ফাইজারের টিকার সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করেছে এফডিএ
যুক্তরাষ্ট্রে করোনা টিকার অনুমোদন পেতে এক ধাপ এগিয়ে গেল দেশটির ওষুধ প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও তাদের জার্মান সহযোগী বায়োএনটেক। যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) সংস্থা দু’টির উদ্ভাবিত এই টিকার সুরক্ষা ও কার্যকারিতার বিষয়ে নিশ্চিত করেছে।
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এফডিএ জানিয়েছে, করোনা প্রতিরোধে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা অত্যন্ত কার্যকরী। এটি প্রয়োগে সুরক্ষাজনিত কোন সমস্যা নেই। সংস্থাটি আরো জানায়, টিকাটির মান ও উপাত্ত সর্বাধিক বিস্তারিত এবং স্বাধীনভাবে পর্যালোচনা করেই এর সুরক্ষা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে। টিকাটির ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া এখন সময়ের ব্যাপার।
আগামী বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) টিকার অনুমোদনের বিষয়ে এফডিএ’র উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক রয়েছে। এর আগেই এফডিএ ফাইজারের টিকা সম্পর্কে তাদের মূল্যায়ন জানিয়ে দিলো।
ফিলাডেলফিয়ার চিলড্রেনস হসপিটালের ডা. পল অফিট বলেন, ‘আমরা সবচে ভালো সম্ভাব্য ডেটা খুঁজছি’। এফডিএ’র এক উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ‘মানুষ চিন্তিত, ছয় মাস পরে আসলে কী হবে?’
এফডিএ ফাইজারের টিকার কতগুলো বিষয় পর্যালোচনা করেছে। বিষয়গুলি হলো- ডোজগুলি উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন, ৫ বছরের বেশি বয়সী শিশু এবং যাদের ওজন সমস্যা ও হৃদরোগ রয়েছে এদের কিভাবে সুরক্ষ দেবে।
কৃষ্ণাঙ্গ, হিস্পানিক এবং অন্যান্য সম্প্রদায়- যারা কোভিড মহামারিতে বেশি আক্রান্ত-এই জনগোষ্ঠীর ওপর টিকা কতটা কার্যকর তারও পর্যালোচনা করা হয়েছে। এছাড়া গর্ভবতী মহিলাদের টিকা প্রদানের বিষয়েও এফডিএ পর্যবেক্ষণ করেছে। যদিও ফাইজার এখনও এ বিষয়ে তাদের পরীক্ষা চালায়নি।
এদিন বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যে এই টিকার প্রয়োগ শুরু হয়েছে। উত্তর আয়ারল্যান্ডের ৯০ বছর বয়সী এক নারী বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে টিকাটি গ্রহণ করেন।
এনিস্কিলেন শহরের বাসিন্দা মার্গারেট কেনেন নামে এই নারী জানান, তিনি কভেন্ট্রির ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে টিকা গ্রহণ করেছেন। তার কাছে বিষয়টি অনেক ভালো লেগেছে। আগামী সপ্তাহে মার্গারেট কেনেনের ৯১তম জন্মদিন। তার আগে এই টিকা নেওয়াকে ‘জন্মদিনের প্রথম সেরা উপহার’ বলে মন্তব্য করেছেন এই নারী।
এর আগে গত সপ্তাহে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ফাইজার-বায়োএনটেকের যৌথ উদ্যোগে তৈরি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দেয় যুক্তরাজ্য।
আন্তর্জাতিক জরিপ পর্যালোচনাকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওমিটারের ওয়েবসাইটের মতে, বিশ্বের ২২০টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে মহামারি করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত ৬ কোটি ৮০ লাখের মতো মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১৫ লাখের বেশি মানুষ। যুক্তরাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ লাখ ৩৭ হাজার ৯৬০। এর মধ্যে মারা গেছে ৬১ হাজার ৪৩৪ জন।