বিবর্তনে ঢাকার ঈদ



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার বর্ণিল ইতিহাসের মতো বিবর্তনের পথ ধরে এগিয়ে চলেছে এই মহানগরের ঈদ উৎসব পালনের নানা আয়োজন। সমাজ কাঠামো আর নগর বিন্যাসের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে ঢাকার ঈদ উৎসবের বৈশিষ্ট্য ও আচার-অনুষ্ঠান। ইতিহাসের একেক পর্যায়ে ঢাকার ঈদ পালনের বিবর্তন স্পষ্টভাবে দেখা যায়।  

অর্ধ-সহস্র বছর ছুঁতে যাওয়া জনপদ ঢাকা শুধু বৃহৎ বঙ্গদেশেই নয়, তাবৎ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহাসিক শহর, ঐতিহ্যের দিক দিয়েও যে শহর অগ্রগণ্য। ৪০০ বছর আগে মুঘল রাজধানীর গৌরব অর্জনেরও শতবর্ষ আগে সোনারগাঁও কেন্দ্রিক সুলতানি শাসনে বুড়িগঙ্গার তীরের জনপদ ঢাকা ছিল ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্র। তারও আগে সচল ও সজিব জনপদ রূপে ঢাকার সপ্রতিভ অস্তিত্ব এদেশের নদী ও মানুষের মতোই শত শত বছর ধরে প্রবহমান সত্তায় বিকশিত হয়েছে।

তবে, সুরম্য হর্ম্য, প্রাসাদ, দূর্গ, অট্টালিকার নগরী রূপে ঢাকার পরিকল্পিত বিকাশ মুঘলদের হাতে এবং ঢাকার সামাজিক বিন্যাস ও সাংস্কৃতিক জীবনের বিস্তারও মুঘল আমলেই সাধিত হয়। আধুনিক ঢাকার গোড়াপত্তন ধরা হয় তখনই।  

বাংলায়, বিশেষত নিম্ন ও পূর্ববঙ্গে মসনদ-ই-আলা ঈসাখাঁ প্রমুখ বারো ভূঁইয়া পদাধিকারী স্থানীয় নৃপতিদের দমন করে মুঘল আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সূচনা সম্রাট আকবরের আমলে। আকবরের রাজপুত সেনাপতি রাজা মানসিংহ প্রধানত নৌযুদ্ধ করতে করতে বৃহত্তর ঢাকা-ময়মনসিংহের সংযোগস্থল, বর্তমানে কিশোরগঞ্জের এগারসিন্ধু পর্যন্ত ছুটে এসেছিলেন এবং ঈসাখাঁকে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করে আগ্রার মুঘল দরবারে নিয়েও গিয়েছিলেন।

বাংলায় মুঘল অভিযানের এই ঐতিহাসিক ঘটনায় পূর্ব বাংলায় মুঘল শাসনের পথ উন্মুক্ত হলেও ঠিক তখনই তারা এদেশের পুরোটা দখল করে ঘাঁটি গেঁড়ে বসতে পারেননি। আকবর বিহার, রাজমহল, বাংলার পশ্চিমাংশের কর্তৃত্ব নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে বাধ্য হন। ততদিনে আকবরের মৃত্যু হয় এবং আকবর-ঈসাখাঁ মৈত্রীর ১০/১২ বছরের মধ্যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে বদলে গিয়ে মুঘলদের অনুকূলে চলে যায়। কারণ, প্রবল ও ক্রমবর্ধমান মুঘল আধিপত্য ও আক্রমণের মুখে বাংলার বারো ভূঁইয়ারা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুযোগ তৈরি করতে ব্যর্থ হয় এবং তাদের উত্তরসূরীদের মধ্যেও এমন কোন সাহসী ও যোগ্য শাসক পাওয়া যায়নি, যিনি মুঘলদের বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়াতে সক্ষম। ফলে বাংলার পশ্চিমাংশের মতো বাংলার পূর্বাঞ্চল তথা আজকে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমানাও শক্তিশালী মুঘল শাসনভুক্ত হয়।       

আকবরের পুত্র, আনারকলির প্রেমিকখ্যাত শাহজাদা সেলিম সম্রাট জাহাঙ্গীর নাম গ্রহণ করে মুঘল অধিপতি রূপে মসনদে অধিষ্ঠিত হন।  তার  প্রতিনিধি সুবেদার ইসলাম খাঁ ঢাকায় রাজধানী স্থাপন করেছিলেন ১৬১০ সালে। তখন অবশ্য নতুন রাজধানীর নাম দেওয়া হয় সম্রাটের নামে জাহাঙ্গীরনগর।

রোম যেমন একদিনে গড়েনি, তেমনি ঢাকাও হঠাৎ করে তৈরি হয়নি। ইতিহাসবিদদের ভাষ্য মতে, গোড়ার দিকে ঢাকা ছিল নিতান্ত অস্বাস্থ্যকর, অসুন্দর নোংরা এক শহর; নিরানন্দ তো বটেই। মুঘলা তাকে নির্মাণ করেন ধীরে ধীরে, যাতে বিভিন্ন সুরম্য স্থাপনার পাশাপাশি ছিল উদ্যান।

সে সময় প্রতিবছর বিশেষ বিশেষ সময়ে হঠাৎ দু-একদিনের জন্য বদলে যেত ঢাকা শহরের চেহারা। মেলা, রঙিন নিশান, লোকজনের ব্যস্ত চলাফেরায় ঢাকা পড়ে যেত শহরের নোংরা চেহারাটা। নিরানন্দ শহর দু-একদিনের জন্য হলেও ঝলমল করে উঠত, জমকালো সব মিছিল দেখতে সাড়া পড়ে যেত। এর মূলে ছিল কয়েকটি উৎসব– ঈদ, মুহররম ও জন্মাষ্টমী।

মুঘল নগর নির্মাণের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য স্পষ্ট। আগ্রা, দিল্লি, ফতেহপুর ইত্যাদি প্রতিটি মুঘল নগরে সে ছাপ আছে, যেমন আছে ঢাকায়। মুঘলরা দূর্গ গড়ে শহরের বওস্তার ঘটাতেন। তাতে সেনানিবাসের পাশাপাশি বসবাসের সব ধরনের আয়োজন থাকতো। স্বাভাবিক জীবন-যাপনের পাশাপশি পালিত হতো নানা উৎসব।

মুঘলরা এসেছিলেন মধ্য এশিয়া থেকে আর তাদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ছিল পারস্যের সাংস্কৃতিক সুষমা, যাতে বর্ণিল উৎসব উদযাপনের বাহার ভরপুর ছিল। মুঘল দরবারে ছিলেন অনেক ইরানি ও শিয়া। ফলের নববর্ষ নওরোজের মতো অনুষ্ঠানের আবির্ভাব ঘটে। প্রচলন হয় মহররম ও তাজিয়া মিছিলের। ঈদও সে-সময় সাড়ম্বরে পালিত হতে থাকে।

ঈদের দিন নানা আয়োজনের মধ্যে মেলামেশা, ঘুড়ি উড়ানো, পায়রার খেলা, মোরগ লড়াই, মেলা ও মিনা বাজারের কথা জানা যায় মুঘল ঢাকার ইতিহাসে। এ-সময় পুরনো ঢাকার মুঘলরা শহরের উত্তর-পশ্চিম দিকের  ধানমণ্ডিতে প্রথম ঈদগাহ নির্মাণ করেন।

আদিতে ঈদগাহটি মাটি থেকে চার ফুট উঁচু একটি সমতলভূমি রূপে ছিল, যার দৈর্ঘ্য ২৪৫ ফুট, প্রস্থ ১৩৭ ফুট। বিস্তৃত তিনদিকে। পশ্চিমে ১৫ ফুট উঁচু প্রাচীর, যেখানে রয়েছে মেহরাব বা মিম্বর। পাশ দিয়ে তখন বয়ে যেত পাণ্ডু নদীর একটি শাখা। এই শাখা নদী জাফরাবাদের সাতগম্বুজ মসজিদের কাছে মিলিত হত বুড়িগঙ্গার সঙ্গে। জানা যায়, মুঘল রাজপুত্র শাহ সুজা যখন বাংলার সুবাদার তখন তাঁর আমাত্য মীর আবুল কাসেম ১৬৪০ সালে নির্মাণ করেছিলেন ঈদগাহটি। সুবাদার, নাজিম ও অন্যান্য মুঘল কর্মকর্তারা নামাজ পড়তেন এখানে। ইংরেজ আমলে জরাজীর্ণ ও জঙ্গলাকীর্ণ অবস্থায় ছিল ঈদগাহটি। পরে উদ্ধার করা হয়।

পাকিস্তান আমলে ঈদ উৎসব পুরনো ঢাকার মুঘল চৌহদ্দি ও মহল্লাগুলো ছাড়িয়ে বিস্তৃত হয়। কারণ ততদিনে প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে ঢাকা ক্রমবর্ধিত এবং পুরনো ঢাকার সঙ্গে নতুন শহরের নবাগত মানুষদের সংস্কৃতিও মিশতে থাকে। পাকিস্তানের এ অংশে আগত উর্দু ভাষী মানুষের গজল, কাওয়ালি যেমন ঢাকার ঈদের প্রাধান্য পায়, তেমনি বাংলাদেশের নানাস্থান থেকে বসবাসের জন্য আগত বাঙালিদের অংশগ্রহণও বৃদ্ধি পায়। এ সময় আজিমপুর, মোহাম্মদপুর, মীরপুর, ধানমণ্ডিতে মেলা ও মিনাবাজারের বিস্তৃতি ঘটে। সঙ্গে যুক্ত হয় সার্কাস, পুতুন নাচের মতো বিনোদন।

স্বাধীনতার পর নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা প্রতি দশকে বাড়তে বাড়তে কসমোপলিটান চেহারা ধারণ করে। ঢাকার ভূগোল আর জনসংস্কৃতিতের সংঘটিত হয় বিপুল রূপান্তর। এক মিশ্র সংস্কৃতির ঢাকায় মুঘল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ঈদের আমেজ পরিণত হয় প্রাচীন স্মৃতিতে। বদলে শ্রেণি, পেশার ভিত্তিতে ঢাকার বিভিন্ন অঞ্চলে ঈদ ভিন্ন ভিন্ন অবয়ব লাভ করে। উত্তরা, গুলশান, বনানী, ধানমণ্ডির ঈদ কালচারের সঙ্গে শাহজাহানপুর, গোড়ান, বাসাবো, রামপুরা, বাড্ডার বিশাল প্রভেদ লক্ষ্য করা যায়।

ঈদ উৎসবের আয়োজমগুলো আর্থিক সঙ্গতি ও সামাজিক মর্যাদার নিরিখে আলাদা রূপ ও চরিত্রে উপস্থাপিত হয় ঢাকাবাসীর বিভিন্ন এলাকায়। নিম্ন ও মধ্যবিত্তের সাধারণ মানের মার্কেটিং, সিনেমা দেখা, পার্ক-চিড়িয়াখানা-বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়ানোর বিপরীতে উচ্চবিত্তের লং ড্রাইভ, সুপার মলে ব্র্যান্ডের পোষাক কেনা, সিনেপ্লেক্সে যাওয়া বা পার্লারে রূপচর্চার চিত্রও দেখা যায়।

তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের কারণে অনেকের কাছে ঈদ এখন নামাজ আদায় শেষে ছুটির দিনগুলোতে ইন্টারনেট নিয়ে ব্যস্ত থাকার মধ্যে আবর্তিত। বিকেলে পাড়ায় আড্ডা ও কুশল বিনিময় আর আত্মীয়-বন্ধুদের বাড়িতে দাওয়াত খাওয়াই প্রধান কাজ। বিশেষত মধ্যবয়সী ও পেশাজীবীদের কাছে ঈদের সময়টি উৎসবের চেয়ে জম্পেশ ঘুমে ছুটি কাটানোর আনন্দেই কাটে।

ঢাকার সঙ্গে কলকাতার তুলনা করলে দেখা যায়, কলকাতায় পূজা বা কোন বড় ছুটিতে মানুষ দেশ-বিদেশের কোথাও না কোথাও বেড়াতে যাবেই। ছুটিকে মানুষ ভ্রমণের আনন্দে উপভোগ করেন। বাংলাদেশে, প্রধানত ঢাকায় ঈদের ছুটিতে পরিকল্পিত ভ্রমণ বা বেড়ানোর আগ্রহ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকেই সামর্থ্য অনুযায়ী কক্সবাজার, কুয়াকাটা বা অন্যান্য পর্যটন স্পট বা বিনোদন কেন্দ্রে ছুটে যান।

তবে ঈদ উৎসবের সময়কালে একটি বিশেষ দিক থেকে ঢাকা বিশ্বসেরা। পৃথিবীর আর কোন শহরে এমন চিত্র দেখা যায় না, যা দেখা যায় ঢাকায় ঈদের সময়। ঈদে ঢাকা শহরের অর্ধেকের বেশি মানুষ নিজ নিজ মূল বা আদি বাড়ি চলে যায়। শহর খালি করে গ্রাম বা মফস্বল শহরের 'বাড়ি যাওয়া'র জন্য ট্রেন, বাস, লঞ্চে প্রাণান্তকর ভিড়কে মানুষ পরোয়া করেনা। করোনাভাইরাসের সামাজিক দূরত্বের সময়ও মানুষ অবলীলায় বাড়ির পথে দলে দলে ছুটে গেছে।

একটি আস্ত শহরকে ঈদ-উৎসবের আমেজে প্রায়-খালি করে চলে যাওয়ার ঘটনা সমগ্র বিশ্বেই বিরল। ঈদের সময় পৃথিবীর জনবহুল ঢাকা শহরের জনবিরল ছবিও তখন সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। গাড়িতে, এমনকি রিকশা করে নিমেষে পুরো ঢাকার নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ানো এমন বিরল সুযোগ পাওয়া যায় ঈদে।

একদা ঢাকার সংক্ষিপ্ত পরিসরে মুঘল পৃষ্ঠপোষকতায় যে নগর ও নাগরিক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল, ক্রমে ক্রমে তা নানাভাবে বিকশিত হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বৃহত্তর ঢাকার পরিসরে। ঈদ উৎসবও পুরনো ঢাকার ক্ষুদ্র মহল্লার পরিধি পেরিয়ে সার্বজনীন-বহুমাত্রিকতায় উদ্ভাসিত। দমবন্ধ ঢাকা মহানগরে ঈদ মানে অনাবিল আনন্দ, স্বস্তি ও খোলামেলা ঘুরে বেড়ানোর অন্তহীন স্বাধীনতা। ঈদ উৎসবের দিনগুলো ঢাকাবাসীর কাছে শব্দদূষণ ও যানজটে অতিষ্ঠ জীবনে মরূদ্যানে একপশলা বৃষ্টির মতো সুখের।

   

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

মস্তিস্কেও ঢুকে যাচ্ছে প্লাস্টিক

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান পৃথিবী প্লাস্টিকময়। ছোট বড় থকে প্রায় সবরকম কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহারের আধিক্য। তবে এই প্লাস্টিক অজৈব পদার্থে তৈরি হওয়ার কারণে সহজে পচনশীল নয়। বিভিন্ন স্থানে জমে থাকার কারণে এসব পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।  শুধু পরিবেশ নয়, হার্ট, মগজ, সব জায়গাতেই নাকি ঢুকে রয়েছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, হার্টের নানা রোগ, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার পিছনেও এই প্লাস্টিকগুলির অবদান রয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

সময়ের বিবর্তনে প্লাস্টিক বিভিন্ন আঘাতের কারণে ক্ষয় হয়ে ক্ষুদ্র আকার ধারণ করে। ৫ মিলিমিটারের চেয়ে ছোট আকারের প্লাস্টিককে মাইক্রোপ্লাস্টিক বলে। দিন দিন পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে সমুদ্রে বিপুল পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ সৃষ্টি করেছে। পরিবেশের বিভিন্ন প্রাণী তাদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে দিন দিন এই মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিপত্য বেড়েই চলেছে। এমনকি মানব শরীরেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে। এক গবেষণায় মস্তিস্কে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে নিউ ম্যাক্সিকোর এনভয়রনমেন্টাল হেলথ পারসপেক্টিভ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয় খাদ্য, পানি এমনকি বায়ুর মাধ্যমেও শরীরে প্রবেশ করে। এসব ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা আমাদের স্নায়ুবিক নানান অনুভূতির উপরেও মাইক্রো প্লাস্টিক প্রভাব ফেলে।

রক্ত প্রবাহের কারণে তা শরীরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ায়। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে তা জমা থেকে স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা প্রদান করে। বৃক্ক, লিভার, হৃদপিণ্ডের রক্তনালি ছাড়াও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মস্তিষ্ক। মাইক্রোপ্লাস্টিক এসব অঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। 

ডাক্তার ইয়াতিন সাগভেকার বলেন দৈনন্দিন নানা কাজের মধ্যেই শরীরে মাইক্রোপ্লাস্টিক প্রবেশ করে। তবে পারে তা ত্বক, প্রশ্বাসের বায়ু বা ইনজেশনের মাধ্যমে।     

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র ২০ মাইক্রোমিটারের চেয়ে ছোট মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরে প্রবেশ করতে পারার কথা। এছাড়া ১০ মাইক্রোমিটার আকারের গুলো মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম কোষের ঝিল্লির অতিক্রম করতে সক্ষম হওয়া উচিত।

প্লাস্টিক পরিবেশ্ম প্রানি এমনকি মানুষের জন্যও অনেক ক্ষতিকর। তাই সকলের উচিত যতটা সম্ভব প্লাস্টিক বর্জন করা। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি জিনিসের ব্যবহার বাড়ানো।

;

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;