অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ : আমৃত্যু প্রগতিশীল ও নীতিবান এক রাজনীতিক



শেহজাদ আমান, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
সৎ ও নীতিবান রাজনীতিক হিসেবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ

সৎ ও নীতিবান রাজনীতিক হিসেবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্লোভ ও ত্যাগী এক বরেণ্য রাজনীতিকের প্রতিকৃতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। রাষ্ট্রীয় পদক ও সম্মান সবারই আরাধ্য থাকলেও জনগণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করাটাই ছিল তাঁর কাছে প্রধান দায়িত্ব। তাই তো, ২০১৫ সালে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পদক’ গ্রহণ করার প্রস্তাব। তাঁর মত ছিল, “রাজনীতির অর্থ দেশসেবা, মানুষের সেবা। পদ বা পদবির জন্য কখনো রাজনীতি করিনি। পদক দিলে বা নিলেই সম্মানিত হয়, এই দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করি না আমি।”

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় নিষ্ক্রিয় ও বিভক্ত ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির সভাপতি ছিলেন তিনি। তবে শুধু এটুকু দিয়ে তাঁর বর্ণাঢ্য ও সক্রিয় রাজনৈতিক জীবনকে পরিমাপ করা যাবে না। পাকিস্তান আমলে, মুক্তিযুদ্ধের সময় ও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশের রাজনীতিতে তিনি ছিলেন প্রভাবশালী এক ব্যক্তিত্ব। ২৩ আগস্ট, ২০১৯ দীর্ঘ ৯৭ বছরের কর্মময় জীবন ছেড়ে চিরপ্রস্থান করেন এই মহান নেতা।

মোজাফফর আহমদের জন্ম ১৯২২ সালের ১৪ এপ্রিল কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আলহাজ কেয়াম উদ্দিন ভূইয়া, মায়ের নাম আফজারুন্নেছা। বাবা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। মোজাফফর আহমদ যথাক্রমে হোসেনতলা স্কুল ও জাফরগঞ্জ রাজ ইনস্টিটিউশনে প্রাথমিক, দেবিদ্বার রেয়াজউদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক এবং ভিক্টোরিয়া কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে সম্মানসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি গ্রহণ করেন এবং ইউনেস্কো থেকে লাভ করেন একটি ডিপ্লোমা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র মোজাফফর দীর্ঘদিন বিভিন্ন কলেজে শিক্ষকতা করেন। শেষমেশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপনা করেন ১৯৫২ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত। অত্যন্ত বর্ণিল তাঁর রাজনৈতিক জীবন। রাজনীতি অঙ্গনে তাঁর শুভসূচনা হয় ১৯৩৭ সালের দিকে। তিনি ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপনা ছেড়ে দিয়ে সম্পূর্ণভাবে রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে যান। ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে নিজ জেলা কুমিল্লার দেবিদ্বার আসনে মুসলিম লীগের শিক্ষামন্ত্রীকে পরাজিত করে তাক লাগিয়ে দেন রাজনীতির ময়দানের সবাইকে। আওয়ামীলীগের বিরোধিতা সত্ত্বেও ১৯৫৭ সালের ৩ এপ্রিল পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদে ন্যাপ-এর প্রতিনিধি নেতা হিসেবে অধ্যাপক মোজাফফর আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। এসকল কারণে, সামরিক শাসক আইয়ুব সরকার তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও হুলিয়া জারি করে ১৯৫৮ সালের দিকে। তাকে ধরিয়ে দিলে পুরস্কার প্রাপ্তির ঘোষণা পর্যন্ত করা হয়। আত্মগোপন থাকা অবস্থায় তিনি আইয়ুব সরকার শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সুসংগঠিত করেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/25/1566732810704.jpg
মোজাফফর আহমদ ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজিবনগর সরকারের ছয় উপদেষ্টার একজন


দীর্ঘ আট বছর সময়ব্যাপী আত্মগোপনে থাকবার পর ১৯৬৬ সালে তিনি প্রকাশ্য রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন করেন। প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী বাম রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ১৯৬৭ সালের ৩০ নভেম্বর রংপুর জেলায় অনুষ্ঠিত এক কাউন্সিল অধিবেশনের পর চীনপন্থী ও মস্কোপন্থী—এ দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়ে। চীনপন্থী ন্যাপের সভাপতি হন মাওলানা ভাসানী এবং মস্কোপন্থী ন্যাপের সভাপতি হন সীমান্ত প্রদেশের খান আবদুল ওয়ালী খান। মস্কো শিবিরে পূর্ব পাকিস্তানপন্থী ন্যাপের সভাপতি ছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। এ অংশ পরিচিত ছিল মোজাফফর-ন্যাপ নামেও। অবিভক্ত পাকিস্তান ন্যাপের যুগ্ম সম্পাদকও ছিলেন তিনি। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব সরকারবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি কারাবরণও করেছেন।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার তথা মুজিবনগর সরকার ছয় সদস্যের যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছিল, তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। উপদেষ্টা কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন মাওলানা ভাসানী, মণি সিংহ, মনোরঞ্জন ধর ও খোন্দকার মোশতাক আহমদ। স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফর করেন তিনি। সে সময় তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ন্যাপ, সিপিবি ও ছাত্র ইউনিয়ন থেকে নিজস্ব উনিশ হাজার মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনে অধ্যাপক আহমদের ভূমিকা অবিস্মরণীয়।

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। বয়সে তিনি বঙ্গবন্ধুর দুই বছরের ছোট। কিন্তু তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ। মাঝে মাঝে রসিকতা করে তিনি বলতেন, বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা হলে আমি তো জাতির চাচা।

তবে, স্বাধীনতার পর নিরিবিলি রাজনীতি করার সুযোগ তিনি পাননি তেমনটা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে নিহত হওয়ার পর তাকে আবার আত্মগোপনে যেতে হয়। শুধুমাত্র রিক্সাভাড়া পকেটে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন তিনি।

১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হলে তিনি ন্যাপ, সিপিবি এবং প্রগতিশীল শক্তির পক্ষে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। স্বৈরাচারী শাসক এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনের শুরুতে অধ্যাপক আহমদ কারারুদ্ধ হন। তখন, তার স্ত্রী আমিনা আহমদ স্কুলে চাকরি করে সংসার চালাতেন।

রাজনীতি জীবনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, সোভিয়েত ইউনিয়ন, বুলগেরিয়া, অস্ট্রিয়া, দক্ষিণ ইয়েমেন, লিবিয়া, আফগানিস্তান, ভারত, মধ্যপ্রাচ্যসহ পূর্ব ও পশ্চিম ইউরোপের নানান দেশে সফর করেন। তাঁর সহধর্মিণী আমিনা আহমদ বর্তমানে ন্যাপের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সভানেত্রী হিসেবে আছেন বাংলাদেশ নারী সমিতিতে।

অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ ছিলেন সৎ ও ত্যাগী রাজনীতিকের মূর্ত প্রতীক। অত্যন্ত সাদাসিদে জীবনযাপন করতেন তিনি। নিজেকে তিনি সবার কাছে পরিচয় দিতে পছন্দ করতেন ‘কুঁড়েঘরের মোজাফফর’ হিসেবে। নিজে সাম্যবাদী ও সমাজতান্ত্রিক আদর্শে রাজনীতি করলেও ধর্ম-কর্মের প্রতি বিশ্বাস ছিল তাঁর। আল্লাহর ওপর ছিল তার অগাধ বিশ্বাস ও আস্থা।

বয়সের দিকে জীবনের সেঞ্চুরি তিনি পূরণ করতে পারেননি একটুর জন্য। তেমনি রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশকে নিয়ে, দেশের মানুষকে নিয়ে তাঁর দেখা অনেক স্বপ্নও হয়তো পূরণ হয়নি। কিন্তু, একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রাখা ও পালন করা তাঁর ভূমিকা দল-মত নির্বিশেষে সকল শ্রেণীর মানুষের মধ্যে তাঁকে চির-স্মরণীয় করে রাখবে, একথা বলাই যায়।

   

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'ম্যাক্স' নামের একটি বিড়ালকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট অব লিটারেচার’ বা ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। দেশটির ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের স্নাতক অনুষ্ঠানে বিড়ালটিকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানে বিড়ালকে আমন্ত্রণ জানানোর নিয়ম না থাকায় উপস্থিত ছিল না ম্যাক্স। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানে বিড়ালটি উপস্থিত ছিল না। তাই বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডোর কাছে খুব শিঘ্রই এই ডিগ্রি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।   

বন্ধুসুলভ এই বিড়ালটিকে তার ইঁদুর শিকারের দক্ষতা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর জন্য নয় বরং তার সহচার্যের জন্যই স্বীকৃতি দিয়েছে।   বিড়ালটিকে এই ডিগ্রিতে ভূষিত করা হয়। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাসেলটন ক্যাম্পাস।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!

বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি ফেসবুক পোস্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাক্স দ্য ক্যাট, অনেক বছর ধরেই ক্যাসেলটন পরিবারের একজন আদুরে সদস্য। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তায় পাশেই বসবাস করে এক পরিবার। বিড়ালটি সেই পরিবারেরই পোষা।

বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডো বলেন, ‘বিড়ালটি ঠিক করেছে সে ক্যাম্পাসে যাবে। এরপর থেকেই সে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে শুরু করে। আর শিক্ষার্থীরাও তাকে আদর করতে শুরু করে।’

বিড়ালটি প্রায় চার বছর ধরে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করছে। বিড়ালটিকে পথের ধারে শুয়ে থাকতে দেখলেই সবাই তার সঙ্গে সেলফি নেয়।

এমনকি সাবেক ছাত্ররাও যখনই ক্যাম্পাসে আসেন তারা তখনই বিড়ালটির খোঁজ নিতে তার মালিক ডো-এর কাছে যান। ডো তাদের কাছে বিড়ালটির মা হিসেবেই বেশি পরিচিত।

;

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;

প্রশ্ন আর উত্তর যেন পরস্পরের সাংঘর্ষিক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশ্ন থাকে এক আর তার উত্তর হয় ভিন্ন। এমন উত্তরপত্রের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। এবার এমনই এক উত্তরপত্রের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো সবাই অবাক! তবে এই ঘটনার জন্ম দেওয়া দেশটি বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের একটি হিন্দি পরীক্ষায় ঘটেছে এমন কাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে পরীক্ষার্থীর এমন উত্তর দেখে শিক্ষককেও হাসতে দেখা যায়। 

ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে @n2154j অ্যাকাউন্টের একটি আইডি থেকে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রশ্ন ছিল এমন, সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ (যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ) কী? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীটি একটি খাদ্য রূপক দিয়ে উত্তর দিল: "মাটার পনির এবং সব মিশ্র সবজি একত্রিত একটি খাবার।"

আরেকটি প্রশ্ন ছিল "অতীত কাল কাকে বলে?" এর উত্তরে ওই পরীক্ষার্থি লিখেছে, "যখন অতীত আমাদের অতীতের আকারে আসে, তখন তাকে অতীত কাল বলা হয়।"

ভিডিও অনুযায়ী আরও একটি প্রশ্ন ছিল "বহুবচন কাকে বলে?" এর উত্তরে সে লিখেছে "যে পুত্রবধূ তার শ্বশুরবাড়ির কথা শোনে তাকে বহুবচন বলে।"

শিক্ষার্থীটির এমন উত্তর শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন শিক্ষক। এমন উত্তরগুলোকে শিক্ষক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও এমন উত্তরের জন্য তাকে পুরোপুরি হতাশ করা হয়নি। তাকে ১০ মার্কের মধ্যে ৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক পরে তার উত্তরপত্রে লিখে দিয়েছিলেন, এই ৫ মার্ক তোমার মস্তিষ্কের জন্য, ছেলে।

ভিডিওটি দেখে সবাইকে হাসির ইমোজি দিতে দেখা যায়। সম্পূর্ণ নম্বর না পাওয়ায় অনেকেই যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ছাত্রটি তার কৌতুক প্রতিভার জন্য পূর্ণ নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

তবে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ছাত্র এবং শিক্ষকের হাতের লেখা সন্দেহজনকভাবে একই রকম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, "প্রশ্ন এবং উত্তর একই হাতের লেখা"। 

;

ফেনী শহরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে' জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গানে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়া যেন প্রকৃতিকে দান করেছে লাল আভার অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমা। সাথে গ্রীষ্মের উত্তাপে শহরে সৌরভ ছড়াচ্ছে নানা জাতের ফুল। তীব্র তাপদাহের পর কালবৈশাখী, এরপর মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে ফুলের আগমন। এতে রঙের উল্লাসে মেতে উঠেছে ফেনী শহরবাসী।

ফেনী শহরের কোর্ট বিল্ডিং, এলজিইডি, পুলিশ লাইন, নবীন চন্দ্র সেন কালচারাল সেন্টার, ফেনী সরকারি কলেজ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া। এটি একদিকে প্রকৃতিকে যেমন সাজিয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যে, অন্যদিকে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে তরুণ-তরুণী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ ফুলপ্রিয় পথচারীদের। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, সরকারি দফতরসহ স্কুল-কলেজে কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল ও উজ্জ্বল সবুজ পাতার সংমিশ্রণ দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে চারপাশ।


কৃষ্ণচূড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ফুলের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে আছে পুরো শহর। শহরের মূল সড়কের ডিভাইডারে পৌরসভার উদ্যোগে লাগানো হাসনাহেনা, রজনিগন্ধা, গন্ধরাজসহ নানা জাতের ফুল গাছে ফুল ফুটেছে। এটি একদিকে বাড়িয়েছে সৌন্দর্য অন্যদিকে হেঁটে কিংবা রিকশায় চলাচল করলে পাওয়া যায় এসব ফুলের সুঘ্রাণ।

ফেনী শহরের কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ফুলপ্রিয় পথিকরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অনন্য সাজে সাজিয়েছে। এই ফুলের সৌন্দর্যের কারণে পথচারীরা একবার হলেও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর গাছের উপর নজর দিবে। পাশাপাশি তীব্র গরমে অন্যান্য ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মুখরিত হওয়াতে ক্লান্তিতা কিছুটা হলেও কমছে।


তারা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলের এই নান্দনিক দৃশ্য দেখতে এর গাছ রোপণ করা জরুরি। রাস্তা প্রশস্তকরণ, ঘর-বাড়ি নির্মাণসহ নানা প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলা হয়। অন্যান্য গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া রোপণ করলে একদিকে যেমন সৌন্দর্য বাড়াবে অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব হবে।

সাজিদ হাসান নামের এক পথচারী বলেন, কৃষ্ণচূড়া একদিকে যেমন প্রকৃতিতে অপরুপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, আরেকদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাবে। সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, আমার মতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এই গাছটিও যুক্ত করা উচিত। তীব্র গরমের পর বৃষ্টি হলো, এরপর শহরে নানা রঙের ফুলের দেখা মিলছে, ফুলের ঘ্রাণে চলাচল করতেই ভালো লাগছে।

ফারজানা ইয়াসমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ফুল আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের কলেজে বকুল তলা আছে, ক্যান্টিনের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। সুযোগ পেলেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি।

অনিক মোহন নামে একজন বলেন, রিকশায় করে যখন বাসায় ফিরি, শহরের রাস্তার মাঝে ভিডাইভারে লাগানো নানা জাতের ফুলের ঘ্রাণ মনকে আনন্দিত করে। রাতের বেলা শহর যখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়, তখন এ ফুলের সৌন্দর্য কয়েকশ’ গুণ বেড়ে যায়।

সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া লাগানো হলে সৌন্দর্য বাড়বে বলে মনে করেন পথচারী মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য যে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে, ওই গাছগুলোর জায়গা কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাগালে রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে।

একই কথা বলেন শহরের ব্যবসায়ী নাদিম আহমেদ। তিনি বলেন, সৌন্দর্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এই গাছ রোপণ করা উচিত আমাদের। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে অন্যন্যা গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। যেগুলো শহরে আছে তাতেই সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ, আরও যদি লাগানো যায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে আমাদের শহর।

কৃষ্ণচূড়া মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা বৃক্ষের জঙ্গলে পাওয়া যায়। যদিও জঙ্গলে এটি বিলুপ্ত প্রায়, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি জন্মানো সম্ভব হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়।

শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ থাকে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্ত কালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।

জানা যায়, অপরূপ সৌন্দর্য ছড়ানোর পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাতা, মূলের বাকল ও ফুল ভেষজ গুণাগুণ সম্পূর্ণ, যা জ্বর ও খুশকি নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ভেষজটি হেমিপ্লেজিয়া, আর্থরাইটিস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। কৃষ্ণচূড়া গাছের শিকড়, বাকল এবং ফুল সবই পরজীবী সংক্রমণ নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

;