(পর্ব-১)

তৈমুর লঙ : ঘোড়ার পিঠে বিশ্ববিজয়



আহমেদ দীন রুমি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
মায়ের দিক থেকে ধরলে তৈমুরের শিরায় ছিল চেঙ্গিসের রক্ত

মায়ের দিক থেকে ধরলে তৈমুরের শিরায় ছিল চেঙ্গিসের রক্ত

  • Font increase
  • Font Decrease

চেঙ্গিস খানের মৃত্যুর পর একশ বছর পেরিয়ে গেছে। তার সাম্রাজ্য খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে আছে উত্তরাধিকারীদের মধ্যে। অনেকেই রীতিমতো তখতবিহীন। চেঙ্গিসের এক পুত্রের নাম চাগতাই, তার মৃত্যুর পর বংশধররা ১২২৭ সাল থেকে ১৩৬৯ সাল পর্যন্ত মধ্য এশিয়ায় শাসন অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিল। তার নাম অনুসারেই বংশধরদের নাম হয় চাগতাই বংশ।

চাগতাইয়ের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় বসে তার নাতি কারা হালাকু। কিন্তু এ দফায় বেশিদিন টিকতে পারেননি। মোঙ্গল নেতা কুয়ুক খান তাকে সরিয়ে চাগতাইয়ের পঞ্চম পুত্র ইসু মসুকিকে সিংহাসনে বসান। মোঙ্গল সাম্রাজ্যের কেন্দ্রভূমি কারাকোরামে স্থিত মঙ্গু খানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে হত্যা করা হয় ইসু মসুকিকে। ফলে আবার ক্ষমতায় আসেন কারা হালাকু। তার মৃত্যুর পর স্ত্রী ওরগানা সাময়িকভাবে শাসনকার্য চালাতে থাকেন। সময় হলে ১২৬৬ সালে মসনদে বসেন কারা হালাকুর পুত্র মোবারক শাহ।

চাগতাই সাম্রাজের তারুণ্যে তার অবস্থান


চাগতাইদের মধ্যে তিনিই প্রথম গ্রহণ করে ফেলেছিলেন ইসলাম ধর্ম। ফলে শাসন ব্যবস্থাতে আগাগোড়া পরিবর্তন আসে। আগেকার অভিজাত ও প্রতিষ্ঠিতদের বিষয়টা না মেনে নেওয়াই স্বাভাবিক। শীঘ্রই তাকে সরিয়ে দিয়ে সামনে আসলেন চাচাত ভাই বুরাক খান। বুরাক খানের পর পুত্র দুয়া খান এবং তারও পরে দুয়া খানের তিন পুত্র ইসেন বুকা, কাবাক এবং তারমাশিরিন একের পর এক গদিতে বসেন। সর্বশেষ জনের নাম তারমাশিরিন, যিনি ক্ষমতায় ছিলেন ১৩২৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৩৪৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। তিনি ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে আলাউদ্দীন নাম নেন।

তৈমুর পর্ব

আলাউদ্দীনের মৃত্যুর পর চাগতাই সাম্রাজ্য চরম গোলযোগে পতিত হয়। তখন চাগতাই মোঙ্গলদের সাথে তুর্কিদেরও যোগাযোগ বেড়ে গেছে। ঠিক সেই রকম এক বংশধর তরুণী তাকিনাহ খাতুন, যার বিয়ে হয়েছিল আমীর তুরঘাই নামের তুর্কি দলপতির সাথে।

আট দশটা বিয়ের মতো এই বিয়েটাও সাধারণ হতে পারত; কিন্তু হয়নি। কারণ তাদের ঘরে এমন এক সন্তান জন্ম নেয়, যার হাতে সৃষ্টি হয়েছে নতুন ইতিহাস। আমৃত্যু রহস্যময় মানুষটির নাম তৈমুর; জীবনের প্রত্যেকটি ঘটনায় তার বিস্ময়কর নাটকীয়তা সাহিত্যিকের কল্পনাকেও হার মানায়। শত্রু শিবিরের ধ্বংসস্তূপের ওপর তার নৃশংস উল্লাস আর একই সাথে শিল্পের প্রতি অপরিসীম মমত্ববোধ—বিপরীত বৈশিষ্ট্য খাপ খেয়েছিল তার সাথে। শত্রুকে যুদ্ধের মাঠে রেখেই মজে থাকতে পারতেন দাবা খেলায়। ইতিহাসের অনেকেই তাকে ‘এ ম্যান অব প্যারাডক্স’ বলে ডাকতে পছন্দ করেন।

তার রহস্যময়তার জন্যই ঐতিহাসিকদের কাছে তিনি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু


১৩৩৬ সালে মধ্য এশিয়ার কেস নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আমীর তুরঘাই ছিলেন বারলাস গোত্রের গুরগান শাখার প্রধান। গুরগান শব্দের মানে গৌরবময় আর তৈমুর মানে লৌহ। নিজের জীবনে নামের অর্থ ভালোভাবেই প্রমাণ করেছেন আমীর তৈমুর গুরগান।

বাল্যকাল থেকেই তার দাপুটে স্বভাবের পরিচয় পাওয়া যেতে থাকে। সামরিক বিষয়ে পারদর্শী হয়ে ওঠেন মাত্র বারো বছর বয়সেই। পিতার মৃত্যুর পর থেকেই মূলত নানা বিপদ আর প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে থাকেন। তখন ট্রান্সঅক্সিয়ানার সিংহাসন নিয়ে গোলযোগ চলছে। মঙ্গোলীয় শাসনকর্তা তুঘলক তৈমুর খানের আক্রমণের কারণে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন তৈমুর। সন্তুষ্ট হয়ে তুঘলক খান প্রথমে শাসক এবং পরে পুত্রের উপদেষ্টা মনোনীত করেন। কিন্তু শীঘ্রই ষড়যন্ত্রের কারণে সমরকন্দ ত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি।

এক ভাগ্যবিড়ম্বিত জীবন

চরম সহায়হীন অবস্থায় এক হতভাগ্যের জীবন কাটছে তখন তৈমুরের। ভাগ্যান্বেষণে কী না করেছেন? খিভার শাসনকর্তার কাছে সাহায্যের আবেদন করলে তিনি মুখে হ্যাঁ করলেও বাস্তবে বিশ্বাসঘাতকতা করেন। অবস্থা বুঝতে পেরে মরুভূমিতে পলায়ন করেন তৈমুর। সময়টা ছিল আসলে তার পরীক্ষার, অন্তত ভাগ্যবিধাতা তাকে প্রস্তুত করছিলেন এভাবেই। নাহলে বিপদের পরে আরো বিপদে কেন পড়বেন? একদল তুর্কি তাকে বন্দী করলে তিনি আরো একবার কঠিন কৌশলে সেখান থেকে পলায়ন করলেন।

ভাগ্য বিড়ম্বিত তৈমুর এখানে-সেখানে ঘুরে ক্লান্ত। কোথাও আশার কোনো বাতি নেই। তারপরেও তিনি অধৈর্য হননি। ইতোমধ্যে সিস্তানের শাসনকর্তা জালালউদ্দীন মাহমুদ এক বিদ্রোহ দমনের জন্য তার কাছে সাহয্য প্রার্থনা করল। তিনি সাড়া দিলেন। অধিকৃত হলো বিদ্রোহীদের দূর্গ।

এত দ্রুত কি আর ভাগ্য বদলায়? দ্রুত পাল্টে গেল দাবার ছক। শত্রুরা যাবার আগে জালালউদ্দীনকে তৈমুরের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে যায়। তাছাড়া তৈমুরের সম্ভাবনা এবং ব্যক্তিত্বের জন্য তিনি তাকে ভবিষ্যৎ বিপদ হিসাবে গণ্য করলেন। ফলে আক্রমণ করলেন তৈমুরকে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করলেও পায়ে গুরুতররূপে আঘাত পান। সারাজীবন আর সেই পা ভালো হয়ে ওঠেনি। এই খোঁড়া পায়ের জন্যই তার নামের সাথে ‘লঙ’ যুক্ত হয়।

পরবর্তী-জীবনে আর পা-টা ঠিক হয়নি


সিস্তান বিজয়ের পর তার চোখ পড়ল সাম্রাজ্য বৃদ্ধির দিকে। ধীরে ধীরে কুনদুজ থেকে কেস পর্যন্ত দখল করে আধিপত্য বৃদ্ধি করলেন তৈমুর। ততদিনে তুঘলক খানের মৃত্যু হয়ে পুত্র খাজা ইলিয়াস পরবর্তী শাসক হিসাবে সমরকন্দের গদিতে বসেছেন। সুযোগ পাওয়া মাত্রই আক্রমণ করে সমরকন্দ দখল করে নেন তৈমুর। এবার যেন পা রাখার একটা জায়গা হলো।

ক্ষমতায় আরোহণ

এতদিন এতগুলো অভিযানে তৈমুরের সাথে আরো এক ব্যক্তি সবসময় পাশে ছিলেন—আমীর হুসাইন। ক্ষমতার প্রবেশদ্বারে এসে তাদের বন্ধুত্বে ফাটল ধরল। আমীর হুসাইন সাবেক শাসনকর্তার পুত্র বলে দুজনের সমান যোগ্যতার অর্জনকেও তিনি নিজের হাতে রাখলেন। উপরন্তু বারলাস বা তৈমুরের গোত্রের ওপর কর বাড়িয়ে দিলেন। মনঃক্ষুণ্ণ তৈমুর তার সীমাবদ্ধ ক্ষমতাকে মেনে নিলেন উদারভাবে।

সময় তো আর একরকম যায় না। হঠাৎ তৈমুরের প্রিয়তমা স্ত্রী আলজাই মৃত্যুবরণ করলেন। আলজাইয়ের আরেক পরিচয় ছিলে আমীর হুসাইনের বোন হিসাবে। মূলত আলজাইয়ের কারণে আত্মীয়তার বন্ধন হেতু এতদিন সংঘর্ষ হয়নি। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তা সম্ভব হলো। তৈমুর এবার ক্ষমতা হাতে নেবার জন্য সচেষ্ট হলেন।

আরো পড়ুন ➥ চেঙ্গিস খান : রহস্যময় এক বিশ্ববিজেতা

প্রথম দিকে আমীর হুসাইন মোটামুটি নিশ্চিন্ত ছিলেন নিজের শক্তির অধিকতার কারণে। কিন্তু জাঠ বিদ্রোহ দমনের জন্য দীর্ঘ ছয় বছর ব্যস্ততার দরুন শক্তি অনেকটাই ক্ষয়ে এসেছিল তার। এই সুযোগটাই নিলেন কৌশলী তৈমুর। দু্ই পক্ষের মধ্যকার সিদ্ধান্তমূলক যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত হলেন হুসাইন। দীর্ঘ হতভাগ্য জীবনের শেষে ১৩৬৯ সালে সিংহাসনে আরোহণ করলেন আমীর তৈমুর। রাজধানী হলো সমরকন্দ। যেন অন্ধকারের বুক ছিঁড়ে সবেমাত্র ভোর হলো।

পারস্য বিজয়

তৈমুরের বিশ্বাস ছিল—“আসমানে যেমন একজন খোদা, জমিনেও তেমনি একজন বাদশাহ থাকবে।” তাই সিংহাসন লাভের সাথে সাথেই রাজ্য বিজয়ে মনোনিবেশ করেন। মধ্য এশিয়ার রাজনৈতিক গোলযোগ তাকে উক্ত অঞ্চল জয় করতে প্ররোচিত করে। ১৩৬৯ সাল থেকে ১৩৮০ সাল পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময় জাঠ এবং খাওয়ারিজম রাজ্যের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত থাকেন তিনি। তারপর নজর ঘুরান পারস্যের দিকে। ১৩৮০ সালে তৈমুর খোরাসান আক্রমণ করে শাসক গিয়াসউদ্দীন পীর আলিকে পরাজিত করেন। তারপর একে একে দখল করেন হেরাত, কান্দাহার এবং কাবুল। কালাত-ই নাদিরী এবং তুরশীজ নামে দুটি দুর্গ বিজয় করেন।

সমসাময়িক শিল্পীর আঁচড়ে তৈমুরের পারস্য আক্রমণ


তৈমুরের পরের লক্ষ্য সিস্তান। সিস্তানের যুবরাজ কুতুবউদ্দীন শাহের নিকট সন্ধিপ্রস্তাব পাঠানো হলো। তারা প্রস্তাবে তেমন কোনো গুরুত্ব দিল না। বরং নতুন গজিয়ে ওঠা শাসক ভেবে আক্রমণ করে বসল। তার মাশুল গুনতে হলো শীঘ্রই। তৈমুর প্রবল প্রতাপে তাদের পরাজিত করলেন। পরাজিত সিস্তানিরা আরো বড় ভুল করল পরে রাতের অন্ধকারে আবার আক্রমণ করে। এবার তৈমুরের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেল। শুধু বিজয় অর্জন করেই থেমে গেলেন না; নিলেন চরম প্রতিশোধ। ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে তা পরিণত হলো জনমানবহীন শ্মশানে। এই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে পি সাইক্স বলেছেন, “নগরটি এখন হিংস্র জন্তু ও পেঁচাদের আবাসে পরিণত হয়েছে।”

খোরসান ও সিস্তান বিজয় নিশ্চিত হলে তৈমুর বের হন উত্তর পারস্য বিজয়ের উদ্দেশ্যে। ১৩৮৪ সালে অতিক্রম করলেন অক্সাস নদী। দীর্ঘ একমাস অবরোধের পর দখলে এলো অস্ত্রাবাদ। নিজের রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করলেন রাই, মাজেনদারান, সুলতানিয়াসহ একের পর এক নগরী। এক ভাগ্য বিড়ম্বিত তরুণ থেকে এখন একটা সম্ভাবনাময় রাজ্যের অধিপতি।

কিন্তু তখনও তৈমুরের গল্পের মূল আখ্যান শুরুই হয়নি। গোল্ডেন হোর্ড থেকে অটোম্যান সুলতান অব্দি তার কাছে পরাজিত হতে বাধ্য হয়েছে সিনেমার মতো। সেই গল্প আসবে পরবর্তী পর্বে।

● পর্ব-২ পড়তে ক্লিক করুন

   

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;

প্রশ্ন আর উত্তর যেন পরস্পরের সাংঘর্ষিক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশ্ন থাকে এক আর তার উত্তর হয় ভিন্ন। এমন উত্তরপত্রের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। এবার এমনই এক উত্তরপত্রের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো সবাই অবাক! তবে এই ঘটনার জন্ম দেওয়া দেশটি বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের একটি হিন্দি পরীক্ষায় ঘটেছে এমন কাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে পরীক্ষার্থীর এমন উত্তর দেখে শিক্ষককেও হাসতে দেখা যায়। 

ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে @n2154j অ্যাকাউন্টের একটি আইডি থেকে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রশ্ন ছিল এমন, সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ (যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ) কী? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীটি একটি খাদ্য রূপক দিয়ে উত্তর দিল: "মাটার পনির এবং সব মিশ্র সবজি একত্রিত একটি খাবার।"

আরেকটি প্রশ্ন ছিল "অতীত কাল কাকে বলে?" এর উত্তরে ওই পরীক্ষার্থি লিখেছে, "যখন অতীত আমাদের অতীতের আকারে আসে, তখন তাকে অতীত কাল বলা হয়।"

ভিডিও অনুযায়ী আরও একটি প্রশ্ন ছিল "বহুবচন কাকে বলে?" এর উত্তরে সে লিখেছে "যে পুত্রবধূ তার শ্বশুরবাড়ির কথা শোনে তাকে বহুবচন বলে।"

শিক্ষার্থীটির এমন উত্তর শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন শিক্ষক। এমন উত্তরগুলোকে শিক্ষক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও এমন উত্তরের জন্য তাকে পুরোপুরি হতাশ করা হয়নি। তাকে ১০ মার্কের মধ্যে ৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক পরে তার উত্তরপত্রে লিখে দিয়েছিলেন, এই ৫ মার্ক তোমার মস্তিষ্কের জন্য, ছেলে।

ভিডিওটি দেখে সবাইকে হাসির ইমোজি দিতে দেখা যায়। সম্পূর্ণ নম্বর না পাওয়ায় অনেকেই যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ছাত্রটি তার কৌতুক প্রতিভার জন্য পূর্ণ নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

তবে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ছাত্র এবং শিক্ষকের হাতের লেখা সন্দেহজনকভাবে একই রকম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, "প্রশ্ন এবং উত্তর একই হাতের লেখা"। 

;

ফেনী শহরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে' জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গানে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়া যেন প্রকৃতিকে দান করেছে লাল আভার অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমা। সাথে গ্রীষ্মের উত্তাপে শহরে সৌরভ ছড়াচ্ছে নানা জাতের ফুল। তীব্র তাপদাহের পর কালবৈশাখী, এরপর মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে ফুলের আগমন। এতে রঙের উল্লাসে মেতে উঠেছে ফেনী শহরবাসী।

ফেনী শহরের কোর্ট বিল্ডিং, এলজিইডি, পুলিশ লাইন, নবীন চন্দ্র সেন কালচারাল সেন্টার, ফেনী সরকারি কলেজ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া। এটি একদিকে প্রকৃতিকে যেমন সাজিয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যে, অন্যদিকে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে তরুণ-তরুণী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ ফুলপ্রিয় পথচারীদের। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, সরকারি দফতরসহ স্কুল-কলেজে কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল ও উজ্জ্বল সবুজ পাতার সংমিশ্রণ দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে চারপাশ।


কৃষ্ণচূড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ফুলের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে আছে পুরো শহর। শহরের মূল সড়কের ডিভাইডারে পৌরসভার উদ্যোগে লাগানো হাসনাহেনা, রজনিগন্ধা, গন্ধরাজসহ নানা জাতের ফুল গাছে ফুল ফুটেছে। এটি একদিকে বাড়িয়েছে সৌন্দর্য অন্যদিকে হেঁটে কিংবা রিকশায় চলাচল করলে পাওয়া যায় এসব ফুলের সুঘ্রাণ।

ফেনী শহরের কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ফুলপ্রিয় পথিকরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অনন্য সাজে সাজিয়েছে। এই ফুলের সৌন্দর্যের কারণে পথচারীরা একবার হলেও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর গাছের উপর নজর দিবে। পাশাপাশি তীব্র গরমে অন্যান্য ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মুখরিত হওয়াতে ক্লান্তিতা কিছুটা হলেও কমছে।


তারা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলের এই নান্দনিক দৃশ্য দেখতে এর গাছ রোপণ করা জরুরি। রাস্তা প্রশস্তকরণ, ঘর-বাড়ি নির্মাণসহ নানা প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলা হয়। অন্যান্য গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া রোপণ করলে একদিকে যেমন সৌন্দর্য বাড়াবে অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব হবে।

সাজিদ হাসান নামের এক পথচারী বলেন, কৃষ্ণচূড়া একদিকে যেমন প্রকৃতিতে অপরুপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, আরেকদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাবে। সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, আমার মতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এই গাছটিও যুক্ত করা উচিত। তীব্র গরমের পর বৃষ্টি হলো, এরপর শহরে নানা রঙের ফুলের দেখা মিলছে, ফুলের ঘ্রাণে চলাচল করতেই ভালো লাগছে।

ফারজানা ইয়াসমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ফুল আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের কলেজে বকুল তলা আছে, ক্যান্টিনের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। সুযোগ পেলেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি।

অনিক মোহন নামে একজন বলেন, রিকশায় করে যখন বাসায় ফিরি, শহরের রাস্তার মাঝে ভিডাইভারে লাগানো নানা জাতের ফুলের ঘ্রাণ মনকে আনন্দিত করে। রাতের বেলা শহর যখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়, তখন এ ফুলের সৌন্দর্য কয়েকশ’ গুণ বেড়ে যায়।

সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া লাগানো হলে সৌন্দর্য বাড়বে বলে মনে করেন পথচারী মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য যে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে, ওই গাছগুলোর জায়গা কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাগালে রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে।

একই কথা বলেন শহরের ব্যবসায়ী নাদিম আহমেদ। তিনি বলেন, সৌন্দর্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এই গাছ রোপণ করা উচিত আমাদের। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে অন্যন্যা গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। যেগুলো শহরে আছে তাতেই সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ, আরও যদি লাগানো যায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে আমাদের শহর।

কৃষ্ণচূড়া মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা বৃক্ষের জঙ্গলে পাওয়া যায়। যদিও জঙ্গলে এটি বিলুপ্ত প্রায়, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি জন্মানো সম্ভব হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়।

শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ থাকে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্ত কালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।

জানা যায়, অপরূপ সৌন্দর্য ছড়ানোর পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাতা, মূলের বাকল ও ফুল ভেষজ গুণাগুণ সম্পূর্ণ, যা জ্বর ও খুশকি নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ভেষজটি হেমিপ্লেজিয়া, আর্থরাইটিস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। কৃষ্ণচূড়া গাছের শিকড়, বাকল এবং ফুল সবই পরজীবী সংক্রমণ নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

;

হলুদ আভায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখী 



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: প্রাণের উচ্ছ্বাসে সূর্যমুখী

ছবি: প্রাণের উচ্ছ্বাসে সূর্যমুখী

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে সূর্যমুখী। বাস্তব জীবনের নিস্তব্ধতা ভাঙছে তার হলুদ আভায়। মৌমাছির আলিঙ্গন পেতে ছড়াচ্ছে উষ্ণ মুগ্ধতা। হলুদের কারুকার্যে বিমোহিত হচ্ছে পথিকের মন। লুকায়িত সৌন্দর্য প্রকৃতির মাঝে তুলে ধরে প্রবল আকর্ষণে টানছে দর্শনার্থীদের। সবুজ পাতা ভেদ করা সেই অনিন্দ্য হাসি যেন কৃষকের মুখেরই প্রতিচ্ছবি। সূর্যমুখী ফুল চাষে জনপ্রিয়তা বাড়ছে কৃষকদের মাঝে।

সূর্যমুখী এক ধরনের একবর্ষী ফুলগাছ। সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার (৯ দশমিক ৮ ফুট) হয়ে থাকে। ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার (১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে কিছুটা সূর্যের মতো এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এর এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। ফুলের বীজ হাঁস-মুরগির খাদ্যরূপে ও তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

জানা যায়, বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের উৎস হিসেবে ১৯৭৫ সাল থেকে এ ফুলের চাষ শুরু হলেও কৃষকের মাঝে জনপ্রিয়তা পায় নি বহুদিন। পরে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। বর্তমানে রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, নাটোর জেলা, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, গাজীপুর, টাঙ্গাইল প্রভৃতি জেলাতে এর ব্যাপক চাষ হচ্ছে।

সূর্যমুখীর বাঁধভাঙা হাসি আর প্রাণের উচ্ছ্বাস

সোমবার (১২ মে) সকালে সরেজমিনে নওগাঁ সদর উপজেলার মুক্তির মোড় কেন্দ্র শহীদ মিনারের পাশে দেখা যায়, সূর্যমুখী বাতাসে; দুলছে আলোর প্রতিফলনে পাপড়িগুলো যেন চকচকে হলুদ আভা ছড়াচ্ছে। মৌমাছি এক ফুল থেকে অন্যফুলে মধু আহরণে ছুটাছুটি করছে আর এসব দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছে পথচারীরা। এছাড়াও নওগাঁর বেশ কিছু অঞ্চলে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী। একদিকে যেমন ফুলগুলো সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে তেমনি বীজ থেকে ভোজ্য তেল উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে সূর্যমুখীর বীজ। সূর্যমুখী গাছ শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। 

প্রতিদিন ভোরে সূর্যমুখী বাগানের সকল গাছ অনেকটা পূর্বদিকে মুখ করে থাকে। যেদিকে সূর্য দেখা দেয় এবং ধীরে ধীরে ওপরে উঠতে থাকে। সূর্যের সাথে সাথে সূর্যমুখীগুলোও ধীরে ধীরে নিজেদের দিক পাল্টাতে থাকে। সূর্য যেদিকে যায় তারাও সেদিকে যায়। সবসময়ই এগুলো সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। সূর্য যখন পশ্চিম দিকে অস্ত যায় তারাও তখন পশ্চিম দিক বরাবর থাকে। অস্ত যাওয়ার পরে তারা রাতব্যাপী আবার উল্টো দিকে ঘুরে পূর্বমুখী হয়। এভাবে শুকিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের এই চক্র চলতেই থাকে।

সূর্যের সাথে সাথে নিজেদের দিকও পাল্টাতে থাকে সূর্যমুখী

তবে সবার মাঝে একটি প্রশ্ন অনেক সময় ঘুরপাক খায় যে সূর্যমুখী ফুল কেন সূর্যে দিক হয়ে থাকে! সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের একটি দল সূর্যমুখীর এই দিক পরিবর্তন সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যের রহস্য উন্মোচন করেছেন। তাদের গবেষণা থেকে বেরিয়ে আসে সূর্যমুখীরা তাদের নিজস্ব সার্কাডিয়ান চক্রে আবদ্ধ। এই চক্র সচল থাকার কারণে সূর্যমুখীরা সব সময় সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে। গবেষকরা সায়েন্স জার্নালে তাদের গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশ করেছেন। সার্কাডিয়ান চক্র বা সার্কাডিয়ান ঘড়িকে অনেক সময় ‘দেহঘড়ি’ নামেও ডাকা হয়। মানুষের মাঝেও এই চক্র বিদ্যমান। যেমন প্রত্যেক মানুষেরই দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম চলে আসে।

পথচারী রায়হান বলেন, ফুল শুভ্রতার প্রতীক ও পবিত্র। ফুলকে যারা ভালোবাসে তাদের মনটাও সুন্দর। সূর্যমুখী ফুল সব ফুলের চেয়ে আলাদা কারন সূর্যের দিক মুখ করে বেশিরভাগ থাকে এ ফুল। বিশেষ করে দুপুর শুরু হলে সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে এ ফুল যা দেখতেও খুব সুন্দর লাগে তাছাড়া এ ফুলের বীজ থেকে তেল হয় যা অনেক স্বাস্থ্যকর।

ক্ষুদে শিক্ষার্থী আফরিন (১০) জানায়, আমি ফুল খুবই ভালোবাসি আর সূর্যমুখী ফুলগুলো হলুদ হবার কারনে আরো বেশি ভালো লাগে। নামটা যেমন সুন্দর তেমনি মুগ্ধতাও ছড়ায়। ফুলগুলো থেকে তেল হয় তাই কোনোভাবেই নষ্ট করা যাবে না। আমরা দূর থেকে দেখেই শান্তি পাই।

সূর্যের সাথেই একাত্মতা সূর্যমুখীর

স্থানীয় বাসিন্দা আরেফিন তুহিন বলেন, স্বল্প পরিসরে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য যারা সূর্যমুখী ফুলের গাছ লাগিয়েছে তারা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। ফুল মানেই সুন্দর সূর্যমুখীও এটিএ ব্যাতিক্রম নয়। মাঝে মাঝে যখন ফুলের দিকে চোখ যায় খুব ভালোলাগা কাজ করে। এ ফুল দেখতে যেমন সুন্দর এটির তেল ও খুব পুষ্টিকর।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে চলতি অর্থবছরে সূর্যমুখী চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ হেক্টর ও অর্জন হয়েছে ৬৫ হেক্টর এবং মোট উৎপাদন হয়েছে ১০০ মেট্রিক টন। 

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বার্তা২৪.কমকে বলেন- সূর্যমুখী একদিকে যেমন শুভ্রতার প্রতীক আবার অন্যদিকে বীজ থেকে তেল উৎপাদন হয় আবার মধুও পাওয়া যায়। বাজারে যে ভৈজ্যতেল গুলো রয়েছে যেমন, সয়াবিন,সরিষা, পাম-ওয়েল ইত্যাদি এগুলোর চেয়েও অনেক বেশি পুষ্টিগুণ আছে সূর্যমুখীর তেলে যা স্বাস্থ্যকর এবং স্বাস্থ্যর জন্য খুবই উপকারী। আমরা বেশি বেশি উৎপাদনে কৃষকদের সব রকম পরামর্শ দিয়ে থাকি।

;