পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে পিটিআইয়ের ৫ অপরিচিত প্রার্থী
পাকিস্তানের ৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত মাসগুলোতে চার বছরের নির্বাসনের পর পিএমএল-এন নেতা নওয়াজ শরিফের প্রত্যাবর্তন, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের কারাবাস এবং পরবর্তীতে তার দল ভেঙে দেওয়াসক নানা ক্ষেত্রে দেশটির রাজনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করা গেছে।
সরকারের দমন নীতির কারণে পিটিআইয়ের দুর্দশার কারণে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত প্রার্থী আবির্ভূত হয়েছে।
নির্বাচনে পিটিআইয়ের পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী এমন পাঁচজন প্রার্থীকে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডন। এরা হলেন-মিয়া আজহার, রেহানা ইমতিয়াজ দার, মেহের বানু কোরেশী, উমায়ের খান নিয়াজী এবং শের আফজাল মারওয়াত।
লাহোরের ১২৯ নির্বাচনী আসনের জন্য জন্য ছেলে পিটিআই নেতা হাম্মাদ আজহারের পরিবর্তে দলীয় মনোনয়ন পান তার বাবা মিয়া আজহার। ৮২ বছর বয়সি এই পিটিআই প্রার্থী সম্ভবত এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সবচেয়ে বয়স্ক প্রার্থীদের মধ্যে একজন। কিন্তু, পাকিস্তানের রাজনীতিতে তিনি অপরিচিত নন।
পাঞ্জাবের সাবেক গভর্নর, লাহোরের মেয়র এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কায়েদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এই মিয়া আজহার ২০১১ সালে পিটিআইতে যোগ দিয়েছিলেন।
গত মে মাসে পিটিআই অভিযোগ করেছিল যে হাম্মদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মিয়া আজহারকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল যে, যদি তার ছেলে গ্রেপ্তারের জন্য আত্মসমর্পণ না করে তবে তার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে।
এর পর গত জুনে হাম্মাদ বলেছিলেন, তার বাবাকে পুলিশ এবং অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তুলে নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। তিনি পরে জানান যে, তার বাবাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পরে নিরাপদে ফিরে এসেছেন তিনি।
একজন গৃহবধূ, সাবেক পিটিআই নেতা উসমান দারের মা রেহানা ইমতিয়াজ দার প্রথমবারের মতো এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
পিএমএল-এন নেতা খাজা আসিফ এবং শিয়ালকোট পুলিশ তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার পরে তিনি সম্প্রতি রাজনৈতিক স্পটলাইটে আসেন। পরে তিনি অভিযোগ করেন যে, তার অন্য ছেলে উমরকে নির্বাচন থেকে সরাতে লাহোর থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
নির্বাচনী আসন নং ৭১ থেকে এবারের নির্বাচনে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য দৃঢ় সংকল্প প্রকাশ করেছেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেছেন, গত ৯ মে’র সহিংস ঘটনার পরে পিএমএল-এন নেতার নির্দেশে তার ছেলেদের অপহরণ এবং নির্যাতন করা হয়েছিল, এই কারণেই তিনি সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মেহের বানু কুরেশি পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির মেয়ে। তিনি নির্বাচনী আসন নং ১৫১ থেকে পিটিআই প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য খুব একটা পরিচিত নন।
তিনি ২০২২ সালের উপনির্বাচনে নির্বাচনী আসন নং ১৫৭ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পিপিপির আলী মুসা গিলানির কাছে হেরেছিলেন।
পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরানের নিজ শহর মিয়ানওয়ালিতে পিটিআই তার সবচেয়ে উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় তরুণ একজন ব্যারিস্টার উমায়ের খান নিয়াজিকে প্রার্থী করেছে।
২০২২ সাল পর্যন্ত ব্যারিস্টার উমায়ের খান নিয়াজী নীরবে নয় বছর ধরে দলের আইনি পরামর্শক হিসাবে পর্দার আড়ালে কাজ করে গেছেন। যাইহোক, ইমরান এবং তার দলের আইনি ঝামেলা তাকে লাইমলাইটে নিয়ে আসে। নিয়াজী নির্বাচনী আসন নং ১৫৭ থেকে দলের প্রাথমিক প্রার্থী।
পিটিআইয়ের আরেক আইনজীবী শের আফজাল মারওয়াতও প্রথমবারের মতো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
গত বছরের নভেম্বরে তিনি সাবেক ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রধান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং পরে একজন সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিযুক্ত হন।
দীর্ঘদিন ধরে পিটিআইয়ের সদস্য মারওয়াত। তিনি, সাবেক ক্ষমতাসীন দল গত ৯ মে’র ঘটনার পরে তিনি লাইমলাইটে চলে আসেন। মারওয়াত তোশাখানা মামলায় ইমরানের পক্ষে লড়াই করেছিলেন, যেখানে আদালত ইমরান কে তিন বছরের জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছিল।