গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি পঙ্গু
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ধ্বংসস্তূপের চাপায় ও পথে পথে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে অসংখ্য মৃতদেহ। যারা এখনও জীবিত, তারা আর কতদিন বেঁচে থাকবেন তার নিশ্চয়তা নেই!
লাগাতার ইসরায়েলি হামলায় মাথার উপরের পলকে পলকে পাক খাচ্ছে মৃত্যু পরোয়ানা। অনেকেই আবার বেঁচে থেকেও ক্ষত-বিক্ষত হাত-পা নিয়েই পঙ্গু হয়ে পড়ে আছেন মৃত্যুপুরীতেই। কারও হাত আছে তো পা নেই। কারও পা আছে তো চোখ নেই। কারও কারও মুখ থেঁতলে গেছে।
বিভীষিকাময় জীবন নিয়েই পার করতে হচ্ছে দিন। ইসরাইলের পরিকল্পিত বর্বরতার শিকার হয়ে অঙ্গ হারাচ্ছেন অনেকেই। দিন দিন বেড়েই চলেছে এসব মানুষের সংখ্যা।
জেনেভাভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর এবং প্রতিবন্ধী প্রতিনিধি ব্যক্তি নেটওয়ার্ক (ডিআরপিএন) জানিয়েছে, ইসরাইলের চলমান হামলায় ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ৫ হাজারেরও বেশি বেসামরিক ফিলিস্তিনি পঙ্গু হয়ে গেছে।
মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা দুটির সাম্প্রতিক ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইসরাইলের নৃশংস হামলা ও জোরপূর্বক উচ্ছেদ নীতি গাজা উপত্যকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ওপর বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলেছে। প্রতিবন্ধী ফিলিস্তিনিরা। শারীরিকভাবে অক্ষম এ মানুষগুলো ইসরাইলের বিরামহীন তীব্র আক্রমণ থেকে নিজেদের বাঁচানোর জন্য সহজে নিরাপদেও যেতে পারে না।
ইউরো-মেড মনিটর এবং ডিআরপিএন উল্লেখ করেছে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য শারীরিকভাবে উপযুক্ত নয়। ইসরাইলি বাহিনী প্রতিবন্ধীদের পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। যেগুলোর বেশির ভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে। ফলে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলোর সরবরাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, দশকের পর দশক ধরে ইসরাইলের বর্বর এসব হামলার কারণে আগে থেকেই গাজায় এক লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ পঙ্গু ছিল। ২০০৬ সাল থেকে গাজায় ইসরাইলের অবৈধ অবরোধের কারণে তারা হুইলচেয়ার, ক্র্যাচ এবং কৃত্রিম অঙ্গগুলোর মতো সহায়ক ডিভাইসের অভাবে ভুগেছেন। পাশাপাশি অপর্যাপ্ত পুনর্বাসন কর্মসূচির ফলে অত্যন্ত কঠিন জীবনযাত্রা সহ্য করেছেন।