ডেনভার এয়ারপোর্ট রহস্য ও ষড়যন্ত্র তত্ত্বের আখড়া



তানিম কায়সার, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

  • Font increase
  • Font Decrease

পৃথিবীতে কিছু বিষয় আছে যেগুলোকে যুক্তি তর্ক দিয়ে ব্যাখ্যা করা মুশকিল। আমেরিকার ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তেমনি একটি জায়গা। বিশ্বের সেরা বিমানবন্দরের তালিকায় ২৯ নাম্বারে এর অবস্থান। আমেরিকার পঞ্চম ব্যস্ততম বিমানবন্দর এটি আর নানা রকম ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ চালু থাকার কারণে থাকে আলোচনার একদম কেন্দ্রবিন্দুতে। ডেনভার বিমানবন্দরের রানওয়ে, প্রবেশদ্বার থেকে টানেল পর্যন্ত প্রতিটি অংশ নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। অনেকে মনে করেন বিমানবন্দরটি কোনো ভৌতিক কর্মকাণ্ডের অংশ। কারো কারো ধারণা এটি বানিয়েছে নাৎসি বাহিনী, অনেকে আবার ভাবেন এটি এলিয়েনদের আবাসস্থল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য যুক্তি ও তথ্য-প্রমাণ দিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করতে পারেনি কোনো পক্ষ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/28/1564305786549.jpg
◤ ডেনভার বিমানবন্দরের অদ্ভুতুড়ে স্ট্রাকচার ◢

 

বিমানবন্দরের অস্বাভাবিক কাণ্ডকারখানাকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা কন্সপিরেসি থিওরি দিয়ে ব্যাখ্যা করা হয়। ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বা কন্সপিরেসি থিওরি মূলত কোনো ঘটনার এমন ব্যাখ্যাকে বোঝায়, যা সুস্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া কোনো গভীর ষড়যন্ত্রের দিকে ইঙ্গিত করে। যার পেছনে সরকার (রাষ্ট্র) বা ক্ষমতাশীল কোনো সংগঠনকে দায়ী করা হয় এই যুক্তিতে যে, তারা অসৎ উপায়ে এবং ক্ষতিকর পন্থায় নিজেদের লাভ নিশ্চিত করতে চায়। এরকম তত্ত্বগুলোর একটি বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো এমন পরিবেশ বা অবস্থা সৃষ্টি করে যা ইতিহাস এবং ক্ষেত্রবিশেষে সাধারণ বোধের (সরল সত্যতার) সাথে সাংঘর্ষিক। সাধারণত কোনো দ্বৈব ঘটনাকে ব্যাখ্যা করার জন্য এই থিওরির প্রয়োগ করা হয়। যেহেতু এই বিমানবন্দরের বেশ কিছু ব্যাপারকে দ্বৈব ঘটনার সাথে জড়িত ধরা হয়, এখানেও ডালপালা মেলেছে কন্সপিরেসি থিওরি।

জেনে অবাক হবেন, এই বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠার কোনো যৌক্তিক কারণ ছিল না। কেননা এর ঠিক কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই একটি উন্নতমানের বিমানবন্দর ছিল। তবু প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে বিমানবন্দরটি তৈরি করার পেছনের যুক্তি অনেকেই খুঁজে পান না। সাধারণ ধারণা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত আছে সেই বিমানবন্দরটি পুরাতন হয়ে যাওয়ায় এবং রানওয়ে অপ্রতুল থাকায় নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের প্রয়োজন পড়ে। ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসীদের প্রশ্ন হলো, পুরাতন হয়ে গেলেই যে বিমানবন্দর বাতিল হয়ে যাবে? এমন হলে তো বাকি বিমানবন্দরগুলোও বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। আর চাইলে তো রানওয়ে সংযোজন করা যেত। এরজন্য এত কাছাকাছি নতুন বিমানবন্দর বানানোর কোনো দরকার ছিল না। যে টাকা দিয়ে বিমানবন্দর বানানো হয়ছে, দশ ভাগের এক ভাগ দিয়েই হয়ে যেত অনেকগুলো রানওয়ে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/28/1564305876228.jpg
◤ বিমানবন্দর নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নাম ফলক ◢

 

যেই প্রতিষ্ঠান এই বিমানবন্দর বানিয়েছে তাদের নাম The New World Airport Commission. কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো পরবর্তীকালে খোঁজ নিয়ে এমন কোনো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি। সন্দেহের দানা তখন আরো বড় হয়ে বাঁধতে থাকে। কেননা ‘New World Order’ হলো কথিত গুপ্ত সংগঠন ইলুমিনাতির একটি স্লোগান। এই স্লোগানের মাধ্যমে ইলুমিনাতি বুঝিয়ে থাকে শুধুমাত্র তাদের সিদ্ধান্তেই পৃথিবী চলবে। আর এই New World Order বাস্তবায়নে ইলুমিনাতি ইতোমধ্যেই কাজ করছে বলে অনেকে বিশ্বাস করে থাকেন। ঘিয়ে আগুন ঢালার মতো আরেকটি ব্যাপার হলো, ইলুমিনাতির মতোই আরেকটি গুপ্ত সংগঠন ফ্রিমেসনিজমদের মধ্যে র‍্যাংকিং সিস্টেম রয়েছে। যেখানে সর্বোচ্চ র‍্যাংক হলো ৩৩। এবার একটু খেয়াল করুন এটি তৈরি করা হয় ১৯৯৪ এর ১৯ মার্চ। এবার সংখ্যাগুলোকে যোগ করুন, ১+৯+১+৯+৯+৪= ৩৩। কী বলবেন? কাকতালীয়? ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসীরা তা মনে করে না।

এই বিমানবন্দরের স্ট্রাকচারও এমন যে সহজে কেউ এর উদ্দেশ্য বুঝতে পারে না। মোট ৫৩ বর্গমাইলের এই বিমানবন্দরে রয়েছে বিশাল রেস্ট্রিক্টেড এরিয়া। যেটা অন্য কোনো বিমানবন্দরে দেখা যায় না। এত বিশাল জায়গাকে রেস্ট্রিক্টেড রেখে সেখানে কী কারসাজি হয় তা জানা যায় না বলেই হয়তো সন্দেহরা আরো বৃহৎ হয়ে ওঠে।

বিমানবন্দরটির বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে অদ্ভুত সব স্ট্রাকচার। প্রথমেই বলতে হয় ঘোড়ার কথা। বিমানবন্দরে ঢোকার মুখেই রয়েছে ৩২ ফুট উঁচু একটি রক্তচোখা ঘোড়ার মূর্তি। যেটি এয়ারপোর্ট তৈরির আগে থেকেই কারা যে তৈরি করে রেখেছে, তারও কোনো হদিস মেলে না। স্থানীয়রা ঘোড়মূর্তিটিকে ব্লুসিফার নামে ডাকে। তারা মনে করে প্রবেশ মুখে দাঁড়িয়ে ঘোড়াটি রক্তচোখে সবাইকে দেখে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/28/1564306380457.jpg
◤ ব্লুসিফার ◢

 

স্বস্তিকা (卐 বা 卍) চিহ্নকে পশ্চিমা বিশ্বে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত শান্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু হিটলার যখন থেকে চিহ্নটি ব্যবহার করতে শুরু করলেন তখন থেকে অনেকেই এটাকে নাৎসিদের চিহ্ন হিসেবে জানেন। একই সাথে চিহ্নটিকে বিভিন্ন শয়তানের মন্ত্র হিসেবেও ধরে নেওয়া হয়। জেনে অবাক হবেন এই বন্দরের রানওয়ে উপর থেকে দেখতে একেবারে স্বস্তিকা চিহ্নের মতো। অদ্ভুত সব দেয়াল চিত্র, মূর্তি এসবকে এলিয়েনদের সাংকেতিক ভাষা হিসেবে অভিযোগ করা হয়ে থাকে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/28/1564306459112.jpg
◤ স্বস্তিকা চিহ্নের আদলে রানওয়ে ◢

 

এই বিমানবন্দর নিয়ে এমনসব কথা চালু হওয়ার পেছনে আরেকটি পালক জুড়ে দিয়েছে দেয়ালে থাকা চিত্রকর্মগুলো। যেগুলোর একটিতে একটি বাভারিয়ান শিশুকে দেখা যায় চাকু সংগ্রহ করতে। পাশাপাশি রয়েছে প্রাচীন মিশরের মৃত্যুর দেবতা আনুবিসের মূর্তি, সুটকেস থেকে বেরিয়ে আসা শয়তানের চিত্র ইত্যাদি যে কোনো মানুষের মনেই প্রশ্ন তুলতে পারে, এমনি এমনি কি একটা জায়গায় এসব চিত্রকর্ম থাকবে? পাশাপাশি গ্যাস মাস্ক পরা একজন নাৎসি অফিসারের ছবিও দেখা যায়। যদিও পরবর্তীসময়ে এমন বিতর্কিত অনেক কিছুই সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কিন্তু সরিয়ে ফেললেই কি বিতর্ক বন্ধ হয়ে যায়?

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/28/1564306531484.jpg
◤ রহস্যময় দেয়ালচিত্র ◢

 

ডেনভার বিমানবন্দরের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় এর গোপন বাঙ্কারগুলো। সত্যিকার অর্থেই সেখানে প্রয়োজনের চেয়ে বিশাল বড় বাঙ্কার রয়েছে যার আয়তন প্রায় ৪৭০,০০০ বর্গফুট। ফলে এই বন্দরকে বলা হচ্ছে এলিয়েনদের আবাসভূমি। ধারণা করা হয় এখানে এলিয়েনরা থাকে। পাশাপাশি ইলুমিনাতি এবং ফ্রিমেসনিজমদের জন্যেও এটা একটা আশ্রয় স্থল। আরকটি মিথ চালু আছে, বিশ্বের সব বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা পারমাণবিক আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য এখানে এসে আশ্রয় নেবেন।

এসব ঘটনা নিয়ে আলোড়ন দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে চলছে। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় ২০১২ সালে ট্রু টিভিতে Conspiracy Theory with Jesse Ventura নামে একটি অনুষ্ঠান প্রচারের পরে। যেখানে বিভিন্ন ব্যক্তির কথাবার্তার মাধ্যমে উঠে আসে এই বিমানবন্দরের সাথে ফ্রিমেসনিজমের সম্পৃক্ততা, এলিয়েন ও অদৃশ্য শক্তির আনাগোনার কথা। বলা হয় সেই বাঙ্কারে প্রায় ৫ মিলিয়ন মানুষের জায়গা হবে। যেটি আগত বৈশ্বিক বিপর্যয় মোকাবেলা করে বাঁচিয়ে রাখবে কেবল এলিট সমাজের লোকদের।

ডেনভার বিমানবন্দরের রয়েছে দীর্ঘ টানেল। এই টানেল নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। প্রতিষ্ঠার পরে এর ব্যাগেজ চেকিং সিস্টেম কাজ করত না। পরে বেশ কিছু টাকা ব্যয় করে মেরামত করার পরেও একই সমস্যা রয়ে যায়। ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসীরা মনে করেন এই দীর্ঘ টানেলে এলিয়েনের বসবাস রয়েছে। যদিও মেইনস্ট্রিম পৃথিবীর কাজই এসবকে গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়া।

   

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'ম্যাক্স' নামের একটি বিড়ালকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট অব লিটারেচার’ বা ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। দেশটির ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের স্নাতক অনুষ্ঠানে বিড়ালটিকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানে বিড়ালকে আমন্ত্রণ জানানোর নিয়ম না থাকায় উপস্থিত ছিল না ম্যাক্স। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানে বিড়ালটি উপস্থিত ছিল না। তাই বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডোর কাছে খুব শিঘ্রই এই ডিগ্রি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।   

বন্ধুসুলভ এই বিড়ালটিকে তার ইঁদুর শিকারের দক্ষতা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর জন্য নয় বরং তার সহচার্যের জন্যই স্বীকৃতি দিয়েছে।   বিড়ালটিকে এই ডিগ্রিতে ভূষিত করা হয়। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাসেলটন ক্যাম্পাস।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!

বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি ফেসবুক পোস্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাক্স দ্য ক্যাট, অনেক বছর ধরেই ক্যাসেলটন পরিবারের একজন আদুরে সদস্য। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তায় পাশেই বসবাস করে এক পরিবার। বিড়ালটি সেই পরিবারেরই পোষা।

বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডো বলেন, ‘বিড়ালটি ঠিক করেছে সে ক্যাম্পাসে যাবে। এরপর থেকেই সে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে শুরু করে। আর শিক্ষার্থীরাও তাকে আদর করতে শুরু করে।’

বিড়ালটি প্রায় চার বছর ধরে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করছে। বিড়ালটিকে পথের ধারে শুয়ে থাকতে দেখলেই সবাই তার সঙ্গে সেলফি নেয়।

এমনকি সাবেক ছাত্ররাও যখনই ক্যাম্পাসে আসেন তারা তখনই বিড়ালটির খোঁজ নিতে তার মালিক ডো-এর কাছে যান। ডো তাদের কাছে বিড়ালটির মা হিসেবেই বেশি পরিচিত।

;

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;

প্রশ্ন আর উত্তর যেন পরস্পরের সাংঘর্ষিক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশ্ন থাকে এক আর তার উত্তর হয় ভিন্ন। এমন উত্তরপত্রের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। এবার এমনই এক উত্তরপত্রের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো সবাই অবাক! তবে এই ঘটনার জন্ম দেওয়া দেশটি বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের একটি হিন্দি পরীক্ষায় ঘটেছে এমন কাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে পরীক্ষার্থীর এমন উত্তর দেখে শিক্ষককেও হাসতে দেখা যায়। 

ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে @n2154j অ্যাকাউন্টের একটি আইডি থেকে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রশ্ন ছিল এমন, সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ (যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ) কী? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীটি একটি খাদ্য রূপক দিয়ে উত্তর দিল: "মাটার পনির এবং সব মিশ্র সবজি একত্রিত একটি খাবার।"

আরেকটি প্রশ্ন ছিল "অতীত কাল কাকে বলে?" এর উত্তরে ওই পরীক্ষার্থি লিখেছে, "যখন অতীত আমাদের অতীতের আকারে আসে, তখন তাকে অতীত কাল বলা হয়।"

ভিডিও অনুযায়ী আরও একটি প্রশ্ন ছিল "বহুবচন কাকে বলে?" এর উত্তরে সে লিখেছে "যে পুত্রবধূ তার শ্বশুরবাড়ির কথা শোনে তাকে বহুবচন বলে।"

শিক্ষার্থীটির এমন উত্তর শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন শিক্ষক। এমন উত্তরগুলোকে শিক্ষক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও এমন উত্তরের জন্য তাকে পুরোপুরি হতাশ করা হয়নি। তাকে ১০ মার্কের মধ্যে ৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক পরে তার উত্তরপত্রে লিখে দিয়েছিলেন, এই ৫ মার্ক তোমার মস্তিষ্কের জন্য, ছেলে।

ভিডিওটি দেখে সবাইকে হাসির ইমোজি দিতে দেখা যায়। সম্পূর্ণ নম্বর না পাওয়ায় অনেকেই যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ছাত্রটি তার কৌতুক প্রতিভার জন্য পূর্ণ নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

তবে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ছাত্র এবং শিক্ষকের হাতের লেখা সন্দেহজনকভাবে একই রকম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, "প্রশ্ন এবং উত্তর একই হাতের লেখা"। 

;

ফেনী শহরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে' জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গানে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়া যেন প্রকৃতিকে দান করেছে লাল আভার অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমা। সাথে গ্রীষ্মের উত্তাপে শহরে সৌরভ ছড়াচ্ছে নানা জাতের ফুল। তীব্র তাপদাহের পর কালবৈশাখী, এরপর মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে ফুলের আগমন। এতে রঙের উল্লাসে মেতে উঠেছে ফেনী শহরবাসী।

ফেনী শহরের কোর্ট বিল্ডিং, এলজিইডি, পুলিশ লাইন, নবীন চন্দ্র সেন কালচারাল সেন্টার, ফেনী সরকারি কলেজ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া। এটি একদিকে প্রকৃতিকে যেমন সাজিয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যে, অন্যদিকে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে তরুণ-তরুণী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ ফুলপ্রিয় পথচারীদের। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, সরকারি দফতরসহ স্কুল-কলেজে কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল ও উজ্জ্বল সবুজ পাতার সংমিশ্রণ দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে চারপাশ।


কৃষ্ণচূড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ফুলের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে আছে পুরো শহর। শহরের মূল সড়কের ডিভাইডারে পৌরসভার উদ্যোগে লাগানো হাসনাহেনা, রজনিগন্ধা, গন্ধরাজসহ নানা জাতের ফুল গাছে ফুল ফুটেছে। এটি একদিকে বাড়িয়েছে সৌন্দর্য অন্যদিকে হেঁটে কিংবা রিকশায় চলাচল করলে পাওয়া যায় এসব ফুলের সুঘ্রাণ।

ফেনী শহরের কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ফুলপ্রিয় পথিকরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অনন্য সাজে সাজিয়েছে। এই ফুলের সৌন্দর্যের কারণে পথচারীরা একবার হলেও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর গাছের উপর নজর দিবে। পাশাপাশি তীব্র গরমে অন্যান্য ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মুখরিত হওয়াতে ক্লান্তিতা কিছুটা হলেও কমছে।


তারা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলের এই নান্দনিক দৃশ্য দেখতে এর গাছ রোপণ করা জরুরি। রাস্তা প্রশস্তকরণ, ঘর-বাড়ি নির্মাণসহ নানা প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলা হয়। অন্যান্য গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া রোপণ করলে একদিকে যেমন সৌন্দর্য বাড়াবে অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব হবে।

সাজিদ হাসান নামের এক পথচারী বলেন, কৃষ্ণচূড়া একদিকে যেমন প্রকৃতিতে অপরুপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, আরেকদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাবে। সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, আমার মতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এই গাছটিও যুক্ত করা উচিত। তীব্র গরমের পর বৃষ্টি হলো, এরপর শহরে নানা রঙের ফুলের দেখা মিলছে, ফুলের ঘ্রাণে চলাচল করতেই ভালো লাগছে।

ফারজানা ইয়াসমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ফুল আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের কলেজে বকুল তলা আছে, ক্যান্টিনের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। সুযোগ পেলেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি।

অনিক মোহন নামে একজন বলেন, রিকশায় করে যখন বাসায় ফিরি, শহরের রাস্তার মাঝে ভিডাইভারে লাগানো নানা জাতের ফুলের ঘ্রাণ মনকে আনন্দিত করে। রাতের বেলা শহর যখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়, তখন এ ফুলের সৌন্দর্য কয়েকশ’ গুণ বেড়ে যায়।

সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া লাগানো হলে সৌন্দর্য বাড়বে বলে মনে করেন পথচারী মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য যে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে, ওই গাছগুলোর জায়গা কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাগালে রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে।

একই কথা বলেন শহরের ব্যবসায়ী নাদিম আহমেদ। তিনি বলেন, সৌন্দর্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এই গাছ রোপণ করা উচিত আমাদের। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে অন্যন্যা গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। যেগুলো শহরে আছে তাতেই সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ, আরও যদি লাগানো যায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে আমাদের শহর।

কৃষ্ণচূড়া মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা বৃক্ষের জঙ্গলে পাওয়া যায়। যদিও জঙ্গলে এটি বিলুপ্ত প্রায়, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি জন্মানো সম্ভব হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়।

শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ থাকে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্ত কালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।

জানা যায়, অপরূপ সৌন্দর্য ছড়ানোর পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাতা, মূলের বাকল ও ফুল ভেষজ গুণাগুণ সম্পূর্ণ, যা জ্বর ও খুশকি নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ভেষজটি হেমিপ্লেজিয়া, আর্থরাইটিস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। কৃষ্ণচূড়া গাছের শিকড়, বাকল এবং ফুল সবই পরজীবী সংক্রমণ নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

;