আগুন ঝরা পারফরম্যান্সে দর্শক মাতাল মাইলস

  • বিনোদন রিপোর্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আগুন ঝরা পারফরম্যান্সে দর্শক মাতাল মাইলস

আগুন ঝরা পারফরম্যান্সে দর্শক মাতাল মাইলস

সন্ধ্যা থেকেই মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়া। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঠিকই যথাসময়ে শুরু হয়ে গেল বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে লাল সবুজের মহোৎসব। উপস্থিত হাজারো দর্শক যতটা না ভিজলেন বৃষ্টিতে, নজরুলের কথায় সুরে দেশসেরা শিল্পীদের কন্ঠের মদিরায় ভিজলেন তারও বেশি।

তবে অপেক্ষা ছিল মাইলস এর। মাইলস এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শাফিন আহমেদের দল ছেড়ে যাওয়ার পর সকলের শঙ্কা ছিল মাইলস কি ফিরবে আবার কনসার্টে? শাফিন আহমেদ এক ভিডিও বার্তায় সম্প্রতি তার দল ছেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি আহবান জানিয়েছিলেন মাইলসের কার্যক্রমও যেন স্থগিত করা হয়। শঙ্কা ছিল সে কারণেই। তবে সে শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যায় এক আগুন ঝরা কনসার্টই উপহার দিল হামিন আহমেদের মাইলস।

বিজ্ঞাপন

একের পর এক গানে দর্শকদের উন্মাদনায় মাতালেন ব্যান্ডের সকলে। মাঝপথে সবাইকে চমকে দিয়ে মঞ্চে উঠে পড়েন উপমহাদেশের অন্যতম সেরা পারকেশনিস্ট শিবামনি। মাইলসের পারফরম্যান্স এ নতুন মাত্রা যোগ করেন তিনি। পাশাপাশি সংগীত পরিচালক কৌশিক হোসেন তাপসকেও মঞ্চে ডেকে নেন হামিন আহমেদ। মাইলসের বিখ্যাত ধিকি ধিকি গানে নতুন মাত্রা যোগ করেন তাপস। সুনিপন বাদ্য আর শক্তিশালী গায়কিতে মাইলস জানান দেয় এখনও পূর্ণ শক্তিতেই মঞ্চে থাকছেন তারা।

এফবিসিসিআই আয়োজিত হাতিরঝিলের অ্যামফিথিয়েটারে চলমান এ উৎসবের চতুর্থ দিন ছিল শনিবার। এদিন নজরুলের সুরেলা শব্দধ্বনিতে সজ্জিত ছিল গোটা আয়োজন।প্রখ্যাত থেকে নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা শুনিয়েছেন নজরুলসঙ্গীত। বৈরী আবহাওয়ার ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মাঝেও সেই সুরসুধায় স্নাত হন এই শহরের অন্তঃপ্রাণ সুররসিকরা।

বিজ্ঞাপন

ফাতেমাতুজ জোহরার সুললিত কণ্ঠের আশ্রয়ে পরিবেশনা পর্বের সূচনা হয়। শ্রোতার অন্তরে স্নিগ্ধতার বীজ বুনে এই শিল্পী গেয়ে শোনান- আমি পুরব দেশের পুরনারী/গাগরি ভরিয়া এনেছি গো অমৃত-বারি ...। পরে পরিবেশনায় শুনিয়েছেন- দূর দ্বীপবাসিনী, দূর দ্বীপবাসিনী/চিনি তোমারে চিনি দারুচিনিরও দেশে ...।

নজরুলের গজলকে সঙ্গী করে মঞ্চে আসেন সুজিত মোস্তফা। গেয়ে শোনান- মদির আঁখির সুধায় সাকি ডুবাও আমার এ তনু মন ...। পরে গানে প্রকাশ করেন প্রেয়সীর প্রতি অনুরাগ। চর্চিত কণ্ঠের মাধুর্য ছড়িয়ে পরিবেশন করেন- মোর প্রিয়া হবে এসো রানী/দেবো খোপায় তারার ফুল ...। সেই সুরের আবেশে মুগ্ধতার প্রতিফলনে ঝরেছে শ্রোতার করতালি।


নতুন প্রজন্মের শিল্পী হৈমন্তী শুনিয়েছেন- অঞ্জলি লহ মোর সঙ্গীতে ...। এরপর মঞ্চে আসে শামীম ও প্রিয় নামের এই প্রজন্মের আরো দুই শিল্পী। তারা ‘উচাটন মন’, ‘ব্রজ গোপী’সহ কয়েকটি নজরুলসঙ্গীত। পুতুলের গাওয়া গানের শিরোনাম ছিল ‘মোর ঘুম ঘোরে এলে মনোহর’। পুলক শুনিয়েছেন ‘হারানো হিয়া’ ও ‘্ধসঢ়;আলগা করো গো খোঁপার বাঁধন’। লুইপার পরিবেশিত গানের শিরোনাম ছিল ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন’ ও ‘পরদেশী মেঘ’।

এদিনের অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ব্যান্ডদল মাইলসের পরিবেশনা। জনপ্রিয় সব গানের আশ্রয়ে দলটি মাতিয়ে রাখে শ্রোতাদের।


এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন আহমেদ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়ন ভাইস প্রেসিডেন্ট মোস্তফা আজাদ চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তব্যে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু এই দেশকে স্বাধীন না করলে বাঙালি কখনো এই দেশ শাসন করতো পারতো না।


বাঙালি ছিল শোষিত জাতি। সেই শোষিত জাতি আজ অবতীর্ণ হয়েছে শাসকের ভূমিকায়। তাই সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তার সুযোগকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সময়ের অচেনা বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের রোল মডেলে পরিণত করেছেন।


প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, সাহিত্য-সঙ্গীতের মাধ্যমে একটি জাতিকে জাগিয়ে তোলা এক কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি আমাদের চলার পথ দেখিয়েছেন।

কে এম খালিদ বলেন, আমাদের যাপিত জীবনের সঙ্গে মিশে আছেন কাজী নজরুল ইসলাম। নানা সংকটে-দুর্যোগে এই কবির সৃষ্টি আমাদের উদ্দীপনা জোগায়।


পঞ্চম দিনের আয়োজনে থাকছে প্রখ্যাত শিল্পীদের আয়োজনে রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশনা। সবশেষে মঞ্চ মাতাতে একক কনসার্টে হাজির হবেন তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় শিল্পী ইমরান।