খাশোগির অন্তর্ধানে সুবিধা অসুবিধা



কাওসার আহমেদ
নিখোঁজ সাংবাদিক জামাল খাশোগি

নিখোঁজ সাংবাদিক জামাল খাশোগি

  • Font increase
  • Font Decrease

তুরস্ক, ইজমির থেকে: তুরস্কে নিখোঁজ খাশোগি নিয়ে বিশ্ব রাজনীতির মোড়ল দেশগুলোর মধ্যে তাপ-উত্তাপের কূটনীতি চলছে। বিশ্লেষকদের ধারণা, আপাতত সৌদ আরব এই ইস্যুতে বেশ বিপাকে পড়েছে। তুরস্ক তাদের দক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিয়ে ঘটনার ‍মুখোশ উন্মোচন করছে। অন্যদিকে সৌদি তার মিত্রদের কাছে এ নিয়ে সম্পর্কের টানাপোড়েনে পড়তে যাচ্ছে।

নিখোঁজ জামাল খাশোগি একজন পরিচিত সাংবাদিক। যিনি এক সময় বার্তা সংস্থা আল আরব নিউজ চ্যানেলের সম্পাদকীয় বিভাগের প্রধান ছিলেন। তারপর যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত থেকে সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন। সৌদি প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের একজন কঠোর সমালোচনা থাকতো তার লেখায়। বিশেষ করে সৌদি রাজতন্ত্রের মানবাধিকার লঙ্ঘন, ইয়েমেনে যুদ্ধ, কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ নিয়ে নিয়মিত সমালোচনামূলক কলাম লিখতেন ওয়াশিংটন পোস্টে।

২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে তাঁর সাবেক স্ত্রীর তালাক নামা ও নতুন তুর্কি বান্ধবীকে বিয়ের অনুমতিপত্র আনতে গিয়েছিলেন। এরপর সেখান থেকেই তিনি নিখোঁজ হন। তাঁর হবু স্ত্রী হাতিস চেঙ্গিস বলেন খাশোগি খুবই উদ্বিগ্ন ছিলেন এই জন্য যে তাঁকে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করতে হচ্ছে। তিনি খাশোগি বের না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলেন। এমনকি পরদিন সকালে কনস্যুলেট খোলার পূর্বে তিনি সেখানে উপস্থিত হন।  

ঘটনার কয়েকদিন পর তুরস্কের প্রভাবশালী জাতীয় ইংরেজি দৈনিক ‘ডেইলি সাবাহ্’ ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাশোগির প্রবেশের সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায় খাসোগী সেখানে প্রবেশ করছেন। এবং এর কয়েক ঘণ্টা আগে কয়েকটি ভিআইপি কালো গাড়ি কনস্যুলেটের সামনে আসে ও কিছু লোক ভেতরে প্রবেশ করে। কিন্তু তিনি আর বের হয়ে আসেননি। এরপরই বিশ্ব মিডিয়ায় এ বিষয়টি নিয়ে তুমুল হইচই পড়ে যায়। 

তুর্কি কর্তৃপক্ষের দাবি, জামাল খাশোগিকে কনস্যুলেটে এর ভেতর হত্যা করা হয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে প্রথম দিকে সৌদি কর্তৃপক্ষ নিরব ছিল। কিন্তু এখন অভিযোগ অস্বীকার করে তুরস্কের দাবি প্রত্যাখান করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তুরস্কের কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, খাসেগীর হাতে থাকা ‘অ্যাপল ওয়াচ’ এর মাধ্যমে প্রাপ্ত ফুটেজ-ই প্রমাণ করে খাশোগিকে ভেতরে হত্যা করা হয়েছে। প্রকাশিত একটি অডিও রেকর্ডে স্পষ্টতই আরবি ভাষায় খাশোগির কথাবার্তা ও আকুতি শোনা গেছে।

তুর্কি কর্তৃপক্ষ এটাও দাবি করেছে যে, খাশোগিকে হত্যার জন্য সৌদির ১৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ স্কোয়াড ইস্তাম্বুল এসেছিল। তারা খুব তাড়াতাড়ি তুরস্ক ত্যাগ করে বিভিন্ন দেশে চলে যায়। তারাই এ হত্যার কাজটি করে থাকতে পারে।

এদিকে গত কয়েক দশক ধরে বিশেষ করে কাতার সংকটের পর গত তিন বছরে তুরস্ক এবং সৌদি আরব, তাদের অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত স্বার্থের জন্য দেশ দুটোর মধ্যকার সম্পর্ক  একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, সৌদি নাগরিক খাশোগি হত্যার পর যদি তুরস্ক তাদের দক্ষ জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার সক্ষমতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হতো তাহলে সৌদি আরবই এ ঘটনায় তুরস্কের উপর দায় চাপিয়ে দিতো। কিন্তু বিধি বাম, হিতে বিপরীত। সৌদি আরবই মনে হয় তাঁদের জালে আটকা পড়ল। সু্যোগ পেল আন্তর্জাতিক রাজনীতির ঝানু খেলোয়ার ‘এরদোয়ান’। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এর ক্ষেত্রে চিরশত্রুতা বলতে কিছু নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈরী সম্পর্ক উন্নয়নের সু্যোগ যেন হাতছাড়া করছে না তুরস্ক। এক্ষেত্রে এক ডিলে দুই পাখি। যাকে বলে আন্ডার মাইন ডিপ্লমেসি। আন্তর্জাতিক মহলে সৌদিকে কোনটাসা করা আর নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন করা। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আঁটকে থাকা সামরিক চুক্তির অগ্রায়ন করারও সুযোগ তুরস্কের। তাই দাবার গুটি হিসাবে ব্যবহার করা ব্যর্থ ক্যু এর সাথে জড়িত আটক খ্রিস্টান ধর্ম জাজক পস্টার। যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের নাগরিকের মুক্তি চাইল। মুক্তি পেল পস্টার আর খুব শিগগিরই ডলারের বিপরীতে তুর্কি লিরার মান বাড়তে শুরু করল। আঙ্কারা-ওয়াশিংটন যোগাযোগ বাড়ল।

প্রথম দিকে সৌদি আরবের মত ঘনিষ্ঠ মিত্রদের নিয়ে কথা বলতে নারাজ ছিলেন মার্কিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু বিশ্লেষকদের ধারণা তুরস্কের সাথে বোঝাবুঝির পর থেকেই সৌদি ওপর ক্ষেপেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প ইতোমধ্যে বলে দিয়েছেন, এই ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকলে সৌদিকে শাস্তি দেয়া হবে। অর্থনৈতিক অবরোধ আভাসও দিয়ে ফেলেছেন ট্রাম্প। এমনকি মঙ্গলবার এ ব্যাপারে আরো বিস্তারিত তদন্ত ও তথ্যাদি চেয়ে সৌদির বাদশার সঙ্গে আলাপও করেছেন।

এদিকে সৌদি আরবও নমনীয় হয়েছে। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ সাংবাদিক জামাল খাশোগির নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে রোববার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেজেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন (সূত্রেঃ রয়টার্স)। টেলিফোনালাপে খাশোগীর নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য দু’দেশের যৌথ ওয়ার্কিং কমিটি গঠনে সম্মত হওয়ায় তুরস্ককে ধন্যবাদ জানান সৌদি রাজা সালমান। বাদশাহ তুরস্কেকে ভ্রাতৃপ্রতীম দেশ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আঙ্কারার সঙ্গে সকল ক্ষেত্রে সম্পর্ক ও সহযোগিতা শক্তিশালী করতে চায় রিয়াদ। এ সময় তুর্কি প্রেসিডেন্ট দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

জামাল খাশোগি নিখোঁজের ঘটনায় যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ব্রিটিশ ধনাঢ্য ব্যবসায়ী রিচার্ড ব্র্যানসন ইতিমধ্যে সৌদি থেকে তার বিনিয়োগকৃত দু’টি পর্যটন প্রকল্প তুলে নেয়ার হুমকি দিয়েছেন। জামালের সন্ধান চেয়ে ওয়াশিংটনসহ বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ হচ্ছে।

এমন অবস্থার মধ্যে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সৌদিকে বদলে দেয়া কার্যক্রমের জন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন। যেখানে উপস্থিত থাকার কথা ছিল ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের প্রধান প্রধান দেশের কোম্পানিগুলোর। তবে জামাল খাশোগি ইস্যুতে ইতোমধ্যে সৌদির এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন বর্জনের ডাক দিয়েছে আন্তর্জাতিক বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম ও কোম্পানি। বিবিসি জানিয়েছে, সেই তালিকায় যোগ হতে পারে ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের নাম। এরই মধ্যে জামাল খাশোগি ইস্যুতে প্রকৃত সত্য তুল ধরার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, আইএমএফসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংগঠন।

আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে তুরস্ক আন্ডার মাইন ডিপ্লমেসি ভালই খেলছে। আন্তর্জাতিক রাজনৈতির খেলার মাঠে কিছুটা হলেও সৌদি আরবকে বেকায়দায় ফেলেছে। নিজের দৃড় অবস্থান, সহযোগিতার মানসিকতা আর দক্ষ নিরাপত্তা, কৌশলী কূটনীতির সদ্ব্যবহার দেখালো তুরস্ক।  

   

তাবরিজে রাইসির শেষ বিদায়ে মানুষের ঢল



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সদ্য প্রয়াত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেন আমির-আব্দোল্লাহিয়ান ও অন্যান্য সহযাত্রীদের দাফন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তাবরিজে লাখো মানুষের ঢল নেমেছে।

মঙ্গলবার (২১ মে) এ তথ্য দিয়ে ইরানের সংবাদমাধ্যম মেহের জানিয়েছে, সকালে ইরানের তাবরিজ শহরে নিহতদের জানাজা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রাইসি ও তার সাত সহযাত্রীর দাফনে যোগ দিতে শহরটির একটি কেন্দ্রীয় স্কয়ার থেকে হেঁটে রওনা হন লাখো ইরানি। এ সময় তাদের হাতে ছিল ইরানের পতাকা ও প্রয়াত প্রেসিডেন্টের ছবি।

এরপর রাইসির দেহ নিয়ে যাওয়া হবে তেহরানে। সেখানে তার দ্বিতীয় জানাজা শেষে বুধবার মাশাহাদে নিয়ে যাওয়া হবে। জন্মশহর মাশাহাদেই রাইসির দাফন হতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির বার্তাসংস্থা ইরনা।

প্রসঙ্গত, রোববার (১৯ মে) আজারবাইজানের সীমান্তের কাছে দুটি বাঁধ উদ্বোধন করেন প্রেসিডেন্ট রাইসি। এরপর হেলিকপ্টারে চড়ে ইরানের উত্তর-পশ্চিমের তাবরিজ শহরের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু তাবরিজ থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হেলিকপ্টারটি।

পরদিন সোমবার রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষের সন্ধান মেলে। দুর্ঘটনা কবলিত হেলিকপ্টারটি বেল ২১২ মডেলের বলে জানানো হয়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে। ১৯৬০ সালে একটি মার্কিন কোম্পানি দুই ব্লেডের এই মডেলটি তৈরি করেছিল কানাডিয়ান সেনাবাহিনীর জন্য।

রাইসি ছাড়াও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দোল্লাহিয়ান, পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের গভর্নর মালেক রহমাতি, পূর্ব আজারবাইজানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলি আলে-হাশেম ও প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান মেহেদি মুসাভি ছিলেন হেলিকপ্টারটিতে। এ ছাড়া হেলিকপ্টারের পাইলট, কো-পাইলট ও ক্রুও মারা গেছেন।

একাধারে রাজনীতিবিদ ও বিচারক ইব্রাহিম রাইসি ছিলেন বিশ্ব রাজনীতিতে অন্যতম প্রভাবশালী নেতাদের একজন। ইব্রাহিম রাইসি ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবেও পরিচিত। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে দেশটির প্রধান বিচারপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার কারণেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ডের সংখ্যা কমেছে।

তিন বছর আগে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে মনে করা হয়েছিল একদিন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির উত্তরসূরি হবেন ইব্রাহিম রাইসি।

ইব্রাহিম রাইসির জন্ম ১৯৬০ সালের ১৪ ডিসেম্বর উত্তর-পূর্ব ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদে। মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি তেহরানের পার্শ্ববর্তী শহর কারাজের প্রসিকিউটর-জেনারেল নিযুক্ত হন। ১৯৮৯ থাকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তেহরানের প্রসিকিউটর-জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন রাইসি। ২০০৪ সাল থেকে তিনি এক দশক জুডিশিয়াল অথোরিটির উপপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তাকে বিচার বিভাগের প্রধান নিযুক্ত করেন দেশটির সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।

প্রেসিডেন্ট রাইসি পরবর্তীতে ৮৮ সদস্যের বিশেষজ্ঞ সভার উপচেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা নির্বাচনসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে এ সভা। ২০২১ সালে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ইরানের অষ্টম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি।

;

ইসরায়েলের হামলায় ৫ হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লেবাননের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর নাকোরায় চারটি ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরান-সমর্থিত লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর ৫ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও পাঁচ হিজবুল্লাহ সদস্য।

দক্ষিণ লেবাননের বেশ কয়েকটি গ্রাম ও শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হতাহতের এই ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার (২১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ লেবাননের বেশ কয়েকটি গ্রাম ও শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচ হিজবুল্লাহ সদস্য নিহত এবং আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে লেবাননের সামরিক সূত্রগুলো গণমাধ্যমকে জানিয়েছে। হিজবুল্লাহ বলেছে, তাদের যোদ্ধারাও বেশ কয়েকটি ইসরায়েলি স্থাপনায় আক্রমণ করে জবাব দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, লেবাননে সাত মাসে আন্তঃসীমান্ত সহিংসতায় ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েল বলছে, লেবানন থেকে চালানো হামলায় সীমান্তে ১৪ সেনা ও ১০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। পাল্টাপাল্টি এই হামলায় উভয় পক্ষের কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

মূলত গাজায় যুদ্ধের জেরে লেবাননের দক্ষিণ সীমান্ত জুড়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাথে গুলি বিনিময় করছে হিজবুল্লাহ। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, তারা তার মিত্র হামাসকে সমর্থন করতে এবং লেবাননে আক্রমণ চালানো থেকে ইসরায়েলকে নিবৃত্ত করতে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ করছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েলের সংঘাত শুরুর পর ৯ অক্টোবর থেকে হিজবুল্লাহ এবং ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী নিয়মিতভাবেই সীমান্তে গুলি বিনিময় করছে।

;

রাইসির উদ্ধারকার্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য চেয়েছিল ইরান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার পর যখন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না, তখন চিরশত্রু যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছিল ইরান।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ‘কোনও কারণে’ ইরানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সেই সহায়তা করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

মঙ্গলবার (২১ মে) বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাথিউ মিলার সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পর ইরান সরকার আমাদের কাছে সাহায্য চেয়েছিল। আমরা বলেছিলাম- আমরা সহায়তা করতে ইচ্ছুক। এটি আসলে এমন কিছু যা আমরা এই পরিস্থিতিতে যেকোনো সরকারের ক্ষেত্রেই করব। তবে শেষ পর্যন্ত মূলত লজিস্টিক্যাল কিছু কারণে, আমরা ইরানকে সেই সহায়তা প্রদান করতে পারিনি।’

তবে এই বিষয়ে আরও বিস্তারিতভাবে তথ্য প্রকাশ করেননি তিনি। দুই দেশের মধ্যে কীভাবে যোগাযোগ হয়েছিল তার কোনো বর্ণনাও করেননি ম্যাথিউ মিলার। কিন্তু তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, দুর্ঘটনার মুখে পড়ার পর অবিলম্বে রাইসির হেলিকপ্টার খুঁজে পেতে সাহায্য চেয়েছিল ইরান।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দীর্ঘ তল্লাশি অভিযান শেষে পাহাড়ি ও তুষারাবৃত এলাকা থেকে রাইসিসহ সবার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার মুখে পড়ার পর প্রধান শত্রু ইরান তাদের কাছে সহায়তা চেয়েছিল বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ‘ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও’ সেই সহায়তা করতে পারেনি দেশটি।

১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে ওয়াশিংটনের সাথে তেহরানের কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে খোলামেলা সংঘর্ষের পর স্থিতিশীলতা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরান ওমানে বেশ গোপনেই তাদের সর্বশেষ আলোচনা সম্পন্ন করেছে।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে ‘আনুষ্ঠানিক শোক’ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইরান নতুন প্রেসিডেন্ট বেছে নেওয়ার সাথে সাথে আমরা ইরানের জনগণ এবং মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার জন্য তাদের সংগ্রামের প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্নিশ্চিত করছি।’

অবশ্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এই শোক ও সমবেদনা প্রকাশকে রাইসির প্রতি সমর্থন হিসেবে নয় বরং বৈশিষ্ট্যসূচক মানদণ্ড হিসেবে বর্ণনা করেছে। ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাইসি এমন একজন লোক ছিলেন যার হাতে প্রচুর রক্তের দাগ ​​ছিল’।

;

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাইসির স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাব্দুল্লাহিয়ানের মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করেছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।

সোমবার (২০ মে) জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এ পরিষদের অধিবেশনে রাইসি ও তার সঙ্গীদের স্মরণে এ নীরবতা পালন করা হয়।

বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়,  এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা ইরনা জানায়, জাতিসংঘে নিযুক্ত মোজাম্বিকের রাষ্ট্রদূত পেদ্রো কমিসারিও আফনসো মে মাসের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। সোমবার সকালে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

অধিবেশনের শুরুতে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির স্মরণে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের আহ্বান জানান পেদ্রো কমিসারিও।

রোববার (১৯ মে) আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দু’দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করেছিলেন। সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন রাইসি ও তার সঙ্গে থাকা অন্য কর্মকর্তারা।

পথে পূর্ব আজারবাইজানের জোলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে রাইসিকে বহনকারী বেল-২১২ মডেলের হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। এতে রাইসিসহ ওই হেলিকপ্টারের সব যাত্রী নিহত হন। অবশ্য অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছায়।

;