ভারত-কানাডা দ্বন্দ্ব: উদ্বিগ্ন পশ্চিমারা
শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হারদিপ সিং নিজ্জার হত্যার জেরে ভারত ও কানাডার মধ্যে চলমান দ্বন্দ্বে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পশ্চিমারা।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যেমের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, গ্রেট ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি রয়েছে। যার নাম ‘ফাইভ আইজ ইন্টেলিজেন্স’। চুক্তিতে বলা আছে, নিজেদের স্বার্থ ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত গোয়েন্দা তথ্য— তা যতই সংবেদনশীল হোক না কেন, তা পরস্পর শেয়ার করার ব্যাপারে এই দেশগুলো অঙ্গীকারবদ্ধ। আর সেই রীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে আসছে দেশগুলো।
কানাডার দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল অনলাইনের খবরে বলা হয়, অটোয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকাশ্যে নয়াদিল্লির নিন্দা জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ কানাডার মিত্র দেশগুলো। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে- পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে দ্রুত উন্নয়নমুখী ভারতের বাণিজ্যিক ও কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে। তাই দেশগুলো উদ্বেগ জানালেও কেউ নিন্দা জানায়নি।
কানাডার বন্ধু রাষ্ট্র যুক্তরাজ্য সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, ভারতের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে মিত্রদেশ কানাডার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হচ্ছে। কানাডা কর্তৃপক্ষের তদন্ত চলা অবস্থায় এ নিয়ে মন্তব্য করাটা যথার্থ হবে না বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছে, এই ঘটনায় দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করাটা জরুরি। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র আন্দ্রিয়েন ওয়াটসন এক বিবৃতিতে বলেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো যে অভিযোগ তুলেছেন, তা নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। কানাডীয় পক্ষের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। কানাডায় এ নিয়ে তদন্ত এবং দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করাটা জরুরি।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওংয়ের মুখপাত্র বলেছেন, নয়াদিল্লির কাছে ক্যানবেরার উদ্বেগের কথা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এক বিবৃতিতে ওই মুখপাত্র বলেন, এসব অভিযোগ নিয়ে অস্ট্রেলিয়া গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ ঘটনার তদন্তের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বাস করে, সার্বভৌমত্ব এবং আইনের শাসনের প্রতি সব দেশকে শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।
কানাডার উত্তর-পশ্চিমের ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সুপরিচিত শিখ নেতা ছিলেন হরদীপ। তিনি ভারতের পাঞ্জাবে শিখদের স্বাধীন রাষ্ট্র খালিস্তানের পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচার-প্রচারণা চালাতেন। এ কারণে তিনি আগে হত্যার হুমকি পেয়েছিলেন বলে জানান তার সমর্থকেরা।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমের মিত্ররা ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব এড়িয়ে যেতে চাইবে। কারণ, এশিয়া- প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আধিপত্যের জন্য ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে দেশগুলোকে। কানাডা এবং ভারতের সঙ্গে মিত্রতা কিংবা পারস্পরিক বাণিজ্যিক নির্ভরতা থাকায় এ ঘটনায় নিরপেক্ষ দর্শকের কাজ করছে দেশগুলো।