মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে শীতের ‘লাল শাপলা’!
শাপলা ফুল সাধারণত বর্ষা মৌসুমে দেখা মেলে। আমাদের গ্রামাঞ্চলের খালবিলে কিংবা পুকুরে এই ফুল দেখা যায়। কিন্তু শীত মৌসুমেও দেখা মিলেছে, শত শত লাল শাপলা ফুলের। অসময়ে ফোটা লাল শাপলা দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীরা। জাতীয় ফুলের রঙ সাদা হলেও লাল শাপলা মানুষকে আকর্ষণ করে বেশি।
মুগ্ধতা ছড়ানো অসময়ে ফোটা এই লাল শাপলার দেখা মিলেছে ,রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি সদরের ওয়াপদা মোড়ে অবস্থিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুকুরে। স্থানীয়রা জানান, বছর জুড়েই এখানে লাল শাপলা ফুল ফোটে।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল আকৃতির পুকুরটির মধ্যে ফুটে রয়েছে অসংখ্য লাল শাপলা। পুকুরের তিনটি পাশে শোভা পাচ্ছে শত শত শাপলা ফুল। পুকুরের পাশ দিয়ে সবুজ দুর্বা ঘাসের পাশে ফুটে রয়েছে অসংখ্য লাল শাপলা। সবুজ ঘাসের মধ্যে লাল শাপলা এ যেন এক অসাধারণ দৃশ্য!
কথা হয়, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দাদের সঙ্গে। তারা বার্তা২৪.কমকে জানান, ১২ মাসই এই পুকুরে লাল শাপলা ফুল ফোটে। প্রতিদিন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা এখানে আসেন ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে। দূর-দূরান্ত থেকে আসেন বিভিন্ন পেশা ও বয়সের দর্শনার্থী। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ শেষে অনেকেই ফোটা ফুল ছিঁড়ে নিয়ে চলে যান। এতে করে এখানকার সৌন্দর্য বিলীন হতে চলেছে। কমতে শুরু করেছে ফুলের সংখ্যাও।
দর্শনার্থী কলেজ শিক্ষার্থী রিপা দে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি, ওয়াপদার পুকুরে লাল শাপলা ফুল ফোটে। তাই, দেখতে এসেছি। খুবই ভালো লাগলো। প্রকৃতির অপরূপ রূপে সেজেছে পুকুরটির চারপাশ। সবুজ ঘাসের মধ্যে লাল শাপলা সত্যি অসাধারণ দৃশ্য'।
কোনো দর্শনার্থী যাতে ফুল ছিঁড়তে না পারেন, সে বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত বলে মত দেন এই শিক্ষার্থী।
লাল শাপলা বা রক্ত কমল শাপলা পরিবারের একটি জলজ উদ্ভিদ। এই প্রজাতির জলজ উদ্ভিদকে বাংলা ভাষায় ‘শাপলা’, হিন্দিতে ‘কোকা’ এবং সংস্কৃত ভাষায় ‘কুমুদা’ বলা হয়।
লাল শাপলা বা রক্ত কমল নাতিশীতোষ্ণ ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকার স্বল্প গভীর জলের হ্রদ ও পুকুরে জন্মে। সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, চীনের ইউনান প্রদেশ, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে শাপলা ফুটতে দেখা যায়।
এই ফুলের অনেকগুলি লাল রঙের পাঁপড়ি থাকে। এরা সাধারণত রাতে ফোটে। এদের গোলাকার ফল হয়। ফলে অনেকগুলো ছোট ছোট বীজ হয়। বীজগুলি পরিপক্ক হলে শিশুদের কাঁচা খেতে দেখা যায়। জানা গেছে, এই বীজগুলি থেকে এক ধরনের খৈ তৈরি করা হয়, খাওয়া যায়।