আফগানিস্তানে মসজিদের ভেতরে বিস্ফোরণ, ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা
উত্তর আফগানিস্তানে শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) একটি সংখ্যালঘু শিয়া মসজিদের ভেতরে বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওই বিস্ফোরণে ব্যাপক সংখ্যক হতাহত হয়েছে।
বাঘলান প্রদেশের রাজধানী পোল-ই-খোমরিতে ওই বিস্ফোরণের ধরণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার না করলেও খবরটি নিশ্চিত করেছে তালেবান সরকার।
আফগানিস্তান সরকারের উপ-মুখপাত্র বিলাল করিমি এএফপিকে বলেন, ‘আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই, কিন্তু বর্তমানে আমার কাছে সব তথ্য নেই।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শহরের ইমাম জামান মসজিদে জুমার নামাজের জন্য শিয়া উপাসকদের জড়ো হওয়ার সময় বিস্ফোরণের শব্দ হয়।
আবদুল হামিদ এএফপিকে বলেন, ‘এটি একটি ভয়ানক শব্দ ছিল। বিস্ফোরণের পর বিপুল সংখ্যক নিহত ও আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোটেও ভালো নয়।’
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা সাঈদ দাউদ বলেন, ‘আমি যখন বাড়িতে ছিলাম, তখন একটি প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। এখন অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন শোনা যাচ্ছে এবং আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এলাকা থেকে লোকজনকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের আগস্টে মার্কিন-সমর্থিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে তালেবান আবার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নিরাপত্তা নাটকীয়ভাবে উন্নত হয়েছে।
কিন্তু, ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর আঞ্চলিক অধ্যায় দেশটির জন্য একটি হুমকি হয়ে রয়ে গেছে। এই আইএস অতীতেও শিয়াদের লক্ষ্যবস্তু করেছে, যাদের তারা ধর্মদ্রোহী বলে মনে করে।
তালেবান এবং আইএস একটি কঠোর সুন্নি মতাদর্শে বিশ্বাসী। তবে, কাবুলের নতুন শাসকরা জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
অন্যান্য দেশের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রেখে স্বাধীন আফগানিস্তানে শাসন করার তালেবানের আরও শালীন লক্ষ্যের পরিবর্তে আইএস একটি বৈশ্বিক খিলাফত বা ইসলামিক সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার জন্য ক্রুসেড ঘোষণা করেছে৷
তালেবান সরকারে ফিরে আসার পর থেকে কাবুলে কূটনৈতিক মিশন এবং মন্ত্রণালয় ভবনে হামলা চালিয়েছে আইএস। পাশাপাশি, এই জঙ্গী গোষ্ঠী দুই প্রাদেশিক গভর্নরকে হত্যা করেছে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে কাবুলের একটি সংখ্যালঘু শিয়া পাড়ায় একটি স্টাডি হলে বোমা হামলার জন্যও তাদের দায়ী করা হয়। জাতিসংঘের মতে, ওই হামলায় ৪৬ জন মেয়ে ও যুবতীসহ কমপক্ষে ৫৩ জন নিহত হয়েছিল।
আইএস সাম্প্রদায়িক সংঘাত উস্কে দিতে এবং অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করতে চায়। মে মাসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএস ২০২২ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৯০টিরও বেশি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছে, যার ফলে প্রায় ১,৩০০ জন আহত বা নিহত হয়েছে।