তেলসমৃদ্ধ কিরকুক গরিব হওয়ার কারণ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ইরাকের কিরকুকের একটি তেলক্ষেত্র /ছবি: সংগৃহীত

ইরাকের কিরকুকের একটি তেলক্ষেত্র /ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরাকের তেলসমৃদ্ধ একটি শহর কিরকুক। ইরবিল থেকে কিরকুক যাওয়ার পথেই তেলের গন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি শহরে পৌঁছার পূর্বেই তেলের গন্ধ নাকে আসে। চোখে পড়ে মহাসড়কের উভয় পাশের তেল শৌধনাগারের সাদা চিমনি থেকে কালো ধোঁয়া। কুর্দিশ আধা-স্বায়ত্বশাসিত এলাকা থেকে কিরকুককে আলাদাকারী চেকপোস্টে তেলবাহী ট্রাকগুলোর সারি চোখে পড়ে।

সম্প্রতি আল-জাজিরার সাংবাদিক মারিয়া পেকোভার একটি প্রতিবেদনে কিরকুকের এ অবস্থা তুলে ধরা হয়। মূলত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা আর রাজনীতিবিদ ও সামরিক বাহিনীর স্বার্থপরতাই কিরকুকবাসীর গরিব হওয়ার কারণ বলে মনে করা হয়।

কিরকুকের রাস্তার ধারে ছোট সবজি দোকানগুলোর ফাঁকে ফাঁকে পেট্রোল স্টেশন ও ছোট দোকানে প্রাস্টিকের পাত্রে বিক্রি হচ্ছে পেট্রোল।

শহরে প্রবেশ করতেই কিরকুকের রাজনীতির জটিলতা পরিষ্কার হয়ে যায়। কুর্দির ঐতিহ্যবাহী পোশাকে একজন পেশমের্গা যোদ্ধার ভাস্কর্য চোখে পড়ে, যার উপর ইরাকের পতাকা উড়ছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Oct/25/1540457598142.JPG

২০১৭ সালে যখন ভাস্কর্যটি উন্মোচন করা হয়, তখন এটি কেআরজি’র পতাকা ধারণ করেছিল, যাতে লাল, সাদা, সবুজ ও মাঝে একটি সূর্য। কুর্দিশ অঞ্চলে ঐতিহাসিকভাবে কিরকুক জাতি হিসেবে দাবি করা কেআরজি আড়াই বছর আগে পেশমের্গা বাহিনীকে বিতাড়িত করে শহরটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড দ্যা লেভান্ত (আইএসআইএল)-এর দখল থেকে রক্ষা করতেই তারা এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ নেয়।

২০১৭ সালের অক্টোবরে ইরবিলের স্বাধীনতার দাবিতে একটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়, যা বাগদাদ ও তার মিত্রদের ক্ষিপ্ত করে। ইরাকের সন্ত্রাসদমন বাহিনী ও শিয়া পিএমইউ শহরটির দখল নেয় এবং ভাস্কর্যটিতে ইরাকি পতাকা স্থাপন করে।

বর্তমানে বাগদাদ, কেআরজি ও স্থানীয় রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে বিবাদের মূল কারণ এ কিরকুক ও সেখানকার তেল। এ অবস্থা প্রাদেশিক প্রশাসনকে অকেজো করে রেখেছে, স্থানীয় অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করেছে এবং স্থানীয়দের মাঝে অসন্তোষ বাড়িয়েছে।

তেলসমৃদ্ধ কিরকুকে

কিরকুকের দখল নেওয়ার এক বছর পরে কুর্দিশ স্বাধীনতা গণভোটের পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে বাগদাদ। তারা পূর্বের সম্পদের হতাশাজনক অব্যবস্থাপনাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

কিরকুকে ইরাকের তৃতীয় সর্বোচ্চ তেল রিজার্ব যা প্রায় ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ব্যারেল রয়েছে। কিন্তু এলাকাটির অধিবাসীরা অভিযোগ করেন যে, এ তেল সম্পদকে তাদের শহরের অবকাঠামো, সেবা ও স্থানীয় অর্থনীতি উন্নয়নের জন্য ব্যবহার চোখে পড়ে না।

কিরকুকের ছোট মুদি দোকানের মালিক ৭৩ বছরের ফাহিমা আবু বাকির অক্টোবরের এক বিকালে বলেন, ‘সকাল থেকে আমাদের এখানে বিদ্যুৎ নেই।’ এ শহরে সব সময় বিদ্যুতের সমস্যা ছিল কিন্তু সাম্প্রতিক এ সমস্যা আরও খারাপ আকার ধারণ করেছে।

এ দোকানি বলেন, ‘আমি আমার দোকানে পণ্য জমা করতে পারি না। চেক পয়েন্টগুলোর কারণে দাম অনেক বেড়ে গেছে।’

বাগদাদ শহরটির দখল নেওয়ার পরে এর বাহিনী ইরবিল ও কেআরজি’র দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বড় শহর সোলাইমানিয়ার পথে মহাসড়কে চেক পয়েন্টগুলো স্থাপন করেছে। কিরকুকে প্রবেশ করা অবৈধ পণ্যগুলোর উপর কর আদায় করার জন্য এ চেক পয়েন্টগুলো। কিরকুক ও এর প্রধান পরিবহণ কেন্দ্রে পণ্য আমদানির জন্য মহাসড়ক দুটিই ভরসা।

আবু বাকিরের দোকানের বাইরে অ্যালান নেজমেদ্দিন আব্দুল্লাহর (২৭) মুখেও একই অভিযোগ, একই সমস্যা।

ময়লা সংগ্রহসহ কয়েকটি মৌলিক সেবার অভাব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তীব্র গরমে আমরা দৈনিক ১০ ঘণ্টারও কম সময় বিদ্যুৎ পাই।’

জাতিগতভাবে কুর্দি যুবক আব্দুল্লাহ কেআরজি শাসনামলে এ এলাকার পরিস্থিতি নিয়েও সন্তোষ্ট ছিলেন না। সাবেক কুর্দিশ গভর্নর ও প্যাট্রিয়টিক ইউনিয়ন অব কুর্দিস্তানের (পিইউকে) সদস্য নাজমিদ্দিন করিমকে সরিয়ে একজন আরবি রাকান আল-জাবোরিকে ক্ষমতায় বসায় বাগদাদ।

আব্দুল্লাহ বলেন, ‘প্রশাসনের উচ্চ পদগুলো এমন লোকজন দিয়ে পূরণ করা হয় যারা এ শহরের নন। সাবেক কুর্দিশ গভর্নর কিরকুকের বাসিন্দা কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের আগে তিনি দীর্ঘ সময় এখানে বাস করতেন না।’

‘আমি এমন একজন গভর্নর চাই, যিনি এখানে বাস করেন, মানুষের দুর্ভোগ জানেন এবং সকল গোষ্ঠী- কুর্দি, তুর্কি ও আরবদের সেবা করবেন।’

কুর্দিশ সাংবাদিক জানিয়ার জুমাও বলছেন যে প্রাদেশিক সভায় সংখ্যাগরিষ্ট কুর্দি দল যা ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল, তারাও কিরকুকবাসীর ভাগ্য উন্নয়নের জন্য তেমন কিছু করেনি।

জুমা বলেন, ‘এখানের সকল রাজনৈতিক দল তাদের নিজেদের স্বার্থের পেছনে ছুটছেন এবং এ শহরের অর্থ ও তেল চুরির চেষ্টা করছেন।’

তিনি শহরটিতে সামরিক শাসনেরও বিরোধিতা করেন। জুমা বলেন, ‘যদিও একজন বেসামরিক লোককে গভর্নর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কিন্তু এখানকার সন্ত্রাস দমন বাহিনী মূল দায়িত্ব পালন করেন।

জুমার ভাই আদহাম, একজন স্বাধীন কর্মী, অক্টোবরের প্রথমদিকে বেসামরিক বিষয়ে সামরিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের দায়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন।

এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে জুমা বলেন, ‘রাত দেড়টার দিকে সন্ত্রাস দমন বাহিনীর সদস্যরা আদহামকে গ্রেফতারের জন্য বাড়িতে আসে। এ ধরণের সমস্যা করিমের শাসনের সময়ও ছিল। আমাকে পুলিশ স্টেশনে ডাকা হয়েছিল কিন্তু সেটি ইরাকি আইন অনুযায়ীই হয়েছিল। এখন সকল ক্ষমতা সামরিক বাহিনীর হাতে এবং তারা প্রকাশ্যেই যা ইচ্ছা তা করে।’

   

ইরানে দুই নারীসহ ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। শনিবার (১৮ মে) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী রয়েছেন। টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নরওয়েভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) জানিয়েছে, ইরানের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের উর্মিয়া কারাগারে মাদকের বিভিন্ন মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় পাঁচজন পুরুষের সঙ্গে দুজন নারীর মৃত্যদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পারভীন মোসাভি নামের দুই সন্তানের এক জননীও রয়েছেন।

এ ছাড়া নিসাপুরে ফাতেমিহ আব্দুল্লাহি নামের অপর এক নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিজের স্বামীকে হত্যার অভিযোগ করা হয়েছে।

আইএইচআর জানিয়েছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ইরানে ২২৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এর মধ্যে চলতি মাসেই অন্তত ৫০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এপ্রিলে পার্সিয়ান নববর্ষ এবং রমজানের ছুটির শেষে একটি নতুন ঢেউ শুরু হয়েছিল। তখন থেকে ১১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জন নারী রয়েছেন।

এদিকে আগামীকাল সোমবার (২০ মে) এক ইহুদি যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিতে পারে ইরান। ইরান হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম আরভিন ঘহরেমানি। তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া কামরান শেখেহ নামের এক কুর্দি নাগরিকও একই ঝুঁকিতে রয়েছেন।

;

রাশিয়ার বিরুদ্ধে খারকিভ হামলার অভিযোগ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চলে নতুন করে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। খারকিভের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দুটি শহরে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে রুশ বাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ ইউক্রেনের। শনিবারের (১৮ মে) এসব হামলায় শিশুসহ অন্তত ছয় বেসামরিক আহত হয়েছে।

বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের প্রসিকিউটরেরা জানিয়েছেন, খারকিভের আঞ্চলিক রাজধানীর একটি আবাসিক এলাকায় রাশিয়ার বিমান হামলাকে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্ত করছেন তারা। রুশ সীমান্ত থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভোভচানস্ক শহরে হামলায় ৬০ বছর বয়সী এক নারী নিহত হয়েছে। এ ছাড়া তিন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছে।  

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার পুনঃআক্রমণ মোকাবিলায় তার দেশের সেনাদের সাফল্যের কথা জানিয়েছেন। এক ভিডিও ভাষণে তিনি বলেন, ‘খারকিভ অঞ্চলে আরও শক্ত অবস্থানে রয়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এ ছাড়া পূর্ব দোনেৎস্ক অঞ্চলের চাসিভ ইয়ার শহরের চারপাশে রুশ হামলা প্রতিহত করা হচ্ছে। আমাদের সেনারা রাশিয়ার ২০টিরও বেশি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে।’

এদিকে বেসামরিকদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া। দেশটির বেলগোরোদ অঞ্চলে ইউক্রেনের ছোঁড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। 

গত সপ্তাহে বেলগোরোদে একটি অ্যাপার্টমেন্ট ভবনে  ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি রাশিয়ার। শনিবার বেলগোরোদের আঞ্চলিক গভর্নর ভ্যাচেস্লাভ গ্ল্যাদকভ জানান, ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় পেট্রোভকা গ্রামে একজন নারী ও একজন পুরুষ আহত হয়েছেন।

;

নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, নিহত ১৭



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ। এ যুদ্ধে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ফিলিস্তিনিদের মৃত্যুর সংখ্যা। শেষ খবর পাওয়া অনুযায়ী গাজা ভূখণ্ডের নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।

এছাড়া উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েল বিমান হামলা চালানোর পর অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছেন।

রোববার (১৯ মে) এই তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নুসেইরাতের একটি বাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত এবং আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে।

আল জাজিরা আরও জানিয়েছে, উত্তর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

;

বৈশ্বিক প্লাস্টিক দূষণের তালিকায় কোক-পেপসি শীর্ষে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে ব্র্যান্ডেড প্লাস্টিক দূষণের অর্ধেকেরও বেশির জন্য দায়ী ৫৬টি কোম্পানি। ৫ বছর ব্যাপী চালানো নতুন গবেষণায় প্লাস্টিক বর্জ্যের পেছনে দায়ী কোম্পানিগুলি নথিভুক্ত করেছে৷

গবেষণায় দেখা গেছে, সমস্ত ব্র্যান্ডেড প্লাস্টিক দূষণের ২০ ভাগের জন্য মাত্র ৪টি কোম্পানী দায়ী। এর মধ্যে শীর্ষ কোম্পানিগুলো হলো— কোকা-কোলা (১১ শতাংশ), পেপসিকো (৫ শতাংশ), নেসলে (৩ শতাংশ) এবং ড্যানোন (২ শতাংশ)।

ডালহৌসি ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে সারা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায়, ৫ বছরের ধরে ৮৪টি দেশে প্লাস্টিক দূষণের উপর পরিক্ষা নিরীক্ষার উপর ভিত্তি করে 'সায়েন্স অ্যাডভান্স' জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটি হয়।


ডালহৌসির স্কুল ফর রিসোর্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজের অধ্যাপক টনি ওয়াকার বলেছেন, "বিশ্বের কয়েকটি বৃহত্তম কর্পোরেশন তারা গ্রহের প্রতিটি দেশে পৌঁছে গেছে।"

তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্লাস্টিক 'নিরীক্ষা' পরিচালনা করেছেন। তারা সতর্কতার সাথে সমুদ্র সৈকত, পার্ক, নদী এবং অন্যান্য এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে প্লাস্টিকের ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহ করেছেন। তারা প্লাস্টিক বর্জ্যের প্রতিটি অংশ পরীক্ষা করে দৃশ্যমান ব্র্যান্ড বা ট্রেডমার্ক চিহ্নিত করেছে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ব্রেক ফ্রি ফ্রম প্লাস্টিক নামের সংস্থাটি ১ হাজার ৫শ ৭৬টি নিরীক্ষা সমন্বয় করেছে।

গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে প্লাস্টিকের উৎপাদন দ্বিগুণ হয়েছে, ২০০০ সালে ২০০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন থেকে থেকে ২০১৯ সালে ৪০০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন হয়েছে।

একটি বিবৃতিতে, কোকা-কোলা বলেছে ২০২৫ সালের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী শতভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্যাকেজিং ব্যবস্থা চালু করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ২০৩০ সালের মধ্যে কোম্পানিটি ৫০ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদান ব্যবহার করতে চায় প্যাকেজিংয়ের জন্য।

পেপসিকো জানিয়েছে, কোম্পানিটি প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় একটি বৈশ্বিক নীতি কাঠামোর পক্ষে এবং এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তুলতে কাজ করছে যেখানে প্লাস্টিক পুনরায় ব্যবহার করা সম্ভব।

কোম্পানি আরও জানায়, "প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য একটি বড় এবং বাধ্যতামূলক বৈশ্বিক নীতি কাঠামোর পক্ষে কাজ করছে। এবং তাদের অন্যদেরও এটি করার সুযোগটি কাজে লাগাতে আহ্বান জানিয়েছে তারা।"

এক বিবৃতিতে, নেসলে স্বীকার করেছে যে প্লাস্টিক দূষণ একটি "গুরুতর সমস্যা এবং এটি সমাধানের জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি" - এবং এটি বিশ্বব্যাপী আইনিভাবে বাধ্যতামূলক নিয়ন্ত্রণকে সমর্থন করে৷ এটি ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা এবং লাতিন আমেরিকায় বর্জ্য সংগ্রহ, বাছাই এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য স্কিমগুলি বিকাশের জন্য নেসলের চলমান প্রকল্পগুলিরও উল্লেখ করেছে।

এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য জানায়নি ফ্রান্সভিত্তিক বহুজাতিক খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ড্যানোন।

ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ সায়েন্সের অধ্যাপক প্যাট্রিসিয়া করকোরান বলেছেন, বিশ্বব্যাপী করা গবেষণাটি "অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ"।

করকোরান গ্রেট লেকের সৈকতে প্লাস্টিক দূষণ পরীক্ষা করার অনুরূপ গবেষণায় কাজ করেছে। গবেষণায়, "খাদ্য এবং পানীয়ের বর্জ্যই সেখানে রয়েছে - এটি কোনও আশ্চর্যের বিষয় নয় বলে তিনি জানিয়েছেন"।

তিনি বলেন, "আপনি যদি সবচেয়ে বড় উৎপাদককে হাইলাইট করেন...তাহলে হয়তো এটি কোম্পানির সচেতনতা বাড়াবে এবং কোম্পানি এটি সম্পর্কে কিছু করতে পারে।"

সমীক্ষায় দেখা গেছে যে উদ্ধারকৃত প্লাস্টিক আইটেমগুলির ৫০ শতাংশেরও বেশি সূর্য, পানি এবং বাতাসের সংস্পর্শে আসার পরে কোনও স্পষ্ট ব্র্যান্ডিং এর লেবেল ছিল না।

গবেষকরা বলেছেন যে তাদের গবেষণায় প্লাস্টিক পণ্য এবং প্যাকেজিংয়ের উৎপাদন এবং লেবেলিংয়ের বিষয়ে বৃহত্তর স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তারয়েছে, যাতে দূষণ কারা করছে তা বের করা সহজ হয় এবং সংস্থাগুলিকে জবাবদিহি করা যায়।

তারা একটি আন্তর্জাতিক, ওপেন-অ্যাক্সেস ডাটাবেস তৈরির জন্য যুক্তি দেখান, যেখানে কোম্পানিগুলি তাদের পণ্য, প্যাকেজিং এবং ব্র্যান্ডগুলি পরিবেশে পরিমাণগতভাবে ট্র্যাক করতে এবং রিপোর্ট করতে বাধ্য।

কানাডার পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী স্টিভেন গিলবিউল্ট একটি নতুন রেজিস্ট্রি ঘোষণা করেছিলেন, যেখানে কোম্পানিগুলিতে কতটা প্লাস্টিক উত্পাদিত হচ্ছে এবং এটি কোথায় গিয়ে শেষ হবে তার বিশদ সরবরাহ করতে হবে।

গিলবিউল্ট কানাডার নতুন প্লাস্টিক রেজিস্ট্রির পরিকল্পনা এবং অটোয়াতে জাতিসংঘের প্লাস্টিক দূষণ চুক্তির আলোচনার বিশদ বিবরণ সম্পর্কে বলেছেন। তিনি আলোচনার লক্ষ্য ১৭০টিরও বেশি দেশের জন্য প্লাস্টিক দূষণের জন্য একটি আন্তর্জাতিক আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক চুক্তি নিয়ে আসার পরামর্শও দিয়েছিলেন।

;