আজ একজন সংগীতের নিভৃতচারি রাজাধিরাজ স্বেচ্ছায় প্রয়াত হলেন কন্টকাকীর্ণময় এই পৃথিবী থেকে। তিনি সাদি মহম্মদ। রাবীন্দ্রিক বাতাবরণে অভ্যস্ত এক নন্দিত জীবনের অধিকারী ছিলেন রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ। কাব্যিক এই শিল্পীর জীবন ছিল অত্যন্ত স্বচ্ছ, সাবলীল ও সাধারণ। অসাধারণ সুরেলা কণ্ঠে তিনি রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন। তার গাওয়া ‘আনন্দধারা বহিছে ভুরনে’, ‘কেউ কখনো খুঁজে কি পায় স্বপ্নলোকের চাবি’সহ অগণিত কালজয়ী গান তার সুরের মূর্ছনায় পেয়েছে শ্রুতি মধুরতা। তার দরাজ গলায় আবেগাপ্লুত হয় শ্রোতা। একাকিত্বের মাঝেই তিনি সুখের আস্বাদন খুঁজে পেতেন। জীবনে চলার পাথেয় হিসেবে তিনি তার শিল্পীসত্ত্বাকে বেছে নিয়েছিলেন। চলনে, বলনে, বচনে, ভঙ্গিমায় তিনি ছিলেন এক শান্ত স্রোতস্বিনী নদীর মতন। সেই নদীতে শব্দহীন ঢেউ বয়ে যেত অনবরত। রবীন্দ্র সংগীতের সুরের লহরীর এই মহান জাদুকর তার স্বেচ্ছামৃত্যুর মাধ্যমে হয়তো খুঁজে পেয়েছেন তার স্বপ্নলোকের চাবি। কিন্তু আমরা হারিয়েছি এক মহান কীর্তিমান সাদি মহম্মদকে। যিনি তার সুরের ফল্গুধারায় সম্মোহিত করে রাখতেন শ্রোতামন্ডলীকে।
চিরবিদায় নিয়েছেন সাদি মহম্মদ। আবেগের আনন্দলোকে ছিল সাদির বিচরণ। সমাজ সংসারে যখন যুগবদলের হাওয়া বইছে ঠিক সেই সময় সাদি মহম্মদ ছিলেন বড্ড সেকেলে। ভালবাসতেন রবি ঠাকুরের সেই চিরায়ত সময়। যে সময়ে মানুষের মনে ছিল না জীর্ণতা। আজন্মকাল মানুষের মনে রবে খুব নীরবে রবীন্দ্রসংগীতের বরপূত্র সাদি মহম্মদকে। রবীন্দ্রনাথের গানকে তিনি ধারণ করেছিলেন তার মন ও মননে। যখন তিনি গাইতেন, ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে...’, তখন তিনি কি সত্যি ভেবেছিলেন কোন একদিন সত্যি এই বসুধায় পড়বে না তার পায়ের চিহ্ন? তবে তিনি এই দেশে রেখে গিয়েছেন তার গানের মাধ্যমে প্রিয় পদরেখা। যা দেখে পুলকিত হবে লাখো কোটি রবীন্দ্র সংগীতপ্রেমী।
বিজ্ঞাপন
তার সুরে ব্যক্ত হতো ব্যাকুলতা। সাদির সুরের মুগ্ধতায় বিমোহিত হতো হাজারো ভক্তশ্রোতা। তার কন্ঠের সুরে যেন প্রাণের স্পন্দন পেতো সাক্ষাৎ রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রসংগীতের সুরের ঘোরে সর্বদা আচ্ছন্ন থাকতেন সাদি মহম্মদ। তার দরাজ গলায় রবীন্দ্রসংগীতে গানে মর্মস্পর্শী আবেদন তৈরি হতো তা রবীন্দ্রসংগীতকে নিয়ে গিয়েছে এক অনন্য উচ্চতায়।
একজন শিল্পীসত্ত্বা যে কতটা নিটোল হয় তা সাদি মহম্মদের জীবনাচরণ দেখলে বোঝা যায়। সদা নির্লোভ, নির্মোহ ও নির্ভেজাল মানুষটি হয়তো বেঁচেই ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সংগীতকে বুকে লালন করার জন্য। বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত চর্চায় তার অবদানের কথা ব্যাখ্যাতীত। তিনি আজ আনন্দলোক ও স্বপ্নলোকের চাবি খুজতে পরলোকে চলে গেলেন আমাদের সবার আনন্দঅশ্রু ঝড়িয়ে। বড্ড অভিমানি সাদি বুঝাতে পারেননি কাউকে তার নিশ্চুপ মনের বেদন। যে বেদনে আজ আমরা আবেগাপ্লুত হই তার মৃত্যুর পরে। তিনি গেয়েছিলেন, ‘আনন্দধারা বহিছে ভূবনে...’, সেই আনন্দধারার খোঁজ কি আমরা রেখেছিলাম। হয়তো অন্য ভূবনে তিনি ঠিকই দেখতে পাবেন সেই আনন্দধারা। তিনি আগুনের পরশমনি আমাদের প্রাণে জ্বালিয়ে বেঁচে থাকবেন আজন্মকাল। তাইতো তিনি জীবনের পরিসর পেরিয়ে আজ চলে গেলেন লোকান্তরে। সাদী মোহাম্মদেরা আমাদের এই পৃথিবীতে আসেন দুষ্প্রাপ্য হয়ে। কিন্তু আমরা তাদের দুষ্প্রাপ্যতা চিনতে পারি যখন তাদের চলে যাওয়ার সময় হয়।
বিজ্ঞাপন
পদক আর পুরস্কারের ভারে নয়, রাবীন্দ্রিক ঘরানার এই প্রথিতযশা শিল্পী আজীবন আমাদের স্মৃতির মাঝে অমলিন হয়ে বেচে থাকবেন ভালবাসার পাত্র হয়ে। পৃথিবীর সকল ছায়া, মায়া ও কায়া ত্যাগ করে স্বপ্নলোকের ওপারে ভাল থাকুন আর আমরা এপারে আপনাকে অহর্নিশ ভালবাসে যাব।
গত ২২ নভেম্বর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো নন্দিত সঙ্গীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ানের একক সঙ্গীত সন্ধ্যা। ‘গানে গানে সায়ান’ নামে প্রায় আড়াই ঘণ্টার পরিবেশনায় সায়ানকে একবারের জন্যও চাইতে হলো না হাততালি, অনুরোধ করতে হলো না শান্ত থাকতে! দর্শক স্বতঃস্ফূর্তভাবেই প্রতিটি গান শেষে হলরুম ভরিয়ে দেন ভালোবাসাসমেত তালিতে আবার গান শুরু করতেই পিনপতন নীরবতা বজায় রাখেন। সে এক অনন্য অভিজ্ঞতা হলো, যারা সেই অভিজ্ঞতা সঞ্চার করেছেন তারাই কেবল জানেন এই আত্মতৃপ্তির কথা।
একেই বলে আক্ষরিক অর্থে একক পরিবেশনা। তিনি শুধু একা গাইলেনই না, মাত্র তিনটি বাদ্যযন্ত্র একা বাজিয়েই শেষ করলেন পুরো শো।
জুলাই বিল্পবে সায়ান নতুন করে আলোচনায় আসেন। কারণ তার গানের কথা ও সুর বরাবরই সমাজিক নিপীড়নের কথা বলে, রাজনৈতিক অপক্ষমতার বিরুদ্ধাচরন করে।
সায়ানের একক গানের অনুষ্ঠানে গিয়ে অবাক না হয়ে উপায় ছিলো না। কারণ তাকে শুনতে যেমন এসেছে জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়া স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা, তেমনি এসেছেন সত্তরোর্ধ নারী-পুরুষ। শুধু তাই নয়, সায়ান যে প্রেম, ভালোবাসা, আবেগ, অনুভূতিও এতো জোরালোভাবে তার গানে উপস্থাপন করেন তাও নতুন করে জানা গেলো।
সায়ান সেদিন অনুষ্ঠান শুরু করেন কিছু কথা দিয়ে। তিনি জানান, তিন শ্রেণির মানুষকে তিনি ঘৃণা করেন। প্রথমত, যারা প্রকাশ্যে বা মনে মনে মানুষকে খাটো করে; দ্বিতীয়ত, যারা ধর্ষক কিংবা জীবনের যে কোন পর্যায়ে যৌন হেনস্তা করেছে এবং যারা যৌন হেনস্তা করতে দেখেও তার প্রতিবাদ করেনি; তৃতীয়ত, যারা মনে করেন যে একটি দেশে একটিই মাত্র দল থাকবে অর্থাৎ বহুত্ববাদকে যারা খারিজ করতে চায় তাদের।
অনুষ্ঠান ছিলো দুটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম সেশনে সায়ান তার চিরাচরিত প্রতিবাদের গানগুলো শোনান প্রায় ঘন্টা দেড়েক সময় ধরে। এরপর আরও পৌঁনে এক ঘণ্টা ছিলো তার গানে গানে প্রেমময় সত্তা’র প্রকাশ।
প্রথমেই গেয়ে ওঠেন ‘আমি মুসলমানের মেয়ে’ গানটি। এরপর সায়ান তার আশেপাশের সকল নারী এবং বিশ্বের তাবৎ নারীশক্তিকে উৎসর্গ করে গাইলেন ‘এই মেয়ে শোন’।
অনুষ্ঠানের এই পর্যায়ে সায়ানের গানের কথা, সুর আর গায়কীতে দর্শক বুদ হয়ে পড়েছেন। সায়ান এবার আর গাইলেন না। একটু কথা বলে উঠলেন। জানালেন একটি মজার কথা। তাকে নাকি অনেক মানুষ জিজ্ঞেস করে, তিনি ছেলে নাকি মেয়ে? তাদের উত্তর দিয়ে সায়ান বলেন, ‘আমি শতভাগ মেয়ে। যদি আবার জন্ম হয় যেন মেয়ে হয়েই জন্মাই। আর যদি তা না হয়, যেন মেয়েলি পুরুষ হয়ে জন্মাই! আমি আসলে পুরুষের বিপক্ষে নই, কিন্তু ব্যাটাগীরীর বিপক্ষে। ব্যাটাগীরী নিপাত যাক।’
এরপর সায়ান একে একে গেয়ে শোনান সমাজের বিভিন্ন আলোচিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে গান। তারমধ্যে একটি পাহাড়ি মেয়ে কল্পনা চাকমাকে নিয়ে লেখা। যে মেয়েটি শক্তি আর ক্ষমতাকে ভয় না করে পাহাড়ি মানুষের অধিকারের কথা বলেছিলো। একদিন তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সে আর কোনদিন ফিরে আসেনি, জীবিত অথবা মৃত। বেঁচে থাকলে সায়ানের বয়সীই হতেন, সেটিও জানালেন শিল্পী।
এরপর তিনি গেয়ে ওঠেন গার্মেন্টসকর্মী চম্পা খাতুনের গান। যে তার ন্যায্য পারিশ্রমিক চেয়ে পায়নি, তাকে পিটিয়ে মারা হয়।
সায়ান গাইতে ভোলেননি বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে নিয়েও। তিনি বলেন, ‘‘আবরারকে মেরে হত্যাকারীরা রাস্তায় মিছিল দিয়েছিলো, ‘জয় বাংলা!’’ তাইতো তিনি বলেন, ‘স্লোগানের পবিত্রতা কথায় নয়, তার উদ্দেশ্যে থাকে।’
এরপর সায়ান গানে গানে শোনান ফিলিস্তিনির মানুষের শক্তি, স্বাধীনতার আহাজারি ও তাদের ওপর দমন-পীড়নের কথা। ‘আমি প্যালেস্টাইন’ নামের এই গানের মাধ্যমে সায়ান ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন।
এরপর ‘স্বাধীনতার পক্ষ শক্তি’, ‘নষ্ট মুক্তিযোদ্ধা’, ‘রানীমা’, ‘মাটির সঙ্গে গাদ্দারি’, ‘এইবার কি যেন হবে, মন চায় নির্বাসনে যাই’, গানগুলোতে উঠে আসে নিকট অতীতে বাংলাদেশের রাজনীতি, সমাজনীতি, ক্ষমতা নিয়ে তার উপলব্ধির কথা।
প্রতিবাদী গানের সেশন শেষ করেন নিজের রাজনৈতিক অবস্থান পরিষ্কার করেন। সায়ানের ভাষ্য, ‘‘আমি নিরপেক্ষ নই। গা বাঁচিয়ে চলি না। আগে মাটির পক্ষে ছিলাম। জুলাই আন্দোলনে একটা পক্ষ নিয়েছিলাম প্রকাশ্যে। এই পুরো শো’টি আমি জুলাই বিল্পবের নামে উৎসর্গ করলাম।’’
১৫ মিনিটের চা পান বিরতির পর শুরু হয় ‘গানে গানে সায়ান’-এর দ্বিতীয় সেশন। এই সেশনে তিনি গাইলেন প্রেমের গান, বিরহের গান, মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েনের গান, সর্বপরি মানুষের প্রেমময় আবেগ-অনুভূতির গান।
প্রথম গানটিতে ছিলো দীর্ঘ সম্পর্কে থাকতে থাকতে জমে ওঠা তিক্ততা, একঘেয়ামি কিংবা অভিমান ভুলে আবার এক হওয়ার বার্তা। ‘দুজনে সব ভুলে যাই’-এর পর সায়ান গাইলেন ‘এইখানে সুখ ছিলো একদিন’। গানটির কথা ও সুর এতোটাই হৃদয়গ্রাহী যে, সত্তরোর্ধ দর্শকের চোখও তখন ছলছল। সবাই গানটির সঙ্গে নিজের আবেগকে মিলিয়েমিলিয়ে ফেলেছে তখন।
পরিবেশ হালকা করতে সায়ান বললেন, ‘প্রেম হলো দো-ধারী তলোয়ার। প্রেমে পড়লেও কাটে, না পড়লেও কাটে।’ কথাটি শুনে দর্শক আবার হেসে কুটিকুটি। এই পরিবেশে সায়ান ধরেন তার পরের গান ‘ভাসিয়ে দেবো তোরে ও আমার প্রাণের বন্ধু ওরে’।
প্রেম প্রেম গন্ধ যখন অনুষ্ঠানস্থলে, সায়ান তখনই তার পরের গানে দেখালেন প্রেমের ভিন্ন রূপ! ‘লাটাই’ গানটিতে তিনি তুলে ধরলেন সেই সম্পর্কের গল্প যাতে একজন সবটাই নিয়ন্ত্রণ করে। যেন অন্যজন তার হাতের ঘুড়ি, লাটাই যেভাবে নাড়াবে সেভাবেই সে উড়তে বাধ্য!
শেষ গান ধরবেন, কিন্তু দর্শকের একের পর এক অনুরোধ আরও হাফ ডজন খানেক গানের। সব অনুরোধ শিল্পী রাখতে পারলেন না ঠিকই, কিন্তু কথা দিলেন পরের কোন অনুষ্ঠানে সেই গানগুলো শুনিয়ে দেবেন। এরপর দর্শকের অনুরোধ থেকেই একটা অতিরিক্ত গান ‘কিছুতো একটা তুমি বলো’। এই গানে প্রেমিক বা প্রেমিকা তার প্রেয়সীর কাছে আকুতি করে একটা কিছু বলার। সম্পর্কের মধ্যে কথা ফুরিয়ে গেলে তা কতোটা পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে সেটা বোঝা যায় এই গানে। এজন্য সম্পর্কের পরিচর্যা করা খুবই জরুরী।
অনুষ্ঠানের শেষ গান হিসেবে তিনি আগেই ঠিক করে রেখেছেন তার বহুল জনিপ্রয় গান ‘এক হারিয়ে যাওয়া বন্ধু’কে। সেটিই গাইলেন, তার অনবদ্য গায়কীর সাথে সাথে দর্শক হারিয়ে গেলো ছেলেবেলার নস্টালজিয়ায়। আবার তার গানের সাথে সাথেই ফিরে এলো বর্তমানে। মনে পড়ে গেলো সেই সব প্রিয় বন্ধুদের, যারা একটা সময় আমাদের হৃদয় জুড়ে ছিলো, জীবন জুড়ে ছিলো। সত্যিই তো, কোন শত্রুরও যেন প্রাণের বন্ধু দূরে সরে না যায়!
দক্ষিণ ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী তিনি। তামিল, তেলেগু ও মালয়ালম ভাষার সিনেমায় সমানতালে কাজ করেন। ২০১৮ সালে ‘মহানটী’ সিনেমায় দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য জিতেছেন জাতীয় পুরস্কারও। তিনি কীর্তি সুরেশ। দক্ষিণী সিনেমা দেখেন, অথচ তাকে পছন্দ করেন না, এমন দর্শক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। মায়াবী চেহারার এ অভিনেত্রী যেমন রূপের মুগ্ধতা ছড়ান, তেমনি তার অভিনয়ের জাদুতে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন সবাইকে।
এবার জানা গেল এ অভিনেত্রী বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চলছেন। দীর্ঘদিনের প্রেমিক অ্যান্টনি থাত্তিলকে বিয়ে করছেন এ অভিনেত্রী। দুবাই-এর ব্যবসায়ী অ্যান্টনির সঙ্গে স্কুলে পড়াকালীন তাদের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সেই বন্ধুত্ব পরবর্তীতে গড়ায় প্রেমে।
শোনা যাচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে গোয়াতে চার হাত এক হবে তাদের। পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের উপস্থিতিতে বিয়ে করবেন কীর্তি। ডিসেম্বরের ৯ তারিখ থেকেই শুরু হবে বিবাহ উৎসব। চলবে তিন দিন। ইন্ডাস্ট্রির জল্পনা, বিয়ের পর কীর্তিও দুবাই পাড়ি দেবেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনও কিছু বলেননি কীর্তি।
ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কীর্তির বিয়েতে থালাপতি বিজয়, চিরঞ্জীবী, অ্যাটলি কুমার, ন্যানির মতো দক্ষিণী তারকারা উপস্থিত থাকবেন। পাশাপাশি বলিউডের বরুণ ধাওয়ানও বিয়ের অনুষ্ঠানে হাজির হবেন।
এদিকে, ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘থোরি’ সিনেমার হিন্দি রিমেক ‘বেবি জন’-এ বলিউড তারকা বরুণ ধাওয়ানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন কীর্তি। আর সেই সূত্রেই বরুণের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। সিনেমাটি আসছে বড়দিনে মুক্তি পাবে। এরইমধ্যে ছবিটির গান মুক্তি পেয়েছে। তাতে কণ্ঠ দিয়েছেন অভিনেতা ও গায়ক দিলজিৎ দোসাঞ্জ।
‘পুষ্পা: দ্য রাইজ’ সিনেমা নিয়ে দর্শকের আগ্রহ অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছিল এর আইটেম গান। সামান্থা রুথ প্রভুর আবেদনময়ী উপস্থিতি আর দ্রুতলয়ের গানটি এখনো মনে রেখেছেন অনেক ভক্ত। তাই ‘পুষ্পা ২’-এর আইটেম গান নিয়ে আগ্রহ ছিল। গত রাতে মুক্তি পেয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত সেই গান ‘কিসসিক’। মুক্তির পর কতটা প্রত্যাশা মেটাতে পারল?
গতকাল রোববার রাতে টি সিরিজের ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পেয়েছে ‘কিসসিক’ গানটির লিরিক্যাল ভিডিও। যেখানে পুরো গান শোনা গেছে, মাঝে দেখা গেছে শ্রীলীলা আর আল্লু অর্জুনের ঝলক।
মুক্তির পর মোটাদাগে গানটি ভক্তদের মন ভরাতে পারেনি। তাঁরা বলছেন, গানটি প্রথম সিনেমার আইটেম গানের ধারেকাছেও যেতে পারেনি। কেউ কেউ আবার সামান্থার সঙ্গে শ্রীলীলার তুলনা টেনে বলেছেন, তরুণ এই অভিনেত্রী প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি।
ইউটিউবে গানটির নিচে মন্তব্যের ঘরে এক দর্শক লিখেছেন, ‘এটা কোনো গান হলো?’ ‘পুষ্পা ২’ ছবিতে আল্লু অর্জনের মুখে একটা সংলাপ শোনা গেছে, ‘পুষ্পা ন্যাশনাল নয়, ইন্টারন্যাশনাল পর্যায়ে খেলে।’ সেই সংলাপ ধার করে এক দর্শক লিখেছেন, ‘প্রথম সিনেমার গানটি ছিল ইন্টারন্যাশনাল, এটা ন্যাশনাল।’
সুকুমার পরিচালিত ‘পুষ্পা: দ্য রুল’ ছবিটি আগামী ৫ ডিসেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। আল্লু অর্জুন, রাশমিকা মান্দানা, ফাহাদ ফাসিলসহ প্রথম কিস্তির তারকা থাকবেন এ ছবিতে। জানা গেছে, প্রায় ৫০০ কোটি রুপি বাজেটে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। মুক্তির পর প্রেক্ষাগৃহে কতটা ব্যবসা করতে পারে, সেটাই এখন দেখার।
নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে তিনটি প্রস্তাব দিলেন চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেতা ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন। আশির দশকের এই নায়কের দাবি নির্বাচন ব্যবস্থায় ‘না’ ভোট রাখতে হবে। পাশাপাশি আরও দুটি প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। আজ ২৪ নভেম্বর রোববার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে নাগরিক সমাজের এক সভায় ইলিয়াস কাঞ্চন এই প্রস্তাব দেন।
সভায় নিজের প্রস্তাব তুলে ধরে চলে যাওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। এ সময় ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, প্রার্থীদের মধ্যে কাউকে পছন্দ না হলে যেন ‘না’ ভোট দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। নির্বাচনে কারও প্রতি অন্যায় হলে তিনি মামলা করেন। সেই মামলা নিষ্পত্তি হতে হতে টার্ম (মেয়াদ) চলে যায়। তখন বাদী বিচার পান না।
তিনি প্রস্তাব দেন, নির্বাচন কমিশনের মধ্যে একটা বিচারের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে, যাতে কমিশনই দ্রুততার সঙ্গে বিচার করতে পারে। যেন বাদী বঞ্চিত না হন, তিনি তার অধিকার ফিরে পেতে পারেন।
আরেকটি প্রস্তাব সম্পর্কে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, বিগত সরকারের সময় নির্বাচন কমিশন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনসহ (ইভিএম) নানা কিছু কিনে অনেক টাকা তছরুপ করেছে।
যার কারণে সাধারণ মানুষের নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা থাকে না। স্বচ্ছতা কীভাবে নির্বাচন কমিশনের মধ্যে আনা যেতে পারে, সেটার ব্যবস্থা করতে হবে। তা নাহলে জনগণের আস্থা ফেরত আসবে না, জনগণ মনে করবে এরাও আগের মতোই।
সভায় নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, সদস্য মো. আবদুল আলীম, জেসমিন টুলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।