অস্কারজয়ী প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতার জীবনাবসান
অস্কারজয়ী প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতা সিডনি পটিয়ার আর নেই। বাহামায় ৬ জানুয়ারি মারা গেছেন তিনি। তার মৃত্যুর খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রেড মিচেলের কার্যালয়।
সিডনি পটিয়ারের বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তাঁর মৃত্যুতে হলিউড তারকারা শোকাহত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা স্মৃতিচারণ করছেন, ছবি শেয়ার দিচ্ছেন, গুণী এই মানুষটিকে মূল্যায়ন করছেন। ফেসবুক লাইভে এসে শোক প্রকাশ করেন বাহামার প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ ডেভিস।
ষাটের দশকে যুক্তরাষ্ট্রে কৃষ্ণাঙ্গদের ওপর শ্বেতাঙ্গদের বর্ণবাদী আচরণের সময়ও অভিনয় গুণে ব্যস্ত আর দামি তারকা ছিলেন সিডনি পটিয়ার। আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতাদের পথিকৃৎ ভাবা হয় তাঁকে। হলিউডে বর্ণবৈষম্যের বিভেদ মুছে দিতে তাঁর ভূমিকা ছিল অপরিসীম।
ফ্লোরিডার মিয়ামিতে ১৯২৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন সিডনি পটিয়ার। তাঁর বাবা-মা টমেটো চাষ করে আমেরিকায় নিয়ে বিক্রি করতেন। জন্মসূত্রে আমেরিকান নাগরিকত্ব পাওয়া সিডনি পটিয়ার ১৬ বছরে বাহামা ছেড়ে চলে যান নিউ ইয়র্কে। সেখানে অভিনয় বিষয়ে পড়াশোনার ফাঁকে জীবিকা নির্বাহ করতে নানান চাকরি নিতে হয়েছে তাঁকে। এরপর কিছুদিন কাজ করেছেন সেনাবাহিনীতে। মঞ্চে অভিনয়ের পর রুপালি পর্দায় পা রাখেন তিনি।
১৯৫৮ সালে ‘দ্য ডিফায়েন্ট ওয়ানস’ সিডনি পটিয়ারকে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে অস্কারে সেরা অভিনেতা শাখায় মনোনয়ন এনে দেয়। এর পাঁচ বছর পর ‘লিলিস অব দ্য ফিল্ড’ ছবিতে কাজের সুবাদে সেরা অভিনেতার অস্কার ট্রফি ওঠে তাঁর হাতে। ২০০২ সালে তাঁকে সম্মানসূচক অস্কার দেওয়া হয়। ১৯৯২ সালে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অভিনেতা হিসেবে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে পেয়েছেন আজীবন সম্মাননা পুরস্কার।
সিডনি পটিয়ার অভিনীত বিখ্যাত কয়েকটি ছবি হলো- ‘দ্য ব্ল্যাকবোর্ড জঙ্গল’ (১৯৫৫), ‘অ্যা রেইজিন ইন দ্য সান’ (১৯৬১), ‘অ্যা প্যাচ অব ব্লু’ (১৯৬৫), ‘হিট অব দ্য নাইট’ (১৯৬৬), ‘টু স্যার, উইথ লাভ’ (১৯৬৭), “গেস হু’স ইজ কামিং টু ডিনার” (১৯৬৭)। তিনি বেশকিছু চলচ্চিত্র পরিচালনাও করেন।
১৯৭৪ সালে ব্রিটেনের রানির কাছ থেকে নাইটহুড উপাধি পান সিডনি পটিয়ার। ২০০৯ সালে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘মেডেল অব ফ্রিডম’ দেন তখনকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ১৯৯৭ সালে জাপানে বাহামার অ্যাম্বাসেডর হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি।
সিডনি পটিয়ার মৃত্যুর সময় স্ত্রী কানাডিয়ান অভিনেত্রী জোয়ানা শিমকাস ও ছয় কন্যাসন্তান রেখে গেছেন। তবে জোয়ানার সন্তান দুটি (আনিকা ও সিডনি টামিয়া)। বাকি চার মেয়ে বেভারলি, পামেলা, শেরি ও জিনার মা হুয়ানিটা হার্ডি। ১৯৫০ সালে তাকে প্রথম বিয়ে করেন সিডনি পটিয়ার। ১৫ বছর সংসার করার পর তাদের বিয়েবিচ্ছেদ হয়।