একাধিকবার জাতীয় পুরস্কার, ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক পদ্মশ্রী এবং পদ্মভূষণে ভূষিত হয়েছেন আগেই, এবার সম্মানজনক দাদাসাহেব ফালকে সম্মান পেতে যাচ্ছেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। আজ সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন ভারতের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। আগামী ৮ অক্টোবর ভারতের ৭০তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অভিনেতার হাতে এ সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে।
অশ্বিনী বৈষ্ণব লিখেছেন, ‘মিঠুন দার অসাধারণ সিনেমাটিক সফর সব প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা। কিংবদন্তি অভিনেতাকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিলেকশন জুরি। ভারতীয় চলচ্চিত্রে তার অসামান্য অবদান রয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
বাংলা, হিন্দিসহ ৩৫০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন মিঠুন। ১৯৭৬ সালে মৃণাল সেনের ‘মৃগয়া’ দিয়ে অভিনয়ে অভিষেক ঘটে মিঠুন চক্রবর্তীর। এরপর গত চার দশকে বিভিন্ন ভাষার, বিভিন্ন ঘরানার সিনেমায় দেখা যায় এই বাঙালি অভিনেতাকে।
গত কিছুদিন অসুস্থতা বারবার ভুগিয়েছে তাঁকে, তবু অভিনয় ছাড়েননি। মিঠুন অভিনীত নতুন সিনেমা ‘শাস্ত্রী’। এই বাংলা সিনেমাটি দুর্গাপূজায় মুক্তির অপেক্ষায় আছে।
একই দিনে চলে গেলেন হলিউডের কিংবদন্তি দুই তারকা। তাদের একজন মার্কিন গায়ক ও অভিনেতা ক্রিস ক্রিস্টোফারসন। আরেকজন মার্কিন অভিনেতা ড্রেক হগস্টেইন। গত ২৮ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয়েছে দুজনেরই।
ক্রিস ক্রিস্টোফারসন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইতে মারা যান বলে ফেসবুকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তার পরিবার। কান্ট্রি মিউজিকের এই কিংবদন্তি শিল্পীর বয়স হয়েছিল ৮৮। ক্রিস ক্রিস্টোফারসনের মৃত্যুর কারণ জানানো হয়নি।
কেবল গায়ক হিসেবেও নয়, গীতিকার হিসেবেও ক্রিস্টোফারসন ছিলেন সমীহ জাগানিয়া এক নাম। গ্র্যামিজয়ী এই শিল্পী ‘সানডে মর্নিং কামিং ডাউন’, ‘মি অ্যান্ড ববি ম্যাকগি’র মতো জনপ্রিয় গান লিখেছেন।
অনেক দিন ধরে একক শিল্পী হিসেবে পারফর্ম করলেও আশির দশকের মাঝামাঝি জনি ক্যাশ, ওয়েলন জেনিং ও উইলি নেলসনের সঙ্গে গানের দল ‘দ্য হাইওয়েমেন’-এর সঙ্গে পারফর্ম করেন ক্রিস্টোফারসন।
অভিনেতা হিসেবেও সুপরিচিত ছিলেন ক্রিস্টোফারসন। তার সবচেয়ে আলোচিত কাজ ‘আ স্টার ইজ বর্ন’। ১৯৭৬ সালে এ সিনেমাটিতে অভিনয়ের জন্য গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার জেতেন। তার আরেকটি আলোচিত কাজ ‘ব্লেড’।
১৯৭০ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম অ্যালবাম ‘ক্রিস্টোফারসন’। পরে নানা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেও নিয়মিত অ্যালবাম প্রকাশ করেন, সর্বশেষ অ্যালবাম ‘দ্য সিডার ক্রিক সেশন’ প্রকাশিত হয় ২০১৬ সালে। গানে গানে নিঃসঙ্গতা, প্রেমের গল্প বলেছেন ক্রিস্টোফারসন।
অন্যদিকে, মার্কিন অভিনেতা ড্রেক হগস্টেইন মারা গেছেন ৭০ বছর বয়সে। ‘ডেইজ অব আওয়ার লাইভস’ ধারাবাহিকে ‘জন ব্ল্যাক’ চরিত্রটির জন্য তিনি দর্শকের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে টেলিভিশন ধারাবাহিক ‘ব্ল্যাক’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। অভিনেতার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে শো-এর তরফ থেকেই।
প্রকাশিত বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানাচ্ছি যে আমাদের প্রিয় ‘ডেইজ অব আওয়ার লাইভস’ অভিনেতা ড্রেক হগস্টেইন আর নেই। দীর্ঘদিন ধরে তিনি অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সার ভুগছিলেন। মৃত্যুর সময় অভিনেতার পাশে তার প্রিয়জনেরা ছিলেন।
‘ডেইজ অব আওয়ার লাইভস’-এর প্রযোজক কেন কর্ডে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘তাকে কতটা মনে পড়বে তা প্রকাশ করার ভাষা আমার জানা নেই। আমাদের শো-তে তার প্রভাব ছিল ব্যক্তিগত এবং পেশাগত দুই ভাবেই। তার অভাব কখনো পূরণ হবার নয় ‘
ড্রেক হগস্টেইন স্ত্রী, চার সন্তান এবং সাতজন নাতী-নাতনী রেখে গিয়েছেন। অভিনেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন সহ-শিল্পীরা।
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা নির্মাতা মৃনাল সেনের বায়োপিকে অভিনয় করেছেন। কলকাতার পরিচালক সৃজিত মুখার্জির ‘পদাতিক’ নামের এই ছবিটি এরইমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ও প্রশংসিত হয়েছে।
এরইমধ্যে ছবিটি কলকাতার প্রেক্ষগৃহেও মুক্তি পেয়েছে। তবে এখনই শেষ হয়ে যায়নি ছবিটির রেশ। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পরও ছবিটি জায়গা করে নিয়েছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব সাউথ এশিয়া (ইফসা)’তে। উৎসবের একটি প্রোমো নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করে এই সুখবর দিয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী নিজেই।
চঞ্চলের ছবিটি কলকাতার হলেও এই উৎসব বাংলাদেশের জন্যও বয়ে এনেছে সুখবর। বাংলাদেশের ছবি ‘বাড়ির নাম শাহানা’ও জায়গা করে নিয়েছে উত্তর আমেরিকায় সাউথ এশিয়ান চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় এই উৎসবে।
এবারের উৎসবে চঞ্চল চৌধুরী অভিনীত ‘পদাতিক’ ছাড়াও থাকছে এ বছরে বলিউডের অন্যতম আলোচিত ছবি দিলজিৎ দোসাঞ্জ-পরিনীতি চোপড়া অভিনীত ‘চমকিলা’ এবং বিজয় সেতুপতির ছবি ‘গান্ধি টকস’। আরও দেখা যাবে অভিষেক বচ্চন-নিমরত কৌর অভিনীত ‘কালিধর লাপাতা’, বোমান ইরানি অভিনীত ‘দ্য মেহতা বয়েজ’, কানি কুশ্রুতি অভিনীত ‘অল উই ইমাজিন অ্যাস লাইট’, অদিতি রাও হায়দারি অভিনীত ছবি।
প্র্রতিবছর কানাডার টরন্টোতে বসে এই সম্মানজনক চলচ্চিত্র উৎসবে। তাতে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্রের মিলনমেলা ঘটে। বিশেষ করে বলিউড তারকাদের অংশগ্রহণ এই উৎসবকে অন্য মাত্রা দেয়।
এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। এবারের উৎসব হবে অক্টোবরের ১০ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত। এই ১০ দিনে ১২০টির বেশি সিনেমা দেখানো হবে। শুধু তাই নয়, থাকছে ৩০টির বেশি চলচ্চিত্রবিষয়ক ইভেন্ট ও মাস্টারক্লাস। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের নামকরা তারকাদের সমাগম, রেড কার্পেট লুক তো রয়েছেই।
বলিউডের কিংবদন্তী অভিনেত্রী শাবানা আজমীর চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের ৫০ বছর উদযাপন করা হবে এই উৎসবে। দেখানো হবে তার বর্তমান সময়ের ছবি ও তার একাধিক ক্ল্যাসিক ছবি। গেস্ট অব অনার হিসেবে থাকবেন বলিউডের প্রখ্যাত নির্মাতা ইমতিয়াজ আলী, দীপা মেহতা ও বোমান ইরানি। মাস্টারক্লাস করাবেন বলিউডের অন্যতম মেধাবী অভিনেতা মনোজ বাজপায়ি ও মাস্টারমেকার অনুরাগ ক্যাশপসহ আরও অনেকে।
৭০ বছরের বেশি সময় ধরে চলতে থাকা দেশিয় চলচ্চিত্রের ‘সেন্সর বোর্ড’ প্রথা ভেঙে ‘সার্টিফিকেশন বোর্ড’ সৃষ্টি হয়েছে সম্প্রতি। মুক্তি প্রতীক্ষিত দুটি ছবি দেখার মাধ্যমে যার আনুষ্ঠানিক শুরু হলো আজ (৩০ সেপ্টেম্বর) থেকে। প্রথম দিনে বোর্ডের সূচিতে রয়েছে ‘ভয়াল’ ও ‘রাজকুমারী’।
বোর্ডের অন্যতম সদস্য নির্মাতা-অভিনেতা-প্রযোজক খিজির হায়াত খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যে কাজটি আমরা শুরু করতে যাচ্ছি তা অত্যন্ত কঠিন। একটু সময় লাগবে বিধিগুলো সংস্কার করে চলচ্চিত্রবান্ধব করতে। চলচ্চিত্রে অবশ্যই পরিবর্তন আসবে। আপাতত সিনেমা হলে যেন চলচ্চিত্রগুলো নিয়মিত মুক্তি পেতে পারে, সেদিকে নজর দিচ্ছি আমরা।’
চলচ্চিত্রকর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চলচ্চিত্র ‘সার্টিফিকেশন বোর্ড’ নামকরণ করে গত ২২ সেপ্টেম্বর এ সম্পর্কিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।
ব্রিটিশদের তৈরি ১৯১৮ সালের সিনেমাটোগ্রাফ অ্যাক্ট ১৯৫২ সালে পরিবর্তিত হয়ে ‘ইস্ট বেঙ্গল বোর্ড অব ফিল্ম সেন্সর’ নামকরণ হয়। নানা রাজনৈতিক পট পরিবর্তন, মানচিত্রের বদল ঘটলেও বিগত ৭২ বছরে চলচ্চিত্রকে শাসনের রীতি বদলায়নি। ২০২৩ সালের শেষে এসে বিগত সরকার সার্টিফিকেশন বোর্ড আইন পাশ করলেও সেটির বিধিগুলো তৈরি করতে পারেনি। অবশেষে ২০২৪ সালে এসে অন্তর্র্বতী সরকারের উদ্যোগে বিগত সরকারের পদক্ষেপটির বাস্তবায়ন ঘটে। তুলে নেওয়া হয় ‘সেন্সর’ শব্দটি।
যদিও বোর্ড সদস্যরা মনে করছেন সার্টিফিকেশনের আসল সুফল পেতে হলে বিধিগুলোকে তৈরি করতে হবে। সেই কাজটিই করছেন তারা। তবে এরজন্য খানিকটা সময় লাগবে। পাশাপাশি ছবি মুক্তিতে যেন বাধা না হয়, সে জন্য নিয়মিত সিনেমাও দেখে তারা ছাড়পত্রের ব্যবস্থা করছেন।
বোর্ডের সদস্যের মধ্যে রয়েছেন আইন ও বিচার বিভাগের সচিব; প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব; তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (চলচ্চিত্র); জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্মসচিব বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার প্রতিনিধি; বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক; বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি; ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা ও গবেষক ড. জাকির হোসেন রাজু; চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিচালক রফিকুল আনোয়ার রাসেল; চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, পরিবেশক, লেখক ও সংগঠক জাহিদ হোসেন; চলচ্চিত্র সম্পাদক ইকবাল এহসানুল কবির; চলচ্চিত্র পরিচালক খিজির হায়াত খান; চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নওশাবা আহমেদ এবং চলচ্চিত্র পরিচালক তাসমিয়া আফরিন মৌ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ‘আলো আসবেই’ নামের একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ দারুণ আলোচনার জন্ম দেয়।
কারণ সেই গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শোবিজের অনেক নামকরা তারকা। এর অ্যাডমিন ছিলেন চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ, চিত্রনায়ক রিয়াজ আহমেদ, অভিনেতা সাজু খাদেম ও অভিনেত্রী শামীমা তুষ্টি।
এছাড়া এই গ্রুপে সক্রিয় ছিলেন অরুণা বিশ্বাস, সোহানা সাবা, জ্যোতিকা জ্যোতি, ঊর্মিলা শ্রাবন্তি কর, রোকেয়া প্রাচী, তানভীন সুইটিসহ একাধিক স্বনামধণ্য তারকা।
আওয়ামীপন্থি এই তারকারা মূলত ছাত্র আন্দোলনে সরকারের পক্ষে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেন। একইসঙ্গে গোপন এই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে এই শিল্পীরা সরকারকে সহায়তা করার কর্ম পরিকল্পনাও করেছিলেন।
বিশেষ করে আন্দোলনকারীদের ওপর গরম পানি ঢেলে দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রচণ্ড সমালোচিত হন অরুণা বিশ্বাস।
যাই হোক এই প্রসঙ্গ এখন লাইমলাইটের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু আজ হঠাৎ আবার সামনে চলে এসেছে ‘আলো আসবেই’ গ্রুপ। তবে এবার আর সেই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ নয়, এবারের গ্রুপটি খোলা হয়েছে ফেসবুকে।
চাঞ্চল্যকর বিষয় হলো, অভিনেত্রী সোহানা সাবার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকেই তার ফেসবুক ফ্রেন্ড এবং ফলোয়ারদের কাছে নোটিফিকেশন আসছে ওই গ্রুপে জয়েন করার জন্য!
তবে ঘটনা বেশিদূর গড়ানোর আগেই সকলকে সাবধান করেছেন এই অভিনেত্রী। তিনি বিষয়টি জানতে পেরেই আর দেরী করেননি। অতি দ্রুত তার ফেসবুকে সাবা লিখেন, ‘আমি কোন গ্রুপে কাউকে ইনভিটেশন পাঠাইনি। আমার প্রোফাইলটি হ্যাক করার চেষ্টা করছে এবং যে গ্রুপের ইনভাইটেশন সবাইকে পাঠানো হচ্ছে এটার দায়ভার আমার নয়।’
এই স্ট্যাটাসের নিচে অনেকেই জানাচ্ছেন, তারাও ‘আলো আসবেই’ ফেসবুক গ্রুপে জয়েন হওয়ার ওই নোটিফিকেশন পেয়েছে সোহানা সাবার আইডি থেকেই। কেউ কেউ নাকি আবার জয়েনও হয়েছেন!