অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের ছাদে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ, মুসলিম সিনেটরের পদত্যাগ
![ছবি: সংগৃহীত](https://imaginary.barta24.com/resize?width=800&height=450&format=webp&quality=85&path=uploads/news/2024/Jul/04/1720090979891.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
অস্ট্রেলিয়ায় ফিলিস্তিনপন্থীদের আন্দোলনের রেশ যেন বেড়েই চলছে। এবার দেশটির রাজধানী ক্যানবেরায়অবস্থিত সংসদ ভবনের ছাদে উঠে পড়েন ফিলিস্তিনের পক্ষ নেওয়া বিক্ষোভকারীরা। এ সময় বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন ছাদে ব্যানার টাঙিয়ে দেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) কালো পোশাকে চার বিক্ষোভকারী প্রায় ১ ঘণ্টা সংসদ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন। পরে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর চেষ্টায় তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের ঝুলানো ব্যানারগুলোর একটিতে লেখা ছিল, ‘নদী থেকে সমুদ্র, ফিলিস্তিন থাকবে মুক্ত।’ খবর আল জাজিরা।
ফিলিস্তিনকে সমর্থন করে ভোট দেওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম সিনেটর ফাতিমা পেম্যান দেশটির ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ ঘটনার রেশ ধরেই বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনের ছাদে অবস্থান নেন।
বিক্ষোভকারীদের একজন ছাদ থেকে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় ইসরায়েল সরকার গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাপরাধ করছে। অস্ট্রেলিয়া সরকার সমর্থনের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে সামিল হচ্ছে।
![](https://imaginary.barta24.com/resize?width=800&quality=100&path=uploads/news/2024/Jul/04/1720091062702.jpg)
এদিকে বিবিসির এক খবরে জানানো হয়, অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতাসীন দল লেবার পার্টি থেকে সিনেটর ফাতিমা পেম্যান পদত্যাগ করেছেন। এর আগে সোমবার দলটি তাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বরখাস্ত করে। ফিলিস্তিনকে সমর্থন করে সিনেটে উত্থাপিত একটি প্রস্তাবে নিজ দলের বিপক্ষে গিয়ে ভোট দেওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
২৯ বছর বয়সী এই মুসলিম আইনপ্রণেতা আফগানিস্তান থেকে ১৯৯৬ সালে পরিবারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন। তিনিই অস্ট্রেলিয়ার প্রথম এবং একমাত্র হিজাব পরা ফেডারেল রাজনীতিবিদ।
বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করার ঘোষণা দেওয়ার ফাতিমা পেম্যান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ফিলিস্তিনের ইস্যুটির সঙ্গে আমি আপস করতে পারিনা। আমি অন্য সহকর্মীদের থেকে ভিন্ন। আমি জানি অন্যায়ের মুখোমুখি হতে কেমন লাগে। যখন নিরপরাধ মানুষের ওপর নৃশংসতা চালাতে দেখি তখন চুপ থাকতে পারিনা।’
মিসেস পেম্যান আরও বলেন, নিজ দলের বিপক্ষে গিয়ে ভোট দেওয়ার পর অনেক সহকর্মী আমাকে সমর্থন করেছে, আবার অনেকে চাপ প্রয়োগও করেছে। এরপর থেকে মেইলে কিছু হত্যার হুমকিও পেয়েছি।’
অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবেনিজ তাকে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একই সঙ্গে ফাতিমা পেম্যানকে পদত্যাগ করার জন্য ভয় দেখানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘মিসেস পেম্যান একজন স্বাধীন সিনেটর হিসেবে ককাসে যোগ দিতে পারবেন।’
গাজার সংঘাত নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় একটি অস্থির রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। দেশটির সরকারও এই বিষয়টিকে সতর্কতার সাথে মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায়। ইসরায়েলের দাবি, এ সময় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়াও প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা। জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় নারকীয় তাণ্ডব শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, এ হামলায় উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ৩৮ হাজারের মতো মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।