৬৫ হাজারেরও বেশি আর্মেনিয়ান নাগর্নো-কারাবাখ ছেড়ে পালিয়েছে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
নাগর্নো-কারাবাখ ছেড়ে পালানোর চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

নাগর্নো-কারাবাখ ছেড়ে পালানোর চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সামরিক অভিযানে আজারবাইজানের বিজয়ের পর ৬৫ হাজারেরও বেশি জাতিগত আর্মেনিয়ান নাগর্নো-কারাবাখ ছেড়ে পালিয়েছে।

আর্মেনিয়া সরকারের মুখপাত্র নাজেলি বাগদাসারিয়ান এক বিবৃতিতে বলেছেন, আজারবাইজান গত সপ্তাহে আকস্মিক আক্রমণে ছিটমহলটি দখল করার পরে বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল নাগাদ ৬৫ হাজার ৩৬ জন বাস্তুচ্যুত মানুষ নাগর্নো-কারাবাখ থেকে জোরপূর্বক আর্মেনিয়ায় প্রবেশ করেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র তাদের সকলকে উপযুক্ত আবাসন প্রদান করছে যাদের বসবাসের পূর্বনির্ধারিত স্থান ছিলো না।’ 

আজারবাইজান বাহিনী আক্রমণের আগে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার জাতিগত আর্মেনিয়ান এই অঞ্চলে বসবাস করত বলে ধারণা করা হয়।

আর্মেনিয়ান বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী অস্ত্র সমর্পণ করতে সম্মত হওয়ার চার দিন পর গত রবিবার আজারবাইজান নাগোর্নো-কারাবাখের সঙ্গে আর্মেনিয়ার সংযোগকারী একমাত্র রাস্তাটি ফের খুলে দিয়েছে।

আজারবাইজানের অংশ হিসাবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত, নাগর্নো-কারাবাখ, যা তিন দশক ধরে বাকু থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল, এর খ্রিস্টান বাসিন্দারা মূলত আর্মেনিয়াপন্থি এবং মুসলিমরা আজারবাইজানপন্থি বলে জানা গেছে।

গত বুধবার পর্যন্ত নাগর্নো-কারাবাখের ২৮ হাজারেরও বেশি বাসিন্দার সীমান্ত অতিক্রম করে আর্মেনিয়ায় আশ্রয় নেওয়ার কথা জানিয়েছিল এনডিটিভি।

৭০ বছর বয়সি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ভেরা পেট্রোসিয়ান মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি সবকিছু পিছনে ফেলে এসেছি। আমি জানি না আমার ভাগ্যে কী আছে। আমার কিছুই নেই। আমি কিছুই চাই না।’ আজারবাইজানের সঙ্গে সীমান্তের আর্মেনিয়া অংশের একটি হোটেলই এখন তার বাড়ি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যে, গুলি, ক্ষুধা, অশান্তি এবং যন্ত্রণা প্রত্যক্ষ করেছি তা আর দেখতে চাই না।’

এদিকে আজারবাইজান বলছে, তাদের সামরিক অভিযানে বেসামরিক নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান ৩০ বছরে ছিটমহল নিয়ে দুটি যুদ্ধ করেছে। ২০২০ সালে ছয় সপ্তাহের সংঘর্ষের পর নাগর্নো-কারাবাখ এবং এর আশেপাশের কিছু অংশ ফিরে পায় আজারবাইজান।

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ বলেছেন, ‘আর্মেনিয়ানদের অধিকারকে সম্মান করা হবে এবং ওই অঞ্চলটিকে একটি স্বর্গে পরিণত করা হবে।’

কিন্তু কারাবাখের আর্মেনিয়ানরা রয়টার্সকে বলেছে, তারা আজারবাইজানের অংশ হিসাবে বাস করতে চায় না, বরং তারা আজারবাইজানের হাতে জাতিগত নির্মূলের ভয় পায়।

কারাবাখ নেতৃত্বের উপদেষ্টা ডেভিড বাবায়ান বলেন, ‘আমাদের জনগণ আজারবাইজানের অংশ হিসেবে থাকতে চায় না। ৯৯ শতাংশ আর্মেনিয়ান আমাদের ঐতিহাসিক ভূমি ছেড়ে যেতে ইচ্ছুক।’

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা হিকমেত হাজিয়েভ আল-জাজিরাকে বলেছেন, ওই অঞ্চলের বেসামরিক নাগরিকদের রাজনৈতিক একীকরণ, আর্থসামাজিক সমস্যাসহ তাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে সরাসরি সংলাপের জন্য বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী শিলা পেলান বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন না যে, আজারবাইজানের শাসনের অধীনে জাতিগত আর্মেনিয়ানদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘আর্মেনিয়ানদের প্রতি ঘৃণার একটি দীর্ঘস্থায়ী নীতি রয়েছে। এটা শুধু রাতারাতি শেষ হবে না। কারাবাখের আর্মেনিয়ানদের জন্য কোনো নিরাপত্তা বা অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলে বিশ্বাস করার কোনো যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি নেই। তারা এখন খুব বিপদে আছে।’

নাগোর্নো-কারাবাখে মানবাধিকার ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য অবিলম্বে জাতিসংঘের একটি দল মোতায়েনের আহ্বান জানিয়েছে আর্মেনিয়া।

   

চাঁদের দূরবর্তী স্থানে চীনের স্পেসক্রাফটের অবতরণ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চীন জানিয়েছে, তাদের পাঠানো একটি স্পেসক্রাফট চাঁদের দূরবর্তী স্থানে নিরাপদে ও সফলভাবে অবতরণ করতে সক্ষম হয়েছে। এটি মে মাসে চাঁদের উদ্দেশে পাঠানো হয়।

রোববার (২ জুন) বিবিসি চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থার বরাত দিয়ে এ খবর জানায়।

চীনের পাঠানো এ স্পেসক্রাফট চেঙ্গ’ই ৬-এর ওজন ২ কেজি। চীনের মহাশূন্য বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই স্পেসক্রাফটটি ছিল মানবশূন্য।

এই স্পেসক্রাফটটি চাঁদের এমন দূরবর্তী স্থানে অবতরণ করেছে, যেখানে এর আগে কেউ সেখানে স্পেসক্রাফট পাঠানোর চেষ্টা করেনি।

চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ) জানিয়েছে, চেঙ্গ’ই ৬ রোববার সকাল ৬টা ২৩ মিনিটে (শনিবার ২২:২৩ জিএমটি) চাঁদের দক্ষিণ মেরুর এইটকিন উপত্যকায় নিরাপদে অবতরণ করে। স্পেসক্রাফটি ৩ মে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।

এরপর ল্যান্ডারের রোবোটিক হাত মূল্যবান পাথর ও মাটি সংগ্রহ করবে, যা আগে কোনো দেশ সংগ্রহ করতে পারেনি। ল্যান্ডারটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুর যেখানে অবতরণ করে, সেখানে প্রচুরসংখ্যক গর্ত রয়েছে। এখানে অতি প্রাচীন পাথরও রয়েছে।

চীনের মহাশূন্য সংস্থা বলছে, স্পেসক্রাফটির অবতরণ স্থলটি ছিল ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ এবং সেখানে ল্যান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করা অতি দুঃসাধ্যের।

এর আগে চীনের চেঙ্গ’ই-৪ ল্যান্ডার ২০১৯ সালে উইনচ্যাঙ্গ স্পেস লঞ্চ সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়। একই লঞ্চিং সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা চেঙ্গ’ই-৬ স্পেসক্রাফট।

ল্যান্ডার হোবারটি ১শ মিটার (৩শ ২৮ মিটার) উঁচু থেকে অবতরণ করে এবং এটি নিরাপদে অবতরণের জন্য ৩ডি ক্যানার ব্যবহার করা হয়। দ্য কিউকিয়াও-২ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে এর অবতরণ রিলে করা হয়।

সিএনএসএ জানাচ্ছে, ল্যান্ডারটি তিনদিন ধরে চাঁদের মূল্যবান পাথর ও অতি প্রাচীন পাথর সংগ্রহ করবে।

এ বিষয়ে ইউনির্ভার্সিটি অব ম্যানচেস্টারের অধ্যাপক জন পারনেট ফিশার বলেন, আমরা ভীষণ উত্তেজিত যে, আমরা যে ধরনের পাথর এখানে দেখতে পেয়েছি, যা এর আগে আমরা দেখিনি।

তিনি জানান, এ ধরনের পাথর বিশ্লেষণ করে আমরা চাঁদ কীভাবে গঠিত হলো সে বিষয়ে আরো ভালোভাবে জানতে পারবো। সৌরজগতে কীভাবে পানি তৈরি হলো, সে বিষয়েও ব্যাপকভাবে ধারণা পাবো।

তিনি আরো জানান, এর চাঁদে পাওয়া পাথর বেশির ভাগ পাথররের মতোই, যা আইসল্যান্ড বা হাইতির আগ্নেয়গিরিতে পেয়েছি।

;

নিলামে উঠছে প্রিন্সেস ডায়ানার চিঠি



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান ব্রিটিশ রাজা চার্লসের প্রথম স্ত্রী প্রিন্সেস ডায়ানা ছিলেন বেশ জনপ্রিয় মুখ। তার হাতে লেখা বেশকিছু চিঠি এবং ছুটির পোস্টকার্ড নিলামে তোলা হবে ২৭ জুন। তার সাবেক গৃহকর্মী মাউড পেন্ড্রেকে চিঠিগুলো লিখেছিলেন তিনি।

বেভারলি হিলস জুলিয়ানের আয়োজনে ডায়ানার স্বাক্ষরিত এবং হাতে লেখা চিঠি ও কার্ডগুলো নিলামে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্ট। 

নিউইয়র্ক পোস্টের মতে, প্রিন্সেস অফ ওয়েলস ডায়ানার লেখা বেশকিছু চিঠি সংগ্রহের মধ্যে রয়েছে যার কিছু পরিমাণ নিলামে তোলা হবে। সাবেক গৃহকর্মী মাউড পেন্ড্রেকে তিনি ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল সময়ের মধ্যে বেশকিছু চিঠি লিখেছিলেন। এ সময়ে বিনিময়কৃত ১৪টি ক্রিসমাস এবং নিউ ইয়ার কার্ডও নিলাম করা হচ্ছে।

এই চিঠিগুলির মধ্যে অনেকগুলোতে ব্যক্তিগত বিবরণ রয়েছে যা ডায়ানার জীবনের অনেক মাইলফলক ঘটনাকে অন্তর্ভুক্ত করে। ১৯৮২ সালের ৮ সেপ্টেম্বরের একটি রাজকীয় লেটারহেডে খালি কালিতে তিনি লিখেছেন, প্রিন্স চার্লসের সাথে তার হানিমুনের অসাধারণ গল্প।

অন্য একটি চিঠিতে তার প্রথম সন্তান উইলিয়ামের জন্মের কথা উল্লেখ আছে। সেখানে ডায়ানা নিজেকে ‘অত্যন্ত গর্বিত এবং ভাগ্যবান মা’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি লেখেন, ‘উইলিয়াম আমাদের জন্য এমন সুখ এবং তৃপ্তি এনেছে যে, আমি তার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারি না।’

বালমোরাল ক্যাসলের লেটারহেডে প্রিন্স উইলিয়ামকে উপহার প্রদানের জন্য কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানান অপর চিঠিতে। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘আপনার দুর্দান্ত কার্ডিগানগুলো নিয়ে খুব রোমাঞ্চিত এবং আনন্দিত। উইলিয়ামকে উৎসর্গ করার জন্য আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।’

এতে স্বাক্ষর করা হয়েছে, 'আমাদের সবার কাছ থেকে অনেক ভালবাসা নিন, ডায়ানা।'

মানবিক কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবন, উভয়ের জন্যই বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত নারী হিসেবে বিবেচিত ছিলেন প্রিন্সেস ডায়ানা। প্রিন্স উইলিয়াম এবং প্রিন্স হ্যারির মা তিনি। ডায়ানা ১৯৯৬ সালে রাজা চার্লসকে তালাক দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৯৭ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে প্যারিসে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন।

;

রোববারে ৭ বৈঠকে বসবেন নরেন্দ্র মোদী



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলমান ভোটের ফলাফল প্রকাশের ২ দিন আগে রোববারে (২ জুন) পরপর সাতটি বৈঠকে বসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পরিবেশ, ঘূণিঝড় রিমালের পাশাপাশি ক্ষমতায় এলে প্রথম ১০০ দিনের লক্ষ্য নিয়েও আলোচনা করবেন তিনি।

বৈঠকে কী কী নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তার ইঙ্গিত দিয়েছে সরকারি একটি সূত্র। সরকারের সেই সূত্রের দাবি, ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন নিয়ে আলোচনা করতে পারেন মোদী। পাশাপাশি ক্ষমতায় এলে প্রথম ১০০ দিনে মোদী সরকারের কী লক্ষ্য হবে, তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে একটি বৈঠকে।

সূত্রটির দাবি, ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী উত্তর-পূর্ব ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম বৈঠকে আলোচনা হবে। এরপর দেশে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য আরও একটি বৈঠকে বসবেন তিনি।

;

ব্রিটেন থেকে ১০০ টন স্বর্ণ ফিরল ভারতে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইংরেজদের শাসনকালে ব্রিটেনে পাড়ি দেওয়া রাশি রাশি সোনা ফিরিয়ে এনেছে ভারত। এখন পর্যন্ত ইংল্যান্ড থেকে ১০০ টনের বেশি স্বর্ণ এলো দেশটিতে। 

১৯০ বছরের পরাধীনতায় ভারত ঠিক কত পরিমাণ স্বর্ণ হারিয়েছে, খাতা-কলমে তার হিসাব নেই। সেই ইংরেজদের দেশ থেকে স্বর্ণ ফিরিয়ে আনার খবর সাধারণ মানুষের মনেও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।

প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ইংরেজদের নিয়ে যাওয়া স্বর্ণই ভারত ফিরিয়ে আনছে? উত্তর হলো, না। ভারতের জমা রাখা স্বর্ণই ভারত ফিরিয়ে আনছে। থাকবে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ভল্টে। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০০ টন স্বর্ণ বিদেশ থেকে ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

কোথায় জমা ছিল ভারতের স্বর্ণ?

ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের মাটির নিচে থাকা নটি বড় বড় ভল্টে থাক থাক করে সাজানো থাকে স্বর্ণর বার। শুধু ভারতের নয়, বিভিন্ন দেশের স্বর্ণও ওই ভল্টে জমা রয়েছে। কেউ চাইলেই ওই ভল্টে যেতে পারেন না। একমাত্র ইংল্যান্ডের রাজা বা রানিই ওই ভল্টে যেতে পারেন এবং জমা স্বর্ণ দেখতে পারেন।

ভারত কেন ইংল্যান্ডের কাছেই স্বর্ণ রাখল?

যে ইংরেজরা প্রায় ২০০ বছর শোষণ করেছে, তাদের কাছেই স্বর্ণ রাখার কী প্রয়োজন পড়ল ভারতের-সেসব প্রশ্নের উত্তর জানতে ঘাঁটতে হবে ইতিহাস।

স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের মধ্যে এক ভীতি জন্ম নিয়েছিল। ধারণা হয়েছিল, ভারতের বাজারে যদি কোনো বিদেশি কোম্পনিকে ব্যবসা করতে দেওয়া হয়, তবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতোই অবস্থা ঘটতে পারে। তাই ভারতের বাজার সীমাবদ্ধ করা হয়েছিল, যা ধীরে ধীরে ভারতকে অর্থনৈতিক সংকটের দিকে ঠেলে দিতে থাকে।

এক দিকে ভারতীয় বাজারে বিদেশি সংস্থার ‘নো এন্ট্রি’, অন্য দিকে বিদেশ থেকে বিভিন্ন জিনিস আমদানির কারণে ভারতের আর্থিক ভান্ডারে টান পড়তে শুরু করে। রপ্তানির থেকে আমদানির পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পায়।

ভারত বিদেশ থেকে মূলত তেল আমদানি করে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গেই এই কারবার চালায় ভারত। ১৯৯১ সালের আগে ভারতে প্রয়োজনীয় তেলের বেশির ভাগ জোগান আসত ইরাক থেকে।

কিন্তু নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে ইরাক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। একই সঙ্গে ছিল আমেরিকার চোখ রাঙানি। সব মিলিয়ে তেলের দাম হু হু করে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

ভারতে তেলের সংকট দেখা দেয়। তেল কিনতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত ডলারের। বিদেশে ভারতের টাকা চলে না। কীভাবে ডলার পাওয়া যাবে তার পথ খুঁজতে থাকে তৎকালীন সরকার।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডার (আইএমএফ) এবং বিশ্ব ব্যাঙ্ক থেকে ডলার নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না ভারতের। কিন্তু সেখান থেকে ডলার নিতে গেলে মেনে চলতে হত তাদের দেওয়া শর্ত। 

ভারত সে সময় বিকল্প পথ খুঁজতে থাকে। তখনই স্বর্ণ বিদেশি ব্যাংকে রাখার পরিকল্পনা মাথায় আসে সরকারের। তবে আমেরিকার দৃষ্টি এড়িয়ে স্বর্ণ অন্য কোনও বিদেশি ব্যাংক জমা রাখাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ।

শোনা যায়, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড এবং ব্যাংক অফ জাপানের কাছে গোপনে স্বর্ণ জমা রেখে তার বিনিময়ে ডলার নেয় ভারত। এই পুরো অপারেশনটা ভারত সরকার গোপনে করার চেষ্টা করলেও কয়েকটি সংবাদপত্রে তা ফাঁস হয়ে যায়। বিদেশে জমা রাখা স্বর্ণই ভারতে ফেরানো শুরু হয়েছে।

ভারতের কাছে এখন স্বর্ণ রয়েছে ৮২২ টন। গত পাঁচ বছরে ভারত আরও ২০৩ দশমিক ৯ টন স্বর্ণ কিনেছে। তার মধ্যে কিছু মজুত রয়েছে আরবিআইয়ের কাছে। কিছু বিদেশি ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে।

শুধু ডলারের বিনিময়ে স্বর্ণ বিদেশি ব্যাংকে জমা পড়ত তা-ই নয়। ভারত এমনি সময়েও স্বর্ণ বিদেশে রাখে। কেন ভারত সরকার বিদেশি ব্যাংক স্বর্ণ গচ্ছিত রাখে? দেশের মধ্যে বিভিন্ন অস্থিরতার কথা চিন্তা করেই সরকার দেশ থেকে স্বর্ণ সরিয়ে রাখে।

ভারত এখন কেন স্বর্ণ ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হলো?

রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ অনেক দেশই ভ্লাদিমির পুতিনের দেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর ফলে বিদেশি ব্যাংকে রাশিয়ার জমা রাখা রাশি ‘ক্লোজ়ড’ করা দেওয়া হয়েছে। ভারতও তা-ই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

;