দুবাই থেকে ইউরোপ যাওয়ার সহজ উপায়!



তোফায়েল আহমেদ (পাপ্পু্‌), বার্তা২৪.কম, সংযুক্ত আরব আমিরাত (দুবাই)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইউরোপে ভ্রমণ বা বসবাস আমাদের কাছে স্বপ্নের মতো। আমাদের জীবনের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য এবং নিরাপদ জীবনের জন্য প্রায়ই ইউরোপের দেশগুলোর দিকে ছুটতে থাকি। কেননা, সেই দেশ গুলোতে জীবিকার মান অনেক উন্নত। আর আপনি যদি সেই দেশ গুলোতে গিয়ে কাজ করতে পারেন। তাহলে আপনি উন্নত জীবন উপভোগ করার পাশাপাশি ভালো বেতনের সুবিধা নিতে পারবেন।

ইউরোপে ছুটার পেছনে আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা থেকে থাকে। যেমন আমাদের অনেকের টাকার অভাব থাকে, অনেকের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে অর্থ থাকা সত্ত্বে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপ যাওয়ার উপায় সম্পর্কে না জানার কারণে ইউরোপে যেতে পারে না।

ইউরোপে যাওয়ার জন্য অন্যতম মাধ্যম দেশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারতসহ এশিয়ার দেশসমূহের লোকজন সংযুক্ত আরব আমিরাত অর্থাৎ দুবাইকে বেছে নেন। কেননা দুবাই থেকে ইউরোপ যাওয়ার প্রসেসিং সিস্টেম সহজতর হওয়ায় ভিসা পাওয়া সম্ভব হয়। আজ আপনাদের সাথে আলোচনা করবো যারা দুবাই থেকে ইউরোপে ট্যুরিস্ট ভিসায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তাদের জন্য পরামর্শ।

আপনি যদি চিন্তা-ভাবনা করে থাকেন যে দুবাই থেকে ইউরোপে প্রবেশ করবেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে প্রথমত দুবাইয়ে প্রবেশ করা লাগবে। সেখানে আপনি ভিজিট ভিসা অথবা সরাসরি এমপ্লয়মেন্ট ভিসা নিয়ে খুব সহজে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোনো রকমের সমস্যা হয় না। বর্তমানে দুবাই ভিজিট ভিসা পাওয়া অনেকটা সহজ একটি ব্যাপার। সে ক্ষেত্রে কিছু টাকা খরচ করলেই আপনি দুবাইয়ের ভিজিট ভিসা পেয়ে যাবেন। কোন রকমের ঝামেলা হবে না।

যদি ভিজিট ভিজিট ভিসায় দুবাইতে এসে থাকেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই যেকোনো একটি রেসিডেন্সিয়াল ভিসার জন্য কাজে নিয়োজিত হতে হবে। এই ক্ষেত্রে আপনি আপনার ফ্রেন্ড অথবা পরিচিত কারো মাধ্যমে এই সুযোগটা করে নিতে পারবেন। যদি সরাসরি এমপ্লয়মেন্ট ভিসা নিয়ে আসেন তাহলে এই ভিসাতেই হবে রেসিডেন্সি ভিসা যা দুই বছর মেয়াদ। আপনার ভিসার প্রফেশন অবশ্যই ম্যানাজার ক্যাটাগরির হতে হবে। আপানি যে ভিসা নিবেন তাতে যেন আপনার মাসিক বেতন হিসাবে যেন ৫ হাজার দিরহাম এর বেশি বেতন উল্লেখ করা থাকে তা মনে রাখবেন। আর প্রতিমাসে যে আপনার বেতন ব্যাংকে ট্রান্সফার করা যায় সে বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। তবে কাজ পাওয়াটা দুবাইয়ে একটু কঠিন ব্যাপার কিন্তু চেষ্টা করলে সম্ভব। যখন আপনি দুবাইয়ে কাজে নিয়োজিত হয়ে যাবেন এবং আপনার দুই বছর মেয়াদী একটি ভিসা পেয়ে যাবেন তখন কিন্তু আপনি এক বছর থাকার পরেই ইউরোপে যাওয়ার জন্য আপনি প্রস্তুত হতে পারবেন। এর আগে দুবাইয়ের যেকোন একটি ব্যাংকে আপনাকে একাউন্ট খুলতে হবে।

ভিসা প্রস্তুত ও ব্যাংক একাউন্ট হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে ট্রাভেল হিস্ট্রি করা লাগবে। প্রথমে আপনাকে ছোট দেশগুলোতে ভ্রমণ করা লাগবে। দুবাই থেকে সহজে ছোট ছোট দেশগুলোর ভিসা পাওয়া সহজ। যেমন ওমান, কুয়েত, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, জর্জিয়া, আজারবাইজান, মিশরসহ অন্যান্য ছোট ছোট দেশ গুলোতে আপনাকে ভ্রমণ করে ট্রাভেল হিস্ট্রি তৈরি করতে হবে।

এইভাবে আপনি ইউরোপের ভিসা পাবার জন্য এই কাজগুলো করে নিবেন। তাহলে ভিসা পাওয়া সহজ একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। কারণ ইউরোপে যাওয়ার জন্য এই বিষয়গুলো দেখা হয়। এর পাশাপাশি আপনার ব্যাংক একাউন্ট স্ট্রং করতে হবে। প্রতি মাসে স্যালারি একাউন্টে ডব্লিউপিএস করতে হবে। এইভাবে এক বছর অতিক্রম হওয়ার পর ও যখন রেসিডেন্সি ট্রাভেল হিস্ট্রি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট সবকিছু ঠিকঠাক থাকবে তারপর আপনি নিজে অথবা ভাল কোন ট্রাভেল এজেন্সির সহযোগিতায় ইউরোপের ভিসার জন্য ফাইল প্রসেসিং করতে হবে।

ইউরোপের ভিসার জন্য যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন হবে লাগবে সেগুলো হলো:

ছয় মাস মেয়াদি আপনার পাসপোর্ট কপি এবং এম্বেসিতে মেইন পাসপোর্ট সাথে নিতে হবে, দুবাই রেসিডেন্সি ভিসার কপি, এমিরেটস আইডি কার্ডের কপি
তিন অথবা ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, এনআইডি কার্ডের ফটোকপি (যদি থাকে), দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, হোটেল বুকিং এর প্রমাণপত্র
বিমান টিকিট, পূর্বে ট্রাভেল করেছেন তার প্রমাণ অর্থাৎ যেসব দেশে আপনি ভ্রমন করেছেন সেগুলোর ফটোকপি, যে কোম্পানিতে আপনি ভিসা নিয়েছেন, সেখান থেকে একটা এনওসি লেটার, কী উদ্দেশ্যে ইউরোপ যাচ্ছেন তার একটি বিবরন দিয়ে কভার লেটার।

এই রিকোয়ারমেন্ট গুলো সাধারণত আপনার যখন হয়ে যাবে তখন এজেন্সীর মাধ্যমেই তারা ভিসা কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। সমস্ত ডকুমেন্টস নিয়ে তারাই কাজকর্ম করবে। তবে এক্ষেত্রে কিন্তু আপনি চাইলে নিজেও এজেন্সি অথবা দূতাবাসের মাধ্যমে এগুলোর জন্য কাজ করতে পারবেন। যদি আপনি নিজেই পারেন তাহলে সরাসরি নিজে গিয়ে করা ভালো হবে। এক্ষেত্রে দালালের মাধ্যম এড়িয়ে চলবেন এবং অবশ্যই বৈধ পথে চলার চেষ্টা করবেন। তাহলেই আশা করা যায় সফল হতে পারবেন।

   

চিড়িয়াখানায় কুকুরকে পান্ডা বানিয়ে প্রদর্শন



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
চিড়িয়াখানায় কুকুরকে পান্ডা বানিয়ে প্রদর্শন

চিড়িয়াখানায় কুকুরকে পান্ডা বানিয়ে প্রদর্শন

  • Font increase
  • Font Decrease

পূর্ব চীনের একটি চিড়িয়াখানা কুকুরকে ‘পান্ডা’ বানিয়ে প্রদর্শন করা হয়েছে। কুকুরের শরীরে সাদা এবং কালো রং মাখিয়ে আসল পান্ডাদের মতো বানিয়ে প্রদর্শন করা হয়। চীনের জিয়াংসু প্রদেশের তাইঝু চিড়িয়াখানায় গত ০১ মে এ ঘটনা ঘটে।

সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে এমন অবাক কাণ্ডের তথ্য প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়- পহেলা মে’র ছুটিকে কেন্দ্র করে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী বাড়াতে কর্তৃপক্ষ চিড়িয়াখানায় ‘পান্ডা কুকুর’ দেখা যাবে বলে বিজ্ঞাপন দেয়। তাদের বিজ্ঞাপন দেখে দর্শনার্থীরা চিড়িয়াখানায় ছুটে আসে। এসে তাদের এমন কাণ্ড দেখে অনেক দর্শনার্থী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়।

নিউইয়র্ক পোস্টে বলা হয়, চিড়িয়াখানার কর্মকর্তারা দুটি চৌ চৌ কুকুরের মুখ কালো রং করেছেন, যাতে কুকুরগুলোকে ক্ষুদ্রাকৃতির পান্ডাদের মতো দেখা যায়। এই কুকুরগুলোকে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে প্রদর্শনের জন্য রেখে দেওয়া হয়, যেখানে দর্শনার্থীদের ভিড় করে তাদের দেখার জন্য জড়ো হয়।

যখন দর্শনার্থীরা বুঝতে পারেন কুকুরগুলো আসল পান্ডা নয়, তখন অনেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তারা অভিযোগ করেন, প্রাণীর সঙ্গে এমন আচরণ নিষ্ঠুরতা।

তবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যে রং তারা ব্যবহার করেছেন তা ক্ষতিকারক নয় এবং এ রঙে কোনো রাসায়নিকও নয়।

চিড়িয়াখানার একজন মুখপাত্র জানান, তাদের চিড়িয়াখানায় কোনো পান্ডা ভাল্লুক ছিল না। তাই তারা এমনটি করেছেন। মানুষও চুলে রং করে। কুকুরের লম্বা পশম থাকলে প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করা যায়।

অন্য একজন জানান, তাদের চিড়িয়াখানায় আসল পান্ডা রাখার জায়গা নেই। এভাবে করলে দর্শনার্থীদের আরও বেশি আনন্দ দেওয়া যাবে বলে তারা এমনটি করেছেন।

উল্লেখ্য, চৌ চৌ একটি স্পিটজ-টাইপ কুকুর, যা মূলত উত্তর চীনে পাওয়া যায়।

;

চম্পারণের ১০৭ বছর



ফিচার ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১০৭ বছর আগে ১৯১৭ সালের ১৫ এপ্রিল বিকেলের কথা। শোষণের হাত থেকে বাঁচার জন্য হাজার হাজার কৃষক বিহারের চম্পারণের মতিহারি রেলস্টেশনে তীক্ষ্ণ চশমা পরা এক লোকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। রাজকুমার শুক্লা নামে একজন চম্পারণের কৃষক মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী জী কে চম্পারণে আসার জন্য অনুরোধ করেন।

তিনি এখানে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে না আসলেও প্রায় এক বছর ধরে তার উকিল বন্ধু ব্রজ কিশোর প্রসাদ, রাজেন্দ্র প্রসাদ, গোরখ প্রসাদ, চন্দ্রভাগা সহায় এবং বাবু ধারনীধরদের নিয়ে ভারতীয় ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কৃষকদের সমীক্ষা চালিয়েছিলেন। সাবধানতার সাথে ৪ হাজারের বেশি সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করেন তারা। প্রধানত কৃষকদের দুঃখজনক জীবনের বর্ণনা ও দ্বিগুণ করের আওতায় তাদের শোষণের কথা সমীক্ষায় উঠে আসে।

চম্পারণ সত্যাগ্রহ ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা এবং ভারতীয় জাতীয় আন্দোলনের পদ্ধতি ও মতাদর্শ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এটি অহিংস প্রতিরোধ এবং নাগরিক অবাধ্যতার সাথে মহাত্মা গান্ধীর প্রথম দিকের পরীক্ষাগুলির মধ্যে একটি চিহ্নিত করে, যা পরে তার নেতৃত্ব এবং ভারতের স্বাধীনতার জন্য বৃহত্তর আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে। চম্পারণ সত্যাগ্রহ ১৯১৭ সাল থেকে ১৯১৮ সালের মধ্যে ভারতের বিহারের চম্পারণ জেলায় সংঘটিত হয়েছিল।

১০০ বছর পর হস্তলিখিত সাক্ষ্যগুলি জাতীয় আর্কাইভস থেকে সংগ্রহ করে সবরমতী আশ্রমের আর্কাইভ বিভাগে প্রতিলিপি করা হচ্ছে। এসব আর্কাইভ আটটি খণ্ডে রূপান্তরিত হচ্ছে। কীভাবে কৃষকরা তাদের কণ্ঠস্বর উত্থাপিত হতে দেয় এবং শান্তিপূর্ণভাবে তাদের অধিকারের দাবি জানায়। সাক্ষ্য রেকর্ড করার এই সত্যাগ্রহের ফলেই চম্পারণ কৃষি আইন প্রণয়ন করা হয়েছিল।

চম্পারণ সত্যাগ্রহ গান্ধীর নিপীড়ক ব্রিটিশ নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের উপায় হিসাবে অহিংস প্রতিরোধকে নিয়োগ করার প্রথম প্রচেষ্টাগুলির মধ্যে একটি হিসাবে চিহ্নিত করেছিল। তিনি এই কৌশলটিকে “সত্যাগ্রহ” বলে অভিহিত করেন, যার অনুবাদ “সত্য শক্তি”।

 চম্পারণের মতিহারি রেলস্টেশন। ছবি: সংগৃহীত

চম্পারণ অভিযানের জনগণের হতাশা একটি কার্যকর রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়। গান্ধী জী এবং তার দল রেকর্ড করছিল কিভাবে কৃষকরা নীল চাষের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। নীলকররা কিভাবে কৃষকদের বাধ্য করছে নীল চাষ করার জন্য এসব বিষয় তুলে ধরেছেন। নীল চাষ না করলে কৃষকদের উপর দ্বিগুণ করন চাপিয়ে দেওয়া হতো। ব্রিটিশ রোপনকারীরা এজেন্টদের ব্যবহার করে বলপ্রয়োগ ও সহিংসতার মাধ্যমে কর আইন কার্যকর করতো।

সবরমতি আশ্রমের পরিচালকের মতে, গান্ধী ও তার অ্যাডভোকেট বন্ধুরা শ্রোতার ভূমিকা পালন করেন। গান্ধীর মাধ্যমে কৃষকরা নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারেন। তারই ফল হলো আজ আমাদের সাথে কৃষকদের সম্পর্কের বিস্তারিত রেকর্ড রয়েছে জমিদার, ব্রিটিশ নীল কারখানার মালিকদের সাথে সম্পর্ক এবং ভূমি রাজস্ব কাঠামোর শোষণমূলক প্রকৃতি।

তিনি বলেন, চম্পারণ সত্যাগ্রহের সময়, বাপু দেখিয়েছিলেন যে মানুষকে স্বাধীনতার জন্য একটি গণআন্দোলনে আকৃষ্ট করার জন্য তাদের ব্যক্তিগত জীবনে একটি সুস্পষ্ট এবং পরিমাপযোগ্য পরিবর্তন করা গুরুত্বপূর্ণ। তবেই স্বাধীনতার ধারণা তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

চম্পারণ সত্যাগ্রহের ফলস্বরূপ, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ কৃষকদের অভিযোগ তদন্তের জন্য চম্পারন কৃষি তদন্ত কমিটি নিয়োগ করতে বাধ্য হয়েছিল। এই কমিটি শেষ পর্যন্ত কৃষকদের অনুকূলে সংস্কারের সুপারিশ করেছিল, যা গ্রামীণ জনগণের মধ্যে উন্নত অবস্থা এবং ক্ষমতায়নের বোধের দিকে পরিচালিত করে।

;

রেলস্টেশনে বুকশপ আর চোখে পড়ে না!



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা
ছবি: বার্তা২৪, খুলনা রেলওয়ে স্টেশন

ছবি: বার্তা২৪, খুলনা রেলওয়ে স্টেশন

  • Font increase
  • Font Decrease

একটা সময় ছিল যখন রেলের দীর্ঘ যাত্রায় রেলের বগিতে সময় কাটাতে হতো। তখন এই অলস সময় কাটাতে বইয়ের কোনো বিকল্প ছিল না। যাত্রাপথে বই খুলে গভীর মনোযোগ দিয়ে বই পড়তেন। সে কারণে রেলের বগিতে, স্টেশনগুলোতে কিছুক্ষণ পর পর বই বিক্রেতাদের হাকডাকও ছিল বেশ রকমের। স্টেশনেও থাকতো বই বিক্রির দোকান, যা ‘বুকশপ’ নামে পরিচিত ছিল। এখন তা শুধুই স্মৃতি মাত্র!

রেলস্টেশনে এসব বইয়ের দোকানে অনেক ধরনের বই পাওয়া যেতো, যা বাজারের বইয়ের দোকানগুলোতে থাকতো না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে সবকিছু। এখন বই কিনে আর কেউ রেলে চড়েন না। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় স্মার্টফোনে সময় পার করেন। রেলের কোচে এখন আর বইয়ের ফেরিওয়ালাও ওঠেন না, বই কেনার কাউকে পাওয়া যায় না বলে।

১৯৮৫ সালে খুলনা রেলস্টেশনে বইয়ের ব্যবসা শুরু করেছিলেন মো. আবু বক্কার। বিশাল বইয়ের দোকান ছিল রেলস্টেশনে। বইয়ের দোকানের নাম ছিল ‘প্রজ্ঞা রেলওয়ে বুক স্টল’। কিন্তু এখন আর এত বই নেই সে দোকানে। গুটি কয়েক বই রয়েছে সে বুকশপে। তবে এগুলোও বিক্রি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এখন পুরনো স্টেশনের সেই দোকানটিতে চা, পান, সিগারেট বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে, খুলনার রেলস্টেশনটি এখন আন্তর্জাতিক মানের। যদিও সেখানে বইয়ের দোকান দেওয়ার জন্য কোনো স্থানই আর খালি নেই। আগ্রহও নেই রেল কর্তৃপক্ষের।

এ বিষয়ে প্রজ্ঞা রেলওয়ে বুক স্টলের মো. আবু বক্কার আক্ষেপ নিয়ে বলেন, এখন আমার বয়স ৮০। কী আর করবো! কেউ আর বই কিনে রেলে চড়েন না। বই পড়েনও না। অন্য ব্যবসা পারি না। তাই, এখন এই দোকানে বসে চা, পান, বিড়ি বিক্রি করি। কিছু পুরনো বই রয়েছে। কিন্তু বিক্রি হয় না’।

আবৃত্তিকার কামরুল কাজল জানান, রেলে চড়ার অনেক স্মৃতি রয়েছে আমার। প্রতিবার রেলে উঠলে নতুন নতুন বই কিনতাম। অনেক নতুন বই রেলস্টেশনের স্টলে পেতাম, যা খুলনার অনেক বইয়ের দোকানে পেতাম না। আবার রেলে উঠলে অনেক হকার বই বিক্রি করতেন। সেই সব বইগুলো ছিল সময় কাটানোর বড় অনুষঙ্গ। কিন্তু এখন বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ দেখি না।

রেলস্টেশনে বুকশপ বা বইয়ের স্টল এখন আর চোখেই পড়ে না! খুলনা রেলওয়ে স্টেশন, ছবি- বার্তা২৪.কম

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দীন বিশ্বাস জানান, এখনকার ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ কমে গেছে। আগ্রহ তৈরিতে এলাকাভিত্তিক পাঠাগার গড়ে তুলতে হবে। বইয়ের চাহিদা না থাকায় অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছেন।

রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল জোনের (রাজশাহী) ব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার জানালেন, পুরনো রেলস্টেশনগুলোতে বই বিক্রির জন্য স্থান থাকলেও নতুন যেসব স্টেশন তৈরি হয়েছে, সেসব স্টেশনে আলাদা স্থান রাখা হয়নি। এছাড়া যারা স্টেশনে ব্যবসা করার জন্য আবেদন করেছেন, তারা বেশির ভাগ খাবারের দোকান হিসেবে বরাদ্দ চান।

 

;

প্রকৃতিতে শোভা ছড়াচ্ছে ‘সোনালু ফুল’



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সবুজের ফাঁকে উঁকি দিয়ে হলুদ আভায় মুগ্ধতা ছড়ানো ফুল সোনালু। নজরকাড়া সৌন্দর্যে মুখরিত এই ফুল পথিকের মনে এনে দিচ্ছে প্রশান্তির ছোঁয়া। পরিবেশ ও প্রকৃতির শোভা বর্ধনে সোনালু দারুণ এক নিসর্গ মায়া এনে দিয়েছে। এই ফুলের দেখা মিলছে নওগাঁর বিভিন্ন পথে প্রান্তরে।

মঙ্গলবার (৭ মে) বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, নওগাঁ শহরের বরেন্দ্র অফিসের পাশে থোকায়-থোকায় হলুদ আভায় ঝুলে আছে সোনালু। ফুলের মাথা হতে লম্বা লতার মত বড় হয়েছে।

শীতকালে সব পাতা ঝরার পর বসন্তে একেবারেই মৃতের মতো দাঁড়িয়ে থাকে গাছটি। গ্রীষ্মের শুরুতে দু’একটি কচিপাতার সাথে ফুল ফুটতে শুরু করে। হলুদ সোনালি রঙের অসংখ্য ফুল সারা গাছজুড়ে ঝাড় লণ্ঠনের মতো ঝুলতে দেখা যায়।


জানা যায়, সোনালু গাছের পাতাঝরা মাঝারি আকৃতির । এটি আট থেকে ৯ মিটার উঁচু হয়। হলুদ বরণ এ ফুল দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি আছে তার বাহারি নামও। পরিচিত নামগুলো হলো সোনালু, সোনাইল, সোঁদাল, বান্দরলাঠিসহ আরো অনেক। ফুল থেকে ধীরে ধীরে লাঠির মত কালো রঙের ফল হয়ে সেটি কয়েক সেন্টিমিটার অব্ধি লম্বা হয়ে থাকে।

পথচারী আলমগীর বলেন, সোনালু দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আর শহরের মধ্যে চোখে পড়েনা বললেই চলে। যতবার দেখি খুব সুন্দর লাগে। মনের মধ্যে এনে দেয় এক প্রশান্তি। 

স্থানীয় বাসিন্দা মিঠু বলেন, আমি মোবাইল দিয়ে প্রচুর ছবি তুলেছি এই ফুলের। আমার খুব ভালো লাগে সোনালু ফুল। তবে এই ফুল যেন হারিয়ে না যায় সেজন্য আমাদের গাছ লাগানো উচিৎ। আমাদের বাড়ির আশেপাশে অনেক সোনালু গাছ আছে যা আমাদের মুগ্ধ করে।


নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন- এটি মূলত সৌন্দর্য বর্ধনে রোপণ করা হয়। গ্রাম বাংলায় এই ফুলকে বাদর লাঠি গাছ বলেও ডাকা হয়। এটির বৈজ্ঞানিক নাম 'কেসিয়া ফিসটুলা (Cassia Fastula)। এই উদ্ভিদ বাংলাদেশে অনেক জাতের আছে। ফুলটার জন্য বেশি খ্যাতি রয়েছে বলে অনেক জায়গায় লাগানো হয়। গাছের কাঠগুলো জ্বালানি কাজে ব্যবহার করা হয়।

;