বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে নানান আয়োজন
আজ বিশ্ব সঙ্গীত দিবস। প্রতি বছর ২১ জুন বিশ্বের অনেক দেশে দিনটি উদযাপন করা হয়। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এবার রয়েছে বিভিন্ন উৎসব ও অনুষ্ঠান। সেসব আয়োজনের খবর নিয়ে এই প্রতিবেদন।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে ‘সুরের আগুন ছড়িয়ে দেবো সব প্রাণে’ স্লোগান নিয়ে দেশের ৪৫ জন শিল্পী ১০টি ভাষার গান গাইবেন। শুরুতে ও শেষে থাকবে দুটি দেশাত্মবোধক বাংলা গান। বাংলা ছাড়াও ইংরেজি, স্প্যানিশ, চীনা, জাপানিজ, রুশ, হিন্দি, উর্দু, অ্যারাবিয়ান, নেপালি ভাষার গান শোনা যাবে এতে। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে বিকাল ৫টায় শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি। পুরো আয়োজন সবার জন্য উন্মুক্ত। এর আগে বিকাল ৪টায় সংগীতশিল্পীদের নিয়ে একাডেমি প্রাঙ্গণে হবে একটি র্যালি। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার লা গ্যালারিতে রয়েছে ‘ফেঁত-দো-লা-মিউজিক ২০১৯’। শুক্রবার দুপুর ২টায় শুরু হয়ে অনুষ্ঠানটি চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। এই আয়োজনে বাংলা, ইংরেজি ও ফরাসি ভাষায় পরিবেশন করা হবে একক ও দলীয় সঙ্গীত। পাশাপাশি থাকবে পিয়ানো, গিটার আর বাঁশির সুর।
গানে গানে মানব বন্ধন সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে ১৯৮২ সালে ফ্রান্সে ফেঁত-দো-লা-মিউজিক প্রথম উদযাপন হয়। এর অংশ হিসেবে রাস্তা, পার্ক, জাদুঘর, রেলস্টেশন ও ঐতিহাসিক দুর্গের সামনে খোলা জায়গায় সংগীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানগুলো সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।
‘সঙ্গীত হোক বিশ্বজয়ের মন্ত্র’ স্লোগান নিয়ে শুক্র ও শনিবার দুই দিনের অনুষ্ঠান করবে বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ। কেন্দ্রীয় গণগ্রান্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে প্রতিদিন বিকাল ৩টায় শুরু হবে তাদের আয়োজন। এর মধ্যে থাকছে রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থার পরিবেশনায় জাতীয় সঙ্গীত ও পতাকা উত্তোলন, শোভাযাত্রা (গণগ্রন্থাগার থেকে টিএসসি), দলীয় সঙ্গীত, নৃত্য, বাউল গান, একক সঙ্গীত ও যন্ত্রসঙ্গীত।
বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে আজ শুক্রবার প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে. এম. খালিদ। অতিথি হিসেবে আসবেন ভাষাসৈনিক ইমেরিটাস অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, লোক গবেষক শামসুজ্জামান খান, গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সুরস্রষ্টা শেখ সাদী খান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করবেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মাহমুদ সেলিম।
বাংলাদেশ সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. বিশ্বজিৎ রায় জানান, শুক্রবারের অনুষ্ঠানে শিল্পী মিতা হককে সংবর্ধনা ও একুশে পদক প্রাপ্তি উপলক্ষে লিয়াকত আলী লাকীকে সম্মাননা প্রদান করা হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের সভাপতি শিল্পী তপন মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে অংশ নেবে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা, সুরের ধারা, বাংলাদেশ ঊদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, নজরুলসঙ্গীত শিল্পী পরিষদ, নিবেদন, রবিরাগ, বাঁশুরিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ, নির্ঝরিনী, গীত শতদল, গানের খেয়া, বেণুকা ললিতকলা একাডেমি, সঙ্গীত ভবন, মন্দিরা শিল্পীগোষ্ঠী, মহীরুহ, বাংলাদেশ একাডেমি, রবিরশ্মি, মন্দিরা শিল্পী গোষ্ঠী, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, বিশ্ববীণা, রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র, নন্দন, গীতসত্র, লোকাঙ্গন, সপ্তরেখা শিল্পী গোষ্ঠী, হিন্দোল ললিতকলা একাডেমি, সারগাম ললিতকলা একাডেমি, প্রতীতি সংগীত বিদ্যায়তন, পল্লী বাউল উন্নয়ন সংস্থা ও জাহানারা নিশি ফাউন্ডেশন।
একক কণ্ঠে গান গেয়ে শোনাবেন পাপিয়া সারোয়ার, আব্দুল ওয়াদুদ, আজিজুর রহমান তুহিন, সুজিত মোস্তফা, সন্দীপন, ঐশিকা নদী, সাজেদ আকবর, মহাদেব ঘোষ, পীযূষ বড়ুয়া, টুম্পা সমাদ্দার, নারায়ণ চন্দ্র শীল, খন্দকার খায়রুজ্জামান, লীনা দাশ, রজত দত্ত, সুরাইয়া পারভীন প্রমুখ।
অন্যদিকে কানাডার টরন্টোতে গীতিকবি রাধারমণ দত্তের লোকগান ও তার জীবনদর্শন নিয়ে উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এতে সংগীত পরিবেশনের জন্য গেছেন ফোক ঘরানার তিন শিল্পী চন্দনা মজুমদার, পিন্টু ঘোষ ও আশিক।
আজ ২১ জুন টরন্টোর আগা খান মিউজিয়াম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে ‘রাধারমণ ফোক ফেস্টিভ্যাল ২০১৯’। এতে টরন্টো প্রবাসী কয়েকজন শিল্পীও গাইবেন। তারা হলেন তমা পাল, তমা রায় ও সাবু শাহ।
ধামাইল সংগীতের প্রবর্তক রাধারমণ দত্তের ধামাইল নৃত্য পরিবেশন করবেন স্থানীয় শিল্পীরা। থাকছে সুকন্যা নৃত্যাঙ্গনের পরিবেশনা। উৎসবের আয়োজক প্রতিষ্ঠান ড্যানফোর্থ এক্সপ্রেস।