কেজরিওয়ালের ব্যক্তিগত সচিব বৈভব গ্রেফতার
ভারতের দিল্লির রাজ্যসভা সাংসদ স্বাতী মালিওয়াল শারিরিক হিনস্থার দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমারকে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, শনিবার (১৮ মে) দুপুরে দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে তাকে আটক করার কথা জানানো হয়।
এর পর পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আম আদমি পার্টির (আপ) সাংসদ স্বাতীর দায়ের করা এফআইআরের প্রেক্ষিতে গ্রেফতার করা হয়েছে বৈভবকে।
দিল্লি পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, এমসে স্বাতীর মেডিক্যাল পরীক্ষার রিপোর্টও তাদের হাতে পৌঁছেছে। তাতে আপ সাংসদের ডান গাল এবং বাঁ পায়ে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। জখম রয়েছে চোখের নিচেও।
শনিবার দুপুরে এই ঘটনার নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে আপ। সকালে দিল্লি পুলিশকে ট্যাগ করে এক্স হ্যান্ডল পোস্টে আপ প্রধান কেজরিওয়ালের বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন স্বাতী।
তারপরেই ভিডিও প্রকাশ করে পদক্ষেপ করে আপ। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, মুখ্যমন্ত্রী কেজরির বাসভবন থেকে পুলিশি ঘেরাটোপে বেরিয়ে আসছেন স্বাতী।
এর আগে স্বাতীর অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ এবং নমুনা সংগ্রহে শুক্রবার (১৮ মে) কেজরিওয়ালের বাসভবনে গিয়েছিলেন দিল্লি পুলিশ এবং ফরেন্সিক দল।
তারপরেই আপ নেত্রী তথা দিল্লির মন্ত্রী অতিশী প্রথম ভিডিও ফুটেজটি প্রকাশ করে দলেরই সাংসদ স্বাতীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছিলেন। এরপরেই স্বাতী অভিযোগ তোলেন যে, ভিডিওটি বিকৃত করা হয়েছে। এক্স পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আমার কাছে তথ্য আছে যে, ওই লোকেরা এখন বাড়ির সিসিটিভিতে কারসাজি করছে।’
আপ প্রকাশিত কেজরিওয়ালের বাসভবনের প্রথম ফুটেজে স্বাতীকে সোফায় বসে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে উচ্চৈঃস্বরে বাক্যবিনিময় করতে শোনা যায়। তারপরেই স্বাতীর পক্ষ থেকে সিসিটিভি জালিয়াতির অভিযোগ তুলে পোস্ট করা হয়।
স্বাতীর দাবি, গত ১৩ মে কেজরিওয়ালের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবনে গিয়েছিলেন তিনি। সে সময়ই তাকে শারীরিক হেনস্থা করেন কেজরিওয়ালের ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমার। আপ সাংসদের দাবি, বৈভব তাকে ৭-৮টি চড় এবং পেটে লাথি মারেন।
গত বৃহস্পতিবার দিল্লি পুলিশের কাছে এফআইআর দায়ের করেন স্বাতী। ওই দিন রাতেই স্বাতীর মেডিক্যাল পরীক্ষাও করানো হয়েছিল দিল্লির এমসে। শুক্রবার ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দেন স্বাতী।
তার পরেই স্বাতী এই ঘটনা নতুন মোড় নেয়। এই ঘটনায় দলের পুরনো অবস্থান থেকে সরে গিয়ে শুক্রবার বিকালে আপ মন্ত্রী অতিশী দাবি করেন, স্বাতী বিজেপির এজেন্ট হয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরীওয়ালকে ফাঁসাতে গিয়েছিলেন। কেজরিওয়ালে সেদিন বাসভবনে না থাকায় তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বৈভবকে ফাঁসানোর চেষ্টা করেছেন বলে দাবি করেন অতিশী।
অথচ গত ১৪ মে আপের রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং বিবৃতি দিয়ে বৈভবের হাতে স্বাতীর হেনস্থা হওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন।
বৃহস্পতিবার বৈভবের নামে এফআইআর দায়ের হয়েছিল। শুক্রবার স্বাতীর বিরুদ্ধে দিল্লির সিভিল লাইন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বৈভব। বিজেপির সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ প্রসঙ্গে স্বাতী বলেন, ‘দুই দিন আগে দল আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। আসলে বৈভব দলকে শাসিয়েছেন, যদি তিনি গ্রেফতার হন, তাহলে দলের সব গোপন তথ্য ফাঁস করে দেবেন।’
ইসরায়েলের অস্ত্র ভর্তি জাহাজ বন্দরে ভিড়তে দেয়নি স্পেন
ইসরায়েলের অস্ত্র আমদানির একটি জাহাজ বন্দরে ভিড়তে দেয়নি স্পেন। অস্ত্র ভর্তি ওই জাহাজটি স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত কার্টেজেনা বন্দরে ভিড়তে চেয়ে আবেদন জানায়। কিন্তু সে আবেদন প্রত্যাখান করে দেশটি।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দেশটির যোগাযোগ মন্ত্রী ওসকার পুয়েন্তে এ তথ্য জানান। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক্স বাতায় পুয়েন্তে বলেন, মারিয়েন ড্যানিকা নামের একটি জাহাজে করে ইসরায়েলের জন্য অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ওই জাহাজটি আগামী ২১ মে কার্টেজেনা বন্দরে ভিড়তে চেয়ে আবেদন জানায়।
স্প্যানিশ পত্রিকা এল পাইস জানিয়েছে, ড্যানিশ পতাকাবাহী জাহাজটি ২৭ টন বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে ভারতের মাদ্রাজ থেকে ইসরায়েলের হাইফা বন্দরে যাচ্ছে।
এদিকে ইসরায়েলের জন্য অস্ত্র বহনকারী জাহাজকে নিজেদের বন্দরে নোঙ্গর করতে দেয়নি বলে জানিয়েছেন স্প্যানিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে ম্যানুয়েল আলবারেস। কী কারণে এমনটি করা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানও।
আফগানিস্তানে স্পেনের ৩ পর্যটকসহ ৪ জনকে গুলি করে হত্যা
আফগানিস্তানে স্পেনের ৩ পর্যটকসহ এক আফগান নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীরা।
এছাড়া গুলিতে স্পেনের ৪ পর্যটক ও ৩ আফগান নাগরিক আহত হয়েছেন। এ ঘটনার দায় কেউ স্বীকার করেননি।
শনিবার (১৮ মে) তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম মেহর নিউজ এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আবদুল মতিন জানিয়েছেন, শুক্রবার মধ্য আফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীদের গুলিতে তিনজন বিদেশি পর্যটক নিহত হয়েছেন। এছাড়া এসময় একজন আফগান নাগরিকও নিহত হন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তালেবান এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় এবং হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়ার নিশ্চয়তা দিচ্ছে।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো সানচেজ এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে হত্যার শিকার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং ঘটনার প্রতি নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
চীনের ২৬ কোম্পানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
উইঘুর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ফের চীনের ২৬টি টেক্সটাইল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে ওয়্যারহাউজ ফ্যাসিলিটি থেকে আর চীনের তুলা আমদানি করবে না দেশটি।
এর আগে চীনের টেলিকম সরঞ্জাম ও বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি) খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এবার টেক্সটাইল খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল দেশটি।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে হোয়াইট হাউস এসব কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, চীনের উইঘুর সংখ্যালঘুদের দিয়ে জোর করে পণ্য তৈরি করায় চীন। ওই সব পণ্য নিজেদের সরবরাহ চেইন থেকে সরাতেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদেন বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট এনটিটি লিস্টে এবার চীনের ২৬টি কোম্পানিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে এসব কোম্পানিকে নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
এর আগেও ওয়াশিংটন বলেছে, চীনা কর্তৃপক্ষ জিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুর ও অন্যান্য মুসলিম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর জন্য শ্রম শিবির স্থাপন করেছে। তবে বেইজিং বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
এদিকে ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রের এ নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছে। দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করবে। চীনের উন্নয়নের গতি রোধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের এটি একটি কৌশলমাত্র।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট এনটিটি লিস্ট পাস করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে ওয়াশিংটন এখন পর্যন্ত ৬৫টি চীনা প্রতিষ্ঠান থেকে আমদানি নিষিদ্ধ করেছে।