নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে না গিয়ে যেখানে গিয়েছিলেন বলে গুঞ্জন

  • জাভেদ পীরজাদা, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন বিজ্ঞানী বিল কেসিংয়ের বইয়ের প্রচ্ছদ

মার্কিন বিজ্ঞানী বিল কেসিংয়ের বইয়ের প্রচ্ছদ

নীল আর্মস্ট্রং চাঁদে যাননি। এমন কানাঘুঁষা ছিল একটি বিশেষ মহলে। এই কানাঘুঁষা উসকে দিয়েছিলেন বিল কেসিং নামের একজন আমেরিকান বিজ্ঞানী। তিনি একটি বই লেখেন, নাম, ‘We Never Went to the Moon: Americas Thirty Billion Dollar Swindle’, প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭৪ সালে। কিন্তু গতবছর ডিসেম্বরে এর ৫০তম সংস্করণ বের হয়। বইটি টাইম ম্যাগাজিনের বেস্ট সেলিং বইয়ের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।

এ বইতে বিল কেসিং বলেন, আমেরিকার কোনো মহাকাশচারী আদৌ চাঁদে নামেননি। রাশিয়ার চাঁদে নামার স্বপ্ন ধূলিস্মাৎ করতে এটা ছিল পুরোটাই আমেরিকা সরকার ও নাসার সম্মিলিত ধাপ্পাবাজি। ১৯৬৯ সালের ১৬ জুলাই নাসার অ্যাপেলো-১১ মহাকাশযানে চাঁদের পথে রওনা হয়েছিলেন আর্মস্ট্রং। কিন্তু অ্যাপোলো-১১ উপস্থিত মানুষজনের চোখের বাইরে চলে যাওয়ার পর, একটি মিলিটারি এয়ারক্রাফটে করে অতি গোপনে আর্মস্ট্রংদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এরিয়া ৫১ এলাকায়। সেখানে ছিল কৃত্রিম চাঁদের মাটি ও পরিবেশ। তাই কয়েকদিন পর ‘চাঁদের বুকে মানুষের পা’ ভিডিওর শ্যুটিং হয়। বিশ্বের মানুষকে নাসা জানায়, ২০ জুলাই চাঁদের মাটিতে পা রেখেছে নিল আর্মস্ট্রং ও বাজ অল্ড্রিন।

বিজ্ঞাপন

বিল কেসিং জানান, আমেরিকার নেভাডা স্টেটের দক্ষিণে, লাস ভেগাস থেকে ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে পাহাড়ঘেরা মরুভূমির মধ্যে ২৯ লক্ষ একর জায়গা জুড়ে আছে সবচেয়ে গোপন ও সবচেয়ে রহস্যময় এলাকা এরিয়া ৫১। এরিয়া ৫১ এমন সুরক্ষিত জায়গা যে, পেন্টাগন, হোয়াইট হাউস, নাসার সদর দপ্তরে অনুমতি নিয়ে সাধারণ মানুষ ঢুকতে পারলেও এখানে মিডিয়া ও জনসাধারণের প্রবেশাধিকার নেই।

মার্কিন বিজ্ঞানী বিল কেসিং

এরিয়া ৫১ কেমন?
এরিয়া ৫১ (ইংরেজি: Area 51) একটি বিশাল সামরিক বাহিনীর অপারেশন ঘাঁটি, যার আয়তন ২৬,০০০ বর্গকিলোমিটার। এটি পশ্চিমা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে এবং লাস ভেগাস থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম রেকেল গ্রামের কাছে অবস্থিত। এটি একটি বিরাট গোপনীয় সামরিক বিমান ঘাঁটি যা ঠিক গ্রুম হ্রদের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত। এটির ভিত্তির প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো পরীক্ষামূলক উড়োজাহাজ তৈরি, অস্ত্রশস্ত্রের সিস্টেমের পরীক্ষাকরণ এবং উন্নতিসাধন সমর্থন করা। এই পরিচয়টি এদের ওয়েবসাইটে অফিসিয়ালি থাকলেও এরিয়া ৫১ নিয়ে রহস্যের শেষ নেই।

বিজ্ঞাপন

১৯৮৯ সালের কথা। বব লাজার নামের এক বিজ্ঞানী ওখানে কাজ করতেন, যে প্রকল্পের নাম, এস-৪। তিনি অবসরগ্রহণের পর দাবি করেছিলেন, সেই জায়গাটি এতটাই গোপনীয় যে, যাদের বাসস্থান থেকে কর্মস্থলে বাসে করে নিয়ে যাওয়া হতো সেই বাসের জানালা এমনভাবে তৈরি করা ছিল যে রাস্তা কখনোই চেনা যেত না। তিনি এস-৪-এ কাজ করার সময় এমন সব ফ্লাইং সসার দেখতে পেয়েছিলেন, যেগুলো কোনোভাবেই পৃথিবীতে তৈরি হতে পারে না। সেগুলোর শক্তি সরবরাহ করা হচ্ছিল এন্টিম্যাটার রিঅ্যাক্টরের মাধ্যমে, জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল লালচে-কমলা বর্ণের একটি পদার্থ যার নাম এলিমেন্ট-১১৫। এছাড়া তিনি দেখেছেন, এখানে অনেক হাজার হাজার ফিট নিচুতে ব্যাংকার রয়েছে। তিনি এক সহকর্মীর কাছে এসব ব্যাংকারের কারণ কী জানতে চাইলে তাকে বলা হয়েছিল, ওইসব ব্যাংকার দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি করে বিভিন্ন দেশে পৌঁছানোর গোপন রাস্তা রয়েছে। আকাশাসীমায় সামরিক বা বেসামরিক কোনো ধরনের বিমান প্রবেশ করতে পারে না।

এরিয়া ৫১

কেন এত গোপনীয়তা
১৯৮৮ সালে সোভিয়েত রাশিয়া স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নেওয়া এরিয়া ৫১-এর ছবি প্রকাশ করলে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ এলাকাটির ছবি দেখার সুযোগ পায়। এই এলাকাটির উদ্দেশ্য কী, সে সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই বলে না যুক্তরাষ্ট্র সরকার। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবমুক্ত করা দলিল থেকে জানা যায়, এখানে সামরিক বিমানের পরীক্ষা চালানো হয়। তবে এখানে অন্যান্য অস্ত্র এমনকি পারমাণবিক পরীক্ষাও চালানো হয় বলে শোনা যায়। আমেরিকার পক্ষ থেকে স্পষ্ট কিছু বলা হয় না। ১৯৯৫ সালে সেসময়কার প্রেসিডেন্ট কার্যনির্বাহী ক্ষমতাবলে নির্দেশ দেন, এ জায়গা নিয়ে কোনো গবেষণা বা মাথা ঘামানো যাবে না। এর আগে হলিউডে একটি মুভি মুক্তি পায়, যার নাম ‘ইন্ডিপেন্ডেস’। এ মুভিতে দেখা যায় এলিয়েনরা এ এলাকায় বাস করে। এর পরপরই হয়েছিল ‘সেভেন ডে’ নামের একটি সিরিয়াল। কম্পিউটারে গেমসও আছে।

কিন্তু বিল ক্লিনটনের পর এখন আবার এনিয়ে কিছু করা বা বানানো বা বলা নিষেধ।