উদ্ধার হয়নি সুয়েজে আটকা জাহাজটি, জটে তিন শতাধিক নৌযান
মিসরের সুয়েজ খালে কনটেইনারবাহী জাহাজ আটকা পড়ার ছয়দিন অতিবাহিত হলেও এখনো উদ্ধার হয়নি জাহাজটি। এতে করে খালের উভয় পাশে আটকা পড়েছে তিন শতাধিক। বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই নৌবাণিজ্যপথে কবে নাগাদ নৌ চলাচল শুরু হবে, তা বলতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
কাতারভিত্তিক আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার সকালে সুয়েজ কাল অতিক্রমের সময় প্রবল বাতাস আর ধূলিঝড়ের কবলে পড়ে ৪০০ মিটার দীর্ঘ কনটেইনারবাহী জাহাজটি। তাইওয়ানের এভারগ্রিন মেরিন করপোরেশন লিজ নিয়ে এটি পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, হঠাৎ প্রবল বাতাস আর ধূলিঝড়ে জাহাজটির গতিপথ বদলে যায়। এটির নিচের অংশ আড়াআড়িভাবে তীরের মাটিতে আটকে যায়।
বুধবার থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করে সুয়েজ খাল কর্তৃপক্ষ (এসসিএ)। উদ্ধার কাজে শুরুতে যুক্ত হয় মিসরের আটটি টাগবোট। কোনোভাবেই আড়াআড়ি হয়ে আটকে থাকা বিশাল জাহাজটির মুখ ফিরিয়ে আবারও জলে ভাসানো সম্ভব হয়নি। গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসসিএর প্রধান ওসামা রাবি জানান, খালে পানির প্রবাহে জোর কম থাকায় বিশাল জাহাজটি জলে ভাসানো যাচ্ছে না।
শনিবার (২৭ মার্চ) উদ্ধার কাজে যুক্ত হয়েছে ১৪টি টাগবোট। এসসিএ বলছে, জাহাজটি জলে ভাসাতে ড্রেজিং করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। মাটি খুঁড়ে জাহাজটির প্রপেলার মুক্ত করা হবে। এতে সময় লাগবে। কবে নাগাদ জাহাজটি পুরোপুরি উদ্ধার করা যাবে, সেটা অনিশ্চিত। ওসামা রাবি বলেন, প্রবল বাতাস আর প্রতিকূল আবহাওয়া এই ঘটনার পেছনে প্রধান কারণ না–ও হতে পারে। এর পেছনে কারিগরি কিংবা মানবসৃষ্ট ত্রুটি থাকতে পারে।
মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এসসিএর চেয়ারম্যান ওসামা রাবিকে জাহাজের কিছু পণ্য খালাস করার আদেশ দিয়েছেন।
এদিকে এসসিএ সূত্র জানিয়েছে, জাহাজের বোঝা হালকা করার অপারেশন সোমবারের আগে শুরু যাবে না।
রোববার (২৮ মার্চ) অবধি কয়েক শতাধিক কনটেইনার জাহাজ, বাল্ক ক্যারিয়ার এবং তরলযুক্ত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) বা তরল পদার্থ পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) জাহাজ সহ ৩০০টিরও বেশি নৌকা খাল পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।
এসসিএর চেয়ারম্যান ওসামা রাবি মিশরের রাষ্ট্রীয় টিভিকে বলেছেন, গতকাল এবং তার আগের দিন থেকে এখন কিছুটা ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে জাহাজটি।
এসসিএর দুটি সূত্র সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, জাহাজের ধনুকের কাছে এক বিশাল পাথর পাওয়া গেছে, যার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।