পাকিস্তানে প্রার্থীদের হয়রানি ও সহিংসতার বিষয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগ
পাকিস্তানের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের আগে সন্ত্রাসী হামলা ও সহিংস ঘটনা বৃদ্ধির কারণে মঙ্গলবার (৬ জানুয়ারি) উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার লিজ থ্রোসেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দল এবং প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সমস্ত সহিংসতার নিন্দা জানাই এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অর্থবহ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক স্বাধীনতাগুলোকে সমুন্নত রাখার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।’
জাতিসংঘ কর্মকর্তার এই মন্তব্য এমন সময় আসলো যখন দেশটিতে সাধারণ নির্বাচনের প্রচারাভিযানে সহিংসতা দেখা দিয়েছে, বোমা হামলা এবং বন্দুক হামলার মাধ্যমে অনেক প্রার্থী এবং ভোটারকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
জিও নিউজ জানিয়েছে, সম্প্রতি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই), পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), ন্যাশনাল পার্টি (এনপি), জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলাম-ফজল (জেইউআই-এফ), আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি) এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজসহ (পিএমএল-এন) বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের এবং নির্বাচনী কার্যক্রমকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি হামলা হয়েছে।
গত মাসে কেপির বাজাউর জেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী রেহান জেব খানকে গুলি করে হত্যার পর ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির এনএ-৮ এবং খাইবার পাখতুনখোয়ার পিকে-২২ নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচন স্থগিত করে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
এ ছাড়া রাজনৈতিক দল ও পুলিশের সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে পাকিস্তানজুড়ে।
গত সপ্তাহে খাইবার পাখতুনখোয়ার কারাক জেলায় পুলিশের সঙ্গে পিটিআই কর্মীদের সংঘর্ষের পর অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন।
এর আগে, পিপিপি এবং মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি) কর্মীরা করাচিতে দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, যার ফলে একজন নিহত এবং একাধিক আহত হয়।
বিবৃতিতে জাতিসংঘের মুখপাত্র জোর দিয়ে বলেছেন, ‘কম নয় ২৪টি ঘটনা ঘটেছে, যেখানে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো রাজনৈতিক দলগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। তাই কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ অবাধ ও নিরপেক্ষ ভোট নিশ্চিত করতে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং পরিবেশের প্রতি পুনরায় প্রতিশ্রুতি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।
পিটিআইয়ের সমর্থকদের হয়রানি, গ্রেপ্তার এবং দীর্ঘায়িত আটকের ধরণ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, জাতিসংঘ আশা করে যে, দেশের উচ্চ আদালতগুলো পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলাগুলো যত্ন সহকারে পর্যালোচনা করবে। কর্তৃপক্ষের উচিত যথাযথ প্রক্রিয়া এবং ন্যায্য বিচারের অধিকার এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতাগুলোর সঙ্গে তার দেশের সম্মতি নিশ্চিত করা।’
এছাড়াও রাজনৈতিক দলগুলোকে নারী প্রার্থীদের জন্য বৈধ ৫ কোটা পূরণের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।