একক অভিনয় দিয়ে তারকাদেরও মুগ্ধ করলেন সুষমা
মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্রের গুণী অভিনেত্রী সুষমা সরকার। দেশ নাটকের ‘পারো’ নাটকটিতে একাই অভিনয় করেন তিনি। গত ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় নাটকটির ৯ম মঞ্চায়ন হয়ে গেলো বেইলি রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনে। ‘পারো’ নাটকটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন মাসুম রেজা।
এর আগের শোগুলোতে তার অভিনয় প্রশংসা কুড়িয়েছে। জাকিয়া বারী মমসহ শোবিজের জনপ্রিয় তারকারাও তার নাটকটি দেখে মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন।
৯ম শো দেখতে হাজির হন দেশের প্রখ্যাত নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী আফসানা মিমি। তারা দুজনই সুষমার অভিনয় দেখে মুগ্ধ হন।
‘পারো’ একজন মধ্যবিত্ত পেশাজীবী নারীর গল্প। হাফ ডজনের বেশি চরিত্র রয়েছে নাটকটিতে। এর গল্পে যে কনফ্লিক্টগুলো দেখানো হয়েছে, সেগুলো সমাজের দৃষ্টিতে ছোট ছোট সমস্যা। অনেকে মনে করতে পারেন এ নিয়ে পারো কেন এতো বেশি রি-অ্যাক্ট করছে?
এ প্রসঙ্গে সুষমা বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা একদমই ঠিক বলেছেন। পারো খুবই ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একটি মেয়ে। তার মানে এই নয় যে, সে অনেক বেশি অধিকার চায়, জীবনটাকে সম্পূর্ণ নিজের মতো করে সাজাতে চায়। সে আসলে একজন মানুষের যতোটুকু পাওনা সমাজের কাছে ঠিক অতোটুকু নিয়েই বাঁচতে চায়। কিন্তু সেটাও কি আমাদের সমাজ নারীদেরকে দেয়?’
সুষমা আরও বলেন, ‘আমি হলফ করে বলতে পারি, রাজধানীর বাসে চড়া প্রতিটি নারী আনকম্ফোর্টেবল সিচুয়েশনে পড়েন কোন না কোন সময়। অনেক নারীই স্বামীর দ্বারা, বসের দ্বারা, বাড়িওয়ালার দ্বারা আলাদা আলাদাভাবে নির্যাতিত হন। শারীরিক, মানসিক- এই নির্যাতন প্রতিদিন নারীর ভেতরের ‘আমি’কে ক্ষত বিক্ষত করে।’
‘সুতরাং ২০২৪-এ এসে আমরা শুধু বড় ইস্যু হিসেবে যেগুলো গণ্য সেগুলো নিয়ে কথা বলব, তা কিন্তু নয়। সময় এসেছে নারীর ছোট বড় সব ইস্যু নিয়ে কথা বলার। কারণ সমাজে টক্সিক রিলেশনশীপ এতোটাই প্রকট হচ্ছে যে এ নিয়ে এখন কথা না বললে বড্ড দেরী হয়ে যাবে’ যোগ করেন সুষমা।
একক নাটকে অভিনয় প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘থিয়েটারের প্রায় সব অভিনয়শিল্পীর জীবনে যে কটা গোল থাকে তার একটি হলো একদিন তিনি একক নাটকে অভিনয় করবেন। একাই একটি গল্পের সবগুলো চরিত্র ফুটিয়ে তুলবেন। একাই পুরো মঞ্চ দাপিয়ে বেড়াবেন তার এতোদিনের অভিজ্ঞতা, ডেডিকশন আর চর্চার ওপরে সাওয়ার করে। কিন্তু গুটিকয়েক শিল্পী এই সুযোগ পান। আমাদের ‘দেশ নাটক’ থেকে প্রথম একক নাটক এই ‘পারো’। সেই নাটকেই আমি একক অভিনয় করার সুযোগ পেয়ে ভীষণ গর্বিত ও আনন্দিত।’
একা এতোগুলো চরিত্রে অভিনয় করা নিয়ে সুষমা বলেন, ‘একক নাটক করতে গিয়ে প্রতি শোয়ের আগে একদিক থেকে যেমন দারুণ আনন্দ হয়, অন্যদিকে খুব নার্ভাস লাগে। কেমন পারফর্ম করবো? দর্শক কতোটা উপভোগ করবে- এসব নিয়ে এক ধরনের চাপ থেকেই যায়।’
নাটকটি তৈরির পেছনের গল্পও জানালেন সুষমা, ‘নাটকটি মূলত নাট্যকার ও নির্দেশক মাসুম রেজা রচনা করেছেন অভিনেত্রী বন্যা মির্জার কথা ভেবে। তিনিই নাটকটির প্রথম দুটি শো করেছেন। এরপর থেকে আমি অভিনয় অভিনয় করছি।’