জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে আফগানিস্তানের সংবাদমাধ্যম টলো নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী পূর্ব আফগানিস্তানের খোস্ত ও পাকতিয়া প্রদেশে ভয়াবহ সংঘর্ষ চলছে। আফগান সীমান্ত বাহিনী খোস্ত প্রদেশের আলি শির জেলায় বেশ কয়েকটি পাকিস্তানি সামরিক চৌকিতে আগুন দিয়েছে এবং পাকতিয়া প্রদেশের ডান্ড-ই-পাতান জেলায় দুটি পাকিস্তানি পোস্ট দখল করেছে।
সূত্রটি আরও জানায়, ডান্ড-ই-পাতান জেলায় পাকিস্তানি সৈন্যদের ছোড়া মর্টার শেলের কারণে তিন আফগান বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানি সেনাদের বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ ৫১ জন নিহত হওয়ার পর এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান শহরের একটি বিমানবন্দরে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে ২৯ জন নিহত হয়েছে। উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দেশটির বার্তাসংস্থা ইয়োনহাপ ও এএফপির বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার জেজু এয়ারের উড়োজাহাজটি মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। উড়োজাহাজটি ১৭৫ যাত্রী ও ছয়জন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট নিয়ে থাইল্যান্ড থেকে এসেছিল।
স্থানীয় ফায়ার ডিপার্টমেন্টের রেসপন্স টিমের অফিসার লি হাইওন-জি এএফপিকে বলেন, "এখন পর্যন্ত দুর্ঘটনায় ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।"
স্থানীয় গণমাধ্যমের শেয়ার করা একটি ছবিতে দেখা গেছে, উড়োজাহাজ থেকে ঘন কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। অন্য একজন দেখিয়েছেন ওই উড়োজাহাজটির পিছনের অংশটি আগুনে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। হতাহতের উদ্ধারে জরুরি যানবাহন রয়েছে।
এ পর্যন্ত দুইজনকে জীবিত উদ্ধার গেছে বলে জানিয়েছে ইয়োনহাপ। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানায় গণমাধ্যমটি।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সাং-মোক মুয়ানে এক বিবৃতিতে, "উদ্ধার অভিযানের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টার" নির্দেশ দিয়েছেন। আহতদের বাঁচানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে একত্রিত করে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
উড়োজাহাজটি বিমানবন্দরে অবতরণের সময় "ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটির কারণে" এই দুর্ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, ইয়োনহাপ জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের সর্বশেষ কার্যকারিতা সম্পন্ন কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এ সময় হাসপাতালের পরিচালক এবং অন্যান্য কর্মীদের গ্রেফতার করে জোরপূর্বক খালি করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, কমল আদওয়ান হাসপাতাল "এখন খালি" বাকি রোগীদের মধ্যে কিছু গুরুতর অসুস্থ - কেয়ারগিভার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথে বেইট লাহিয়ার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই অভিযানের মধ্য দিয়ে উত্তর গাজার শেষ হাসপাতালটির কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেলো।
কামাল আদওয়ানের পরিচালক ড. হুসাম আবু সাফিয়া এবং অন্যান্য কর্মীরা কোথায় আছেন তা স্পষ্ট নয় বলে সিএনএনকে জানিয়েছেন তার বন্ধু ও সহকর্মীরা।
কামাল আদওয়ান হাসপাতালের একজন নার্স রাউইয়া আল বাতশ সিএনএনকে বলেছেন, আমরা ডাঃ হুসামের ভাগ্য জানি না। তিনি হাসপাতালে পৌঁছানোর সাথে সাথেই সেনাবাহিনীর দ্বারা তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শনিবার স্বীকার করেছে যে তারা ডক্টর আবু সাফিয়াকে আটক করেছে এবং বলেছে যে তাকে "হামাস সন্ত্রাসী অপারেটিভ বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।"
কামাল আদওয়ান হাসপাতালের নার্সিং বিভাগের প্রধান ঈদ সাব্বাহ বিবিসিকে বলেন, শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে সেনাবাহিনী তাদের হাসপাতালে রোগী ও কর্মীদের সরিয়ে নিতে প্রশাসনকে ১৫ মিনিট সময় দেয়।
পরে ইসরায়েলি সেনারাই হাসপাতালে প্রবেশ করে বাকি রোগীদের সরিয়ে দিয়েছে বলে জানান তিনি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শুক্রবার বিকেলে জানিয়েছে, তারা হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে। তারা 'হাসপাতালকে হামাসের শক্ত ঘাঁটি' বলে অভিহিত করেছে।
বিবিসি লিখেছে, অভিযান শুরুর আগে ইসরায়েলি সেনারা হাসপাতাল থেকে বেসামরিক, রোগী ও চিকিৎসাকর্মীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে। তবে রোগীদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে তা জানায়নি সেনাবাহিনী।
চিকিৎসক সাব্বাহ বলেন, “এটি বিপজ্জনক কারণ অনেক রোগী কোমায় রয়েছেন। তাদের ভেন্টিলেশন মেশিনের প্রয়োজন হয়। মুমূর্ষু রোগীদের স্থানান্তরিত করা খুবই বিপদজনক।
“সেনাবাহিনী যদি এসব রোগীকে সরিয়ে নিতে চায়, তাহলে তাদের বিশেষায়িত গাড়ির প্রয়োজন হবে”, বলেন তিনি।
তার কিছুক্ষণ পর গাজার উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউসুফ আবু-আল রিশ বিবিসিকে বলেন, “আশঙ্কাজনক অবস্থায় রোগীদের ইন্দোনেশিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, “ঠিক হাসপাতাল বলা যায় না। এটি একটি আশ্রয়স্থল। রোগীদের জন্য প্রস্তুত নয়।"
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) আন্তর্জাতিক মুখপাত্র নাদাভ শোশানি শুক্রবার সন্ধ্যায় এক্স পোস্টে বলেন, "প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, অভিযানের সময় হাসপাতালের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিভাগ মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে।”
আইডিএফ সৈন্যরা যখন হাসপাতালের ভিতরে ছিল না তখন আগুন লাগে জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে আইডিএফের ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে আগুনের কোনও সংযোগ পাওয়া যায়নি।”
এর কয়েক ঘণ্টা আগে কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক জানান, হাসপাতালের আশপাশের এলাকা লক্ষ্য করে চালানো ইসরায়েলি বিমান হামলায় পাঁচ মেডিকেল স্টাফসহ প্রায় ৫০ জন নিহত হয়েছেন।
হুসাম আবু সাফিয়ার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাসপাতালের বিপরীতে একটি ভবন লক্ষ্য করে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান হামলা চালায়। এতে একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ও ল্যাব টেকনিশিয়ান ও তাদের পরিবার নিহত হয়।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই স্থাপনাটি ঘন ঘন ইসরায়েলি অগ্নিসংযোগের আওতায় এসেছে এবং এটি বন্ধ করা উত্তর গাজায় একটি ভয়ানক মানবিক পরিস্থিতিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
ছয় জন শিশুর মধ্যে একজনের বেশি শিশু বিশ্বব্যাপী সংঘাতপূর্ণ এলাকায় বসবাস করে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সংস্থাটি এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। খবর আল জাজিরা।
বিবৃতিটি ইউনিসেফ এমন সময় দিয়েছে যখন গাজা, সুদান এবং ইউক্রেন সহ বিশ্বজুড়ে চলমান সংঘাতে শিশুদের জীবন হুমকির মধ্যে রয়েছে।
বিশেষ করে গত ১৫ মাস ধরে গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে কমপক্ষে ১৭ হাজার ৪৯২ শিশু নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও অঞ্চলটি পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, "সব দিক বিবেচনায় নিয়েই ইউনিসেফের ইতিহাসে চলতি বছরটি সংঘাতে আক্রান্ত শিশুদের জন্য খারাপ বছরগুলোর মধ্যে একটি। আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা ও তাদের জীবনের ওপর প্রভাবের মাত্রা উভয় দিক থেকেই এই বছরটি আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।
রাসেলের মতে, একটি শিশুর স্কুলের বাইরে থাকা, অপুষ্টিতে ভোগা কিংবা বাড়ি থেকে জোরপূর্বক বিতারিত হওয়া এসব ঘটনা এ বছরই বেশি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত গাজার শিশুরা।
তিনি বলেন, এটি আমাদের পরর্বতী প্রজন্মের জন্য হুমকি। আমরা শিশুদের একটি প্রজন্মকে বিশ্বের অনিয়ন্ত্রিত যুদ্ধের জন্য সমান্তরাল ক্ষতি হতে দিতে পারি না।
সংস্থাটি জানায়, সংঘাতপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী শিশুদের অনুপাত দ্বিগুণ হয়েছে। ১৯৯০ এর দশকে এর মাত্রা ছিলো ১০ শতাংশ সেখান থেকে আজ সেটা ১৯ শতাংশে পৌঁছেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ সংঘাত ও সহিংসতার কারণে ৪৭ দশমিক ২ মিলিয়ন শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ২০২৪ সালে বিভিন্ন দেশের সংঘাত বাস্তুচ্যুত্যের সংখ্যা আরও বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। কারণ হাইতি, লেবানন, মায়ানমার, ফিলিস্তিনি অঞ্চল এবং সুদান সহ বিভিন্ন দেশে সংঘাত তীব্রতর হচ্ছে।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল থেকে জাতিসংঘ ২২ হাজার ৫৫৭ শিশুর বিরুদ্ধে রেকর্ডসংখ্যক ৩২ হাজার ৯৯০টি গুরুতর আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে। এই সংখ্যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বাধ্যতামূলক পর্যবেক্ষণ শুরু হওয়ার পর থেকে সর্বোচ্চ। এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ গাজা ও ইউক্রেনে হাজার হাজার শিশু নিহত ও আহত হয়েছে- বলেছে সংস্থাটি।
শিশুদের ওপর যৌন সহিংসতা বেড়েছে, তাদের শিক্ষা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অপুষ্টির হার বেড়েছে ও সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি হচ্ছে এই সশস্ত্র সংঘাত শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে- জানিয়েছে ইউনিসেফ।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক বলেন, শিশুদের এই হুমকির মধ্যে ফেলা দেওয়ার জন্য দায়ী বিশ্ব। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে আমাদেরকে অবশ্যই এই স্রোত ঘুরিয়ে দিতে হবে এবং শিশুদের জীবন বাঁচাতে ও উন্নত করতে আরও বেশি কাজ করতে হবে।
গত সেপ্টেম্বরে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনের ওপর কাজ করা বেসরকারি সংস্থা অক্সফাম জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গত এক বছর ধরে যে হামলা চালাচ্ছে তাতে সাম্প্রতিক সংঘাতের মধ্যে নারী ও শিশুদের নিহতের সংখ্যা বেশি।
গত সপ্তাহে এক মিডিয়া ব্রিফিং-এ ইউনিসেফের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ রোজালিয়া বোলেন বলেছেন, চলমান যুদ্ধ শিশুদের জন্য একটি "দুঃস্বপ্ন"। ১৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে শিশুরা এই দুঃস্বপ্নের তীক্ষ্ণ প্রান্তে রয়েছে। এখানকার অনেক শিশুর শীতের পোশাক নেই, আবর্জনার স্তূপের মধ্যে খাবারের সন্ধান করতে হয়। এছাড়াও নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত, যা পরবর্তী বিশ্বকে ভাবিয়ে তুলবে।
গাজার প্রায় ৯৬ শতাংশ নারী ও শিশু তাদের মৌলিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারে না। উপত্যকার শিশুদের কাছে সাহায্যকারী কর্মীরা পৌঁছাতে পারছে না বলেও তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
“গাজা অবশ্যই মানবতাবাদীদের জন্য পৃথিবীর অন্যতম হৃদয়বিদারক স্থান। একটি শিশুর জীবন বাঁচানোর জন্য প্রতিটি ছোট প্রচেষ্টা ভয়ঙ্কর ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হওয়া স্থানকেও পূর্বের অবস্থায় ফেরানো সম্ভব”- বলেছেন বোলেন।
তিনি আহত শিশুদের এবং তাদের অভিভাবকদের গাজা ছেড়ে পূর্ব জেরুজালেম বা অন্য কোথাও চিকিৎসা সেবা নিতে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সুবিধা ব্যবহার করার জন্য আহ্বান জানান।
এই যুদ্ধটি আমাদের প্রত্যেককে এখনই থামানো উচিত। গাজার শিশুরা আর অপেক্ষা করতে পারছে না বলেও জানান তিনি।
গত ৮ নভেম্বর জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানায়, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।
সংস্থাটি এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে উল্লেখ করে, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহতদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এতে গাজার মানুষের "ভয়াবহ বাস্তবতা" উন্মোচিত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।
ইসরায়েলের এমন হত্যাকাণ্ডকে "গণহত্যা" হিসেবে উল্লেখ করে এমন ঘটনাকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
ইসরায়েলি বাহিনীর এমন আচরণের কারণে অনাহার, অসুস্থতা এবং বিভিন্ন রোগের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। যা পরবর্তীতে শিশু ও নারীদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও জানায় সংস্থাটি।
এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, উত্তর গাজায় চরম মাত্রায় অপুষ্টি রয়েছে। শিশুরা অনাহারে মারা যাচ্ছে। জ্বালানি, খাদ্য ও চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের গুরুতর ঘাটতি রয়েছে এবং হাসপাতাল ভবনগুলোও ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। গাজার এই অঞ্চলে আনুমানিক তিন লাখ মানুষ খুবই অল্প খাদ্য বা বিশুদ্ধ পানি নিয়ে এখন জীবন যাপন করছে।
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দিল্লির নিগমবোধ ঘাটে সম্পন্ন হয় তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।
এসময় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বহু রাজনীতিবিদ উপস্থিত ছিলেন। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
এর আগে, সকালে কংগ্রেসের সদর দফতরে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মরদেহ রাখা হয়। সেখানে তাকে শ্রদ্ধা জানান কংগ্রেস নেতৃত্ব এবং অন্য রাজনীতিকেরা। কংগ্রেসের সদর দফতর থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আসা হয় যমুনা নদীর ধারে পূর্বনির্ধারিত নিগমবোধ ঘাটে। সেখানেই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায় জানানো হয় মনমোহন সিংহকে।
মনমোহন সিংয়ের শেষকৃত্যের সময়ে উপস্থিত ছিলেন সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়গে-সহ কংগ্রেসের অন্য নেতারা।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগেও এসেছিলেন মনমোহনকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানাতে বিদেশি সব দূতাবাস এবং উপদূতাবাসে ভুটানের পতাকা শনিবার অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। মরিশাস সরকারও তাদের দূতাবাস এবং উপদূতাবাসগুলোতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পতাকা অর্ধনমিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য কোথায় সম্পন্ন হবে, তা নিয়ে শুক্রবার কেন্দ্রের সঙ্গে বিরোধের পরিস্থিতি তৈরি হয় কংগ্রেসের। নিগমবোধ ঘাটে প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্যের সিদ্ধান্তে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল কংগ্রেস। তারা চাইছিল, যমুনার তীরে রাজঘাটের আশপাশের কোনও জমিতে মনমোহনের শেষকৃত্য হোক, যেখানে ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, অটলবিহারী বাজপেয়ীদের স্মৃতিসৌধ রয়েছে।
এর আগে, দেশের কোনও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য এই শ্মশানে হয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, নিগমবোধ ঘাটে শেষকৃত্য হলেও ওই স্থান স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উপযুক্ত নয়, দাবি কংগ্রেসের। তারা চাইছিল এমন কোনও জায়গায় শেষকৃত্য হোক, যেখানে স্মৃতিসৌধ তৈরি করা যাবে।
এই বিতর্কের আবহে বৃহস্পতিবার রাতেই একটি বিবৃতি প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কেন্দ্র জানায়, মনমোহনের স্মৃতিসৌধ তৈরির জন্য জায়গা দেওয়া হবে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগবে। মনমোহনের শেষকৃত্য এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পর এই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র।