নাভালনির মৃত্যুর তদন্তের মেয়াদ বাড়িয়েছে রাশিয়া
রাশিয়ার তদন্ত কর্মকর্তারা দেশটির প্রয়াত বিরোধী দলীয় নেতা আলেক্সি নাভালনির মা এবং তার আইনজীবীদের বলেছেন, কারাগারে তার মৃত্যুর তদন্তের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সোমবার নাভালনির মুখপাত্র রয়টার্সকে এ কথা জানিয়েছেন।
নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করা এক বার্তায় বলেন, ‘এ তদন্ত কতো দিন চলবে তা জানানো হয়নি। নাভালনির মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। এক্ষেত্রে তারা মিথ্যা বলছে এবং সময় ক্ষেপণ করছে।’
এদিকে, সাইবেরিয়ার একটি হাসপাতালের মর্গে রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির থেঁতলানো মরদেহ পাওয়া গেছে বলে সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ। মৃত্যুর দুই দিন পর তার মরদেহের সন্ধান পাওয়া গেছে।
রাশিয়ায় পুতিনবিরোধী গণমাধ্যম নোভায়া গেজেটার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্যারামেডিক বলেছেন, নাভালনির মরদেহ সালেখার্ড অঞ্চলের ক্লিনিক্যাল হাসপাতালে আনা হয়। মরদেহের মাথা ও বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ‘যারা মরদেহটি নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে এমন আঘাত খিঁচুনির কারণে হতে পারে। লোকটির খিঁচুনি শুরু হলে তাকে শান্ত রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ সময় শরীরে আঘাত লাগে। বুকেও ছিল আঘাতের দাগ। এরপর সম্ভবত হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু ঘটে।’
রুশ কারা কর্মকর্তাদের মতে, শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রুশ আর্কটিকের নৃশংস কারাগার হিসেবে কুখ্যাত আইকে ৩-তে কিছুক্ষণ হাঁটার পর অসুস্থ হয়ে মারা যান ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত নাভালনি।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা জানান, এখনও ময়নাতদন্ত হয়নি। এ ছাড়া মস্কো থেকে দুটি অনির্ধারিত ফ্লাইট শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সালেখার্ডে পৌঁছেছিল। সম্ভবত ময়নাতদন্ত বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এসেছিল সেই ফ্লাইট।
গণমাধ্যমকর্মীরা আরও জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে পৌঁছেছিল প্রথম বিমান। তদন্ত কমিটির গাড়িও তখন দেখা গেছে। দেড় ঘণ্টা পর পৌঁছেছে দ্বিতীয় বিমান।
রুশ পর্যবেক্ষকদের ধারণা, সরকারের পক্ষে ময়নাতদন্তের বিশেষজ্ঞ দলকে মস্কো থেকে পাঠানো হতে পারে। তারা মৃত্যু সম্পর্কে এমন একটি সনদপত্র দেবে যাতে ক্রেমলিন সন্তুষ্ট হয়।
পর্যবেক্ষকেরা আরও বলেন, আইকে ৩ থেকে একজন মৃত বন্দীর লাশ পৌরসভার মর্গের পরিবর্তে হাসপাতালের মর্গে পাঠানো কিছুটা অস্বাভাবিক। ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে যেখানে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ সেখানেই এখন চলছে বিরল প্রতিবাদ। বিক্ষোভ হচ্ছে রাশিয়ার বাইরেও।