পুলিশের গুলিতে কিশোরের মৃত্যু, বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বিক্ষোভ থেকে পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

বিক্ষোভ থেকে পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়। ছবি: সংগৃহীত

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোর পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে গাড়িতে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ (একেবারে সামনে) থেকে তাকে গুলি করেছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল প্যারিসসহ ফ্রান্সের বিভিন্ন শহর। বিক্ষোভ থেকে অন্তত ১৫০ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার সকালে প্যারিসের উপকণ্ঠ ন্যান্তেরে এলাকায় দিয়ে যাওয়ার সময় তল্লাশি চৌকিতে নাহেল এম নামে ওই কিশোরের গাড়ি থামান দুই পুলিশ কর্মকর্তা। ওই সময়ই বাকবিতণ্ডার জেরে নাহেলকে গুলি করা হয়।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ তখন দাবি করে, ওই কিশোরের গাড়ি থামানোর পর সে পুলিশ সদস্যদের ওপর গাড়ি চালিয়ে দিতে চাইলে এক কর্মকর্তা আত্মরক্ষার্থে গুলি করেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এ দাবির ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ফুটেজে দেখা যায়, দুজন পুলিশ সদস্য গাড়িটির জানালায় ঝুঁকে আছেন এবং হাতের আগ্নেয়াস্ত্র চালকের দিকে তাক করা।

একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘গুলি কিন্তু তোমার মাথা ফুঁড়ে বের হবে...’। সেসময় স্টার্ট দিয়ে গাড়িটা চলতে শুরু করতেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে চালককে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। কয়েক মিটার এগিয়েই একটি খুঁটিতে সজোরে ধাক্কা খায় গাড়িটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নাহেলের।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার সময়ে গাড়িতে দুজন যাত্রী ছিলেন। এদের একজন পালিয়েছিলেন, দ্বিতীয়জন নাবালক। তাকে প্রথম আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

অন্যদিকে ৩৮ বছরের অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।

ভিডিও ফুটেজটি ছড়িয়ে পড়ার পর মঙ্গলবার বিকেল থেকেই আন্দোলনে উত্তাল হয়ে পড়ে ফ্রান্সের রাজপথ। বিক্ষোভকারীরা বলছেন, পুলিশকে গাড়িচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিল, এমন কিছুই ফুটেজে ধরা পড়েনি। নাহেলের বুকে কেন গুলি করা হলো?

বিক্ষোভ থেকে বিভিন্ন শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও পুলিশ স্টেশনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ২৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন, পোড়ানো হয়েছে ৪০টিরও বেশি গাড়ি।

গুলি চালানোর ঘটনাটিকে ‘ক্ষমার অযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখো। তিনি বলেছেন, ‘একটা বাচ্চা ছেলেকে মারার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। এটি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।’

যদিও বিক্ষোভ থেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও পুলিশ স্টেশনে হামলাকে ‘ভয়াবহ সহিংসতা’ বলে অভিহিত করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দার্মেনিয়ান। তিনি বলেছেন, ‘যারা শান্তি চায় না তাদের জন্য লজ্জা।’