দেশের উন্নয়নে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক চাই হৃদ্যতাপূর্ণ



মো. আকতারুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মহান মে দিবস শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের আলোকবর্তিকা। “শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, উন্নয়নের শপথ করি” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশে পালিত হচ্ছে মহান মে দিবস। শ্রমিকের আত্মমর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত করার ও ন্যায্য দাবি আদায়ের এক ঐতিহাসিক দিন। ১৮৮৬ সালের এ দিনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে শ্রমের মর্যাদা, শ্রমের মূল্য এবং দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে শ্রমিকেরা যে আত্মাহুতি দিয়েছিলেন তাদের আত্মত্যাগের প্রতি একাত্মতা, শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে বিশ্বব্যাপী এ দিবসটি পালিত হয়।

এখানে শ্রমিক এবং মালিকের চেতনার জায়গাটি প্রসারিত হয়, সর্ম্পকের উন্নয়ন ঘটে, পারস্পরিক সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হয়। শ্রমিক মালিকের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তথা ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে এ বছর মে দিবসের প্রতিপাদ্য নির্বাচন করা হয়েছে। দেশের শিল্পোন্নয়ন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজিকে সামনে রেখে উন্নত কর্মপরিবেশ, শ্রমিক-মালিকের সুসম্পর্ক, শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষা, পেশাগত নিরাপত্তা ও সুস্থতা নিশ্চিতকরণের কোনো বিকল্প নেই। এ প্রেক্ষাপটে এবারের প্রতিপাদ্য যথার্থ।

শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা, ন্যায়সংগত অধিকার ও কল্যাণের সাথে মহান মে দিবসের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত । শোষণ, বঞ্চনা, লাঞ্ছনা থেকে মুক্তির দীপ্ত শপথে বিশ্বব্যাপী দিনটি পালিত হয়। দিনটি সরকারি ছুটির দিন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের দিনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ তার জন্মলগ্ন থেকেই আন্তর্জাতিক রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভের পরেই ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর সদস্যপদ লাভ করে। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ২২ জুন আইএলসি সম্মেলনে ৬টি কোর-কনভেনশনসহ ২৯টি কনভেনশন অনুসমর্থন করে। বঙ্গবন্ধু শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মত্যাগকারী শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে  এদিন ‘জাতীয় শ্রমিক দিবস’ এবং ‘সরকারি ছুটি’ ঘোষণা করেন।

 শিল্পায়ন, শিল্পের উৎপাদন তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রথম প্রয়োজন শ্রমজীবী মেহনতি মানুষ। শ্রমিক উৎপাদনের অপরিহার্য উপাদান, যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যে নিহিত থাকে দেশের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ। দেশের সম্ভাবনা এবং শ্রমজীবী মানুষের  সুযোগ সুবিধার কথা বিবেচনা করে অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে  বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এবং ২০১৩ সালের সংশোধিত শ্রম আইন যুগোপযোগী ও আধুনিকায়ন করে বাংলাদেশ শ্রম (সংশোধন) আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের ইতিহাসে  প্রথমবারের মতো ২০১৫ সালে শ্রমবিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২০১৩ সালে জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা এবং গৃহকর্মীদের প্রতি লাঞ্ছনা, বঞ্চনা ও নির্যাতন বন্ধের লক্ষ্যে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি ২০১৫ প্রণয়ন করা হয়েছে।

 শ্রমিকের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করার জন্য সরকার ৪২টি খাতের নূন্যতম মজুরিবোর্ড গঠন করেছে। প্রতিটি কারখানায় অধিকার আদায়ে শ্রমিকরা যাতে সচেষ্ট থাকে, অধিকার বঞ্চিত না হয় সেজন্য ২০১৮ সালের সংশোধিত শ্রম আইনে ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন সহজতর করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম অনলাইনের আওতায় আনা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশনের জন্য ৬০ দিন সময় নির্ধারণ করা ছিল তা এখন কমিয়ে ৫৫ দিন করা হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন সহজতর করার ইতিবাচক প্রভাবও পড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে সব সেক্টর মিলে ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা ৭,৭৭৫টি; এ সকল ট্রেড ইউনিয়নের সাথে যুক্ত শ্রমিকের সংখ্যা ২৮ লাখ ৫৫ হাজার ৭৭৯ জন। শুধু গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়নের সংখ্যা বর্তমানে ৭৫৩টি। শ্রম আইন সংশোধনের ফলে কোনো শ্রমিক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করলে ঐ কারখানা মালিক ক্ষতিপূরণ দিতেন একলাখ টাকা, এখন ক্ষতিপূরণ দ্বিগুণ করে দুই লাখ টাকা হয়েছে।

 শ্রমিকদের স্বার্থ যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য সরকার প্রতিটি কারখানাকে পরিদর্শনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। শ্রম পরিদপ্তরকেও অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। ২,২৬২টি কারখানায় সেইফটি কমিটি গঠন এবং যে কোনো প্রকার বিরোধ নিষ্পত্তিতে সামাজিক সংলাপের উদ্যোগ নিয়েছে। সব শিল্পখাতে শ্রমিক-মালিক-সরকার ত্রিপক্ষীয় কমিটি কাজ করছে। এরপরেও বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি তৈরি পোশাক শিল্পের লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে ২০১৭ সালে শুধু গার্মেন্টস শিল্পের জন্য আলাদা ত্রিপক্ষীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। শ্রমিকের যে কোনো সমস্যা সংক্রান্ত অভিযোগ গ্রহণ, নিষ্পত্তি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য সার্বক্ষণিক হেল্পলাইন-১৬৩৫৭ চালু করা হয়েছে।

প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য কাজ করছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন। দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু হলে, কোনো শ্রমিক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে কিংবা তাদের ছেলেমেয়ের উচ্চশিক্ষা, নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন সহায়তা এ তহবিল থেকে প্রদান করা হচ্ছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের নির্দিষ্ট ফরমে আবেদন করলে এ সহায়তা পাওয়া যায়। এ তহবিলের এফডিআর ফান্ডের প্রাপ্ত লভ্যাংশ থেকে এখন পর্যন্ত ছয় হাজার পাঁচ’শ জনকে ৩৭ কোটি ৭ হাজার টাকার বেশি সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এরপরও এফডিআরসহ এ তহবিলে জমা রয়েছে তিন’শ ২৮ কোটি টাকা।

২.

সরকার শতভাগ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য ভিন্ন একটি তহবিল গঠন করেছে যার নাম কেন্দ্রীয় তহবিল। গার্মেন্টসকর্মীদের দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু, দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসা, মাতৃত্বকালীন সহায়তা, তাদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষায় সহায়তা এমনকি তাদের বিমার দাবিও এ খাত থেকে পরিশোধ করা হচ্ছে। বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ’র সদস্যভুক্ত কারখানাগুলোর সব শ্রমিককে কেন্দ্রীয় ডাটাবেইজের আওতায় আনা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, প্রতিটি শ্রমিক ডাটাবেইজের আওতায় আসলে যে কোনো প্রয়োজনে অতি দ্রুত সহায়তা প্রদান করা যাবে, ফলে কোনো শ্রমিকই অসহায় থাকবে না। সুস্থ কর্মপরিবেশে কাজ করা শ্রমিকদের অধিকার। শ্রমিক অসুস্থ থাকলে উৎপাদনে দারুণভাবে ব্যাঘাত ঘটে। পেশাগত অনেক অসুখ শ্রমিকের মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। পেশাগত অসুখের চিকিৎসায় সরকার পিপিপি’র আওতায় নারায়ণগঞ্জে তিনশ’ শয্যার পেশাগত বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ২০২৫ সালের মধ্যে সকল প্রকার শিশুশ্রম নিরসনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে ২৮৪ কোটি টাকার ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্পের (চতুর্থ পর্যায়) কাজ শুরু হয়েছে।

দেশের বিশাল শ্রমজীবী মানুষের যথাযোগ্য মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, শিশুশ্রম নিরসন, ন্যায্য মজুরি নির্ধারণ, শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্কের মধ্য দিয়ে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা এবং দ্রারিদ্র্যমুক্ত উন্নত, সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার শপথ হোক এবারের মে দিবসের অঙ্গীকার।

   

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'ম্যাক্স' নামের একটি বিড়ালকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট অব লিটারেচার’ বা ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। দেশটির ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের স্নাতক অনুষ্ঠানে বিড়ালটিকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানে বিড়ালকে আমন্ত্রণ জানানোর নিয়ম না থাকায় উপস্থিত ছিল না ম্যাক্স। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানে বিড়ালটি উপস্থিত ছিল না। তাই বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডোর কাছে খুব শিঘ্রই এই ডিগ্রি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।   

বন্ধুসুলভ এই বিড়ালটিকে তার ইঁদুর শিকারের দক্ষতা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর জন্য নয় বরং তার সহচার্যের জন্যই স্বীকৃতি দিয়েছে।   বিড়ালটিকে এই ডিগ্রিতে ভূষিত করা হয়। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাসেলটন ক্যাম্পাস।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!

বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি ফেসবুক পোস্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাক্স দ্য ক্যাট, অনেক বছর ধরেই ক্যাসেলটন পরিবারের একজন আদুরে সদস্য। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তায় পাশেই বসবাস করে এক পরিবার। বিড়ালটি সেই পরিবারেরই পোষা।

বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডো বলেন, ‘বিড়ালটি ঠিক করেছে সে ক্যাম্পাসে যাবে। এরপর থেকেই সে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে শুরু করে। আর শিক্ষার্থীরাও তাকে আদর করতে শুরু করে।’

বিড়ালটি প্রায় চার বছর ধরে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করছে। বিড়ালটিকে পথের ধারে শুয়ে থাকতে দেখলেই সবাই তার সঙ্গে সেলফি নেয়।

এমনকি সাবেক ছাত্ররাও যখনই ক্যাম্পাসে আসেন তারা তখনই বিড়ালটির খোঁজ নিতে তার মালিক ডো-এর কাছে যান। ডো তাদের কাছে বিড়ালটির মা হিসেবেই বেশি পরিচিত।

;

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;

প্রশ্ন আর উত্তর যেন পরস্পরের সাংঘর্ষিক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশ্ন থাকে এক আর তার উত্তর হয় ভিন্ন। এমন উত্তরপত্রের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। এবার এমনই এক উত্তরপত্রের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো সবাই অবাক! তবে এই ঘটনার জন্ম দেওয়া দেশটি বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের একটি হিন্দি পরীক্ষায় ঘটেছে এমন কাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে পরীক্ষার্থীর এমন উত্তর দেখে শিক্ষককেও হাসতে দেখা যায়। 

ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে @n2154j অ্যাকাউন্টের একটি আইডি থেকে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রশ্ন ছিল এমন, সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ (যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ) কী? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীটি একটি খাদ্য রূপক দিয়ে উত্তর দিল: "মাটার পনির এবং সব মিশ্র সবজি একত্রিত একটি খাবার।"

আরেকটি প্রশ্ন ছিল "অতীত কাল কাকে বলে?" এর উত্তরে ওই পরীক্ষার্থি লিখেছে, "যখন অতীত আমাদের অতীতের আকারে আসে, তখন তাকে অতীত কাল বলা হয়।"

ভিডিও অনুযায়ী আরও একটি প্রশ্ন ছিল "বহুবচন কাকে বলে?" এর উত্তরে সে লিখেছে "যে পুত্রবধূ তার শ্বশুরবাড়ির কথা শোনে তাকে বহুবচন বলে।"

শিক্ষার্থীটির এমন উত্তর শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন শিক্ষক। এমন উত্তরগুলোকে শিক্ষক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও এমন উত্তরের জন্য তাকে পুরোপুরি হতাশ করা হয়নি। তাকে ১০ মার্কের মধ্যে ৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক পরে তার উত্তরপত্রে লিখে দিয়েছিলেন, এই ৫ মার্ক তোমার মস্তিষ্কের জন্য, ছেলে।

ভিডিওটি দেখে সবাইকে হাসির ইমোজি দিতে দেখা যায়। সম্পূর্ণ নম্বর না পাওয়ায় অনেকেই যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ছাত্রটি তার কৌতুক প্রতিভার জন্য পূর্ণ নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

তবে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ছাত্র এবং শিক্ষকের হাতের লেখা সন্দেহজনকভাবে একই রকম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, "প্রশ্ন এবং উত্তর একই হাতের লেখা"। 

;

ফেনী শহরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে' জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গানে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়া যেন প্রকৃতিকে দান করেছে লাল আভার অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমা। সাথে গ্রীষ্মের উত্তাপে শহরে সৌরভ ছড়াচ্ছে নানা জাতের ফুল। তীব্র তাপদাহের পর কালবৈশাখী, এরপর মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে ফুলের আগমন। এতে রঙের উল্লাসে মেতে উঠেছে ফেনী শহরবাসী।

ফেনী শহরের কোর্ট বিল্ডিং, এলজিইডি, পুলিশ লাইন, নবীন চন্দ্র সেন কালচারাল সেন্টার, ফেনী সরকারি কলেজ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া। এটি একদিকে প্রকৃতিকে যেমন সাজিয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যে, অন্যদিকে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে তরুণ-তরুণী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ ফুলপ্রিয় পথচারীদের। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, সরকারি দফতরসহ স্কুল-কলেজে কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল ও উজ্জ্বল সবুজ পাতার সংমিশ্রণ দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে চারপাশ।


কৃষ্ণচূড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ফুলের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে আছে পুরো শহর। শহরের মূল সড়কের ডিভাইডারে পৌরসভার উদ্যোগে লাগানো হাসনাহেনা, রজনিগন্ধা, গন্ধরাজসহ নানা জাতের ফুল গাছে ফুল ফুটেছে। এটি একদিকে বাড়িয়েছে সৌন্দর্য অন্যদিকে হেঁটে কিংবা রিকশায় চলাচল করলে পাওয়া যায় এসব ফুলের সুঘ্রাণ।

ফেনী শহরের কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ফুলপ্রিয় পথিকরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অনন্য সাজে সাজিয়েছে। এই ফুলের সৌন্দর্যের কারণে পথচারীরা একবার হলেও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর গাছের উপর নজর দিবে। পাশাপাশি তীব্র গরমে অন্যান্য ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মুখরিত হওয়াতে ক্লান্তিতা কিছুটা হলেও কমছে।


তারা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলের এই নান্দনিক দৃশ্য দেখতে এর গাছ রোপণ করা জরুরি। রাস্তা প্রশস্তকরণ, ঘর-বাড়ি নির্মাণসহ নানা প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলা হয়। অন্যান্য গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া রোপণ করলে একদিকে যেমন সৌন্দর্য বাড়াবে অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব হবে।

সাজিদ হাসান নামের এক পথচারী বলেন, কৃষ্ণচূড়া একদিকে যেমন প্রকৃতিতে অপরুপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, আরেকদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাবে। সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, আমার মতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এই গাছটিও যুক্ত করা উচিত। তীব্র গরমের পর বৃষ্টি হলো, এরপর শহরে নানা রঙের ফুলের দেখা মিলছে, ফুলের ঘ্রাণে চলাচল করতেই ভালো লাগছে।

ফারজানা ইয়াসমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ফুল আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের কলেজে বকুল তলা আছে, ক্যান্টিনের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। সুযোগ পেলেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি।

অনিক মোহন নামে একজন বলেন, রিকশায় করে যখন বাসায় ফিরি, শহরের রাস্তার মাঝে ভিডাইভারে লাগানো নানা জাতের ফুলের ঘ্রাণ মনকে আনন্দিত করে। রাতের বেলা শহর যখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়, তখন এ ফুলের সৌন্দর্য কয়েকশ’ গুণ বেড়ে যায়।

সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া লাগানো হলে সৌন্দর্য বাড়বে বলে মনে করেন পথচারী মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য যে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে, ওই গাছগুলোর জায়গা কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাগালে রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে।

একই কথা বলেন শহরের ব্যবসায়ী নাদিম আহমেদ। তিনি বলেন, সৌন্দর্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এই গাছ রোপণ করা উচিত আমাদের। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে অন্যন্যা গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। যেগুলো শহরে আছে তাতেই সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ, আরও যদি লাগানো যায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে আমাদের শহর।

কৃষ্ণচূড়া মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা বৃক্ষের জঙ্গলে পাওয়া যায়। যদিও জঙ্গলে এটি বিলুপ্ত প্রায়, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি জন্মানো সম্ভব হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়।

শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ থাকে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্ত কালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।

জানা যায়, অপরূপ সৌন্দর্য ছড়ানোর পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাতা, মূলের বাকল ও ফুল ভেষজ গুণাগুণ সম্পূর্ণ, যা জ্বর ও খুশকি নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ভেষজটি হেমিপ্লেজিয়া, আর্থরাইটিস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। কৃষ্ণচূড়া গাছের শিকড়, বাকল এবং ফুল সবই পরজীবী সংক্রমণ নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

;