মিয়ানমারে ১.৬ মিলিয়ন বাস্তুচ্যুত মানুষকে সহায়তা দিচ্ছে প্রবাসীরা

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাউই টিন পার বর্তমানে ২৬ বছর বয়সী তরুণ। জন্মস্থান মায়ানমার ত্যাগ করে মাত্র নয় বছর বয়সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানাপোলিস শহরে শরণার্থী হিসাবে পুনর্বাসিত হয়েছিলেন তিনি। এই ১৭ বছরে মিয়ানমারের সাথে সংযোগ ধীরে ধীরে বিবর্ণ হয়ে গেলেও সংকটে স্বদেশের পাশে দাঁড়াতে ভুলেননি তিনি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পরে দেশটি যখন সংকটে নেমে আসে, তখন তিনি এবং তাঁর মতো বিদেশে বসবাসকারী অনেক প্রবাসী অসংখ্য মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসেন।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিরতা তুঙ্গে উঠে। দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান এই অস্থিরতায় একদিকে সামরিক শাসন অন্যদিকে জান্তা সরকার বিরোধী বেশকিছু গোষ্ঠীর সশস্ত্র প্রতিরোধ। বাইরে অবস্থানরত মায়ানমার প্রবাসীরা দেশে ফিরে গণতন্ত্রের সংগ্রামকে সমর্থন চলমান রেখেছে বলে আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

ব্রাসেলস-ভিত্তিক একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ দ্বারা গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, মিয়ানমারের অভ্যুত্থান-বিরোধী প্রতিরোধের জন্য তহবিলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে প্রবাসীদের অবদানকে চিহ্নিত করেছে। সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন অগ্নিসংযোগ এবং বোমা হামলার ঘটনার প্রতিরোধ হিসেবে প্রবাসী গোষ্ঠীগুলো মানবিক প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। ২০২১ সাল থেকেই তাঁরা সামরিক বাহিনীর সমালোচনাসহ তাঁদের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় এবং অসহায়দের সহায়তায় কাজ করছে। গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকে টিকিয়ে রাখার জন্য সদ্য বাস্তচ্যুত প্রায় ১.৬ শরণার্থীদের সহায়তায় তাঁরা অবদান রাখছে।

ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের (এনইউজি) প্রেসিডেন্টের অফিসের মুখপাত্র কিয়াও জাও বলেছেন, মিয়ানমারের বসন্ত বিপ্লব হল জনগণের বিপ্লব। গত দুই বছরে, অভ্যুত্থানের বিরোধিতাকারী রাজনীতিবিদ ও কর্মীদের নিয়ে গঠিত সমান্তরাল প্রশাসন ১৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছে, যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এসেছে বিদেশে বসবাসকারী মিয়ানমারের নাগরিকদের কাছ থেকে।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য মিয়ানমারের সর্বোচ্চ বেসামরিক কর্মকর্তা স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচি দেশটির গণতান্ত্রিক সরকার। ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে সারা বিশ্বে তাঁর জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে। সামরিক বাহিনীর সাথে উত্তেজনা প্রশমনে জাতিসংঘের বিশেষ দূত কাজ করলেও এখনও কোনো মীমাংসায় পোঁছায়নি। এর আগে গত বছরেও রাখাইন ইস্যুতে সরকারের কার্যক্রম ও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জাতিসংঘের ভূমিকা নিয়ে নিয়ে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ এ দুই নেতার মধ্যে রেষারেষি চরম আকার ধারণ করে।