হামলায় আইএস দায়ী যুক্তরাষ্ট্রের দাবি নিয়ে সন্দেহ মস্কোর
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় কনসার্ট হলে মুখোশ পরা বন্দুকধারীদের হামলায় এখন পর্যন্ত ১৩৭ জন নিহত হয়েছেন। মস্কোয় গত ২০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। যুক্তরাষ্ট্রও আইএসের দাবিকে সঠিক বলছে। তবে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের দাবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।
সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হামলাকারীদের সঙ্গে ইসলামপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ না করলেও হামলাকারীরা ইউক্রেনে পালানোর চেষ্টা করছিল বলে জানিয়েছেন।
এদিকে, মস্কোয় কনসার্ট হলে ভয়াবহ হামলার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতে চাইছে ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলো বলে মন্তব্য করেছেন রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুতনিকের মূল প্রতিষ্ঠান রোসিয়া সেগোদনিয়ার প্রধান সম্পাদক মার্গারিতা সিমোনিয়ান। তিনি বলেছেন, রুশ কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে হামলাকারীদের নাম জানতে পেরেছে। জিজ্ঞাসাবাদে এই ‘সন্ত্রাসীরা’ সব তথ্য দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র অ্যাদ্রেইন ওয়াটসন বলেন, চলতি মাসের শুরুর দিকে, মার্কিন সরকারের কাছে মস্কোতে একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী হামলার তথ্য ছিল। নীতিগতভাবে সতর্ক করার দায়িত্ব থেকে এ ব্যাপারে রুশ কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছিল।
তবে কোন ধরনের হামলার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল তা নিশ্চিত করা হয়নি। যদিও দুই সপ্তাহ আগে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে মস্কোতে বসবাসরত আমেরিকানদের বড় সমাবেশ এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছিল; বিশেষভাবে কনসার্ট সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছিল।
পুতিন অভিযোগ করেছেন, আটক চারজন ইউক্রেনে পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে এই হামলার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে কিয়েভ। কিয়েভের কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছে, ইউক্রেনে হামলা বাড়াতে একে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করতে পারে মস্কো।
মার্গারিতা সিমোনিয়ানের ভাষ্যমতে, হামলাকারীরা এমনভাবে হামলা চালিয়েছেন যেন পশ্চিমারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বোঝাতে পারে, এই হামলার পেছনে আইএসের হাত রয়েছে। তবে হামলায় সন্ত্রাসী সংগঠনটি জড়িত নয়। এই হামলা চালিয়েছেন ইউক্রেনীয়রা।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আটক চারজনের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদে’ জড়িত থাকার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছে রাশিয়া। অভিযুক্তরা হলেন—দালেরদজন মিরজোয়েভ, সাইদাকরামি মুরোদালি রাচাবালিজোদা, সামসিদিন ফারিদুনি এবং মোহাম্মদসোবির ফায়জোভ। রোববার তাদের আদালতে তোলা হয়। ইতোমধ্যে দুজনের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে।