কোটা আন্দোলনে যা ঘটছে, তা নজরে রাখছে যুক্তরাষ্ট্র: মিলার

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের আন্দোলনে বাংলাদেশে যা ঘটছে তা ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দুতাবাস এবং ওয়াশিংটন থেকে গভীরভাবে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট। এছাড়া বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে নিজেদের উদ্বেগের বিষয়টি স্টেট ডিপার্টমেন্টের পোডিয়াম থেকে জানান দিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।

বিগত দেড় দশক ধরে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ যে নির্যাতন এবং সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে সেজন্য সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসাবে তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে সরাসরি কোনো কথা বলা যাবেনা বলে জানান এই মুখপাত্র।

বিজ্ঞাপন

ব্রিফিংয়ে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে ছাত্রলীগ এবং আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর দ্বারা পরিচালিত সহিংসতার বিষয়টি উত্থাপন করে স্টেট ডিপার্টমেন্ট করেসপন্ডেন্ট মুশফিকুল ফজল আনসারী জানতে চান, 'বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হামলা অব্যাহত রেখেছে ক্ষমতাসীন সরকার। সরকারের মদদপুষ্ট আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬ জন শিক্ষার্থী প্রাণ হারিয়েছেন। ক্ষমতাসীন সরকারের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর, বিশেষ করে ছাত্রীদের ওপর নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে। গত প্রায় দেড় দশক ধরে এই সংগঠনটি এধরনের কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে যাচ্ছে। আপনারা কী ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে তালিকাভুক্ত করবেন কীনা?'

জবাবে মিলার বলেন, 'আপনি যে বিষয়ের কথা বলেছেন (ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা) সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কোন কথা বলতে যাচ্ছিনা। ঢাকায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলাকালে যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে তা আমরা নজরে রেখেছি। আন্দোলন যেন শান্তিপূর্ণ হয় আবারও সেই আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে যেকোন ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানাই।'

বিজ্ঞাপন

অপর এক প্রশ্নে এই প্রতিবেদক জানতে চান, 'বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু সাঈদ বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন তার সহপাঠিদের নিরাপত্তার জন্য। পুলিশ তাকে গুলি করতে কোনো দ্বিধা করেনি। তিনি নিজেও বুঝে উঠতে পারেননি যে সহপাঠিদের সুরক্ষা দেবার সময় পুলিশ তাকে এভাবে গুলি করবে। জালিয়াতির নির্বাচনের পর এরকম নির্যাতন করেই শেখ হাসিনা তার ক্ষমতা আঁকড়ে ধরেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন বলেছিলেন, ‘পুরো বিশ্বের দৃষ্টি বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে। যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’ কিন্তু জনগণের অধিকারই যেখানে লুট করে নেয়া হয়েছে ঠিক সেই মুহূর্তে আপনারা একদম নিরব হয়ে গেলেন। কেনো এমন হলো?'

জবাবে মিলার বলেন, 'প্রথম কথা হচ্ছে, আপনি যেটা বলেছেন সেটা ঠিক নয়। আমরা নিরব হয়ে যাইনি। আপনি সপ্তাহজুড়ে আমাকে বারবার কথা বলতে দেখেছেন। গত সোমবার বলেছি এবং আজকে আবারও বলছি, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বিপক্ষে যেকোনো ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানাই।'

তিনি বলেন, 'ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এবং ওয়াশিংটন থেকে আমাদের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে যা ঘটছে তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছে। বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা নিহত হচ্ছে, মানুষ মারা যাচ্ছে এটা আমাদের নজরে রয়েছে।'

মিলার বলেন, 'আমরা সরকারকে আহ্বান জানাবো তারা যেনো একজন নাগরিকের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকারকে সম্মান জানায়।'