গাজা পরিদর্শন শেষে যা বললেন যুক্তরাষ্ট্রের ডাক্তার 

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

গাজার চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত ১২টি হাসপাতাল এবং ৩২টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। বিধ্বস্ত গাজার চালু থাকা গুটিকয়েক হাসপাতালের কার্যক্রমও একেবারেই সীমিত পর্যায়ে নামিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেখানে শুধু জটিল সমস্যার সেবা চালু রয়েছে। শুধু জীবন রক্ষায় অস্ত্রোপচারের কাজ ছাড়া অন্য কোনো সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, শত শত রোগী ও আহতদের কী হবে এবং পরবর্তীতে তারা কোথায় আশ্রয় নেবে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব নয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অনুসারে, ইসরায়েলি আক্রমণ প্রায় ২৩ লক্ষ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে, মানুষকে অনাহারের দিকে ঠেলে দিয়েছে, ৩১০০০ জনেরও বেশি লোককে হত্যা করেছে।' 

বিজ্ঞাপন

গাজার এমন অসময়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে চারজন আন্তর্জাতিক ডাক্তার দলের সাথে উত্তর গাজার যুদ্ধক্ষেত্রে যান শিকাগোর একজন সার্জন সামার আত্তার। এক মাসের মিশনের তিক্ত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন তিনি।

তিনি বলেন, ইসরায়েল সীমান্তের কাছাকাছি যেতেই তারা মুহুর্মুহু বোমার শব্দ পেতে থাকেন। সেইসাথে তাদের নজরে আসে হাতে স্নাইপার রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়ানো ইসরায়েল বাহিনী। তাদের কাছে একটাই অ্যাম্বুলেন্স ছিল। তাই আহতদের পরিষেবা দেয়া তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে।

বিজ্ঞাপন

আত্তার বলছেন, ‘গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎ ও পানি বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ হাসপাতালই বন্ধ রয়েছে। হামলায় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। আহত ও অসুস্থদের নিরাপদে চিকিৎসা সেবা পাওয়ার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। গাজায় কর্মরত মেডিকেল কর্মীরা, যদিও সম্পূর্ণভাবে ক্লান্ত, তারা অসম্ভব পরিস্থিতিতে যা করতে পারেন তা করছেন।’

তিনি আরও বলেন, গাজায় সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নারী ও শিশুরা। কোনো কোনো শিশু এতটাই পুড়ে গেছে যে তাদের শরীরে হাড় দৃশ্যমান। কিন্তু তাদের যন্ত্রণা কমানোর মতো মরফিন মজুত নেই কোনো হাসপাতালে।

সাত বছর বয়সী শিশু, হিয়াম আবু খদিরের কথা বলেন তিনি। ইসরায়েলি বিমান হামলায় বাবা ও ভাইকে হারিয়েছে সে। মা গুরুতর আহত। শরীরের ৪০ শতাংশ পোড়া নিয়ে হিয়ামকে ভর্তি করা হয়েছে গাজা ইউরোপীয় হাসপাতালে। কয়েক সপ্তাহ পরে তাকে চিকিৎসার জন্য মিশরে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। 

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, ইসরায়েলের হামলা গণহত্যার সমান। আন্তর্জাতিক আদালত এর তদন্ত করছে।

ইসরায়েল গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে যে, তারা বেসামরিক নয়, হামাসকে লক্ষ্যবস্তু করছে। ইসরায়েলে হামাসের বেসামরিক নাগরিকদের মানব ঢাল হিসাবে ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে। 

সামার আত্তারের মতো ফিলিস্তিনি ছিটমহল পরিদর্শনকারী পশ্চিমা চিকিৎসকরা অনেকেই জাতিসংঘে বলেছেন, ইসরায়েলের ‘ভয়াবহ নৃশংস’ আক্রমণের কথা।