কুমার বিশ্বজিতের নতুন গান আর বাস্তবতা মিলেমিশে একাকার

  • মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কুমার বিশ্বজিৎ; (ইনসেটে : একমাত্র পুত্র নিবিড়ের সঙ্গে শিল্পী)

কুমার বিশ্বজিৎ; (ইনসেটে : একমাত্র পুত্র নিবিড়ের সঙ্গে শিল্পী)

লম্বা বিরতির পর গতকাল ২৫ জানুয়ারি রাতে প্রকাশ হলো চিরসবুজ শিল্পী কুমার বিশ্বজিতের কণ্ঠে নতুন গান ‘নিবিড় অপেক্ষা’। ‘আমার বুকে কেন বৃষ্টি অঝোরে ঝরে পড়ছে/ তবু সারাক্ষণ আমার হৃদয়-মন নিবিড় অপেক্ষা করছে...’ এমন কথার গানটি লিখেছেন হাসানুজ্জামান মাসুম, সংগীতায়োজন কিশোর দাশের। দারুণ একটি গল্পনির্ভর ভিডিও নির্মাণ করেছে টিম শাহরিয়ার পলক। এতে পিতার চরিত্রে দারুণ অভিনয় করেছেন প্রান্তর দস্তিদার এবং পুত্রের চরিত্রে রাহিল বিন হাসান। গানটি প্রকাশের পর থেকে ইউটিউব ও ফেসবুকে প্রশংসায় ভাসছেন সংশ্লিষ্টরা।

কারণ এই গানটি কুমার বিশ্বজিতের বর্তমান জীবনের প্রতিধ্বনি ও ছবি। প্রায় সবাই জানেন, দূর পরবাসে কিংবদন্তির একমাত্র পুত্র নিবিড় কুমার সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন প্রায় এক বছর ধরে। আর তার অসহায় পিতা শুরু থেকেই সব ফেলে পুত্রের সুস্থতার প্রহর গুনছেন হাসপাতালের করিডোরে।

বিজ্ঞাপন

কিংবদন্তি কুমার বিশ্বজিতের দীর্ঘ, উজ্জ্বল আর গতিময় সংগীত ক্যারিয়ারে যেন নেমে এলো হঠাৎ নীরবতা। মূলত সেই অপেক্ষাময় কঠিন নীরবতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন সুরকার কিশোর দাশ। তৈরি করেছেন ‘নিবিড় অপেক্ষা’।

‘নিবিড় অপেক্ষা’ মিউজিক ভিডিওির দৃশ্য

এখনও কুমার বিশ্বজিৎ নিবিড় অপেক্ষায় আছেন কানাডার একটি হাসপাতালের করিডোরে। সেখান থেকে এই গানটি প্রসঙ্গে বললেন, ‘এটাকে আমি গান বলতে চাই না। এটা একজন পিতার আর্তি। আমি ভাবিনি নিবিড় ও তার সহপাঠীদের এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর আবারও গাইবো। কারণ, সেই মানসিক শক্তি বা আগ্রহটাই মরে গেছে। মাসের পর মাস এই দূর পরবাসে ছেলেটার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি, ওর কণ্ঠ শোনার অপেক্ষায়। নিবিড়ের তিন সহপাঠীর অনুপস্থিতি আমাকে প্রতিনিয়ত পিতৃসমতুল্য বেদনায় আচ্ছন্ন করে।’

বিজ্ঞাপন

প্ল্যাটফর্ম এন্টারটেইনমেন্টের পরিবেশনায় সেই ‘নিবিড় অপেক্ষা’ নামের বিশেষ গানটি একযোগে দেশের ১৮টি ব্যানার থেকে উন্মুক্ত হয়েছে।
‘নিবিড় অপেক্ষা’ তৈরি প্রসঙ্গে এর সুরকার ও সংগীত পরিচালক কিশোর দাশ বলেন, ‘নিবিড়ের দুর্ঘটনার পর আমাদের জীবনটাও বিষণ্নতায় ঢেকে যায়। চাইলেও আমরা ভালো থাকতে পারি না। সেই ভালো না থাকতে পারার প্রতিক্রিয়া থেকেই এই গানের সৃষ্টি। আশা করছি প্রতিটি বাবা-মা-সন্তান এই গানটিকে অনুভব করবেন।’

গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি টরন্টোর স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় সড়ক দুর্ঘটনায় কুমার নিবিড় গুরুতর আহত হন। এরপর থেকে গত এক বছর সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিবিড় সেখানকার হাম্বার কলেজের শিক্ষার্থী।