যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে টিকটক নিষিদ্ধের বিল পাস
যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে সংক্ষিপ্ত ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা সংক্রান্ত একটি বিল পাস হয়েছে। বুধবার (১৩ মার্চ) মার্কিন পার্লামেন্ট কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে (প্রতিনিধি পরিষদ) ৩৫২-৬৫ ভোটে পাস বিলটি পাস হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস একটি যুগান্তকারী বিল পাস করেছে যা সমগ্র আমেরিকা জুড়ে সংক্ষিপ্ত ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক ব্যবহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। বিলটি কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে পাস হলেও এটি এখন যাবে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে। এবং এটিকে আইনে পরিণত হওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাক্ষর করতে হবে।
এদিকে কংগ্রেসের আইনপ্রণেতারা জানিয়েছেন, টিকটক এ বার্তা দেয়ার পর থেকে প্রতিদিন তাদের কাছে অসংখ্য ফোনকল আসছে। তবে মার্কিন প্রশাসন তাদের অবস্থানে অনড়। গত বুধবার প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারিন জেন-পিয়েরে হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমরা চাই সিনেট দ্রুত এ ইস্যুতে পদক্ষেপ নিক।’
প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাসের কিছুক্ষণ পর এক ভিডিওবার্তায় বাইটড্যান্সের শীর্ষ নির্বাহী শৌ জি চিউ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা দেশটির অর্থনীতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। এতে একদিকে ক্ষুদ্র-খুচরা ব্যবসায়ীরা শত শত কোটি ডলার হারাবে অন্যদিকে অন্তত ৩ লাখ মার্কিনির কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়বে।’ ভিডিওবার্তায় শৌ জি চিউ আরও বলেন, এ নিষেধাজ্ঞা ঠেকাতে শিগগিরই আইনি লড়াই শুরু করবে বাইটড্যান্স।
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টিকটক নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘টিকটক যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে এমন কোনো প্রমাণ দেশটির সরকার পায়নি, তারপরও ওয়াশিংটন অ্যাপটি নিষিদ্ধ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।’
যদিও মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ পরিষদে শেষ পর্যন্ত বিলটির বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত হবে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। কারণ সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিলটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
টিকটক নিয়ে এর আগেও চীন-মার্কিন দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছেছিল। গত বছরই যুক্তরাষ্ট্র এই ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটিকে আল্টিমেটাম দিয়েছিল যেন তারা যেন চীনা কোম্পানির মালিকানা থেকে বেরিয়ে আসে। তা নাহলে যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয়ভাবেই এটি নিষিদ্ধ করা হবে বলে সতর্ক করা হয়েছিল। যার ফলশ্রুতিতেই এই নিম্নকক্ষে এই বিলটি পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্র।