমাদের কথা আর শেষ হতেই চায় না। কথা আবার নতুন শক্তিতে চলতে থাকে। কথা চলতে থাকে 'কোমল গান্ধার' ছুঁয়ে, কথা আমাদের 'সুবর্ণরেখা' নদীর ধারে নিয়ে যায়। সেখানে নিশ্চয়ই একটি নতুন বাড়ি পাওয়া যাবে। আমাদের কথারা সেই নতুন বাড়িতে উঠে পড়বে! আমাদের কথারা দেশভাগের এতবছর পরেও ঋত্বিক কুমার ঘটকের ছবির ভেতর দিয়ে ধাবমান থেকে যাচ্ছে। কথার সঙ্গে যাচ্ছি আমরাও। আমরা কারা? আমরাও কি কিছু কথা হয়ে থেকে যাচ্ছি,  নদীর মতো বেঁকে যাচ্ছি, স্বপ্ন-টপ্ন রেখে যাচ্ছি? কার জন্যে রেখে যাচ্ছি?

প্রি-প্রোডাকশনকালীন ভবা-ভবির জন্মদিনে কাঁটার নির্মাণ দলের কয়েকজনকে নিয়ে গিয়েছিলাম সিদ্দেশ্বরীর সেঞ্চুরি টাওয়ার-এ। বহুতল অ্যাপার্টমেন্টের একটি ফ্লোরে থাকতেন দিদি, মেয়ে আরমা দত্ত ও ছেলে রাহুল দত্তের সঙ্গে। কথা ছিল, কাঁটার প্রিমিয়ার প্রদর্শনীতে তিনি উপস্থিত থাকবেন আমাদের সঙ্গে। এরপর যখন আমরা নারিন্দায় শুটিং করি, একদিন দিদিই ফোন করে জানালেন, 'বাথরুমে পড়ে পা ভেঙে গেছে, হাসপাতালে ছিলাম,  এখন হুইলে চলছি। বলছিলাম না, দীর্ঘ আয়ু অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়?' আমাদের ছবি কাঁটার শুট হলো। নারিন্দা থেকে ফিরে এলাম। দিদি চলে গেলেন। প্রায় ছিয়ানব্বুই বছরের জীবন। ঋত্বিক বা ভবা চলে গেছেন মাত্র ৫১ তেই, সেই ১৯৭৬ সালে। কাঁটা হয়তো আসন্ন শীতের শেষে এক বসন্ত মাখা দিনে মুক্তি পাবে। দিদিকে দেখাতে পারব না_ এই শোচনা থেকে যাবে মনে। 

ভবাকে জীবদ্দশায় দেখিনি, ভবিকে দেখেছি, তাঁর কাছে গেছি। হ্যাঁ, সত্য, প্রথমত ঋত্বিক ঘটকের জন্যে যে টান পাই, সেই টানে গেছি। শেষত, প্রতীতি দি'র জন্যেই গেছি। অসীম শ্রদ্ধা ছিল, আছে, থাকবে। একটা ভালোবাসাও অনুভব করেছি। একদিন এ নিয়েও কথাও বলেছি, বললাম, 'দিদি, তোমার অল্প বয়সে দেখা হলে একটা ঝুঁকিই নিতাম।' 

'কিসের ঝুঁকি?'

'বোঝো না কিসের ঝুঁকি?'

দিদি ভেংচি কাটলেন, 'এ এ... আর ব্রিটিশ সরকারের ম্যাজিস্ট্রেট সুরেশ ঘটক তোমারে ছেড়ে দিত?'

ঢাকায় জন্ম নিলেও ঋত্বিক ঘটকের বাড়ি ছিল রাজশাহী। পদ্মাপাড়ে। রাজশাহী হলেও আদিতে তাঁরা পাবনার লোক। পাবনায় কি তাঁরা কোনোকালে বাগচী ছিলেন? এই তো আবার মনে পড়ল নীলকণ্ঠ বাগচীর কথা, যিনি 'যুক্তি-তক্কো আর গপ্পো'তে বলছেন, 'আমি হচ্ছি কোলকাতার ব্রোকেন ইন্টেলেকচুয়াল।' যিনি সারাক্ষণ মদিরার ঝুলন মায়ায় দুলছেন, যিনি খালি বোতল্টা রাস্তায় ছূড়ে দিয়ে বলছেন,  'ওহ! কী উন্মুক্ত এই হাওয়া, তরী অকুলে ভিড়ছে।'

আবার সেই কথা এসে গেল। আমার প্রথম প্রজেক্ট 'ব্ল্যাকআউট' যা অধ্যাবধি আনরিলিজড এবং 'ব্ল্যাকআউট' টাইটেলে উৎসর্গ করা হয়েছে ঋত্বিক কুমার ঘটক ও আকিরো কুরোসাওয়াকে। ঘটকের একেকটি ছবি আমি কতবার দেখেছি ও দেখি, হিসেব নেই। সিনেমার আড্ডায় কতবার ঋত্বিক ঘটক প্রসঙ্গক্রমে আসেন, কতভাবে আসেন, কি ঢাকায় কি কোলকাতায়_ হিসেব নেই। সত্যি, এত অনিবার্য তিনি! বিস্ময় ফুরোয় না। বিস্ময় এসে দাঁড়িয়ে থাকে দরজায়। বিস্ময় এসে চোখের মধ্যে বাসা বোনে। কেন? এত শক্তি তাঁর?

যন্ত্রণাই কি শক্তির উৎস হয়ে আছে? দেশভাগই কি নির্মাণ  করেছে এই নির্মাতাকে? ভালবাসাই কি প্রবল প্রেরণা হয়ে কাজ করেছে? আমাদের কথা চলতেই থাকে, আমরাও চলতে থাকি কথার সঙ্গে, যেন কথার সঙ্গে আমরা একটি নতুন বাড়িতে পৌঁছুব। হঠাৎ দেখি, এক বৃদ্ধ নদীপাড়ে বসে খোলাগলায় গান ধরেছেন_'এপার পদ্মা, ওপার পদ্মা, মধ্যে জাগনার চর, তারই  মাঝে বইসা আছেন শিবু সওদাগর...'

আমাদের কথারা নদীর মতো, বহে বহে যায়। সেই নদী ভাগ হয়ে যায়। নদী কী করে ভাগ হয়?  যমজের জন্যে মাতৃজঠর কি করে ভাগ হয়? মনে হয়, আবার কথার সঙ্গে আমাদের হণ্টন শুরু  হলো। আমরা কথার সঙ্গে আবার হাটতে থাকি, আমাদের ধাবমান পা, ধাবমান আমাদের মন, আমরা কোথায় যাচ্ছি? কথা আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?

   

পঁচিশে বৈশাখে স্বপ্নীলের অর্ঘ্য ‘ভালোবেসে সখী’র গানচিত্র



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
‘ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে’ গানচিত্রে স্বপ্নীল সজীব

‘ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে’ গানচিত্রে স্বপ্নীল সজীব

  • Font increase
  • Font Decrease

তরুণ রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী স্বপ্নীল সজীব বেশ আগে থেকেই ছক ভেঙে বের হতে চেয়েছেন। রবীন্দ্রনাথের গান শুধু নির্দিষ্ট ঢংয়ে উপস্থাপন করতে হবে সেটি তিনি মানতে নারাজ। রবীন্দ্র সংগীতের ভেতরের আবেদন ঠিক রেখে তাকে আধুনিকভাবে উপস্থাপনের প্রচেষ্টা সব সময়ের জন্য স্বপ্নীলের।

তারই ধারাবাহিক নব প্রয়াস গুরুদেবের অন্যতম জনপ্রিয় গীত ‘ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে’র গানচিত্র। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্ম জয়ন্তী অর্থাৎ পঁচিশে বৈশাখে তার প্রতি এটি দুই বাংলায় পরিচিতি পাওয়া স্বপ্নীল সজীবের অর্ঘ্য নিবেদন।

‘ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে’ গানচিত্রে স্বপ্নীল সজীব

স্বপ্নীল সজীবের এই গানচিত্রটি তার অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পেলেও শোনা যাবে সকল আন্তর্জাতিক অডিও স্ট্রিমিং প্লাটফর্মে। গানে নলিনী চরিত্রে স্বপ্নীলের সাথে থাকছেন মডেল ড. মিয়ামী খুলদ। গানচিত্রটি পরিচালনা করেছেন ইয়ামিন এলান।

স্বপ্নীল সজীবের ভাষ্য, ‘প্রেমের কবি রবীন্দ্রনাথ তার জীবনকালে রচনা করেন অসংখ্য প্রেমের কবিতা ও গান। যার মাঝে লুকিয়ে আছে প্রেম, বিরহ, ব্যাকুলতা আর নি:সঙ্গের এক মহাউপাখ্যান। তার লেখা প্রতিটি শব্দই যেন আমার-আপনার কথাই বলে, পাওয়া না পাওয়ার গোলমেলে হিসাব স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায়। যতই গানে, সংগীতায়োজনে আধুনিকতা আসুক না কেন, রবীন্দ্রসংগীত টিকে থাকবে আপন মহিমায়। গুরুদেবের জন্মদিনে তার এই গান আমার বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি এই গানের মাধ্যমে।’

‘ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে’ গানচিত্রে মিয়ামী খুলদ

স্বপ্নীল সজীব রবীন্দ্রনাথের গানের কারণে বিশেষ সমাদৃত হলেও বাংলা সংগীতের নানা ধারার গান গেয়ে থাকেন। দেশের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, দুবাই, ব্রুনাই, মরোক্কো, ইরান, মালেশিয়া, নেপাল ও প্রতিবেশী দেশ ভারতে সংগীত পরিবেশন করে সুনাম কুড়িয়েছেন।

গানে হাতেখড়ি লুৎফুন নাহার লতার কাছে। এরপর রবীন্দ্র সংগীতে তালিমা নিয়েছে ড. রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও ওয়াহিদুল হকের কাছে। এছাড়া তাকে বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী হিসেবে অভিজ্ঞানপত্র দিয়ে সম্মান প্রদান করেছে ইউএসএ’র সিনেটর, লস এঞ্জেলসের মেয়র, ভারতীয় হাই কমিশন, ইউ এস অ্যাম্বাসি, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রী অরবিন্দ ইন্সটিটিউট অব কালচার, ইন্দিরা গান্ধি কালচারাল সেন্টার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আয়োজিত, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে তিনি স্বর্ণপদক পান।

‘ভালোবেসে সখী নিভৃত যতনে’ গানচিত্রে স্বপ্নীল সজীব
;

শাহরুখ খান-সঞ্জয় দত্তের কাতারে শাকিব খান!



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সঞ্জয় দত্ত, শাকিব খান ও শাহরুখ খান

সঞ্জয় দত্ত, শাকিব খান ও শাহরুখ খান

  • Font increase
  • Font Decrease

বলিউডের শাহরুখ খান, সঞ্জয় দত্তসহ বলিউডের প্রথম সারির অনেক তারকাই আরব আমিরাতের কালচারাল মিনিস্ট্রি থেকে গোল্ডেন ভিসা পেয়েছেন। বাংলাদেশের প্রথম শিল্পী হিসেবে এই ক্যাটাগরিতে গোল্ডেন ভিসা পেলেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। সোশ্যালে সেই রিকমেন্ডেশন লেটার শেয়ার করে এমনটাই জানালেন চলচ্চিত্র নির্মাতা অনন্য মামুন।

এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, প্রথম বারের মতো ক্রিয়েটিভ কালচার ক্যাটাগরিতে আরব আমিরাতের কালচারাল মিনিস্ট্রি থেকে গোল্ডেন ভিসার রিকমেন্ডেশন পেল মেগা সুপারস্টার শাকিব খান।

সেই সঙ্গে তিনি আরও লিখেন, আরব আমিরাত সাধারণত কিছু বিশেষ ক্যাটাগরিতে গোল্ডেন ভিসা দিয়ে থাকে। ব্যবসা ও এ ক্যাটাগরি জব ছাড়া শুধুমাত্র সরকারিভাবে রিকমেন্ডেশন দিয়ে ট্যালেন্টেড পেওনির হিসাবে ভিন্ন দুইটা ক্যাটাগরিতে তারা সম্পূর্ন বিনা খরচে সম্মান সরূপ গোল্ডেন ভিসা দিয়ে থাকে।

শাকিব খান

বিভিন্ন সময় বলিউডের অনেক সেলিব্রিটিকে ক্রিয়েটিভ কালচারাল ক্যাটাগরিতে গোল্ডেন ভিসা দেওয়ার খবর গণমাধ্যমে দেখা যায়। বলিউড বাদশা শাহরুখ খান, সন্জয় দত্তসহ অনেক বড় তারকারা ইতিমধ্যেই এই ক্যাটাগরিতে গোল্ডেন ভিসা পেয়েছেন। এবার সেই একই ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো কালচারাল মিনিস্ট্রি থেকে রিকমেন্ডেশন লেটার পেলেন বাংলাদেশের একমাত্র মেগা সুপারস্টার শাকিব খান।

এ বিষয়ে আমার টিম দিন রাত কাজ করেছে। সম্প্রতি বাংলা ভাষার সিনেমাকে বিশ্বের দরবারে বড় আকারে তুলে ধরার যে মিশন নিয়ে আমার টিম কাজ করছে যাচ্ছে, তারই ক্ষেত্র তৈরী করতে এটি একটা মাইলফলক।

শাকিব খান

এখন বাকি সব শিল্পীদের গোল্ডেন ভিসার জন্য আবেদন করবো। আমরা বাংলাদেশি এটাই আমাদের বড় পরিচয়।

;

কার অপেক্ষায় পরীমনি, ইঙ্গিত দিলেন পোস্টে!



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
পরীমনি /  ছবি : ফেসবুক

পরীমনি / ছবি : ফেসবুক

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকাই সিনেমার আলোচিত-সামলোচিত নায়িকা পরীমনি সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুণ সরব। মনের ভাব একেবারে খোলামেলাভাবে প্রকাশ করার জন্য ফেসবুকই তার সবচেয়ে নির্ভরতার জায়গা।

জীবনের ছোট বড় ঘটনা, দুঃখ বেদনার কথা, সুখস্মৃতি কিংবা প্রাপ্তির উদযাপন- সবটাই তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে ফলোয়ারদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেন। আর তার প্রতিটি পোস্ট নিয়েই বেশ আলোচনার জন্ম হয়। কারণ এই নায়িকার ফেসবুকে রয়েছে দেড় কোটি অনুসারী!

পরীমনি /  ছবি : ফেসবুক

তেমনি একটি ফেসবুক পোস্ট আজ শেয়ার করেছেন এই নায়িকা। ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ পরীকে দেখা যাচ্ছে ছবিতে। আর ক্যাপশনে তিনি যা লিখেছেন, তাতে যেন নতুন কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছে। কথাগুলো পড়ে মনে হচ্ছে পরী কারও অপেক্ষায় বসে আছেন। সে না আসলে তার দিনগুলো যেন ধূসর, রঙহীন।

পরী ধার করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তীর কালজয়ী একটি গানের তিনটি লাইন। লিখেছেন, ‘তুমি আসবে বলেই আকাশ মেঘলা, বৃষ্টি এখনো হয়নি/ তুমি আসবে বলেই কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো ঝরে যায়নি / তুমি আসবে বলেই...’।

কিন্তু কার জন্য নায়িকার এ ব্যাকুলতা সেকথা তিনি উল্লেখ করেননি।

 

পরীমনি /  ছবি : ফেসবুক

এদিকে, প্রথমবার কলকাতার ছবিতে কাজ করলেন পরীমনি। দেবরাজ সিনহা পরিচালিত ‘ফেলুবকশী’ নামে সেই সিনেমার শুটিং গত সোমবার শেষ করেছেন তিনি।

কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে পরী বলেন, ‘যে কোনো নতুন ছবি, নতুন গল্প, নতুন চরিত্র, নতুন জায়গা, নতুন সহশিল্পী কিংবা নতুন পরিবেশে একধরনের আনন্দ নিয়েই কাজ শুরু হয়। তবে সেই কাজ ঠিকঠাক শেষ করতে পারলে আনন্দ আরও দ্বিগুণ হয়। নতুন জায়গা হলেও আমরা একই ভাষাভাষীর। শুধু মাঝখানে একটা কাঁটাতারের দেয়াল। ফলে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সময় লাগেনি। প্রায় ১৪ দিন কাজ করলাম, পার্থক্য শুধু একটা জায়গায়, আমরা বেশি আবেগপ্রবণ, তারা বেশি পেশাদার।’

পরীমনি /  ছবি : ফেসবুক

 

;

গুরুতর অসুস্থতায় সব কনসার্ট বাতিল নিক জোনাসের



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
স্টেজেই নিজেকে খুঁজে পান নিক জোনাস

স্টেজেই নিজেকে খুঁজে পান নিক জোনাস

  • Font increase
  • Font Decrease

গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন গায়ক ও বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার স্বামী নিক জোনাস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও আপলোড করে নিজেই অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন নিক। সঙ্গে জানালেন, ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়েছে তার। ফলে আগামী কয়েকটা কনসার্টে তিনি অংশ নিতে পারবেন না। ভিডিওতে অনুরাগীদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন এই গায়ক।

ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে নিক জোনাস বলেন, ‘খুব একটা খুশির খবর দেব না আপনাদের। কেননা কয়েক দিন ধরে আমার গলা দিয়ে আওয়াজ বের হচ্ছে না। গলা প্রচণ্ড ব্যথা। যত দিন এগোচ্ছে, গলার অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। শরীরে জ্বর ও ব্যথা আছে। সত্যি খুব খারাপ অবস্থা যাচ্ছে। ডাক্তার বলেছেন কিছুদিন বিশ্রামে থাকতে। তাই কনসার্ট আপাতত বাতিল করলাম।’

 নিক জোনাসের স্টেজ পারফরমেন্স দেখার মতো বিষয়

কয়েক মাস আগে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার সঙ্গে মুম্বাই এসেছিলেন নিক জোনাস। মুম্বাইয়ের লোলাপালোজায় পারফর্ম করেছিল নিক ব্রাদার্স। পারফরম্যান্সে মেতে উঠেছিল গোটা মুম্বাই।

উল্লেখ্য, নিকের সঙ্গে ২০১৮ সালে সম্পর্কে জড়ান প্রিয়াঙ্কা। অল্প সময়েই প্রিয়াঙ্কাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন নিক। বিয়ে করতে দেরি করেননি প্রিয়াঙ্কাও। ভারতে এসেই বিয়ে সেরেছেন অভিনেত্রী। রাজস্থানের উমেদ ভবনে জমকালো আয়োজন হয়। সেখানেই হিন্দু ও খ্রিষ্টান রীতি মেনে নিককে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান প্রিয়াঙ্কা। ২০২২ সালে জন্ম হয় প্রিয়াঙ্কা ও নিক জোনাসের মেয়ে মালতী মেরি চোপড়া জোনাসের।

প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও নিক জোনাস

এর মধ্যে একাধিক হলিউড ছবিতে অভিনয় করেছেন। এই মুহূর্তে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ব্যস্ত আছেন ইলিয়া নাইশুলারের পরিচালনায় ‘হেডস অব স্টেট’ সিনেমা নিয়ে। সিনেমায় আরও অভিনয় করছেন ইদ্রিস এলবা ও জন সিনা। ফারহান আখতারের পরিচালনায় ক্যাটরিনা কাইফ ও আলিয়া ভাটের সঙ্গে ‘জি লে জারা’ সিনেমায়ও দেখা যাবে প্রিয়াঙ্কাকে। এ ছাড়া এবারের অস্কারে মনোনয়ন পাওয়া তথ্যচিত্র ‘টু কিল আ টাইগার’-এর নির্বাহী প্রযোজক হিসেবেও রয়েছেন প্রিয়াঙ্কা।

;