গোপনে ফিলিস্তিনের ৩১৩৮ একর জমি দখলে নিল ইসরায়েল
গাজা আগ্রাসনের মধ্যেই অধিকৃত পশ্চিম তীরের ৩ হাজার ১৩৮ একর জমি নিজেদের বলে অনুমোদন করেছে দখলদার ইসরায়েল।
ইসরাইলের অবৈধ বসতি নজরদারি করা সংস্থা পিস নাউয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৩ সালে অসলো চুক্তির পর এবারই সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নিজেদের বলে স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল।
অসলো চুক্তির বিভিন্ন শর্তের মধ্যে উল্লেখ ছিল, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও গাজা উপত্যকা থেকে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী ধীরে ধীরে সরে যাবে। কিন্তু বাস্তবে ঘটছে তার উল্টো। প্রায় প্রতিবছরই ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে ইসরায়েলিদের ছিনিয়ে নেওয়া জমিগুলোকে সরকারিভাবে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ।
নতুন ভূখণ্ড অনুমোদনের বিষয়ে ইসরায়েলি অধিকার সংস্থা ‘পিস নাউ’ একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরে বেসামরিক ইস্যুগুলো নিয়ে কাজ করা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্ট নতুন ভূখণ্ডের অনুমোদন দিয়েছে গত ২৫ জুন। তবে গতকাল বুধবারের আগ পর্যন্ত তা প্রকাশ করা হয়নি।
সংস্থাটি জানিয়েছে, নতুন ঘোষণার আওতায় পশ্চিম তীরের পূর্বাঞ্চলে জেরিকো শহরের কাছাকাছি ১ হাজার ২৭০ হেক্টর (৩ হাজার ১৩৮ একর) ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড সরকারিভাবে ইসরায়েলের করে নেওয়া হয়েছে।
অধিকার সংস্থা ‘পিস নাউ’এক বিবৃতিতে এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেছে, এই ঘোষণায় ইসরায়েলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিগ্রহণ করা ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোতে নিয়ন্ত্রণ আরোপের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের দখল করা জমিগুলোকে অনুমোদ দিয়ে আসছে ইসরায়েল। একবার কোনো জমি সরকারিভাবে অনুমোদন করে নিলে পরবর্তী সময় এই জমিগুলোর ফিলিস্তিনি ব্যক্তিমালিকানাকে অস্বীকার করে ইসরায়েল।
পিস নাউয়ের বিবৃতির বিষয়ে সিএনএনের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, হামাসের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধ শেষ হলে গাজা উপত্যকা দখল বা শাসন করতে চায় না ইসরায়েল।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। সেদিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গত নয় মাসে গাজায় ৩৮ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে। ইসরায়েলের হামলা থেকে ঘরবাড়ি, বিদ্যালয়, হাসপাতাল, শরণার্থীশিবির—কিছুই বাদ যাচ্ছে না।