তৈমুর লঙ : ঘোড়ার পিঠে বিশ্ববিজয় (পর্ব-৩)



আহমেদ দীন রুমি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
তৈমুর লঙ : পৃথিবীকে তটস্থ করে রাখা এক বীর

তৈমুর লঙ : পৃথিবীকে তটস্থ করে রাখা এক বীর

  • Font increase
  • Font Decrease

● পর্ব-১ পড়তে ক্লিক করুন
● পর্ব-২ পড়তে ক্লিক করুন

তৈমুর লঙের আকাশে তখন গনগনে মধ্যদুপুর। মধ্য এশিয়ার সমগ্র অঞ্চল, পশ্চিম এশিয়া এবং ইউরোপের বড় অংশ তার অধিকারে। বাকি অংশও ভীত-সন্ত্রস্ত। ভাগ্যক্রমে ভারতে ততদিনেও থাবা পড়েনি তৈমুরের। খুব সম্ভবত এ ব্যাপারে তার মনেই পড়েনি বলাটা বেশি যৌক্তিক হবে। কিন্তু সেই অপেক্ষা স্থায়ী বেশিদিন হলো না। শীঘ্রই তৈমুর তৈরি হলেন ভারত অভিযানে।

ভারত অভিযান

মোটা দাগে, ভারত আর তৈমুর—উভয়ের জন্যই এই অভিযান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের অপরিমেয় ঐশ্বর্যের গল্প তৈমুরের কানে যেতেও বাকি থাকেনি। যদিও তার আগে চেঙ্গিস খানও ভারতে আসার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন; তথাপি মুলতান এবং পঞ্জাব পর্যন্ত অগ্রসর হয়ে আর রুচি ধরে রাখতে পারেননি। তৈমুর বোধহয় সেই না হওয়া অভিযানকে পূর্ণতা দিতেই আগমন করলেন।

তখন ভারতের মসনদে মাহমুদ শাহ তুঘলক। শাসক হিসাবে তাকে অযোগ্য বলা হলেও কম বলা হয়ে যাবে। তুঘলক সালতানাতের তখন নড়বড়ে অবস্থা। মাহমুদ শাহের দুর্বলতার জন্য সাম্রাজ্যের ভেতরে কোন্দল জন্ম নিতে থাকে। বিশেষ করে আমীর-উমরাহদের অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা ছিল সবচেয়ে মারাত্মক। রণনিপুণ তৈমুর লঙ এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন। নাতি পীর মুহম্মদের নেতৃত্বে একদল সৈন্যকে ভারত আক্রমণ করার জন্য পাঠালেন ১৩৯৮ সালে।

পীর মুহম্মদ পাঞ্জাবে প্রবেশ করলেন সিন্ধু পার হয়ে। অবরোধ করলেন মুলতান। ছয় মাস অবরোধের পর পরাজিত হন মুলতানের শাসনকর্তা সারাঙ খান। তার আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে তৈমুরের অধিকারে আসে মুলতান। আর সেই সাথে অধিকারে আসে ব্যাপক ধন সম্পত্তি। কতিপয় সেনানায়কের বিরোধিতা সত্ত্বেও তৈমুর নিজে ভারত আক্রমণ করতে মনস্থ হলেন।

তুঘলক সালতানাত তখন অন্তঃকলহে জর্জরিত


১৩৯৮ সালের ডিসেম্বর মাস। প্রায় ৯০ হাজার সৈন্য নিয়ে দিল্লির উপকণ্ঠে পৌঁছালেন তৈমুর লঙ। মাহমুদ শাহ এবং তার সেনাপতি মাল্লু খান ৫০ হাজার সৈন্য নিয়ে প্রতিরোধে নামেন। রক্তাক্ত যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হলো মাহমুদ শাহ। তৈমুর দিল্লিতে প্রবেশ করলে জনগণের পক্ষ থেকে ক্ষমা চাওয়া হলো। প্রচুর ধন সম্পদ নেবার মানসিকতায় ক্ষমা করলেন তিনি। কিন্তু শীঘ্রই প্রকাশ পেয়ে গেল তার সৈন্যদের লুটতরাজ। যে যেভাবে পারল জনসাধারণের বাড়ি ঘর লুট করতে লাগল। আস্তে আস্তে জনগণের একাংশ ধৈর্য হারিয়ে ফেলে। আক্রমণ করে বসে তৈমুরের সৈন্যদের ওপর।

ভারতে তৈমুরের আগমন ছিল ঝড়ের মতো তাণ্ডব আর উন্মত্ততায় পূর্ণ


এই অপরিণামদর্শী কাজের ফলাফল হলো ভয়াবহ। ক্রোধে উন্মত্ত তৈমুর প্রতিশোধের জন্য নির্বিচারে হত্যা ও অগ্নিসংযোগের আদেশ দিলেন। শুরু হলো ব্যাপক হত্যাকাণ্ড। পঁচিশ দিন পর্যন্ত চলল লুণ্ঠন ও হত্যাযজ্ঞ। নিহত হলো লক্ষাধিক। দিল্লি পরিণত হলো ধ্বংস্তূপে। প্রভূত ধন সম্পদ নিয়ে তারপরেই নিজের দেশে ফিরলেন তৈমুর। যাবার পথেও বিধ্বস্ত করে গেলেন মিরাট, আগ্রা এবং জম্মু। ভারত ত্যাগের আগে খিজির খানকে লাহোর আর মুলতানের শাসনকর্তা নিযুক্ত করে গেলেন। সুনামির শেষে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে থাকা ভূমির মতো থেতলে থাকল ভারত।

মূলত তৈমুর লঙের আক্রমণের সদূরপ্রসারী ফলাফল হিসাবেই দিল্লিতে তুঘলক বংশের পতন এবং সৈয়দ বংশের উত্থান ঘটে। ভারত ত্যাগ করার আগে এখান থেকে প্রচুর সংখ্যক শিল্পী, স্থপতি এবং কারিগর তৈমুর সাথে করে সমরকন্দ নিয়ে যান; যারা সেখানে শিক্ষা ও সংস্কৃতির নতুন যুগের সূচনা করে। বিখ্যাত ঐতিহাসিক আর সি মজুমদার তার লেখা ‘এন এডভান্স হিস্ট্রি অব ইন্ডিয়া’-তে দাবি করেছেন, “যতবার ভারত বৈদেশিক শত্রুর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, তার মধ্যে তৈমুরের আক্রমণই সর্বাপেক্ষা মর্মন্তুদ ঘটনা।”

মামলুকদের সাথে সংঘাত

তৈমুরের বয়স তখন সত্তর পার হয় হয়। এই বয়সে সবাই বিশ্রামে চলে যায় পার্থিব বিষয়াদি থেকে। হয়তো তৈমুরও তাই চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি তা হতে দিল না। মিশর ও সিরিয়ার মামলুক সাম্রাজ্যের সাথে লেগে গেল দ্বন্দ্ব। এই সময়টাতে মামলুকদের মসনদে ছিল মালিক আন নাসির ফারাজ। ফলত, পূর্ব ঐতিহ্য আর গৌরব স্তিমিয়ে পড়তে শুরু করেছে তখন। তৈমুর লঙ সবটা শুনে সমরকন্দ হতে আজারবাইজানের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন।

বাগদাদের রাজা তখন সুলতান আহমদ। নির্বিচারে বহু সাধারণ লোককে হত্যার জন্য তার বিরুদ্ধে জনগণ ক্ষেপে ওঠে। বিদ্রোহ অদমনীয় হয়ে উঠলে পালিয়ে কারা কুয়ুনলু বংশের কারা ইউসুফের কাছে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন আহমদ। তৈমুর লঙ আজারবাইজান পার হয়ে প্রথমে সিভার্স দূর্গ দখল করেন। তারপর সিরিয়া যাবার পথে অধিকার করেন বাহাসনা দূর্গ। ১৪০০ সালের নভেম্বরের দিকে তার সৈন্যরা আলেপ্পো অবরোধ করল। শাসনকর্তা দামরুদ শাহ বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করলেও দিনশেষে পরাজিত হলেন তৈমুরের প্রশিক্ষিত সৈন্যের কাছে।

এরপরেই অবরোধ করা হলো দামেশক। মামলুক শাসক আন নাসির ফারাজের কানে পানি গেল তৈমুরের তাণ্ডবের গল্প আর নিজের সম্ভাব্য পরিণাম শুনে। তিনি মিশরীয় সৈন্যসহ এগিয়ে এলেন তৈমুরকে বাধাদানের উদ্দেশ্যে। কিন্তু পরাজয় নিশ্চিত মনে করে শীঘ্রই মিশর ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। সিরিয়া বাহিনীই শেষ পর্যন্ত মুখোমুখি হলো তৈমুরের। আত্মসমর্পণ না করার অপরাধে সিরিয়াবাসীর ওপর চলল নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ; যা সিরিয়াবাসী আগে কখনো দেখেনি। ১৪০১ সালে দামেশক বিজয় সমাপ্ত হলে দখল করেন বাগদাদ। তবে মামলুক শাসকের সাথে বোঝাপড়া শেষ হবার আগেই তাকে ফিরে আসতে হয় অটোম্যান শক্তির মোকাবেলা করার জন্য। কারণ খবর আসে, এশিয়া মাইনরে অটোম্যান সুলতান বায়েজিদ সৈন্য সমাবেশ ঘটিয়েছে।

অটোম্যান পরাশক্তিকে নাস্তানাবুদ

খুব সম্ভবত তৈমুর লঙের সামরিক ইতিহাসে অটোম্যান অভিযানই সর্বশ্রেষ্ঠ। এশিয়া এবং ইউরোপের অপ্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি অটোম্যানরা যখন ক্ষমতার শীর্ষে অবস্থান করছে; সেই সময়ে ঝড়ের মতো এসে তৈমুর তাদের অহঙ্কার ধুলায় মিশিয়ে দিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে দুই শক্তিমানের এমন নাটকীয় লড়াই অন্যরকম অধ্যায়ের সূচনা করে।

প্রথমত দুজন শাসকই ছিলেন উচ্চাভিলাষী। তার ওপর তৈমুরের রাজ্য বিজয় অর্জনের মাধ্যমে বিস্তৃত হয়ে গিয়েছিল অটোম্যান সাম্রাজ্য অব্দি। তৈমুর চেঙ্গিস খানের উত্তরাধিকারী হিসাবে এশিয়া মাইনরে নিজের আধিপত্য ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখতেন। অন্যদিকে বায়েজিদ নিজেকে সেলজুক তুর্কিদের উত্তরসূরী হিসাবে প্রভূত্ব স্থাপন করতে চাইলেন নিজের। ফলে চাপা একটা ঈর্ষা কাজ করছিল উভয়ের মধ্যেই। তার ওপরে, বায়েজিদ বাগদাদের বিদ্রোহী সুলতান আহমদ এবং আজারবাইজানের বিদ্রোহী রাজপুত্র কারা ইউসুফকে আশ্রয় দিয়েছিল; যারা ছিল তৈমুরের শত্রু। আর তৈমুর আশ্রয় দিয়েছিলেন আইডিন ও কাস্তেমুনীরের পলাতক যুবরাজ ও আমীরদের; যারা ছিল বায়েজিদের শত্রু।

মসির যুদ্ধ ধীরে ধীরে পরিণত হলো অসির যুদ্ধে


তৈমুর পত্র প্রেরণ করলেন—বায়েজিদ যেন তৈমুরের শত্রু আহমদ ও কারা ইউসুফকে ফিরিয়ে দেয়। বায়েজিদ চিঠির জবাবে কেবল তৈমুরের প্রস্তাব নাকচই করল না; তার শত্রু তাহেরতীনকে ফিরিয়ে দেবার জন্য পত্র দিলেন। ক্ষুব্ধ তৈমুর পরের চিঠিতে বায়েজিদের খ্রিস্টান স্ত্রী ডেসপিনার প্রসঙ্গ এনে বায়েজিদের বিরুদ্ধে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ আনেন। জবাবে বায়েজিদও তৈমুরের হেরেম এবং পত্নী নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন। এভাবে উভয়পক্ষের চিঠি চালাচালি আস্তে আস্তে এক ভয়াবহ যুদ্ধে রূপ নেয়। তৈমুর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন তুর্কিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাবার জন্য। 

সিভার্স দূর্গের পতন এবং পুত্র তুঘ্রীলের মৃত্যু বায়েজিদকে ক্ষিপ্ত করে দেয়। তখন তিনি কনস্টান্টিনেপল অবরোধে ব্যস্ত। সেই অবরোধ প্রত্যাহার করেই তৈমুরের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি শুরু হলো। সকল তুর্কি সৈন্য অংশগ্রহণ করল এতে। সার্বিয়ার সম্রাট স্টিফেনের নেতৃত্বে ২০ হাজার সার্বিয়ান ও বলকান অশ্বারোহী যোগ দিল। হাজির হলো গ্রিক ও ওয়ালিচিয়ার সৈন্যরাও। বায়েজিদের সৈন্য সংখ্যা দাঁড়াল প্রায় দুই লাখ। সেনাপতি তিমুরতাশ এবং দুই পুত্র সুলায়মান এবং মুহম্মদ বাহিনী পরিচালনার ভার নিলেন।

আঙ্গোরা যুদ্ধের ডায়াগ্রাম


১৪০২ সালের ২৮ জুলাই। আঙ্কারার প্রান্তরে দুইপক্ষের মোকাবিলা হলো। ইতিহাসের এই যুদ্ধ আঙ্গোরার যুদ্ধ নামে পরিচিত। তাতার বাহিনীর বিশ্বাসঘাতকতা আর তৈমুরবাহিনীর দ্রুততার কাছে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে তুর্কি বাহিনী। প্রতিপক্ষের অগ্নিগোলকের সামনে টিকতে না পেরে অনেক তুর্কিই পলায়ন শুরু করে দিল। এমনকি সুলতানের পুত্র সুলায়মানও পলায়ন করলেন জীবন বাঁচাতে। শত প্রচেষ্টার পরেও নিজের পরাজয় ঠেকাতে পারেননি বায়েজিদ। বন্দী অবস্থায় হতাশ হয়ে ১৪০৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এই যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সমগ্র এশিয়া মাইনরে তৈমুরের একচ্ছত্র অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলো।

এবং তারপর

আবার মামলুক শাসকের পালা। শত্রুর শেষ রাখতে নেই। তুর্কি সুলতান বায়েজিদের পরিণতি ইতোমধ্যে সকলের জানা হয়ে গেছে। তাই অনুরূপ পরিণতি বরণ করার জন্য কেউ আগ্রহী হলেন না। সময় থাকতেই তাই তৈমুরের দরবারে রাজদূত প্রেরণ করলেন বশ্যতা স্বীকার করে। তৈমুরকে কর প্রদান এবং তার নামে খুৎবা প্রদানেও স্বীকার করলেন মামলুক শাসক মালিক আল নাসির। ফলে মামলুকদের এশিয়া মহাদেশের এলাকাও অন্তর্ভুক্ত হলো তৈমুরের রাজ্যের সাথে।

নামমাত্র গোত্রপতির ছেলে থেকে হয়ে উঠলেন ইতিহাসের অন্যতম বিজয়ী


আঙ্গোরার সাফল্য আর মামলুকদের বশ্যতা তৈমুরকে তুলে দিল অনন্য উচ্চতায়। ইংল্যান্ডের রাজা চতুর্থ হেনরি এবং স্পেনের রাজা ষষ্ঠ চার্লস তাকে অভিনন্দন জানালেন। কনস্টান্টিনেপলের শাসক ম্যানুয়েল স্বীকৃত হলেন বার্ষিক কর প্রদানে। তৈমুর এখন ক্লান্ত। বিপুল সম্পদ, সেন্টপল ও পিটারের মূর্তি, ব্রুসার রৌপ্যনির্মিত সিংহদ্বার এবং বাইজান্টাইনের লাইব্রেরি সাথে করে নিয়ে তিন বছর পর সমরকন্দে ফিরে গেলেন বিজয়ীর বেশে।

মৃত্যু

খুব সম্ভবত বিষয়ের নেশা তৈমুরকে পেয়ে বসেছিল। তাই এত অভিযানের পরেও হঠাৎ চীন বিজয়ের অভিপ্রায় জাগ্রত হলো তার। ১৪০৫ সালে দুই লাখ সৈন্য সমেত অভিযানে বের হলেন। সারাটা জীবন ঘোড়ার পিঠে থেকে থেকে মানুষটা সত্যিই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তারপরেও চীনের দুর্গম পথকে ডিঙিয়ে এগিয়ে যাবার ব্যবস্থা নেওয়া হলো। বরফের ওপর পশমী কাপড় বিছিয়ে তৈরি হলো চলার পথ। অনেক সৈন্য যাত্রাপথে মৃত্যুবরণ করলেন। হার না মানা একরোখা তৈমুর চলতে থাকলেন তবু। অতঃপর ওতবার নামক স্থানে তৈমুর নিজে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। 

এশিয়ার বিশ্ববিজয়ী তৈমুর লঙের সমাধিসৌধ


বয়সের ভার, অমানবিক পরিশ্রম আর অতিরিক্ত মদ্যপান তার শরীরকে ভেঙে ফেলেছিল। নানা রকম চেষ্টা করেও তাই বাঁচানো গেল না দিগ্বিজয়ী তৈমুর লঙকে। ১৪০৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চীন অভিযানের পথেই মৃত্যু হয় তার। মৃত্যু হয় একজন অভিযাত্রীর; যিনি খুব সাধারণ এক পরিবারে জন্ম নিয়ে বিশ্বের অপ্রতিদ্বন্দ্বী নায়কে পরিণত হয়েছিলেন।

এইখানেই আমাদের গল্প শেষ টানলে তৈমুরকে কেবল বিজয়ে তৃষ্ণার্ত এক নৃশংস সাম্রাজ্যবাদী বলে মনে হবে। তাই প্রসঙ্গ টানব তার শিল্পবোধ আর শাসনবিত্তান্তের। তৈমুর অধ্যায়ের সবচেয়ে রহস্যময় দিক। কিন্তু সেই কথা পরের পর্বে।

   

উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা



মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা

উদাল: রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা

  • Font increase
  • Font Decrease

উদাল, সোনালি হলুদ সৌন্দর্যে মুগ্ধতা ছড়ানো মাঝারি সাইজের বৃক্ষ। পত্রঝরা উদাম শরীরে পুরো গাছজুড়ে শুধুই সোনালি হলদে রঙের ফুল। বসন্তে হলদে পাপড়ি ঝরে রাস্তায় বিছিয়ে দেয় ফুলের গালিচা। প্রকৃতির এক অপর সৌন্দর্য উদাল বৃক্ষ ও তার ফুল।

উদাল আমাদের দেশীয় উদ্ভিদ। এদের প্রিয় আবাস পাহাড়ি এলাকা হলেও আগে সারাদেশেই কমবেশি দেখা যেত। নির্বিচারে গাছ উজাড় হতে থাকায় অন্য গাছের সাথে এ দেশী গাছটিও বিপন্ন। ঢাকার মিরপুর জাতীয় উদ্যান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন, বাংলা একাডেমি, ঢাকার রমনা পার্ক, ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র তীরের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন পার্কসহ সমতলের অনেক স্থানে উদাল দেখা যায়। চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ করে বান্দরবান ও কক্সবাজারের মিশ্র চিরসবুজ বন এবং গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইলের পাতাঝরা শালবনের স্যাঁতসেঁতে জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে উদাল গাছ দেখা যায়।


উদালের বৈজ্ঞানিক নাম স্টারকুলিয়া ভেলোসা। ইংরেজিতে এটিতে হেয়ারি স্টারকুলিয়া বা এলিফ্যান্ট রোপ ট্রি নামে ডাকা হয়। এ গাছের বাকল থেকে এক প্রকার উন্নতমানের তন্তু পাওয়া যায়। এ তন্তু দিয়ে হাতি বেঁধে রাখার দড়ি বানানো হতো বলেও ইংরেজিতে এমন নামকরণ। আমাদের দেশে স্থানীয়ভাবে এটি চান্দুল নামেও পরিচিত। এই উদ্ভিদ মগ ও মারমাদের কাছে ফিউ বান, গারোদের কাছে উমাক এবং ম্রোদের কাছে নাম সিং নামে পরিচিত।

উদাল ২০ মিটার বা ততোধিক লম্বা হয়। এদের বাকল সাদাটে রঙের। এদের পাতার বোঁটা লম্বা, ফলক বড় ও পাতা খাঁজকাটা, পাতার প্রশাখার আগায় পাতা ঘনবদ্ধ। ফুলগুলি সোনালি হলুদ রঙের, ফুলের ভেতর বেগুনি। এর ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ থাকলেও পাকলে গাঢ় লাল রঙের হয়। বীজের রং কালো। বীজ স্বাদ অনেকটা বাদামের মতো হওয়ায় কাঠবিড়ালীর প্রিয় খাবার। তবে মানুষও এর ফল খেয়ে থাকে। বাকল থেকে আঁশ পাওয়া যায়। এ আঁশ দিয়ে দড়ি তৈরি হয়। কাঠ বাদামি রঙের, সাধারণত নরম ও হালকা হয়। এই গাছের কাঠ দিয়ে চায়ের বাক্স বানানো হয়।

উদাল ফল খাচ্ছে ইরাবতী কাঠবিড়ালি। ছবি: তবিবুর রহমান

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বার্তা২৪.কম-কে জানান, এ গাছ দেশের বন-জঙ্গলে প্রচুর হতো। এ গাছের পাতার বোঁটা দিয়ে শরবত বানানো হয়। উঁচু গাছ থেকে পাতার বোঁটা সংগ্রহ করা কষ্টসাধ্য হওয়ায় বড় বড় গাছ কেটে ফেলা হয়। এরপর এর গোড়া থেকে অনেক নতুন নতুন ডালপালা গজালে সেখান থেকে পাতার বোঁটা সংগ্রহ করা হয়। এছাড়াও উদাল গাছ থেকে স্বচ্ছ আঠা পাওয়া যায়। যা দিয়ে কনফেকশনারিসহ নানাবিধ কাজে ব্যবহার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, এ উদ্ভিদ বর্তমানে বিপন্ন প্রজাতির। গত বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ তিনশ উদাল গাছের চারা বিভিন্ন স্কুল কলেজে বিতরণ করেছে। এবারও প্রায় পাঁচশ চারা বিতরণ করা হবে।


ড. জসীম বলেন, উদলের বাকলের শরবত খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। ফুলের বৃন্ত ছেঁচে জলের সঙ্গে চিনি দিয়ে শরবত করে খেলে প্রস্রাবের সমস্যা ও বাতের ব্যথা দূর হয়। তবে খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

রাঙ্গামাটি বনবিভাগের এসিএফ তবিবুর রহমান জানান, উদালের বীজের স্বাদ অনেকটা বাদামের মতো হওয়ায় কাঠবিড়ালির খুব প্রিয়। তবে এ বীজ মানুষও খেয়ে থাকে।

তিনি আরও জানান, ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের তফসিল ৪ অনুযায়ী উদালকে বাংলাদেশের ‘মহাবিপন্ন’ প্রজাতির তালিকাভুক্ত উদ্ভিদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

;

বরিশালের শত বছরের ঐতিহ্যের স্মারক শীতলপাটি



এস এল টি তুহিন, করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের পাটিকররা তাদের নিপুণ হাতের তৈরি শীতলপাটির জন্য বিখ্যাত।

উপজেলার দাড়িয়াল ইউনিয়নের কাজলাকাঠী গ্রাম, রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া, রাজাপুর গ্রাম ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো তৈরি হয়, ঐতিহ্যের অনন্য স্মারক দেশ বিখ্যাত শীতলপাটি।

এই উপজেলায় এখন এক হাজারের বেশি পরিবার শীতলপাটি তৈরি করে সংসার চালাচ্ছে।

উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে প্রবেশ করে যতদূর দু’চোখ যায়, দেখা মেলে পাইত্রাগাছের বাগান। গ্রামীণ সড়কের দুই পাশে দেখা মেলে বড় বড় পাইত্রা বা মোর্তাগাছের ঝোপ। বাড়ির আঙিনা, পরিত্যক্ত ফসলি জমি, পুকুর পাড়, সব জায়গাতেই বর্ষজীবী উদ্ভিদ তরতাজা পাইত্রাগাছ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে। গ্রামীণ জনপদের আভিজাত্যের স্মারক শীতলপাটি তৈরি হয়, এই পাইত্রাগাছের বেতি দিয়ে।

জানা গেছে, এসব গ্রামে পাইত্রাগাছের আবাদ হয়ে আসছে শত শত বছর ধরে। পাটিকরদের পূর্বপুরুষেরা যে পেশায় নিয়োজিত ছিলেন, আজও সেই পেশা ধরে রেখেছেন বাকেরগঞ্জের পাটিকররা।

এখনো এই সব গ্রামে ‘পাটিকর’ পেশায় টিকে আছে প্রায় এক হাজার পরিবার। আর তাদের সবার পেশাই শীতলপাটি বুনন। ফলে, উপজেলার এসব গ্রাম এখন ‘পাটিকর গ্রাম’ নামে পরিচিত।

সরেজমিন দেখা যায়, কাঁঠালিয়া, রাজাপুর ও গারুড়িয়া ইউনিয়নের সুখী নীলগঞ্জ ও হেলেঞ্চা গ্রামে এখনো গ্রামীণ সড়ক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই ছোট ছোট টিনশেড ও আধাপাকা ঘরগুলোর বারান্দায় নারী-পুরুষ ও শিশুরা মিলে নানান রঙের শীতলপাটি বুনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

কাঁঠালিয়া গ্রামের সবিতা রানীর পরিবারের সবাই মিলে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটান শীতলপাটি তৈরি করতে। একটু সামনে এগুতেই কথা হয়, প্রিয়লাল পাটিকরের সঙ্গে।

তিনি বলেন, পরিবারের পাঁচ সদস্য মিলে একটি পাটি তৈরি করতে কয়েকদিন চলে যায়। প্রতিজনের দৈনিক মজুরি ১০০ টাকা করেও আসে না। তারপরেও কিছু করার নেই। বাপ-দাদার পেশা হিসেবে এখনো শীতল পাটি বুনে যাচ্ছি। একদিকে, এখন গরম বেড়েছে, অপরদিকে, বৈশাখ মাস চলছে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বৈশাখী মেলায় শীতলপাটির চাহিদা থাকে। তাই, পাইকাররা এসে আমাদের এলাকা থেকে পাটি কিনে নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করেন।

স্থানীয় পাটিকররা জানান, এখানকার তৈরি শীতলপাটি আন্তর্জাতিক মানের। কিন্তু প্লাস্টিক পাটির কারণে বাজারে শীতলপাটির চাহিদা কমে গেছে। সে কারণে সরকারিভাবে বিদেশে শীতলপাটি রফতানির কোনো ব্যবস্থা করা হলে পাটিকরদের জীবন-জীবিকা ভালো চলতো।

পাশাপাশি শীতলপাটি টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের ক্ষুদ্রঋণ দেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তারা। নয়ত এই পেশায় টিকে থাকা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।

এ বিষয়ে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রশাসন, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাসহ জাইকা সংস্থার মাধ্যমে উপজেলার পাটিকরদের মধ্যে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ফলে, নতুন নতুন ডিজাইনের শীতলপাটি তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি আমরা তাদের সরকারি বিভিন্ন রকম সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

;

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;