আমি শুরু করেছিলাম, এখন সবাই চেষ্টা করছেন : সোহানা সাবা
জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী সোহানা সাবা এখন খুব অল্প কাজ করছেন। তবে তার ব্যস্ততা রয়েছে নানাবিধ। সম্প্রতি তার ফ্যাশন স্টেটমেন্ট নতুন করে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সমসাময়িক বিষয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসিদ রণ
কেমন আছেন?
ঢাকার গরমের মধ্যে যেমন থাকা যায় আর কি। তারমধ্যে আবার শরীরটা একটু খারাপ। এরমধ্যেও কাজ করে যেতে হচ্ছে। আশা করি দু-এক দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাবো।
অসুস্থতার মধ্যেও কাজ করছেন। কাজটি কি খুব গুরুত্বপূর্ণ?
তাতো বটেই! নয়তো এই শরীরে কাজ করতাম না। অনেকেই জানেন, ঢাকার বানানীতে আমি ‘ইয়োগিস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালাই। মূলত ইয়োগা সেন্টার এটি। তবে আমি এটাকে শুধুমাত্র ইয়োগা সেন্টার বলি না। কারণ এখানে আট- দশটা ইয়োগা সেন্টারের মতো শুধুমাত্র কিছু আসন শেখানো হয় না। আমি আসলে ইয়োগার পাশাপাশি যে সকল নারীরা আসেন তাদের মানসিক সাস্থ্য, ফিটনেস, ডায়েট এবং সাজসজ্জা নিয়ে সামগ্রিক একটি লেসন চার্ট তৈরী করেছি। ফলে এটা অন্য কোন প্রশিক্ষকের হাতে ছেড়ে দিলে তারা আমার মনের মতো করতে পারবেন না। তাই ‘ইয়োগিস’-এর ক্লাসগুলো আমি নিজেই করাই। একটি ক্লাস মিস গেলে আনুষাঙ্গিক অনেকের জটিলতা তৈরী হয়। তাই যতো যাই হোক আমাকে ক্লাসটা চালিয়ে যেতে হয়।
ইয়োগিস-এর বাইরে আর কি নিয়ে ব্যস্ততা যাচ্ছে?
অভিনয় তো একেবারেই মনমতো প্রজেক্ট ছাড়া করছি না। সামনে আমি নিজেই একাধিক প্রজেক্ট নিয়ে মাঠে নামবো। একটি প্রোডাকশন শুরু থেকে নিজ হাতে শেষ করতে অনেক সময় ও শ্রম দিতে হয়। সারাক্ষণ কাজের মধ্যে থাকতে হয়। ফলে আমি ক্যামেরার সামনে না হলেও বাস্তবে অনেক ব্যস্ত সময় পার করছি। আপাতত প্রজেক্টগুলো নিয়ে বিস্তারিত বলবো না। সব গুছিয়ে এনে সবাইকে জানাবো।
সম্প্রতি মেরিল প্রথম আলোতে আপনার ফ্যাশন স্টেটমেন্ট বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে...
আসলে মেরিল প্রথম আলোর সঙ্গে আমার অনেক পুরোনো সম্পর্ক। ২০০৭ সালে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছিলাম। সে বছরই প্রথম একটি ডিজাইনার শাড়ি পরে হাজির হয়েছিলাম। তার আগে আমাদের দেশের তারকারা ক্যামেরার সামনে অনেক ফ্যাশনেবল হলেও এ ধরনের পাবলিক ইভেন্টে নির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যেই সাজ পোশাক নির্বাচন করতেন। সেদিক থেকে আমিই প্রথম স্লিভলেস ব্লাউজ পরেছিলাম। আমাদের দেশের রেড কার্পেটেও যে দারুণ কিছু করা যায়, একটু ভেবে চিন্তে নতুন ধাচের কিছু পরা যায় সেটি আমি শুরু করেছিলাম। তখন আমার সেই ফ্যাশন স্টেটমেন্ট দর্শক ও প্রথম আলো কতৃপক্ষ খুব এপ্রিসিয়েট করে। আমি পরের বার রেড কার্পেটে কি পরবো, ব্লাউজে কি ধরনের নতুনত্ব থাকবে তা দেখার জন্য অনেকেই অপেক্ষা করতো। আবার আমার কিছু কলিগকে শুনেছি নেতিবাচক মন্তব্য করতে। এখন তাদের অনেককেই দেখি খুব সুন্দরভাবে রেডি হয়ে রেড কার্পেটে আসেন!
এবারের লুকটি সেট করতে কি অনেক পরিকল্পনা করতে হয়েছে?
কিছুদিন আগে আমেরিকাতে একাধিক শো ও নানা ধরনের আয়োজনে অংশ নিতে গিয়েছিলাম। অনেকদিন থাকার সুবাদে শপিং করার সময়ও মিলেছিলো। নামকরা ব্র্যান্ড ‘জারা’ থেকে গোল্ডেন কালারের ভিন্ন ধাচের মেটালিক হ্যান্ড ব্যাগের সঙ্গে ম্যাচিং কানের দুল ও ব্রেসলেট কিনেছিলাম। মেরিল প্রথম আলোতে কি পরব ভাবতেই মনে হলো, এই জিনিসগুলোকেই যদি সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারি তাহলেই নতুনত্ব চলে আসবে। ব্যাগ, দুল আর ব্রেসলেটকে হাইলাইট করার জন্য গোল্ডেন কালারের একেবারেই বিপরীত রঙ মেরুন বেছে নিয়েছি শাড়ির ক্ষেত্রে। একরঙা সিল্ক শাড়ি এবং ব্লাউজের ডিজাইন আমারই করা। সঙ্গে গোল্ডেন কালারের জুতা। মেকাপ ছিল একেবারেই হালকা, টেনে চুল বেধেছিলাম, ব্যাস এতোটুকুই। ফ্যাশনপ্রিয় মানুষের কাছে আমার লুক খুব পছন্দ হয়েছে।
আরেকটি কথা, আমি যেহেতু আমার ইয়োগা সেন্টারের প্রচারণা নিজেই করি, তাই নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করতে চাই যাতে মানুষ বুঝতে পারেন যে ইয়োগা করেই এমন ফিটনেস ধরে রাখা সম্ভব। সেজন্য এমন কোন পোশাক আমি পরি না যা আমার ফিটনেস কিংবা ব্যক্তিত্বকে ছাপিয়ে যাবে।
এবারের রেড কার্পেটে অন্য তারকাদের ফ্যাশনকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
আমি শুরু করেছিলাম, এখন সবাই চেষ্টা করেন নিজের সেরা পোশাকটি এখানে পরে আসতে, এটা দেখে ভালোলাগে। তবে যখন দেখি সবাই একই ধাচের পোশাক পরে আসছে তখন একঘেয়ামি লাগে। এবার দেখলাম সবাই কেমন ফেইরি লুক নিয়ে এসেছেন, ফোলা গাউন কিংবা লেহেঙ্গা। শাড়ি পরলেও তাতে দেখলাম সেই জরি চুমকির কাজ। এ থেকে যারা বেরিয়ে এসেছেন ব্যক্তিগতভাবে তাদের ফ্যাশন আমার বেশি ভালো লেগেছে।