নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
|
ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক
যুদ্ধাপরাধের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর ব্রিটিশ আইনজীবী করিম আহমেদ খান কিউসি।
সোমবার (২০ মে) দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তিনি এই আবেদন করেন। খবর: বিবিসির।
বিজ্ঞাপন
করিম খান বলেন, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও হামাস নেতারা গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী।
ইসরায়েলের যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করায় আইসিসির প্রসিকিউটরের নিন্দা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
আইসিসির প্রসিকিউটরের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদনের রায় কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।
আইসিসি গত তিন বছর ধরে অধিকৃত ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের তদন্ত করে আসছে। সাম্প্রতিককালে হামাসের কর্মকাণ্ডও তদন্ত করেছে এই সংস্থাটি।
নেতানিয়াহু সম্প্রতি ইসরায়েলের সিনিয়র ব্যক্তিদের আইসিসির ওয়ান্টেড তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনাকে ‘ঐতিহাসিক ক্ষোভ’ বলে অভিহিত করেছেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজার শাসক দল হামাস। এতে এক হাজার তিন শ ইসরায়েলি নিহত ও তিন হাজার ৪০০ জন আহত হয়। ওই হামলার জবাবে গাজায় বোমাবৃষ্টি অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। দেশটির ছোড়া গোলায় বিপুলসংখ্যক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রায় ১৩ হাজার শিশুসহ মোট ৩০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল।
এদিকে হামাসের হাতে জিম্মিদের মধ্যে ১৩০ জন এখনো গাজায় আছেন এবং ৩১ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়ার একটি সমুদ্র সৈকতে ১৫০ টিরও বেশি তিমি আটকা পড়েছে। এদের মধ্যে ৬৭ তিমির মৃত্যু হয়েছে এবং আরো ৯০টি তিমি মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে। আটকে পড়া তিমিগুলো ‘ফলস কিলার হোয়েল’ নামে পরিচিত।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের এক প্রতিবেদনে এ খবর প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) তাসমানিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূলে আর্থার রিভারের নিকটে সমুদ্র সৈকতে ১৫০ টিরও বেশি তিমি আটকা পড়েছে। তিমিগুলো আনুমানিক ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা ধরে আটকে আছে। এর মধ্যে ৬৭টি তিমি এরই মধ্যে মারা গেছে। বাকিগুলোও মৃত্যুর ঝুঁকিতে। জীবিত উদ্ধারে জোর চেষ্টা চলছে।
তাসমানিয়ার পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের একজন লিয়াজোঁ অফিসার ব্রেন্ডন ক্লার্ক বলেছেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ হলেও বিশেষজ্ঞরা উদ্ধারের বিকল্পগুলোকে মূল্যায়ন করেছেন। তারা বলছেন তিমিগুলোকে সরাসরি সমুদ্রে পুনরায় ভাসিয়ে দেওয়া ভীষণ চ্যালেঞ্জিং এক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের জন্যও বেশ ঝুঁকি রয়েছে।
ক্লার্ক বলেন, আমরা বর্তমানে পরিস্থিতি সাবধানতার সাথে মূল্যায়ন করছি। কিন্তু এত দূরবর্তী স্থানে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া এবং কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করা আমাদের কার্যক্রমকে জটিল করে তুলছে।
কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে ঘটনাস্থল এড়িয়ে চলতে বলেছে এবং রাস্তাঘাটে প্রবেশাধিকার সীমিত করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জোসেলিন ফ্লিন্ট অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে জানান, বুধবার সকালে আমার ছেলে রাতে মাছ ধরার সময় তিমিগুলোকে দেখতে পান। সে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে, অনেকগুলো তিমি আটকে পড়েছে। সেখানে বাচ্চা তিমিও আছে... তাদের পরিবার আছে। তাদের চোখ খোলা, তারা তার দিকে তাকিয়ে আছে, যেন সাহায্য চাইছে।
এদিকে তিমিগুলোর আটকে পড়ার কারণ এখনও স্পষ্ট না হলেও ধারণা করা হচ্ছে- বিভ্রান্তি, অসুস্থতা, আঘাত অথবা শিকারীদের হাত থেকে পালিয়ে আসার সময় এগুলো আটকে গেছে।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক বছরগুলোকে তাসমানিয়ায় এমন ঘটনা বেশ কয়েকটি ঘটেছে। যার মধ্যে ২০২০ সালে দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাও রয়েছে। তবে গত ৫০ বছরে একসাথে এতগুলো ফলস কিলার হোয়েল আটকে পড়ার ঘটনা ঘটেনি। ফলস কিলার হোয়েল বৃহত্তম ডলফিন প্রজাতির মধ্যে একটি। এটি ৬ মিটার লম্বা এবং ১.৫ টন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
আফগান সীমান্তে পাকিস্তানের সেনা অভিযান, ৩০ জঙ্গি নিহত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
|
ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক
আফগানিস্তান সীমান্তের কাছে এক সেনা অভিযান চালিয়ে কমপক্ষে ৩০ জন জঙ্গিকে হত্যার দাবি জানিয়েছে পাকিস্তানি সেনা বাহিনী। মঙ্গলবার গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে আফগান সীমান্ত সংলগ্ন গোলযোগপূর্ণ অঞ্চলে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার সীমান্তবর্তী এলাকা ওয়াজিরিস্তানে সেনা অভিযান চালিয়েছে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী। এ অভিযানে অন্তত ৩০ জন জঙ্গী নিহত হয়েছে বলে সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানির সেনা বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে অভিযানটি প্রতিবেশী আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী অশান্ত দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের উপজাতীয় জেলায় পরিচালিত হয়েছিল। এই এলাকায় অন্য কোনও জঙ্গি পাওয়া গেলে তা নির্মূল করার জন্য একটি স্যানিটাইজেশন অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদের হুমকি নির্মূল করতে বদ্ধপরিকর।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা বেড়েছে। এ পর্যন্ত ৪৪৪টি সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ৬৮৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ইসলামাবাদ আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপির অনুগত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ করেছে। তবে কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে আরও ৬ ফিলিস্তিনির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর ফলে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৮ হাজার ৩০০ জনে পৌঁছে গেছে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু ।
আনাদোলু প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যকর্মী ও উদ্ধারকর্মীরা গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে আরও ৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছেন। এর ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধে নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ৪৮ হাজার ২৯১ জনে পৌঁছেছে বলে মঙ্গলবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। আমরা ধারণা করছি ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেক মরদেহ রয়েছে।
দীর্ঘ ১৫ মাসের বেশি সময় পর গত মাসেই ফিলিস্তিনের গাজায় কার্যকর হয়েছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি। তবে এরপর থেকেই সেখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে একের পর এক উদ্ধার হচ্ছে নিহতদের মরদেহ। আর এতে করে বেড়েই চলেছে প্রাণহানির সংখ্যা।
উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তিন-পর্যায়ের এই যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্যে বন্দি বিনিময় এবং স্থায়ী শান্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের লক্ষ্যমাত্রাও রয়েছে।
ধেয়ে আসছে ‘শহর খুনি’ গ্রহাণু, ভারতসহ বাংলাদেশের ক্ষতির শঙ্কা!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
|
ভারতসহ বাংলাদেশের ক্ষতির শঙ্কা!
আন্তর্জাতিক
পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়তে পারে অতিকায় গ্রহাণু, নিমেষে মুছে যেতে পারে একাধিক দেশ! জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের এমন পূর্বাভাসে আতঙ্কিত গোটা বিশ্ব। গ্রহাণুর আঘাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কোন প্রান্ত? এর থেকে বাঁচার নেই কি কোনও উপায়? ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ।
যে গ্রহাণুর ধাক্কায় পৃথিবী তছনছ হওয়ার আশঙ্কা, তার নাম ২০২৪ ওয়াইআর৪। সম্প্রতি এর হদিস মিলতেই মহাকাশ গবেষকদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। গ্রহাণুটি চওড়ায় ৪০ থেকে ১০০ মিটার বলে জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। তারা এর নাম দিয়েছেন ‘শহরের খুনি’ বা ‘সিটি কিলার’।
২০২৪ ওয়াইআর৪-এর ওপর কড়া নজর রেখে চলেছে বিশ্বের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। আমেরিকার নাসা, রাশিয়ার রসকসমস, চিনের সিএনএসএ থেকে শুরু করে ভারতের ইসরো। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী, ২০৩২ সাল নাগাদ পৃথিবীর আঘাত হানতে পারে গ্রহাণু। আর ঠিক তখনই ধাক্কা লাগার আশঙ্কা করছেন তারা।
র্যাঙ্কিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রহাণুটি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া, আরব সাগর অথবা আফ্রিকার যে কোনও জায়গায় আছড়ে পড়তে পারে। এর জন্য বড় ক্ষতি হতে পারে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া, সুদান, নাইজ়েরিয়া, ভেনেজ়ুয়েলা, কলম্বিয়া এবং ইকুয়েডরের। তবে এই তালিকা যে কোনও সময়ে বদলে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে নাসা।
নাসা জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে টেলিস্কোপের সাহায্যে গ্রহাণুটিকে ভালভাবে পর্যালোচনা করার সুযোগ পাওয়া যাবে। তার পর কিছু দিনের জন্য মহাশূন্যে অনেকটা দূরে চলে যাবে ২০২৪ ওয়াইআর৪। তাই এর ওপর নজরদারিতে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
মহাকাশ গবেষকদের দাবি, গ্রহাণুটি মহাশূন্যে হারিয়ে গেলে ফের তার গতিপথ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন হবে। সে ক্ষেত্রে ২০২৮ সাল পর্যন্ত তাঁদের অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে ২০২৪ ওয়াইআর৪-এর গতি এবং কক্ষপথই বলে দেবে এটি পৃথিবীর জন্য কতটা বিপজ্জনক, বলছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে গ্রহাণুটির ছবি তুলে নিতে চাইছেন। এতে মহাজাগতিক বস্তুটিকে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করার কাজ অনেক বেশি সহজ হবে। পৃথিবীর থেকে এর বর্তমান দূরত্ব এখনও পরিমাপ করতে পারেননি মহাকাশ গবেষকেরা। ফলে ২০২৪ ওয়াইআর৪ মানবজাতির জন্য কতটা বিপজ্জনক, তা এখনই নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছে না কোনও সংস্থাই।
তবে একটি ব্যাপারে দুনিয়ার তাবড় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একমত। সেটা হল গ্রহাণুটির আকার, গতি এবং গঠনের ওপর নির্ভর করবে বিপদ। ২০২৪ ওয়াইআর৪ আকারে অস্বাভাবিক বড় হলে ধাক্কার অভিঘাত সহ্য করা যথেষ্ট কঠিন হবে। তবে এ ব্যাপারে এখনই কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করতে চাইছেন না তারা।
বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা লাগার পরিবর্তে এর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়বে ওই গ্রহাণু। আর সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে হবে বিরাট বিস্ফোরণ, যা ৮০ লক্ষ টন ট্রাই নাইট্রো টলুইনের (টিএনটি) সমতুল্য হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ জাপানের হিরোশিমায় ফাটা পরমাণু বোমার থেকে ৫০০ গুণ বেশি শক্তিশালী বিস্ফোরণ সইতে হবে পৃথিবীকে।
বিশেষজ্ঞেরা আরও জানিয়েছেন, ওই বিস্ফোরণ কোথায় হচ্ছে তার উপর নির্ভর করবে এর অভিঘাতের পরিমাণ। তবে সাধারণ ভাবে ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে সেটি বিরাট ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তাঁরা। আর তাই পৃথিবীর কোন প্রান্ত ‘গ্রহাণু দুর্ঘটনাপ্রবণ’, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
২০২৪ ওয়াইআর৪-এর ঝুঁকির বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভে প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার ডেভিড র্যাঙ্কিন এবং তাঁর দলকে দিয়েছে নাসা। গ্রহাণুটির গতিবেগ হিসাব কষে পৃথিবীর কোন কোন এলাকায় এটির আছড়ে পড়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি, সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট দিয়েছেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট রিপোর্টটি প্রকাশ্যে এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।
গ্রহাণু ধাক্কার এই সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে মানবজাতিকে বাঁচাতে সমস্ত আন্তর্জাতিক সংগঠনকে একজোট হয়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। ২০২৪ ওয়াইআর৪ পৃথিবীর দিকে ধেয়ে এলে তাকে কী ভাবে ঠেকানো যাবে, তার নীল নকশা অবশ্য এখনও তৈরি করা যায়নি। ফলে যত দিন গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে বিপদের আশঙ্কা।
পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহাণু বা ধূমকেতুর ধাক্কা লাগার সম্ভাব্য বিপদের পরিমাণ করে থাকে টোরিনো স্কেল। এতে ১১ পয়েন্টে রেটিং দেওয়া হয়। রেটিং যত বেশি হবে ততই আঘাত এবং ধ্বংসের ঝুঁকি বেশি হবে বলে মানেন দুনিয়ার তামাম জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
গ্রহাণুটির হদিস মেলার পর পৃথিবীর সঙ্গে এর আঘাতের আশঙ্কা ১.২ শতাংশ বলে অনুমান করা হয়েছিল। পরে এই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় ২.৩ শতাংশ। বর্তমানে সেটি সামান্য নেমে দুই শতাংশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অর্থাৎ গ্রহাণুটির পৃথিবীর গা ঘেঁষে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা ৯৮ শতাংশ।
আশ্চর্যজনক বিষয় হল, বিজ্ঞানের বরপুত্র তথা মাধ্যাকর্ষণের আবিষ্কর্তা আইজ্যাক নিউটনও একটি চিঠিতে পৃথিবীর ধ্বংসের কথা বলেছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, ২০৬০ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে মাত্র ৩৫ বছর পর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে পারে গোটা বিশ্ব। আর সেটা হবে গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষে। ১৭০৪ সালে ওই চিঠি লেখেন নিউটন।
পৃথিবীর ধ্বংসের দিনক্ষণ গণনার পদ্ধতিটিও চিঠিতে উল্লেখ করেন নিউটন। তাঁর দাবি ছিল, বাইবেলের ‘বুক অফ ড্যানিয়েল’-এ উল্লেখ করা তারিখ এবং সময় গণনা করে নির্দিষ্ট বছরটি নির্ধারণ করা গিয়েছে। নিউটনের লেখা চিঠিটি বর্তমানে জেরুসালেমের হিব্রু ইউনিভার্সিটির সংগ্রহশালায় সুরক্ষিত রয়েছে।
নিউটনের মতে, রোমান সাম্রাজ্য পতনের ১২৬০ বছর পর পৃথিবী ধ্বংসের লীলাখেলায় মেতে উঠতে পারে। নিউটন যে সময়ে এই গণনা করেছিলেন, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে এই সময়কে অনেক মনে হয়েছিল। তিনি ভেবেছিলেন যে, কয়েক বছরের মধ্যেই এ সব নিয়ে আলোচনা বন্ধ হয়ে যাবে।
নাসার তরফে জানানো হয়েছে, ১০০ বছর পর পর মাঝারি আকারের গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ হয়। বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এসে তাতে আগুন ধরে যায়। খুব কম অংশ জল অথবা স্থলভাগে এসে পড়ে। তীব্র গতিবেগে আসার ফলে সেখানকার এলাকায় গ্রহাণুর ওজনের কারণে গর্ত তৈরি হতে পারে।
বর্তমানে ২০২৪ ওয়াইআর৪-র সঙ্গে পৃথিবীর ধাক্কা লাগা সংক্রান্ত রেটিং তিন বলে ধরা হয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গ্রহাণুটির গতিপথ সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে রেটিং শূন্যে নেমে যেতে পারে। তখন আর এটির পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ার কোনও আশঙ্কাই থাকবে না।
আশ্চর্যজনক বিষয় হল, বিজ্ঞানের বরপুত্র তথা মাধ্যাকর্ষণের আবিষ্কর্তা আইজ্যাক নিউটনও একটি চিঠিতে পৃথিবীর ধ্বংসের কথা বলেছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, ২০৬০ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে মাত্র ৩৫ বছর পর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে পারে গোটা বিশ্ব। আর সেটা হবে গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষে। ১৭০৪ সালে ওই চিঠি লেখেন নিউটন।