বিদেশি সংবাদমাধ্যমে ছাত্র আন্দোলন
অসহযোগিতা কর্মসূচির মাধ্যমে পরিবর্তনের ডাক শিক্ষার্থীদের
বিদেশি সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশের উত্তাল ছাত্র আন্দোলনের খবর প্রতিদিনই প্রকাশিত হচ্ছে। এতদিন শুধু কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনেরই খবর প্রকাশিত হতো। তার বদলে নতুন শিরোনামে বাংলাদেশের খবর প্রচার হতে শুরু হয়েছে শনিবার থেকে। এমনই একটি শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম মালয়মেইল।
শনিবার (৩ আগস্ট) বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের খবর প্রকাশ করাতে যে শিরোনাম ব্যবহার করেছে, তাহলো-
বাংলাদেশি স্টুডেন্টস কল ফর ন্যাশনওয়াইড সিভিল ডিস-অবিডিয়েন্স, আর্গ পিপল টু স্ট্যান্ড আপ চেঞ্জ (বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের অসহযোগিতার ডাক, পরিবর্তনের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান)
এ শিরোনামে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি’র বরাত দিয়ে মালয়মেইলের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অসহযোগিতার ডাক দিয়েছেন। পরিবর্তনের জন্য তাদের পাশের দাঁড়ানোর জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘ক্র্যাক ডাউন’-এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের অবস্থা চরম খারাপ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা জনগণের প্রতি এ আহ্বান জানিয়েছেন।
খবরে বলা হয়, জুলাই মাসে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ২শয়ের বেশি মানুষ নিহত হন। এতে দেশের পরিস্থিতি ক্রমশ অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। সেনা মোতায়েন করার পরেও শুক্রবার ব্যাপকসংখ্যক জনগণ রাস্তায় নেমে আসেন।
সর্বাত্মক অসহযোগিতার কর্মসূচির ডাক
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা রোববার থেকে ‘সর্বাত্মক অসহযোগিতার কর্মসূচি’ ঘোষণা করেছেন বলে খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-এর এক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ বলেছেন, এই অসহযোগ আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, খাজনা না দেওয়া, পরিষেবা বিল না দেওয়া, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মকর্তারদের অফিস বর্জনসহ বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স না দেওয়ার মতো কর্মসূচি রয়েছে।
এদিকে, আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে জনগণকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। এ আহ্বানে তিনি বলেন, দয়া করে আর ঘরে বসে থাকবেন না। কাছাকাছি কোনো প্রতিবাদী মিছিলে যোগ দিন।
মালয়মেইলের খবরে বলা হয়, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জুলাই মাসে সহিংসতা এবং বিভিন্ন মন্ত্রীদের বক্তব্যের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এছাড়াও তারা সরকারের প্রতি স্কুল, কলেজসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে তারা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিও করেছেন।
অন্যদিকে, বিদেশি সরকারগুলি সরকারের কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক নীতিপ্রধান জোসেপ বোরেল ছাত্র আন্দোলনে সরকারের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের বিষয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
নিহত ২শ জনের মধ্যে ৩২ জন শিশুও রয়েছে বলে খবরে জানানো হয়েছে।