জাতিসংঘে যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তাব জমা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
গাজায় জিম্মিদের মুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব জমা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রয়টার্সকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমাদের একটি প্রস্তাব আছে, যা আমরা এখনই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সামনে পেশ করেছি। কারণ, প্রস্তাবটির সঙ্গে জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি সংশ্লিষ্টতা থাকায় এটি অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায় এবং আমরা খুব বেশি আশা করি যে, দেশগুলো এটিকে সমর্থন করবে।’
তিনি বুধবার সন্ধ্যায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করতে সৌদি আরব সফরের সময় সৌদি সংবাদমাধ্যম আল হাদাথ’কে বলেন, ‘আমি মনে করি এটি একটি শক্তিশালী বার্তা। এটি একটি শক্তিশালী সংকেত পাঠাবে।’
উল্লেখ্য, ইসরায়েলের প্রধান সমর্থক হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান থেকে বিশ্ব সংস্থাকে বাধা দিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করেছিল দেশটি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই, আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে এবং তার আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু, একই সঙ্গে আমরা বেসামরিক নাগরিকরা যারা মারাতকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং যারা ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে ভয়ঙ্করভাবে ভুগছে, তাদের দিকে মনোনিবেশ করেছি। আমাদের অগ্রাধিকার বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করা। আমরা যেন তাদের মানবিক সহায়তা পাওয়া সুগম করতে পারি।’
ব্লিঙ্কেন ইসরায়েল অন্তর্ভুক্ত আঞ্চলিক সফরের প্রথম ধাপে বুধবার সৌদি আরবে অবতরণের পর দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে আলোচনা করেন। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গেও সাক্ষাত করেছেন তিনি। তারপর বৃহস্পতিবার সবশেষে তিনি মিশর সফর করছেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে এটি তার ষষ্ঠ সফর।
ব্লিঙ্কেনের সফর কাতারে আলোচনার সমান্তরালভাবে চলছে। সেখানে মধ্যস্থতাকারীরা বুধবার তৃতীয় দিনের জন্য একটি যুদ্ধবিরতি সুরক্ষিত করার নতুন প্রচেষ্টায় মিলিত হয়েছিলেন।
ইসরায়েলের সরকারী পরিসংখ্যানের এএফপির সমীক্ষা অনুযায়ী গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলে প্রায় ১,১৬০ জন নিহত হওয়ার পর রক্তক্ষয়ী গাজা যুদ্ধ শুরু হয়।
হামাস যোদ্ধারা প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে। যাদের মধ্যে ১৩০ জন গাজায় রয়ে গেছে বলে বিশ্বাস করে ইসরায়েল। এদের মধ্যে ৩৩ জন নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এরপর হামাসের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব মতে, প্রায় ৩২ হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।