‘‌ইত্যাদি’র মাধ্যমে অভিনয়ে ফিরলেন এটিএম শামসুজ্জামান

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

এটিএম শামসুজ্জামান ও মাসুদ আলী খান

এটিএম শামসুজ্জামান ও মাসুদ আলী খান

‘ইত্যাদি’র মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর আবারও টেলিভিশনের পর্দায় ফিরছেন খ্যাতিমান অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান ও মাসুদ আলী খান। আর এই দুই গুণী অভিনেতাকে একসঙ্গে ক্যামেরার সামনে নিয়ে আসছেন নির্মাতা-উপস্থাপক হানিফ সংকেত। গত ৪ নভেম্বর ঢাকাস্থ ফাগুন অডিও ভিশনের নিজস্ব শুটিং স্পটে তাদের নিয়ে ‘ইত্যাদি’র বিশেষ এই দৃশ্যটি ধারণ করা হয়।

টানা চার মাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এটিএম শামসুজ্জামান। সেসময় নিয়মিত তার খোঁজ রাখতেন হানিফ সংকেত। একদিন হাসপাতালে এটিএম শামসুজ্জামানকে দেখতে গেলে, সুস্থ হয়ে আবারও ইত্যাদির মাধ্যমে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেন তিনি। আর তাই সুস্থ হয়ে বাসায় আসলে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাকে নিয়ে ‘ইত্যাদি’র জন্য একটি নাট্যাংশ নির্মাণ করেন হানিফ সংকেত।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে এটিএম শামসুজ্জামান বলেন, ‘কথায় আছে, রাখে আল্লা মারে কে। আমার যখন শারীরিক অবস্থা চরম খারাপ, তখন আমার অবস্থা জানতে পেরে অসংখ্য মানুষ আমার জন্য হাত তুলে দোয়া করলেন আল্লাহর কাছে। তাদের দোয়ায় আমি সুস্থ হয়ে আপনাদের সামনে ফিরে এসেছি। আমি যখন অসুস্থ ছিলাম তখন আমার মনে হচ্ছিল আমি কি আর ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে পারবো। আবার কি অভিনয় করতে পারবো। এই সময় ইত্যাদির হানিফ সংকেত আমার কাছে এলেন, আপনাকে আমরা নিয়ে যাবো, আপনার একটুও হাঁটতে হবে না। তিনি তার কথা রাখলেন। শুধু নিয়ে যাওয়াই নয়-চেয়ারে বসিয়ে কয়েকজনকে দিয়ে দোতালায় উঠালেন এবং ক্যামেরার সামনে দাঁড় করালেন। পরম ধৈর্য্য সহকারে বেশ সময় নিয়ে আমাদের পর্বটি ধারণ করলেন এবং শ্যুটিং শেষে আবার বাসায় পৌঁছে দিলেন। তার আপ্যায়ন, শিল্পীর প্রতি সম্মান সবসময় আমার ভালো লাগে। এবারও তার সেবা যত্ন আমাকে মুগ্ধ করেছে।’

‘ইত্যাদি’র বিশেষ দৃশ্যের শুটিয়ের জন্য ফাগুন অডিও ভিশন শুটিং স্পটে এটিএম শামসুজ্জামান ও মাসুদ আলী খান

দর্শকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন-আমি যেন আগের মত অভিনয় করতে পারি, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার হায়াত আছে আপনাদের যেন আনন্দ দিতে পারি, সুখ দিতে পারি।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে গত ৬ অক্টোবর ৯০ বছরে পদাপর্ণ করলেন আরেক বর্ষীয়ান অভিনেতা মাসুদ আলী খান। ৯০ বছরে পা রেখে ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে তিনিও আবার দীর্ঘদিন পর টেলিভিশনে অভিনয়ে ফিরলেন।

ইত্যাদিতে অভিনয়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রায় ৬ বছর আগে একটা দুর্ঘটনার ফলে আমার শিরদাঁড়ার একটা অংশ ভেঙ্গে যায়। ফলে আমার পক্ষে আর অভিনয় করা সম্ভব হতো না। অভিনয় করতে না পারলেও মনেতো একটা খেদ থাকেই। কারণ আমি নিয়মিত রেডিও-টেলিভিশনে অভিনয় করতাম। আর ইত্যাদি আমার অত্যন্ত প্রিয় একটা অনুষ্ঠান। এতে আমি বরাবরই অংশগ্রহণ করতাম। আমি মনে একটা আশা পোষণ করছিলাম যে যদি জীবনে কোন অনুষ্ঠান করা আর নাই হয় এই জীবন সায়াহ্নে এসে ‘ইত্যাদি’র একটা পর্বে আমি অভিনয় করবোই। তাই এবার ‘ইত্যাদি’র মাধ্যমে আপনাদের সামনে আসা। যতদিন বাঁচি আমি যেন মাঝেমধ্যে আপনাদের সাক্ষাৎ পাই। সেই দোয়া চাই।’

‘ইত্যাদি’র বিশেষ দৃশ্যের শুটিয়ের জন্য ফাগুন অডিও ভিশন শুটিং স্পটে এটিএম শামসুজ্জামান ও মাসুদ আলী খান

হানিফ সংকেত বলেন, ‘বর্ষীয়ান এই অভিনয় শিল্পীরা আমাদের জাতীয় সম্পদ। আজকাল মিডিয়াতে দেখা যায় একটু বয়স হলে তার জন্য আর কোন চরিত্র থাকে না। কারণ অধিকাংশ নাটকেই কোন বাবা-মা বা বয়স্ক চরিত্র দেখা যায় না। আর কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তার খোঁজ-খবর নেয়া শুধু সেলফিতেই সীমাবদ্ধ থাকে। তবে আমার নাটকে এইসব গুণী শিল্পীদের একটা বিশেষ স্থান থাকে। এই দুই গুণী অভিনেতা ইত্যাদির প্রায় নিয়মিত শিল্পী। দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর পরিবারের একজন সদস্য ফিরে এলে যেমন আনন্দ হয় ইত্যাদিতে আবার তাদের পেয়ে আমিও তেমনি আনন্দিত। যদিও তাদের এই দূরে থাকাটা ছিলো অসুস্থতার কারণে। তবে তাদের সেই অভিনয় দ্যুতি এখনও আছে। ইত্যাদির প্রতি তাদের এই ভালোবাসার কাছে আমি ঋণী।’