‘ডিস্কো কিং’র কিছু জানা-অজানা গল্প

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বাপ্পি লাহিড়ী

বাপ্পি লাহিড়ী

লতা মঙ্গেশকর ও সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সাত সকালে আরও এক তারকার মৃত্যুর খবর এল আবর সাগরের পার থেকে। মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ‘ডিস্কো কিং’ বাপ্পি লাহিড়ী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬৯ বছর।

মুম্বাইয়ের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন যে সকল বাঙালি সংগীতশিল্পী, তার মধ্যেই একদম উপরের দিকে থাকবেন বাপ্পি লাহিড়ী। আশির দশকে বলিউড মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির দিশা বদলে দিয়েছিলেন এই বাঙালি।

বিজ্ঞাপন

‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘হিম্মাতওয়ালা’, ‘শারাবি’, ‘অ্যাডভেঞ্চার্স অব টারজান’, ‘ডান্স ডান্স’, ‘সত্যমেব জয়তে’, ‘কম্যান্ডো’, ‘শোলা অউর শবনম’-এর মতো একাধিক সুপারহিট ছবির সংগীতের দায়িত্বভার সামলেছেন তিনি। ২০২০ সালে ‘বাঘি ৩’ ছবির ‘ভাঙ্গাস’ বাপ্পিদার কম্পোজ করা শেষ গান।

কিন্তু শুধুই কি সুর-তাল-লয়? তার বাইরেও বাপ্পি লাহিড়ীর জীবন রীতিমতো রঙিন। সেই রঙিন ঘটনাগুলোর অনেকগুলোই অনেকেরই অজানা। আজকের এই প্রতিবেদনে তেমনই কয়েকটি ঘটনা।

বিজ্ঞাপন

** জন্মসূত্রে নাম ছিল অলকেশ লাহিড়ী। সিনেমার জগতে আসার পরে নাম পাল্টে রাখেন বাপ্পি। ছেলের নাম অরুণেশ। একবার মজা করে বলেছিলেন, এই ধারা চলতে থাকলে, পরের জনের নাম হবে শ্যুটকেস।

** ৩ বছর বয়স থেকেই তবলা বাজানো শুরু করেছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী।

** ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে ১২টি সুপার-হিট জুবিলি সিনেমার সুর দেন তিনি। যেটি একটি রেকর্ড।

** দিনে সর্বাধিক গানের রেকর্ডিং আছে তার।

** বছরে সর্বাধিক গানের রেকর্ডের জন্যও গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নাম উঠেছিল তার। ১৯৮৬ সালে তিনি ৩৩টি ছবির জন্য ১৮৬টি গান রেকর্ড করেন।

** কিশোর কুমার ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ীর মামা। চলচ্চিত্র জগতে কাজ করতে আসার সুযোগ হয়েছিল মামার কারণেই।

** কিশোর কুমারকে মামা বলে ডাকতেন তিনি। কিশোর কুমারও অত্যন্ত স্নেহ করতেন বাপ্পিকে। বাপ্পির সুরে একের পর গান গেয়েছেন কিশোর কুমার। সে গানও আজও গানপ্রেমী মানুষদের মুখে মুখে। কিন্তু জানেন কি এই কিশোর কুমারের জন্যই বাপ্পি লাহিড়ী ঠিক করেছিলেন সংগীত জগত ছেড়ে দেবেন।

জানা যায়, কিশোরকুমারের মৃত্যুর পর একেবারেই ভেঙে পড়েছিলেন বাপি। আর তখনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আর কোনও দিনও গানে সুর দেবেন না। পরে অবশ্য় সে সিদ্ধান্ত বদলেও দেন অনুরাগীদের কথা ভেবে।

** একমাত্র ভারতীয় সুরকার তিনি, যাকে বিবিসি লন্ডনের হয়ে লাইভ পারফরম্যান্সের অনুরোধ জাানান জোনাথন রস।

** ‘জাস্টিস ফর উইডোজ’ নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে তাকে ‘হাউজ অব লর্ডস’-এর সম্মান দেওয়া হয়।

** তবে শুধু সুরকার হিসেবে নয়, বাপ্পি লাহিড়ীর স্টাইল স্টেটমেন্টও নজর কেড়েছিল সবার। সোনার গয়নার প্রতি তার আলাদা ভালোবাসা ছিল। নানারকম সোনার গয়না পরতেও ভালবাসেন তিনি। জানা যায়, প্রত্যেক দিনই নতুন নতুন রকমের গয়না পরতেন। তাঁর গলায় শোভা পেত ৮টি সোনার চে্ইন! যা তিনি রোজ বদলে নিতেন।

** বাপ্পি লাহিড়ীর গলায় ছিল গণেশের একটি লকেট। সেই লকেট ছিল পান্নাখচিত। বাপ্পি লাহিড়ী এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, মাইকেল জ্যাকসন তার এই লকেটের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন এবং বাপির কাছে এটি চেয়েও ছিলেন!

** বাপ্পি লাহিড়ী একমাত্র সঙ্গীত পরিচালক যাকে মাইকেল জ্যাকসন মুম্বাইয়ে তার প্রথম লাইভ শোতে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এই লাইভ শোটি ১৯৯৬ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

** ২০১১ সালে আমেরিকান আইডল-জীয় শন বারোজের সঙ্গে তিনি ‘ওয়াকিং অন লাভ স্ট্রিট’ বলে একটি অ্যালবাম করেন।

** ‘ইউ ডোন্ট মেস উইথ দ্য জোহানস’ বলে হলিউডের ছবিতে বাপ্পি লাহিড়ীর বিখ্যাত গান ‘জিমি জিমি আজা আজা’ ফিচার করা হয়।