মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশের তলব
মিয়ানমার- বাংলাদেশ সীমান্তের চলমান সামরিক উত্তেজনা ও ওপার থেকে আসা মর্টার শেলের আঘাতে বাংলাদেশিসহ দুজনের মৃত্যুর ঘটনার জেরে ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে ঘটা হতাহতের ঘটনার কড়া জবাব জানাতে এবং বর্তমানে আশ্রয়ে থাকা বিজিবিদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে আসা মর্টার শেলের আঘাতে দুজনের মৃত্যুর ঘটনাসহ সীমান্তের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ কড়া প্রতিবাদ জানাবে।
মিয়ানমারের বিদ্রোহী দল আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি) সংঘাতের জেরে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বিজিপির ১১৩জন সদস্য।
বাংলাদেশ সীমান্তে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার যোগাযোগ করেছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এদিকে, মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনী ও বিজিবিকে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাত বাংলাদেশ সীমান্তে উৎকণ্ঠা বাড়াচ্ছে। মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে আসা মর্টার শেলের আঘাতে দুজনের মৃত্যুর ঘটনা বাংলাদেশকে ক্ষুব্ধ করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা দলে দলে বান্দরবানে পালিয়ে এসেছেন। তাদের নিরস্ত্র করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বান্দরবানে আশ্রয় নেওয়া ওই সীমান্তরক্ষীদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার এরই মধ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার নাফ নদী ব্যবহার করে নৌপথ দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া তাদের সীমান্তরক্ষীদের (বিজিপি) ফিরিয়ে নিতে চায়।
এর আগে সোমবার সকালে নেপিডো থেকে দেশটির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুইন উ ফোনে ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এ সময় মিয়ানমারের প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যদের ব্যাপারে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়ার পাশাপাশি তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কথা বলেন। মিয়ানমারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী টেকনাফ থেকে নাফ নদী হয়ে মংডুতে বিজিপি সদস্যদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। এ সময় তিনি জানান, রাখাইনে আরাকান আর্মির সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াই অব্যাহত থাকলেও মংডু এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।