তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, সিরিয়া ক্ষমতার পালাবদলের জেরে এক অভূতপূর্ব সময় পার করছে; আর এই সময়টিই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠী পিকেকে-কে নির্মূলের জন্য সবচেয় উপযুক্ত
কায়রোতে বিশ্বের উন্নয়নশীল আট দেশের জোট ডি-৮-এর সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন এরদোয়ান। সম্মেলন শেষে আঙ্কারার ফ্লাইট ধরেন তিনি। সম্মেলন শেষ হওয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “দায়েশ (আইএস), পিকেকে এবং তাদের সহযোগীরা, যারা সিরিয়ার অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছিল তাদেরকে অবশ্য নির্মূল করা উচিত এবং এখনই এই কাজ শুরু করার আদর্শ সময়।”
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এরদোয়ান বলেন, “আমরা আমাদের সাধ্যমতো সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাসীদের ঠেকিয়ে রাখছি। আমাদের একার পক্ষে এই কাজটি বেশ কঠিন; যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় এগিয়ে যাই, তাহলে এই সংকট থেকে পুরোপুরি পরিত্রাণ সম্ভব।”
এ ব্যাপারে সিরিয়ার বর্তমান সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে উল্লেখ করে এরদোয়ান বলেন, “আমি আর কিছুদিনের মধ্যেই এ ইস্যুতে বিস্তারিত আলোচনার জন্য ফিদানকে (হাকান ফিদান- এরদোয়ানের একান্ত বিশ্বস্ত ও তুরস্কের শীর্ষ কূটনীতিবিদ) দামেস্কে পাঠবো। আইএস, পিকেকে, এসডিএফ, ওয়াইপিজিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কীভাবে নির্মূল করা যায়, সে সম্পর্কিত আলোচনা তখন হবে।”
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সিরিয়া ইসলামিক স্টেট বা আইসের জন্ম ২০১১ সালে। বিশ্বে এ যাবৎকালের সবচেয়ে সহিংস, নির্মম ও নৃশংস ইসলামি গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আইএস তার জন্মের বছরই সিরিয়া ও ইরাকের বিস্তির্ণ এলাকা দখল করে পৃথক দেশ প্রতিষ্ঠা করে, যার রাজধানী করা হয় সিরিয়ার রাক্কা শহরকে।
আইএসের উত্থান সিরিয়ার পাশাপাশি তুরস্কের জন্যও মারাত্মক বিপর্যয়কর ছিল; কারণ তুরস্কের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে সিরিয়ার। নিজ দেশে আইএসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছে এরদোয়ানের নেতৃত্বাধীন সরকারকে।
অন্যদিকে পিকেকে তুরস্কের এক দীর্ঘকালীন সমস্যা। ১৯৭৮ সালে গঠিত এই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী তুরস্কের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চল এবং ইরাকের উত্তরাঞ্চলের সমন্বয়ে স্বাধীন কুর্দিস্তান প্রতিষ্ঠা করতে চায়। প্রতিষ্ঠার বিগত দশকগুলোতে বেশ কিছু বড় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে পিকেকে।
পিকেকের পাশাপাশি এর দু’টি সহযোগী গোষ্ঠীও তুরস্কের নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে উঠেছে। গুলো হলো সিরিয়ান ডিফেন্স ফোর্স (এসডিএফ) এবং ওয়াইজিপি।