ফেব্রুয়ারি শুরু সিয়াম-সাফার ‘টিকিট’ দিয়ে
এক রাতে বাস যাত্রায় টাকার লোভে একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে দুই বন্ধু সালেক-আতাবর। লোভের এই চক্রে এক এক করে জড়াতে থাকে বাসের অন্য যাত্রীরা। শুরু হয় একের পর এক বিশৃঙ্খলা। শেষ পর্যন্ত একটি টিকিট নির্ধারণ করবে কারা হবে বিশৃঙ্খলার বলি আর কে জিতবে পুরস্কার?লেখক মোহাম্মদ
নাজিম উদ্দিনের এ রকম টান টান উত্তেজনার এক গল্প নিয়ে ভিকি জাহেদ পরিচালনা করেছেন চরকি অরিজিনাল সিরিজ ‘টিকিট’। সিরিজের চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক নিজেই ও সঙ্গে ছিলেন নাজিম উদ দৌলা।
৬ পর্বের ক্রাইম-কমেডি ও থ্রিলার জনরার সিরিজ ‘টিকিট’-এ অভিনয় করেছেন সিয়াম আহমেদ, সাফা কবির, মনোজ প্রামাণিক, আবদুল্লাহ আল সেন্টু, মাহমুদ আলম, জয়রাজ, বাদল শহিদ, এ.কে. আজাদ সেতু সহ আরও অনেক।
পরিচালক ভিকি জাহেদ-এর সব কাজেই একটা মিস্ট্রি থাকে। টিকিট-এও থাকবে এরকম ছোঁয়া। সেই সাথে থাকবে কিছু ভিন্ন ও নতুন উপস্থাপন। টিকিট নিয়ে ভিকি বলেন, ‘আমি বেশির ভাগ সময় থ্রিলার জনরা নিয়ে কাজ করেছি। তবে টিকিট আমার জন্য একটা ইউনিক অভিজ্ঞতা। এই সিরিজে ডার্ক কমেডি ও স্যাটায়ারের একটা থ্রি লেভেলের কম্বো করেছি।’
লেখক নাজিম উদ্দিন গল্প নিয়ে নির্মাণের চিন্তা কীভাবে আসবে তা জানিয়ে পরিচালক বলেন, ‘স্যাটায়ার ও ডার্ক কমেডি আমার খুব পছন্দের একটা জনরা। কাজ নিয়ে খুবই এক্সসাইটেড। নাজিম উদ্দিন ভাইয়ের গল্প শুনেই মনে হয়েছিল এটা একটা সিরিজে রূপান্তর করা যাবে। পরবর্তীতে আমার চিন্তা ভাইয়ের সঙ্গে শেয়ার করলে তিনিও সহমত প্রকাশ করেন। গল্পটা খুবই ইন্টারেস্টিং হবে।’
ভিকি জাহেদ বলেন, ‘যারা আমার কাজ দেখেন বা না দেখেন সবারই এই কাজটা দেখলে ভালো লাগবে। ওটিটির সব কনটেন্টের মধ্যে টিকিট সবচেয়ে ভিন্ন রকম কিছু হবে। আর আমরা সব সময় দর্শকদের বিনোদন দেয়ার জন্য কাজ করি। সেটা এই কনটেন্টে সবচেয়ে বেশি পাবে আশা করছি।’
একদম ভিন্ন লুকে দেখা মিলবে সিয়াম আহমেদের। তিনি বলেন, ‘এই সিরিজে আমার চরিত্রের নাম সালেক। এই চরিত্রটা আমি ঠিক কতখানি করতে পারবো সেটা নিয়ে বেশ সংশয় ছিল আমার মাঝে। তবে ভিকি ভাই সবচেয়ে বেশি কনফিডেন্ট ছিলেন। সাহস দিয়েছেন। উনার কারণেই আমি সালেক চরিত্রটা করতে পেরেছি। চরিত্রের দুইটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। একটা হচ্ছে, .সালেকের চরিত্র একেবারেই আলাদা হতে হবে। যাকে আলাদাভাবে ভাগ ভাগ করে ডিটারমাইন্ড করা যায়। আর দ্বিতীয়টা হচ্ছে সালেক হ্যাজ টু লুক ডিফারেন্ট ফ্রম এভ্রিওয়ান। তার কিছু আন্ডারটোনড পার্ফমেন্স, তার কিছু কনফিডেন্সের অভাব। এই জিনিসগুলোর সাথে আসলে তার লুকস, তার এপিয়ারেন্স অনেকটা রিলেটেড। সালেকের জন্য ওয়েট গেইন করতে হয়েছে।’
বেশ সাহসী চরিত্র ও ভিন্ন লুকে অভিনয় করেছেন সাফা কবির। তিনি বলেন, ‘এই কাজটা বেশ কিছু কারণে আমার জন্য বিশেষ। আমি আগে কখনও এমন চরিত্রে অভিনয় করিনি। সেই সাথে গল্পটা আসলে ডার্ক কমেডি, থ্রিলার ও স্যাটায়ার মিলিয়ে। আর এই চরিত্র করতে গিয়ে ভালোই কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। কারণ আমার বেড়ে উঠার সঙ্গে সিরিজের চরিত্রের আকাশ-পাতাল তফাৎ।’
পরিচালক ও সহ-শিল্পীদের নিয়ে সাফা বলেন, ‘ভিকি ভাইয়ের গল্পসহ কাজের ভক্ত আমি। আমরা এক সঙ্গে বেশ কিছু কাজ করেছি। সহশিল্পী হিসেবে সিয়াম খুবই একনিষ্ঠ একজন অভিনেতা। তার মতো কঠোর পরিশ্রমী অভিনেতা খুব কমই। আর মনোজ দা টিচারের মতো। উনার থেকে চরিত্র পোর্টেট করতে সাহায্য পাই। সব শিল্পী কাজের জন্য সর্বোচ্চ পরিশ্রম করেছে।’
আরেকটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেছেন মনোজ প্রামাণিক। তিনি বলেন, ‘সিরিজে আমার চরিত্র আর বাস্তবে আমি দুইটা দুই মেরুর চরিত্র। এই চরিত্রটা করতে আমার কাছে খুব মজা লেগেছে। আর এই চরিত্রটা করতে গিয়ে আমার এক ছাত্রকে কিছুটা অনুকরণ করার চেষ্টা করেছি। কেননা ওর চরিত্রটা এরকম। আর সব চরিত্রই পোট্রে করা অভিনেতাদের জন্য চ্যালেঞ্জের। সিরিজটা টান টান উত্তেজনার একটা গল্প। আশা করি, দর্শক কাজটা পছন্দ করবে।’
দক্ষতার সাথে সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন সুমন সরকার। সম্পাদনায় ছিলেন জোবায়ের আবীর পিয়াল আর কালার গ্রেডিং করেছেন আশরাফুল আলম।
মিউজিক করেছেন শাহরিয়ার মার্সেল, সাউন্ড ডিজাইন করছেন শৈব তালুকদার, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর করেছেন অর্ণব হাসনাত। অভিনয় শিল্পীদের একদম ভিন্ন লুক দিয়েছেন মেক-আপ আর্টিস্ট খোকন মোল্লা। কস্টিউম ডিজাইন করেছেন জান্নাত মৌরি। আর্ট ডিরেক্টশন দিয়েছেন মো: রিংকু।
‘টিকিট’ সিরিজে ‘মূল হারালাম’ ও ‘মন ভালা না’ শিরোনামে দুইটি গান রয়েছে।
‘মূল হারালাম’ গানটি গেয়েছেন জসিম উদ্দিন, আর ‘মন ভালা না’ গেয়েছেন ঐশী।